গাইবান্ধা : সদর উপজেলার নদী ভাঙনের কবলে কুন্দেরপাড়া চড় -সংবাদ
উত্তরের জেলা গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের ১৪ টি উপজেলার ৭২টি টি ইউনিয়নে ছোটবড় মিলে চর রয়েছে ৪৪০টি। কোন কোন চরের স্থায়ীত্বকাল শত বছরের উপরে। কিন্তু গত দুই দশকে প্রায় অর্ধশত চর-গ্রাম ভাঙনের কবলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সেইসঙ্গে মাইগ্রেশন করে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে অন্ততপক্ষে দুই লক্ষাধিক মানুষ। নদীভ্ঙানের সঙ্গে বেড়ে নদীর পরিধি। প্রতিবছর নদীভ্ঙানে নদী চরের হাজারো মানুষের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো ও জমিজমা বিলীন হলেও ভ্ঙান প্রতিরোধে সরকারের কোন পরিকল্পনা নেই। একারণে নদীর পরিধিও বাড়ছে বহুগুনে।
রংপুরের নদীবৌধিত ৪ জেলার উপর দিয়ে তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ ছোটবড় ২৬টি নদী প্রবাহিত হচ্ছে। জেলারগুলোর ভৌগোলিক আয়তনের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকাই চরাঞ্চল। মোট জনসংখ্যার প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ মানুষ বসবাস করে চরাঞ্চলে। তবে, গত দ’ুদশক ধরে চরগুলো নদীভ্ঙানের কবলে পড়ায় মানুষজন একাধিক বার বসতভিটা, জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
তবে, নদীর দু’পাড়ে ভ্ঙান প্রতিরোধে সরকার পদক্ষেপ নিলেও চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের কথা নিয়ে ভাবছেন বলে জানান ১০বার ভ্ঙানের শিকার ইউনুস আলী। তিনি বলেন জমিজমা হারিয়ে ভ্ঙানের যন্ত্রনা আর দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অবশেষ আত্মীয় স্বজন রেখে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রায় ৩০ বছরের পুরাতন চর কুন্দেরপাড়া মানুষজন ভ্ঙান প্রতিরোধে নিজেরাই অর্থ সংগ্রহ করে বাঁশ কিনে স্বেচ্ছাশ্রমে বান্ডাল স্থাপন করছেন কুন্দেরপাড়ার ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান কেউ তো আর এগিয়ে আসছেন না, একারণে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণে বান্ডাল দিয়ে প্রতিরোধ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, টিকে থাকার তাগিদে স্থানীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে বান্ডাল করে ভ্ঙান ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই এলাকাটি ভ্ঙান প্রতিরোধ করা না গেলে শত শত পরিবার গৃহহীন হবে।
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ফলুয়ার চর গ্রামের সুরুজ্জামান জানান ত্রিশ বছর আগে ব্রহ্মপুত্র নদী ছিল ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার প্রস্ত, কিন্তু সেই নদীর পরিধি এখন ১৭ কিলোমিটারের উপরে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, হাফিজুল হক জানান, চরাঞ্চলে ভ্ঙান প্রতিরোধ আপাতত কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানান পানি, তবে ভ্ঙান ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলো জরিপ করে ঠেকানো পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এদিকে, পানি ও জলবায়ু বিজ্ঞানী ড, আইনুন নিশাত জানান, তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদী অনেকটাই ভিন্ন প্রকৃতির। এই নদীগুলোতে বর্ষা মৌসুমে প্রচার পরিমানে বালি ও পলি পড়ে নাব্য হারিয়ে ফেলে। একারনে সারাবছরই নদীভ্ঙান থাকে। এজন্য নদীভ্ঙান প্রতিরোধ প্রয়োজন নদীর গতিপ্রকৃতি বুঝে বিজ্ঞানভিত্তিক টেকসই পরিকল্পনা করে নদীশাসনের মাধ্যমে সহনশীল প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা জানান তিনি। নদীর চর রক্ষায় সরকার ভ্ঙান প্রতিরোধের পাশাপাশি চর উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে জীবনমানের উন্নয়নে টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমনটাই দাবী চরমানুষ জনের।
