alt

সারাদেশ

একটি রাস্তা নির্মাণে চাষাবাদের আওতায় ১২শ বিঘা জমি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ : বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

গোপালগঞ্জ : টুঙ্গিপাড়া বর্ণি-গোপালপুর সড়ক -সংবাদ

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ২টি ইউনিয়ন বর্ণি ও গোপালপুর। এই দু’ ইউনিয়নের মাঝে ৫ শ’ কৃষকের ১ হাজার ২শ’ বিঘা জমি নিম্ন জলাভূমি বেষ্টিত। বছরের অধিকাংশ সময় এসব জমি জলাবদ্ধ থাকত। প্রায় ২৫ বছর যাবৎ এখানে চাষাবাদ হয় না। এ বিলের পানি একটু শুকাতেই প্রাকৃতিকভাবে হোগলা জন্ময়। তাই বিস্তীর্ণ এই জায়গাটির নাম হোগলার বিল। এ বিলের এপার ওপারে মাছের ঘেরে নৌকায় চলাচল করতে হত। কচুরিপানা ঠেলে ঘেরে নৌকায় যাওয়া আসা করতে কয়েক ঘন্টা সময় লাগত। তাই বিলের মাঝে একটি রাস্তা নির্মাণের বহু বছরের দাবি ছিল দু’ ইউনিয়নের অন্তত ৫ হাজার বাসিন্দার। অবশেষে তাদের দাবি পুরণ হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই বিলের মাঝে ১ হাজার ২ শ’ ৬৮ মিটার ইটের রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছে। আর তাতেই ১ হাজার ২শ বিঘা জমির চিত্র বদলাতে শুরু করেছে। বর্তমানে ওই রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়েছে। বোরো মৌসুমে জমিতে আবাদ শুরু করেছে কৃষক। আশপাশে গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি। এখন কৃষকরা সহজেই এখানে চাষাবাদ করে তাদের কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। রাস্তার সুবাদে বিলের জায়গার দাম বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ।

বর্নি ইউনিয়নের কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, আগে আমাদের এই বিলে অনেক ধান হত। কিন্তু গত ২৫ বছর ধরে ১ হাজার ২ শ’ বিঘা জমি পতিত হয়ে পড়েছিল। তাই এখানে কোন মানুষ আসত না। এখন এই রাস্তা হওয়াতে আমরা দু’ ইউনিয়নেই সহজে যাওয়া আসা করতে পারি। এখানে অনেক ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের তৈরি হয়েছে। আর কৃষকেরা আবার জমিতে আবাদ শুরু করেছেন। আমরা কষ্টের ফসল সহজেই ঘরে তুলছে পরব। এ রাস্তা নির্মিত হওয়ায় আমরা খুবই খুশি।

দক্ষিণ বর্নি গ্রামের মাছ চাষী মান্নান শেখ বলেন, বিলের ওপারে মিত্রডাঙ্গা গ্রামে আমার একটি মাছের ঘের রয়েছে। কচুরি ঠেলে সেই ঘেরে নৌকা নিয়ে যাওয়া আসা করতে হতো। এতে কয়েকঘন্টা সময় লাগতো ও খুব পরিশ্রম হতো। উৎপাদিত মাছ বাজারজাত করতে সমস্যা হত। এখন ঘেরে মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল ও ভ্যানে করে যেতে পারি। মাছ ও কৃষি পণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারছি। এ রাস্তার জন্য আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।

গোপালপুরের মিত্রডাঙ্গা গ্রামের গৌতম মন্ডল বলেন, এই একটি রাস্তায় আমাদের কপাল খুলে দিয়েছে। এখন আমরা জমিতে ও রাস্তার পাশ দিয়ে শাকসবজি আবাদ করতে পারছি। এছাড়া মাছের ঘের করতে পারছি। আর রাস্তা দিয়ে সহজেই কষ্টের সফল বিক্রি করে টাকা উপার্জন করছি। একটি রাস্তা আমাদের কয়েকগ্রামের মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘব করেছে।

মিত্রডাঙ্গা গ্রামের আরেক কৃষক শক্তিপদ কীর্তনীয়া বলেন, এই রাস্তার কারণে গত এক বছরে অনেক বসতবাড়ি উঠেছে। কারণ লোকজন সহজেই আসা-যাওয়া করতে পারছে। আগে এখানে এক বিঘা জমি (৫২ শতাংশ) বিক্রি হতো মাত্র ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায়। এখন এক বিঘা জমি ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এই রাস্তায় আমাদের মতো কৃষকদের খুব উপকার হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, গোপালপুর ও বর্নি ইউনিয়নের ১ হাজার ২শ’ বিঘা জমি জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদী হিসেবে পড়েছিল। ৫ গ্রামের মানুষের এখানে চলাচলের একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। তাই তাদের দুঃখ লাঘবে কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমে মাটির রাস্তা করে দেয়া হয়। পরে এইচবিবি প্রকল্পের মাধ্যমে মাটির রাস্তা টেকসই করা হয়েছে। এখানে কৃষক ৩ হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন করতে পারছেন। যার বাজার দর ১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সহজেই কৃষক তাদের উৎপাদিত সফল ঘরে তুলতে পারছেন। এ ফসল বাজারজাত করে ন্যয্যমূল্য পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এ রাস্তা নির্মিত হওয়ায় ২ ইউনিয়নের বিল বেষ্টিত এলাকার ১০ হাজার মানুষের উপকৃত হচ্ছেন।

