অর্থ পাচার মামলা
৪ ও ৫ অক্টোবর হাজির হতে নোটিশ
অর্থ পাচার মামলায় তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তার মুখোমুখি হচ্ছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে জানিয়ে ইউনূসসহ ওই মামলার ৮ আসামিকে তলব করেছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। আগামী ৪ এবং ৫ অক্টোবর পৃথকভাবে ৪ জন করে ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত কর্মকর্তা।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ড. ইউনূসসহ ৮ জনকে তলবি নোটিশ গত ২৭ সেপ্টেম্বর পাঠানো হয়। তবে তলবের বিষয়টি মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) প্রকাশ করেন ইউনূসের আইজীবী। যদিও তলবি নোটিশের বিষয়টি দুদক থেকে ‘গোপন রাখা’ হয়েছে।
দুদকের এক নিরভর্যোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৪ অক্টোবর ৪ জনকে এবং ৫ অক্টোবর আরও ৪ জনকে হাজির হতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানা, পারভীন মাহমুদ, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এবং এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।
ইউনূসের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদসহ ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে ২৫.২২ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। আগামী ৪ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টায় উপর্যুক্ত বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কার্যে সহযোগিতা করতে আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানাকে ৫ অক্টোবর হাজির থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে পারভীন মাহমুদ, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এবং এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী এ ৪ পরিচালককে ৪ অক্টোবর হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
গত ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। ইউনূস ছাড়াও ওই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও শ্রমিক প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করেছেন বলে ড. ইউনূসকে ডেকেছেন। আসা না আসা সেটা তার ব্যাপার।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি কমিশনের কাজ নয়। কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় মামলা হবে কি, হবে না। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে, এখন তদন্ত কর্মকর্তা ঠিক করবেন কাকে তিনি ডাকবেন। তিনি যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকেই ডাকবেন। এটা তার নিজস্ব বিষয়। তলবের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আমি জেনেছি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি করা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ‘তাকে হয়রানি কেন করা হবে? শ্রমিকদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে কারখানা পরিদপ্তর থেকে তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে দুদক তদন্ত করেছে এবং মামলা হয়েছে। এটাকে হয়রানি কেন বলছেন?’
ড. ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে ২০২২ সালের ৯ মে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকম বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। ওই বছরের ২৭ এপ্রিল গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি হয়। গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত ৯ মে হলেও হিসাব খোলা হয় একদিন আগে ৮ মে। সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। এ রকম ভুয়া সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোডের্রর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
পরবর্তী সময়ে সে বছরের ২২ জুন অনুষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসাবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা দেয়ার বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয়। অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামীয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের পূর্বেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়েই অসৎ উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামানের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে মোট ৩ কোটি টাকা, সিবিএ নেতা মাইনুল ইসলামের হিসাবে ৩ কোটি ও সিবিএ নেতা ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।
একইভাবে অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দ্য সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে ৫ কোটি টাকা এবং অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ ও অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ হিসাবে ৬ কোটি স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না।
দুদকের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং অ্যাডভোকেটসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসৎ উদ্দেশ্যে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত লঙ্ঘন করে জালিয়াতির আশ্রয় গ্রামীণ টেলিকম থেকে ওই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
অর্থ পাচার মামলা
৪ ও ৫ অক্টোবর হাজির হতে নোটিশ
মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩
অর্থ পাচার মামলায় তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তার মুখোমুখি হচ্ছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে জানিয়ে ইউনূসসহ ওই মামলার ৮ আসামিকে তলব করেছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। আগামী ৪ এবং ৫ অক্টোবর পৃথকভাবে ৪ জন করে ৮ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত কর্মকর্তা।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ড. ইউনূসসহ ৮ জনকে তলবি নোটিশ গত ২৭ সেপ্টেম্বর পাঠানো হয়। তবে তলবের বিষয়টি মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) প্রকাশ করেন ইউনূসের আইজীবী। যদিও তলবি নোটিশের বিষয়টি দুদক থেকে ‘গোপন রাখা’ হয়েছে।
