alt

যমুনার চরে বৈচিত্র্যময় সবুজ ফসলের সমারোহ

হাবিবুর রহমান, যমুনার চর থেকে ফিরে : বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

দক্ষিণে দেশখ্যাত বঙ্গবন্ধু সেতু। পশ্চিমে যমুনা নদী আর সিরাজগঞ্জ জেলা। উত্তরে যমুনার বিস্তীর্ণ চর আর চর। পূর্বে টাঙ্গাইল জেলা। এরমধ্যে অর্জুনা আর গাবসারা দুইটি ইউনিয়নের কয়েকটি চর। যমুনার পলিবাহিত ধূ-ধূ বালুচর। চারদিকে যমুনা নদী বেষ্টিত। মাঝখানে বড় দুটি ইউনিয়নে বসতি গড়েছে অনেক আগেই। যদিও বর্ষায় থাকে থৈ থৈ জল আর জল। উজান থেকে নেমে আসা গ্রোতে চরগুলো ডুবে যায় বিশাল জলরাশিতে। নৌকায় এপার ওপার যাতায়াত এ জনপদের মানুষের। আর শুকনো মৌসুমে চরাঞ্চলের উর্বর মৃত্তিকায় ফুঁসে উঠে কৃষি ফসলের বৈচিত্র। যেন সবুজের বৈচিত্রময় সমারোহ। চরে মাথা উঁচু করে জেগে উঠে নানা ফসল। পলিবাহিত থাকার কারণে চরের উর্বরতা শক্তি অনেক বেশি। চরে চরে ভুট্টা, বাদাম,আলু, মাসকালাই,মরিচ, মুলা, শিম,লাউ,জিরা, সজ, পেয়াজ, রসুন, গম, কাউন, গবাদিপশু পশুখাদ্য ঘাসসহ নানা ফসলের দিগন্ত জুড়া সবুজ আর সবুজ। চরের বাড়িগুলো ছোট ছোট খামার। প্রতি বাড়ির আঙিনা আর পালানে সবজি। গরু ছাগল পালন। চরের নারী পুরুষ সমান তালে মাঠ ঘাটে কাজ করে। বর্ষার ৬ মাস তাদের তেমন কাজ থাকে না। ৬ মাস কাজ করে খাবার আর অর্থের যোগান নিয়ে রাখে। সংসারে স্বচ্ছলতার জন্য তারা কাজ করে। মাঠেও নারীরা পুরুষের সঙ্গে কাজ করে থাকে। এমনটা জানা গেছে চর শুশুয়া, অর্জুনা, চর গোবিন্দসহ কয়েক চরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে। টাঙ্গাইলের ভুইয়াপুরের দুটি ইউনিয়ন অর্জুনা আর গাবসারা। অর্জুনা ইউনিয়নটি গোপালপুর আর ভুইয়াপুরের পশ্চিমে আর গাবসারা ভুইয়াপুরের পশ্চিমে অবস্থিত। দুটি ইউনিয়নই চর আর আর। স্থানীয়রা চরাঞ্চল হিসেবে চিনে থাকে। এ সব চর বহু পুরানো। ভাঙা গড়ার খেলার মতো। এবার এখানে চর। আবার সরে যায়। নদী ভাঙার উপর চরের নিশানা। চরের জমি জমা নিয়েও অনেক সময় ঝগড়া বিবাদ হয়। দখল নিয়ে দেখা দেয় বিরোধ বিবাদ। পলি পড়ে মৃত্তিকা হয় উর্বর। ফসলের জন্য পলিজমা মাটি ব্যাপক উর্বর। কৃষি ফসলের জন্য যেন সৃষ্টি কর্তার আশীর্বাদ। ফোলে ফেঁপে ফুঁসে উঠে ফসল। ফলনও আসে ভালো। এসব তথ্য চরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের রবি মৌসুমে ভুইয়াপুর উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছে ৩৫৭০ হেক্টর। এর মধ্যে উফসী ২৫৯৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৯৭৫ হেক্টর। ভুট্টা ২৮৫১ হেক্টর, চিনাবাদাম ১৩২০ হেক্টর, মুসুর ৫২২, খেসারি ১০১২ হেক্টর, কালোজিরা ১০ হেক্টর, মিষ্টি আলু ৫৭ হেক্টর, মরিচ ৮৫ হেক্টর, শাকসবজি ৪৭০ হেক্টর, পেয়াজ ৫২ হেক্টর, আলু ৩৮ হেক্টর, রসুন ৩৪ হেক্টর, ধনিয়া ২৪ হেক্টর, গম ৪৮০ হেক্টর, মাষকালাই ১২২৪ ও রোপা আমন ৬১১৫ হেক্টর।

