সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী -সংবাদ
সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ২৪ ঘণ্টায়ও ডেঙ্গুতে ১৪ জনসহ ৩৯৬ জনের রেকর্ড মৃত্যু সেপ্টেম্বরেই। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু ৯৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪২৫ জন। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪২৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৫১ জন ও ঢাকার বাইরের ১ হাজার ৬৭৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮ জন ও ঢাকার বাইরের ৬ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩ হাজার ৪০৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৩ হাজার ২২২ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ১৮৪ জন।০
একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৪৫৮ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৯ হাজার ২০৪ জন এবং ঢাকার বাইরের ১ লাখ ১৩ হাজার ২৫৪ জন। বর্তমানে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ হাজার ৯৫৯ জন ডেঙ্গুরোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় তিন হাজার ৩৭৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬ হাজার ৫৮০ জন। এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারীকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে বিশ্বের কোনো দেশেই ডেঙ্গুর কার্যকরী টিকা নেই। তবে বাংলাদেশে আইসিডিডিআরবির তৈরি টিকা ডেঙ্গুর চারটি ভাইরাসেই কার্যকর বলে শোনা যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে এ টিকার অনুমোদন নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক। শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জে নিজ বাসভবনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়েই গবেষণা চলছে। ইতোমধ্যে দুটি টিকা আবিষ্কারও হয়েছে। কিন্তু সেই টিকা সব ভাইরাসে কার্যকর নয়। তাতে অনেক সমস্যা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের তৈরি টিকার সফল পরীক্ষা সত্যিই আশা জাগায়।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গু স্থিতি আছে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন প্রায় ৯ হাজার রোগী চিকিৎসাধীন। ডেঙ্গু চিকিৎসায় এখন স্যালাইনের কোনো ঘাটতি নেই। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে ৭ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির অনুমোদন দিয়েছিলাম। এরমধ্যে ৩ লাখ ব্যাগ স্যালাইন চলে এসেছে। বাকি ৪ লাখ ব্যাগ স্যালাইনের চালানও দ্রুত চলে আসবে। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন রিসিভ করছি। এছাড়া বেসরকারি ঔষধ উৎপাদন কোম্পানিগুলো স্যালাইনের উৎপাদন বাড়িয়েছে। আমি যতটুকু তথ্য পেয়েছি তারা মাসে ৫৩ লাখ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করত পারবে।
তিনি বলেন, প্রতিমাসে ডেঙ্গু জন্য প্রয়োজন ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন। ডেঙ্গু আক্রান্তের হার যদি বর্তমানের চেয়ে বেড়ে যায় সেই ক্ষেত্রে স্যালাইনের প্রয়োজন হবে ৩০ লাখ ব্যাগ। সে কারণে আমি মনে করি এখন আর সেইভাবে হাহাকার ঘাটতি নাই। আমরা চাই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে যাক। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু রোগী তো আছে। তবে জনসাধারণকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রতিদিন ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হবে। অনেক সময় দেরি করে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ক্ষেত্রে রোগীকে তখন চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলাও কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য তাড়াতাড়ি ডেঙ্গু পরীক্ষা ও চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন। জাহিদ মালেক বলেন, জাতিসংঘের এবারের সাধারণ অধিবেশনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তবে এরমধ্যে স্বাস্থ্য বিষয়ের অনেক দিক নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে সভা হয়েছে। সারাবিশ্বে করোনা মহামারী হয়েছে। আগামীতে কোনো ধরনের মহামারী আসলে সেটি কী উপায়ে প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী -সংবাদ
শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ২৪ ঘণ্টায়ও ডেঙ্গুতে ১৪ জনসহ ৩৯৬ জনের রেকর্ড মৃত্যু সেপ্টেম্বরেই। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু ৯৮৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪২৫ জন। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ্ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ মো. জাহিদুল ইসলামের সই করা ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪২৫ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৫১ জন ও ঢাকার বাইরের ১ হাজার ৬৭৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮ জন ও ঢাকার বাইরের ৬ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৩ হাজার ৪০৬ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৮৩ হাজার ২২২ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ১৮৪ জন।০
একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ লাখ ৯২ হাজার ৪৫৮ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৭৯ হাজার ২০৪ জন এবং ঢাকার বাইরের ১ লাখ ১৩ হাজার ২৫৪ জন। বর্তমানে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯ হাজার ৯৫৯ জন ডেঙ্গুরোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় তিন হাজার ৩৭৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬ হাজার ৫৮০ জন। এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ডেঙ্গুতে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারীকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে বিশ্বের কোনো দেশেই ডেঙ্গুর কার্যকরী টিকা নেই। তবে বাংলাদেশে আইসিডিডিআরবির তৈরি টিকা ডেঙ্গুর চারটি ভাইরাসেই কার্যকর বলে শোনা যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছ থেকে এ টিকার অনুমোদন নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক। শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জে নিজ বাসভবনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু টিকা নিয়ে বিশ্বজুড়েই গবেষণা চলছে। ইতোমধ্যে দুটি টিকা আবিষ্কারও হয়েছে। কিন্তু সেই টিকা সব ভাইরাসে কার্যকর নয়। তাতে অনেক সমস্যা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের তৈরি টিকার সফল পরীক্ষা সত্যিই আশা জাগায়।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গু স্থিতি আছে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন প্রায় ৯ হাজার রোগী চিকিৎসাধীন। ডেঙ্গু চিকিৎসায় এখন স্যালাইনের কোনো ঘাটতি নেই। আমরা মন্ত্রণালয় থেকে ৭ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানির অনুমোদন দিয়েছিলাম। এরমধ্যে ৩ লাখ ব্যাগ স্যালাইন চলে এসেছে। বাকি ৪ লাখ ব্যাগ স্যালাইনের চালানও দ্রুত চলে আসবে। প্রতিদিন প্রায় ৪০-৫০ হাজার ব্যাগ স্যালাইন রিসিভ করছি। এছাড়া বেসরকারি ঔষধ উৎপাদন কোম্পানিগুলো স্যালাইনের উৎপাদন বাড়িয়েছে। আমি যতটুকু তথ্য পেয়েছি তারা মাসে ৫৩ লাখ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করত পারবে।
তিনি বলেন, প্রতিমাসে ডেঙ্গু জন্য প্রয়োজন ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন। ডেঙ্গু আক্রান্তের হার যদি বর্তমানের চেয়ে বেড়ে যায় সেই ক্ষেত্রে স্যালাইনের প্রয়োজন হবে ৩০ লাখ ব্যাগ। সে কারণে আমি মনে করি এখন আর সেইভাবে হাহাকার ঘাটতি নাই। আমরা চাই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমে যাক। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু রোগী তো আছে। তবে জনসাধারণকে সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রতিদিন ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হবে। অনেক সময় দেরি করে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ক্ষেত্রে রোগীকে তখন চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলাও কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য তাড়াতাড়ি ডেঙ্গু পরীক্ষা ও চিকিৎসা নেয়া প্রয়োজন। জাহিদ মালেক বলেন, জাতিসংঘের এবারের সাধারণ অধিবেশনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তবে এরমধ্যে স্বাস্থ্য বিষয়ের অনেক দিক নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে সভা হয়েছে। সারাবিশ্বে করোনা মহামারী হয়েছে। আগামীতে কোনো ধরনের মহামারী আসলে সেটি কী উপায়ে প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।