চট্টগ্রামে অবতরণের পর বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি, রানওয়ে বন্ধ ২ ঘণ্টা

বৈদেশিক মুদ্রা ডাকাতি: একজন কারাগারে, রিমান্ডে ৫

আশুরা উপলক্ষে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিহত দুই ভাই

ছবি

‘দুই কোটি টাকা চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে’—পুলিশ কমিশনারকে নারীর চিঠি

বাংলাদেশ লোকগবেষণা পরিষদের আত্মপ্রকাশ

সোনাইমুড়ীকে পৃথক নির্বাচনী আসন করার দাবিতে জামায়াতের মানববন্ধন

কমলগঞ্জে রোজিনা হত্যা মামলার আসামি ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার

মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ লোকাল ট্রেন বন্ধ, বাড়ছে যাত্রী দুর্ভোগ

ছবি

পুর্ব-সুন্দরবনে বিষ দিয়ে ধরা মাছসহ নৌকা আটক

চাটখিল ও সোনাইমুড়ী থানার লুণ্ঠিত আগ্নেয়াস্ত্র এখনো উদ্ধার হয়নি

ভোলায় নেত্রীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন, বিএনপির নেতা বহিষ্কার

বাগেরহাটে পানিতে পড়ে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

ভূমি খাজনা আদায়ে জেলার মধ্যে শীর্ষে সুমানগঞ্জের ছাতক

ছবি

মুন্সীগঞ্জের কাটাখালি খাল সংস্কারে চলছে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

কলমাকান্দায় অনলাইন তীর জুয়াড়িদের গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে একে আজাদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় থানায় এজাহার

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোষ্ঠীগত বিরোধে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, বাজারে লুটপাট-ভাঙচুর

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

ছবি

নির্বিচারে গাছ কাটায় ভালুকায় হারিয়ে গেছে ৫০ প্রজাতির বৃক্ষলতা

ছবি

চিলমারীর তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু চলতি মাসের শেষে খুলে দেয়া হবে

ছবি

সুন্দরবনে কমেছে চোরা শিকারি ও বিষ সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য

দৌলতপুরে অবৈধভাবে নদীর মাটি উত্তোলন করায় জরিমানা

ছবি

নদীতে ভেঙে যাওয়া চর ডাকাতিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পূর্বের গ্রামে প্রতিষ্ঠার দাবি

মীরসরাই প্রাথমিকে ১০৮ পদ শূন্য, পাঠদান ব্যাহত

ছবি

চকরিয়ায় অভয়ারণ্য বনের গাছ কেটে পাকা বাড়ি তৈরির হিড়িক!

ছবি

মাদারীপুরে পানি প্রবাহে খাল খনন শুরু

সিলেটে দুই বাসের সংঘর্ষ, নিহত ১

ফরিদপুরে বিএনপির সদস্য সচিবসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার

ছবি

২০০ বছরের সূর্যপুরী আমগাছ ডালে ডালে ঝুলছে আম

ইলেকট্রিশিয়ানকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

৯ দফা দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন অব্যাহত

উল্টোরথের মাধ্যমে মোহনগঞ্জে শেষ হলো রথযাত্রা উৎসব

রাজশাহীতে হামলা ছিনতাই ও গুলির ঘটনায় আটক ৩

ছবি

শিবচরে আড়িয়ালখাঁ নদের ভাঙন হুমকিতে ৯৭ কোটি টাকার সেতু

পূর্বধলায় বিএনপির মতবিনিময় সভা

tab

সারাদেশ

একটি রাস্তা নির্মাণে চাষাবাদের আওতায় ১২শ বিঘা জমি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ

গোপালগঞ্জ : টুঙ্গিপাড়া বর্ণি-গোপালপুর সড়ক -সংবাদ

বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ২টি ইউনিয়ন বর্ণি ও গোপালপুর। এই দু’ ইউনিয়নের মাঝে ৫ শ’ কৃষকের ১ হাজার ২শ’ বিঘা জমি নিম্ন জলাভূমি বেষ্টিত। বছরের অধিকাংশ সময় এসব জমি জলাবদ্ধ থাকত। প্রায় ২৫ বছর যাবৎ এখানে চাষাবাদ হয় না। এ বিলের পানি একটু শুকাতেই প্রাকৃতিকভাবে হোগলা জন্ময়। তাই বিস্তীর্ণ এই জায়গাটির নাম হোগলার বিল। এ বিলের এপার ওপারে মাছের ঘেরে নৌকায় চলাচল করতে হত। কচুরিপানা ঠেলে ঘেরে নৌকায় যাওয়া আসা করতে কয়েক ঘন্টা সময় লাগত। তাই বিলের মাঝে একটি রাস্তা নির্মাণের বহু বছরের দাবি ছিল দু’ ইউনিয়নের অন্তত ৫ হাজার বাসিন্দার। অবশেষে তাদের দাবি পুরণ হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণ (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই বিলের মাঝে ১ হাজার ২ শ’ ৬৮ মিটার ইটের রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছে। আর তাতেই ১ হাজার ২শ বিঘা জমির চিত্র বদলাতে শুরু করেছে। বর্তমানে ওই রাস্তার পাশে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়েছে। বোরো মৌসুমে জমিতে আবাদ শুরু করেছে কৃষক। আশপাশে গড়ে উঠেছে বসতবাড়ি। এখন কৃষকরা সহজেই এখানে চাষাবাদ করে তাদের কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। রাস্তার সুবাদে বিলের জায়গার দাম বেড়েছে প্রায় ৪ গুণ।

বর্নি ইউনিয়নের কৃষক ফরহাদ হোসেন বলেন, আগে আমাদের এই বিলে অনেক ধান হত। কিন্তু গত ২৫ বছর ধরে ১ হাজার ২ শ’ বিঘা জমি পতিত হয়ে পড়েছিল। তাই এখানে কোন মানুষ আসত না। এখন এই রাস্তা হওয়াতে আমরা দু’ ইউনিয়নেই সহজে যাওয়া আসা করতে পারি। এখানে অনেক ঘরবাড়ি ও মাছের ঘের তৈরি হয়েছে। আর কৃষকেরা আবার জমিতে আবাদ শুরু করেছেন। আমরা কষ্টের ফসল সহজেই ঘরে তুলছে পরব। এ রাস্তা নির্মিত হওয়ায় আমরা খুবই খুশি।

দক্ষিণ বর্নি গ্রামের মাছ চাষী মান্নান শেখ বলেন, বিলের ওপারে মিত্রডাঙ্গা গ্রামে আমার একটি মাছের ঘের রয়েছে। কচুরি ঠেলে সেই ঘেরে নৌকা নিয়ে যাওয়া আসা করতে হতো। এতে কয়েকঘন্টা সময় লাগতো ও খুব পরিশ্রম হতো। উৎপাদিত মাছ বাজারজাত করতে সমস্যা হত। এখন ঘেরে মোটর সাইকেল, বাই সাইকেল ও ভ্যানে করে যেতে পারি। মাছ ও কৃষি পণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারছি। এ রাস্তার জন্য আমাদের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।

গোপালপুরের মিত্রডাঙ্গা গ্রামের গৌতম মন্ডল বলেন, এই একটি রাস্তায় আমাদের কপাল খুলে দিয়েছে। এখন আমরা জমিতে ও রাস্তার পাশ দিয়ে শাকসবজি আবাদ করতে পারছি। এছাড়া মাছের ঘের করতে পারছি। আর রাস্তা দিয়ে সহজেই কষ্টের সফল বিক্রি করে টাকা উপার্জন করছি। একটি রাস্তা আমাদের কয়েকগ্রামের মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘব করেছে।

মিত্রডাঙ্গা গ্রামের আরেক কৃষক শক্তিপদ কীর্তনীয়া বলেন, এই রাস্তার কারণে গত এক বছরে অনেক বসতবাড়ি উঠেছে। কারণ লোকজন সহজেই আসা-যাওয়া করতে পারছে। আগে এখানে এক বিঘা জমি (৫২ শতাংশ) বিক্রি হতো মাত্র ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায়। এখন এক বিঘা জমি ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এই রাস্তায় আমাদের মতো কৃষকদের খুব উপকার হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, গোপালপুর ও বর্নি ইউনিয়নের ১ হাজার ২শ’ বিঘা জমি জলাবদ্ধতার কারণে অনাবাদী হিসেবে পড়েছিল। ৫ গ্রামের মানুষের এখানে চলাচলের একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। তাই তাদের দুঃখ লাঘবে কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমে মাটির রাস্তা করে দেয়া হয়। পরে এইচবিবি প্রকল্পের মাধ্যমে মাটির রাস্তা টেকসই করা হয়েছে। এখানে কৃষক ৩ হাজার ৬শ’ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন করতে পারছেন। যার বাজার দর ১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সহজেই কৃষক তাদের উৎপাদিত সফল ঘরে তুলতে পারছেন। এ ফসল বাজারজাত করে ন্যয্যমূল্য পেয়ে লাভবান হচ্ছেন। এ রাস্তা নির্মিত হওয়ায় ২ ইউনিয়নের বিল বেষ্টিত এলাকার ১০ হাজার মানুষের উপকৃত হচ্ছেন।

back to top