দুদকের এক নিরভর্যোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৪ অক্টোবর ৪ জনকে এবং ৫ অক্টোবর আরও ৪ জনকে হাজির হতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানা, পারভীন মাহমুদ, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এবং এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।
ইউনূসের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদসহ ১৩ জন আসামির বিরুদ্ধে ২৫.২২ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। আগামী ৪ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টায় উপর্যুক্ত বিষয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য দুদক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কার্যে সহযোগিতা করতে আপনাকে অনুরোধ করা হলো।
দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানাকে ৫ অক্টোবর হাজির থাকতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে পারভীন মাহমুদ, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এবং এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী এ ৪ পরিচালককে ৪ অক্টোবর হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
গত ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। ইউনূস ছাড়াও ওই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও শ্রমিক প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।
এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করেছেন বলে ড. ইউনূসকে ডেকেছেন। আসা না আসা সেটা তার ব্যাপার।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি কমিশনের কাজ নয়। কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় মামলা হবে কি, হবে না। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে, এখন তদন্ত কর্মকর্তা ঠিক করবেন কাকে তিনি ডাকবেন। তিনি যাকে প্রয়োজন মনে করবেন তাকেই ডাকবেন। এটা তার নিজস্ব বিষয়। তলবের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর আমি জেনেছি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি করা হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, ‘তাকে হয়রানি কেন করা হবে? শ্রমিকদের লভ্যাংশ আত্মসাতের অভিযোগের ভিত্তিতে কারখানা পরিদপ্তর থেকে তদন্ত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে দুদক তদন্ত করেছে এবং মামলা হয়েছে। এটাকে হয়রানি কেন বলছেন?’
ড. ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে ২০২২ সালের ৯ মে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকম বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ১০৮তম বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় হিসাব খোলা হয়। ওই বছরের ২৭ এপ্রিল গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনা লভ্যাংশ বিতরণের জন্য গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্ট চুক্তি হয়। গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সভার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত ৯ মে হলেও হিসাব খোলা হয় একদিন আগে ৮ মে। সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টেও ৮ মে ব্যাংক হিসাব দেখানো আছে, যা বাস্তবে অসম্ভব। এ রকম ভুয়া সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত অনুযায়ী ও ১০৮তম বোডের্রর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
পরবর্তী সময়ে সে বছরের ২২ জুন অনুষ্ঠিত গ্রামীণ টেলিকমের ১০৯তম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ফি হিসাবে অতিরিক্ত ১ কোটি ৬৩ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৯ টাকা দেয়ার বিষয়টি অনুমোদন দেয়া হয়। অন্যদিকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাব থেকে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন নামীয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের লোকাল অফিসের হিসাব থেকে তিন দফায় মোট ২৬ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা স্থানান্তর করা হয়।
কিন্তু কর্মচারীদের লভ্যাংশ বিতরণের পূর্বেই তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের না জানিয়েই অসৎ উদ্দেশ্যে ২০২২ সালের মে ও জুন মাসের বিভিন্ন সময়ে সিবিএ নেতা মো. কামরুজ্জামানের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখার হিসাবে মোট ৩ কোটি টাকা, সিবিএ নেতা মাইনুল ইসলামের হিসাবে ৩ কোটি ও সিবিএ নেতা ফিরোজ মাহমুদ হাসানের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক মিরপুর শাখার হিসাবে ৩ কোটি টাকা স্থানান্তর করা হয়।
একইভাবে অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের ধানমন্ডি শাখার হিসাবে ৪ কোটি টাকা ও দ্য সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখার হিসাবে ৫ কোটি টাকা এবং অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ ও অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলীর স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের গুলশান নর্থ শাখায় যৌথ হিসাবে ৬ কোটি স্থানান্তর করা হয়, যা তাদের প্রাপ্য ছিল না।
দুদকের রেকর্ডপত্র অনুযায়ী, অ্যাডভোকেট ফি হিসেবে প্রকৃতপক্ষে হস্তান্তরিত হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। বাকি ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বোর্ড সদস্যদের সহায়তায় গ্রামীণ টেলিকমের সিবিএ নেতা এবং অ্যাডভোকেটসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অসৎ উদ্দেশ্যে সেটেলমেন্ট অ্যাগ্রিমেন্টের শর্ত লঙ্ঘন করে জালিয়াতির আশ্রয় গ্রামীণ টেলিকম থেকে ওই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।