image

আনোয়ারার শুঁটকিপল্লী জমজমাট

রোববার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
প্রতিনিধি, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় পরিবার নিয়ে জেলেরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রূপচাঁদা, ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্টা, পোপা, চিংড়ি, ছুড়িসহ বিভিন্ন মাছের শুঁটকি তৈরীতে। আর কম দামে এসব শুঁটকি কিনে আসল স্বাদ পেতে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তসহ চট্টগ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী,আড়তদার এবং খুচরা ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছেন সমুদ্রের উপকূলে। সরকারি পর্যবেক্ষণ, অনুদানের মাধ্যমে যদি এই শিল্পের প্রতি সদৃষ্টি দেওয়া হয় তাহলে এই শিল্পকে অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন গহিরা এলাকার শুঁটকি কারিগর এবং ক্রেতারা।

সরেজমিনে উপজেলার উপকূলের উঠান মাঝির ঘাটে দেখা যায়, চাঠাই, প্লাস্টিক বিছিয়ে শুকানো হচ্ছে ছোটো ছোটো নানা রকমের মাছ। জেলেরা বাতাসের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ঝেরে ঝেরে ছোটো শুকনা চিংড়ি শুঁটকি গুলো থেকে ময়লা আবর্জনা আলাদা করছে। আর ছোটো ছোটো মেয়েরা ছোটো-বড় শুঁটকি আলাদা আলাদা করে বেছে রাখছে। আবার অনেকেই দেখা যায়,বাঁশ দিয়ে মাচা তৈরি করে টাঙ্গিয়ে টাঙ্গিয়ে শুকাচ্ছে ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্টা ও পোপা মাছসহ হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ। জেলেরা সারিবদ্ধ ভাবে বেঁধে বেঁধে এসব মাছ শুকাচ্ছে। শুটকি তৈরি হওয়ার পর ড্রাম,লাই,বস্তায় ভরে ট্রাকে করে এসব নেওয়া হচ্ছে আশেপাশের হাটবাজারসহ বিভিন্ন জেলায়। চিংড়ি মাছের শুটকি তৈরি কারী মোহাম্মদ আব্দুন্নবী জানান, আমরা এখানে প্লট ভাগ করে করে তেরপাল, প্লাস্টিক দিয়ে চিংড়ি শুকানোর জন্য তা প্রস্তুত করি। তারপর সাগর থেকে চিংড়ি এনে বিক্রি করা জেলেদের থেকে চিংড়ি মাছ কিনে তেরপালে শুকিয়ে শুঁটকি তৈরী করি। প্রতিবছর এই ঘাটে প্রায় ২-৩ হাজার মনুষ এই শুঁটকি তৈরী করার কাজে নিয়োজিত থাকে। আমাদের প্লটে আছে ৩০-৩৫ জন। এই শুটকি ১দিনেই তৈরি হয়ে যায়, এগুলো আমরা কেজি ৬০০-৮০০ পর্যন্ত বিক্রি করি। ১০-১১ দিন পর পর তেরপালসহ সব কিছু পরিবর্তন করে আবার নতুন করে জায়গা তৈরি করি। এরকম এক ডালায় আমাদের শ্রমিকের মজুরি, মাছের দাম,জিনিসপত্র সব মিলে লাখ টাকার উপর খরচ হয়। তবে সব মিলিয়ে বেশির ভাগ সময় লাখ-দেড় লাখ টাকা লাভ হয়। এইভাবে শীত মৌসুমে ৩-৪মাস পর্যন্ত এই শুঁটকি তৈরীর কাজ চলবে বলেও তিনি জানান।

ব্যবসায়ীরা জানান, এখানকার শুঁটকি বিক্রি হয় চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকার শুঁটকির আডতগুলোতে। একেকটি শুঁটকি মহাল সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ মণ শুঁটকি বিক্রি করে। কোন ধরনের কীটনাশক প্রযোগ ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত এসব শুঁটকির দেশের বিভিন্ন স্থানপ ব্যাপক চাহিদা রযেছে বলে এখনকার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান।

এই বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল হক বলেন,শীত মৌসুমের শুরু থেকেই উপজেলার উপকূলে শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে। গত বছর ৫০ টন মতো শুঁটকি উৎপাদন করা হলেও এবার উৎপাদন বেড়ে ৭০ টন মতো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদনের ক্ষেত্রে শুঁটকি ব্যবসায়ীদেরও সচেতনতামূলক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং ডিডিটি পাউডার বা কীটনাশক না মেশালে শুঁটকির প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায় বলেও তিনি জানান।

‘সারাদেশ’ : আরও খবর

» সিলেটে চোরাই হওয়া ৪২২টি মোবাইল উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪

» মহেশখালীতে যৌথ অভিযানে অস্ত্রসহ শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার

» চৌগাছায় নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের অর্ধগলিত লাশ পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার

» হাদি হত্যা: ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের ২ নেতার বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ

» জমি-জমার বিরোধসহ তিন-চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ

» শওকত মাহমুদ রিমান্ড শেষে কারাগারে

» হাদি হত্যার প্রতিবাদে জামালপুরে রেলপথ ও সড়ক অবরোধ

সম্প্রতি