সরেজমিনে অর্জুনা আর গাবসারা ইউনিয়নে গিয়ে জানা যায়, চরাঞ্চলের কৃষি ফসল চাষের নানা কথা। নলিন থেকে নৌকা যমুনা নদী পার হলে চরশুশুয়া গ্রাম। নদীর পাড় উঠে দেখা যায় সবুজ আর সবুজ। দুই পাশে শস্য ভান্ডার মাঝ খানে মেঠো পথ। ডানপাশে মাসকালাই বাম পাশে ভুট্টার খেত। সামনে এগিয়ে দেখা আহাম্মদ খান (৫৫) আলী নামের এক কৃষকের সঙ্গে। তার হাতে কাস্তে আর রশি। তার কথা বলে জানা গেল, তাদের এলাকার নাম ভিন্ন ভিন্ন চরের নামে। তারমতে, এ সব চরে এ সময়ে গম,ভুট্টা, সজ, সবজি, মরিচ, মুলা, ধান, শিম, লাউসহ বিভিন্ন কৃষি ফসলের চাষ হয়। তিনি হাত দিয়ে দূরে দেখালেন ঐ চরে তার ২ বিঘা মরিচের চাষ। এখানে তার মাষকালাই তিন বিঘা, ধান দেড় বিঘা, ৫ বিঘা ভুট্টার আবাদ। এখন মাষকালাই তোলার জন্য এসেছে। তিনি জানালেন, চরে চাষ করতে তেমন সার লাগে না। অল্প খরচে অধিক ফসল পাওয়া যায়।

চর শ^শুয়া গ্রামে গিয়ে কথা হয়। সরকারি ইবরাহীম খা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানালেন এ চরের প্রায় সবাই কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। কম বেশি সবাই কৃষি কাজ করে। চরাঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি কাজ। তার বাবাও একজন কৃষক। তাদের সব ধরনের ফসল চাষ করে। তারমতে, কম খরচে অধিক ফসল পাওয়া যায়। চরে বেশি চাষ হয় ভতা। ভালো লাভ পান চরের কৃষকরা। রাজীব মিয়া(২৩) নামের এক কৃষক জানালেন, এবার তিনি চরে তিন বিঘা ভুট্টা, দুই বিঘা মাষকালাই ও ১৫ শতাংশ কালো জিরা চাষ করেছে। শুধু রাজীব, আব্দুর রহমান, গোলাম রব্বানী, জাহাঙ্গীর আলমই নন তাদের মত চর তালতলা, চর শুশুয়া, বেহারির চর, জঙ্গিচর, চরসোহাগভাগা, চরকালিপুর, চরচন্দনি, চরবাসুদেবসহ বিভিন্ন চরের মানুষ তারা কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। কৃষি কাজ করে চলে তাদের জীবন জীবিকা। প্রতিবছর তারা কৃষি কাজে ভালো লাভ পান। বাড়িতে গবাদিপশু পালন করেও লাভ পেয়ে থাকে । বর্ষাকালে কৃষি ফসল, কাজ থাকে না বিধায় এ মৌসুমে কৃষি ফসলের সঙ্গে বাড়ি হাঁস মুরগি গরু ছাগল ভেড়া ঘোড়া পালন করে। বর্ষার আগেই গবাদিপশু বিক্রি করে দেয়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব জানালেন, চরের কৃষকদের সরকারি কৃষি সেবা প্রণোদনা দেয়া হয়ে থাকে । তবে সবাই পান না। চরের পলি উর্বর থাকার কারণে সোনা ফলে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ঘোড়া গাড়ী আর মাথা করে চরের ফসল বাড়িতে উঠাতে হয়। এ সময়ে চরের সবুজ ফসলে ভরা।

ভুইয়াপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, চরাঞ্চলে কিছু কিছু কৃষি ফসলের জন্য বিশেষ উপযোগি। বাদাম, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, মরিচসহ অন্যান্য ফসলে ভালো জন্মে। বন্যায় চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পলি পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে কৃষি ফসল ভালো ফলন হয়ে থাকে। তিনি জানান, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের রবি মৌসুমে ভুইয়াপুর উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছে ৩৫৭০ হেক্টর।

ছবি

সিলেট জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আটক

ছবি

সুনামগঞ্জে জমি থেকে ৫ কোটি টাকার বালু চুরির অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

সাগরে প্রথম জাল ফেলেই ১৪০ মণ ইলিশ ধরলো জেলেরা

ছবি

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে রোহিঙ্গা যুবকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার

‘গুলির শব্দ শুনে’ অভিযান: অভিনেতা মন্টুর ছেলেসহ চারজন কারাগারে

ছবি

অবশেষে সংরক্ষণের কাজ চলছে দিনাজপুরের ভগ্নপ্রায় সেই রাজবাড়ির

ছবি

মোন্থার প্রভাবে ৩ বিভাগে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে ‘নিখোঁজ’ ডিআইজি এহসানউল্লাহ

ছবি

অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ

জয়দেবপুর রেলক্রসিং: দোকান আর অটোরিকশার দাপট, জনদুর্ভোগ চরমে

স্বল্পমূল্যের ওএমএস আটা: দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও অধিকাংশই ব্যর্থ

ছবি

বিশ্বে ভূপৃষ্টের তাপমাত্রা ক্রমেই বাড়ছে

ছবি

যুদ্ধ বন্ধের আশা হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা

ভোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু

ছবি

জয়পুরহাটে চিলাহাটি এক্সপ্রেস যাত্রাবিরতির অনুমোদন

ছবি

মহাদেবপুরে নির্বিঘ্নে সার ও বীজ সরবরাহে মতবিনিময় সভা

ছবি

সাঘাটায় মেয়াদের ৪ মাস অতিবাহিত হলেও বাস্তবায়ন হয়নি এডিপি প্রকল্প

ছবি

শেরপুরে নিখোঁজ কিশোরের লাশ উদ্ধার

ছবি

শেরপুরে নাবিল হাইওয়ে রেস্টুরেন্টকে জরিমানা

ছবি

জাল স্বাক্ষরে পদত্যাগপত্র তৈরির অভিযোগ মোরেলগঞ্জে ১৫ বছর ধরে নিজ কর্মস্থল থেকে বিতাড়িত অধ্যক্ষ

ছবি

ডিম ছাড়া শেষ, শুরু হলো জাটকা ধরায় নিষেধাজ্ঞা

ছবি

অবৈধ ড্রেজারের তাণ্ডবে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

ছবি

কটিয়াদী সড়কে বড় বড় গর্ত, যেন মরণ ফাঁদ

ছবি

কিশোরগঞ্জে খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

ছবি

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ বিনোদনের প্রাচীন ঐতিহ্য- বানরের খেলা

ছবি

মহেশপুর সীমান্তে বিজিবির অভিযানে মাদক উদ্ধার ও ৯ বাংলাদেশি আটক

ছবি

ধোবাউড়ায় তুচ্চ ঘটনায় চুরিকাঘাতে খুন, আটক ৩

ছবি

সলঙ্গায় প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ

ফকিরহাটে স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে লুটপাট

ছবি

নড়াইলে ২ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

ছবি

মাদকসেবীকে বাঁচাতে সহকারী প্রক্টরকে লাঞ্ছনা

ছবি

নড়াইলে চাষিদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

ছবি

মোরেলগঞ্জের কমলা চাষে সফল নাসির মল্লিক

ছবি

নন্দীগ্রামে প্রশিক্ষণ পেয়েও ঋণ পাচ্ছেন না যুবকরা

ছবি

বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে গলাচিপার গুরিন্দা জামে মসজিদ

