কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে কাঁচা রাস্তায় মাঝে মাঝে গর্ত থাকায় হাজারো মানুষ বছরের পর বছর ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলো যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৈশাখ মাসে বড় হাওরের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান গোলায় তুলতে বিপাকে পড়েন। সড়কের দৈন্যদশায় কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না। যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় শিক্ষকরাও এ গ্রামের বিদ্যালয়ে বেশী দিন থাকতে চান না। ফলে অন্য এলাকার চেয়ে এখানকার শিক্ষার হার অনেকটাই কম। এলাকাবাসী নিত্য ভোগান্তি নিরসনে রাস্তা পাকা করার জোর দাবি জানিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু জানান, বড় হাওরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় রাস্তাটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সরেজমিনে রাস্তাটি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কদমতলী পাকা রাস্তা থেকে বড় হাওর পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। আশপাশের অনেক রাস্তা পাকা হলেও অতি প্রয়োজনীয় এ রাস্তাটি পাকা করা হয়নি। ফলে হাওরের একমাত্র বোরো ফসল ঘরে তোলতে বিপাকে পড়েন শত শত কৃষক। অপরদিকে কদমতলী থেকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চারুয়াকান্দি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কারণে চরম ভোগান্তিতে বসবাস এলাকাবাসী। সামান্য বৃষ্টি হলে কাঁচা রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তখন মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ থাকে না। তখন সামান্য অটোরিকসাও পিছন দিক থেকে ঠেলে সামনে নিতে হয়। আর টমটম ও ট্রাক চলাচল করলে মাঝে মাঝে আটকা পড়ে যায়। সারাদিন চেষ্টা করেও সরানো কঠিন হয়ে পড়ে। তখন এ রাস্তায় অন্য যানবাহন একেবারেই চলাচল করতে পারে না। কাঁচা রাস্তা থাকায় গর্ভবতী মা ও রোগীরা পড়েন চরম বিপাকে। স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কদমতলী পাকা রাস্তা থেকে বড় হাওর মাত্র ৭০০ মিটার কাঁচা রাস্তার কারণে বৈশাখ মাসে বড় হাওরের বোরো ধান গোলায় তুলতে বিপাকে পড়তে হয়। তখন সড়কে হাঁটু সমান কাদা পানি একাকার হয়ে পড়ে। তখন যানবাহন চলাচল করেনা। বাধ্য হয়ে কৃষকরা কৃষি শ্রমিক চড়া মজুরি দিয়ে ধান গোলায় তোলতে বাধ্য হন। এতে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। আবার ধান বিক্রির সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় ঠিকমতো দরদাম পায় না কৃষকরা। এতে ওই এলাকার কৃষকরা বছরের পর বছর ধরে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
অপরদিকে কদমতলী থেকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চারুয়াকান্দি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কারণে হাজার হাজার মানুষের নিত্য দিনের ভোগান্তি নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে সমস্যায় পড়েন। আর এখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় বিদ্যালয়ে বেশী দিন থাকতে চান না। স্বাধীনতার এতো বছর পরেই রাস্তা খারাপ থাকায় এলাকার শিক্ষার হার অন্য এলাকার চেয়ে কম বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
দক্ষিণ নানশ্রী গ্রামের গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে আমরা বড় হাওরের ধান অতিরিক্ত খরচ করে পরিবহন করতে হয়। আর সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না’।
দক্ষিণ নানশ্রী গ্রামের বাসিন্দা সিংগাপুর প্রবাসী আরাফাত জানান, রাস্তাটি খারাপ থাকায় এলাকাটি পুরোপুরি অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। তিনি রাস্তাটি পাকা করার জোর দাবি জানান। স্থানীয় অটোরিকসা চালক আব্দুল আওয়াল জানান, বৃষ্টি হলে অটোরিকসা ঘরে রাখতে হয়। কোনো রোগী হলেও তখন পরিবহন করা যায় না বলে তিনি জানান। দক্ষিণ নানশ্রী গ্রামের রাজমিস্ত্রী মাসুদ মিয়া জানান, কাঁচা ও বেহাল রাস্তার কারণে তাদের ভোগান্তির কোনো শেষ নাই বলে তিনি জানান। করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু জানান, জয়কা এলাকার অনেক রাস্তায় পাকাকরণ করা হয়েছে। বড় হাওরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় রাস্তাটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে নিমার্ণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।
মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে কাঁচা রাস্তায় মাঝে মাঝে গর্ত থাকায় হাজারো মানুষ বছরের পর বছর ধরে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাগুলো যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বৈশাখ মাসে বড় হাওরের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান গোলায় তুলতে বিপাকে পড়েন। সড়কের দৈন্যদশায় কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না। যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় শিক্ষকরাও এ গ্রামের বিদ্যালয়ে বেশী দিন থাকতে চান না। ফলে অন্য এলাকার চেয়ে এখানকার শিক্ষার হার অনেকটাই কম। এলাকাবাসী নিত্য ভোগান্তি নিরসনে রাস্তা পাকা করার জোর দাবি জানিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু জানান, বড় হাওরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় রাস্তাটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সরেজমিনে রাস্তাটি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের কদমতলী পাকা রাস্তা থেকে বড় হাওর পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। আশপাশের অনেক রাস্তা পাকা হলেও অতি প্রয়োজনীয় এ রাস্তাটি পাকা করা হয়নি। ফলে হাওরের একমাত্র বোরো ফসল ঘরে তোলতে বিপাকে পড়েন শত শত কৃষক। অপরদিকে কদমতলী থেকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চারুয়াকান্দি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কারণে চরম ভোগান্তিতে বসবাস এলাকাবাসী। সামান্য বৃষ্টি হলে কাঁচা রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তখন মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ থাকে না। তখন সামান্য অটোরিকসাও পিছন দিক থেকে ঠেলে সামনে নিতে হয়। আর টমটম ও ট্রাক চলাচল করলে মাঝে মাঝে আটকা পড়ে যায়। সারাদিন চেষ্টা করেও সরানো কঠিন হয়ে পড়ে। তখন এ রাস্তায় অন্য যানবাহন একেবারেই চলাচল করতে পারে না। কাঁচা রাস্তা থাকায় গর্ভবতী মা ও রোগীরা পড়েন চরম বিপাকে। স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কদমতলী পাকা রাস্তা থেকে বড় হাওর মাত্র ৭০০ মিটার কাঁচা রাস্তার কারণে বৈশাখ মাসে বড় হাওরের বোরো ধান গোলায় তুলতে বিপাকে পড়তে হয়। তখন সড়কে হাঁটু সমান কাদা পানি একাকার হয়ে পড়ে। তখন যানবাহন চলাচল করেনা। বাধ্য হয়ে কৃষকরা কৃষি শ্রমিক চড়া মজুরি দিয়ে ধান গোলায় তোলতে বাধ্য হন। এতে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। আবার ধান বিক্রির সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় ঠিকমতো দরদাম পায় না কৃষকরা। এতে ওই এলাকার কৃষকরা বছরের পর বছর ধরে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
অপরদিকে কদমতলী থেকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চারুয়াকান্দি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার কারণে হাজার হাজার মানুষের নিত্য দিনের ভোগান্তি নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামের কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয়ে যেতে সমস্যায় পড়েন। আর এখানকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় বিদ্যালয়ে বেশী দিন থাকতে চান না। স্বাধীনতার এতো বছর পরেই রাস্তা খারাপ থাকায় এলাকার শিক্ষার হার অন্য এলাকার চেয়ে কম বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
দক্ষিণ নানশ্রী গ্রামের গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে আমরা বড় হাওরের ধান অতিরিক্ত খরচ করে পরিবহন করতে হয়। আর সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় আমাদের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না’।
দক্ষিণ নানশ্রী গ্রামের বাসিন্দা সিংগাপুর প্রবাসী আরাফাত জানান, রাস্তাটি খারাপ থাকায় এলাকাটি পুরোপুরি অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। তিনি রাস্তাটি পাকা করার জোর দাবি জানান। স্থানীয় অটোরিকসা চালক আব্দুল আওয়াল জানান, বৃষ্টি হলে অটোরিকসা ঘরে রাখতে হয়। কোনো রোগী হলেও তখন পরিবহন করা যায় না বলে তিনি জানান। দক্ষিণ নানশ্রী গ্রামের রাজমিস্ত্রী মাসুদ মিয়া জানান, কাঁচা ও বেহাল রাস্তার কারণে তাদের ভোগান্তির কোনো শেষ নাই বলে তিনি জানান। করিমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার বসু জানান, জয়কা এলাকার অনেক রাস্তায় পাকাকরণ করা হয়েছে। বড় হাওরের সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় রাস্তাটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। রাস্তাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে নিমার্ণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।