গাইবান্ধা : সদর উপজেলার নদী ভাঙনের কবলে কুন্দেরপাড়া চড় -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩
উত্তরের জেলা গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের ১৪ টি উপজেলার ৭২টি টি ইউনিয়নে ছোটবড় মিলে চর রয়েছে ৪৪০টি। কোন কোন চরের স্থায়ীত্বকাল শত বছরের উপরে। কিন্তু গত দুই দশকে প্রায় অর্ধশত চর-গ্রাম ভাঙনের কবলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সেইসঙ্গে মাইগ্রেশন করে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে অন্ততপক্ষে দুই লক্ষাধিক মানুষ। নদীভ্ঙানের সঙ্গে বেড়ে নদীর পরিধি। প্রতিবছর নদীভ্ঙানে নদী চরের হাজারো মানুষের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো ও জমিজমা বিলীন হলেও ভ্ঙান প্রতিরোধে সরকারের কোন পরিকল্পনা নেই। একারণে নদীর পরিধিও বাড়ছে বহুগুনে।
রংপুরের নদীবৌধিত ৪ জেলার উপর দিয়ে তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ ছোটবড় ২৬টি নদী প্রবাহিত হচ্ছে। জেলারগুলোর ভৌগোলিক আয়তনের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকাই চরাঞ্চল। মোট জনসংখ্যার প্রায় সাড়ে ১৬ লাখ মানুষ বসবাস করে চরাঞ্চলে। তবে, গত দ’ুদশক ধরে চরগুলো নদীভ্ঙানের কবলে পড়ায় মানুষজন একাধিক বার বসতভিটা, জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
তবে, নদীর দু’পাড়ে ভ্ঙান প্রতিরোধে সরকার পদক্ষেপ নিলেও চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের কথা নিয়ে ভাবছেন বলে জানান ১০বার ভ্ঙানের শিকার ইউনুস আলী। তিনি বলেন জমিজমা হারিয়ে ভ্ঙানের যন্ত্রনা আর দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে অবশেষ আত্মীয় স্বজন রেখে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।
প্রায় ৩০ বছরের পুরাতন চর কুন্দেরপাড়া মানুষজন ভ্ঙান প্রতিরোধে নিজেরাই অর্থ সংগ্রহ করে বাঁশ কিনে স্বেচ্ছাশ্রমে বান্ডাল স্থাপন করছেন কুন্দেরপাড়ার ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন। তিনি জানান কেউ তো আর এগিয়ে আসছেন না, একারণে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণে বান্ডাল দিয়ে প্রতিরোধ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, টিকে থাকার তাগিদে স্থানীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে বান্ডাল করে ভ্ঙান ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই এলাকাটি ভ্ঙান প্রতিরোধ করা না গেলে শত শত পরিবার গৃহহীন হবে।
কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ফলুয়ার চর গ্রামের সুরুজ্জামান জানান ত্রিশ বছর আগে ব্রহ্মপুত্র নদী ছিল ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার প্রস্ত, কিন্তু সেই নদীর পরিধি এখন ১৭ কিলোমিটারের উপরে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, হাফিজুল হক জানান, চরাঞ্চলে ভ্ঙান প্রতিরোধ আপাতত কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানান পানি, তবে ভ্ঙান ঝুঁকিতে থাকা এলাকাগুলো জরিপ করে ঠেকানো পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এদিকে, পানি ও জলবায়ু বিজ্ঞানী ড, আইনুন নিশাত জানান, তিস্তা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদী অনেকটাই ভিন্ন প্রকৃতির। এই নদীগুলোতে বর্ষা মৌসুমে প্রচার পরিমানে বালি ও পলি পড়ে নাব্য হারিয়ে ফেলে। একারনে সারাবছরই নদীভ্ঙান থাকে। এজন্য নদীভ্ঙান প্রতিরোধ প্রয়োজন নদীর গতিপ্রকৃতি বুঝে বিজ্ঞানভিত্তিক টেকসই পরিকল্পনা করে নদীশাসনের মাধ্যমে সহনশীল প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা জানান তিনি। নদীর চর রক্ষায় সরকার ভ্ঙান প্রতিরোধের পাশাপাশি চর উন্নয়ন বোর্ড গঠন করে জীবনমানের উন্নয়নে টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এমনটাই দাবী চরমানুষ জনের।