ছবি

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার বাঁধ বিলীন

tab

যমুনার চরে বৈচিত্র্যময় সবুজ ফসলের সমারোহ

হাবিবুর রহমান, যমুনার চর থেকে ফিরে

বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

দক্ষিণে দেশখ্যাত বঙ্গবন্ধু সেতু। পশ্চিমে যমুনা নদী আর সিরাজগঞ্জ জেলা। উত্তরে যমুনার বিস্তীর্ণ চর আর চর। পূর্বে টাঙ্গাইল জেলা। এরমধ্যে অর্জুনা আর গাবসারা দুইটি ইউনিয়নের কয়েকটি চর। যমুনার পলিবাহিত ধূ-ধূ বালুচর। চারদিকে যমুনা নদী বেষ্টিত। মাঝখানে বড় দুটি ইউনিয়নে বসতি গড়েছে অনেক আগেই। যদিও বর্ষায় থাকে থৈ থৈ জল আর জল। উজান থেকে নেমে আসা গ্রোতে চরগুলো ডুবে যায় বিশাল জলরাশিতে। নৌকায় এপার ওপার যাতায়াত এ জনপদের মানুষের। আর শুকনো মৌসুমে চরাঞ্চলের উর্বর মৃত্তিকায় ফুঁসে উঠে কৃষি ফসলের বৈচিত্র। যেন সবুজের বৈচিত্রময় সমারোহ। চরে মাথা উঁচু করে জেগে উঠে নানা ফসল। পলিবাহিত থাকার কারণে চরের উর্বরতা শক্তি অনেক বেশি। চরে চরে ভুট্টা, বাদাম,আলু, মাসকালাই,মরিচ, মুলা, শিম,লাউ,জিরা, সজ, পেয়াজ, রসুন, গম, কাউন, গবাদিপশু পশুখাদ্য ঘাসসহ নানা ফসলের দিগন্ত জুড়া সবুজ আর সবুজ। চরের বাড়িগুলো ছোট ছোট খামার। প্রতি বাড়ির আঙিনা আর পালানে সবজি। গরু ছাগল পালন। চরের নারী পুরুষ সমান তালে মাঠ ঘাটে কাজ করে। বর্ষার ৬ মাস তাদের তেমন কাজ থাকে না। ৬ মাস কাজ করে খাবার আর অর্থের যোগান নিয়ে রাখে। সংসারে স্বচ্ছলতার জন্য তারা কাজ করে। মাঠেও নারীরা পুরুষের সঙ্গে কাজ করে থাকে। এমনটা জানা গেছে চর শুশুয়া, অর্জুনা, চর গোবিন্দসহ কয়েক চরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে। টাঙ্গাইলের ভুইয়াপুরের দুটি ইউনিয়ন অর্জুনা আর গাবসারা। অর্জুনা ইউনিয়নটি গোপালপুর আর ভুইয়াপুরের পশ্চিমে আর গাবসারা ভুইয়াপুরের পশ্চিমে অবস্থিত। দুটি ইউনিয়নই চর আর আর। স্থানীয়রা চরাঞ্চল হিসেবে চিনে থাকে। এ সব চর বহু পুরানো। ভাঙা গড়ার খেলার মতো। এবার এখানে চর। আবার সরে যায়। নদী ভাঙার উপর চরের নিশানা। চরের জমি জমা নিয়েও অনেক সময় ঝগড়া বিবাদ হয়। দখল নিয়ে দেখা দেয় বিরোধ বিবাদ। পলি পড়ে মৃত্তিকা হয় উর্বর। ফসলের জন্য পলিজমা মাটি ব্যাপক উর্বর। কৃষি ফসলের জন্য যেন সৃষ্টি কর্তার আশীর্বাদ। ফোলে ফেঁপে ফুঁসে উঠে ফসল। ফলনও আসে ভালো। এসব তথ্য চরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের রবি মৌসুমে ভুইয়াপুর উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছে ৩৫৭০ হেক্টর। এর মধ্যে উফসী ২৫৯৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ৯৭৫ হেক্টর। ভুট্টা ২৮৫১ হেক্টর, চিনাবাদাম ১৩২০ হেক্টর, মুসুর ৫২২, খেসারি ১০১২ হেক্টর, কালোজিরা ১০ হেক্টর, মিষ্টি আলু ৫৭ হেক্টর, মরিচ ৮৫ হেক্টর, শাকসবজি ৪৭০ হেক্টর, পেয়াজ ৫২ হেক্টর, আলু ৩৮ হেক্টর, রসুন ৩৪ হেক্টর, ধনিয়া ২৪ হেক্টর, গম ৪৮০ হেক্টর, মাষকালাই ১২২৪ ও রোপা আমন ৬১১৫ হেক্টর।

সরেজমিনে অর্জুনা আর গাবসারা ইউনিয়নে গিয়ে জানা যায়, চরাঞ্চলের কৃষি ফসল চাষের নানা কথা। নলিন থেকে নৌকা যমুনা নদী পার হলে চরশুশুয়া গ্রাম। নদীর পাড় উঠে দেখা যায় সবুজ আর সবুজ। দুই পাশে শস্য ভান্ডার মাঝ খানে মেঠো পথ। ডানপাশে মাসকালাই বাম পাশে ভুট্টার খেত। সামনে এগিয়ে দেখা আহাম্মদ খান (৫৫) আলী নামের এক কৃষকের সঙ্গে। তার হাতে কাস্তে আর রশি। তার কথা বলে জানা গেল, তাদের এলাকার নাম ভিন্ন ভিন্ন চরের নামে। তারমতে, এ সব চরে এ সময়ে গম,ভুট্টা, সজ, সবজি, মরিচ, মুলা, ধান, শিম, লাউসহ বিভিন্ন কৃষি ফসলের চাষ হয়। তিনি হাত দিয়ে দূরে দেখালেন ঐ চরে তার ২ বিঘা মরিচের চাষ। এখানে তার মাষকালাই তিন বিঘা, ধান দেড় বিঘা, ৫ বিঘা ভুট্টার আবাদ। এখন মাষকালাই তোলার জন্য এসেছে। তিনি জানালেন, চরে চাষ করতে তেমন সার লাগে না। অল্প খরচে অধিক ফসল পাওয়া যায়।

চর শ^শুয়া গ্রামে গিয়ে কথা হয়। সরকারি ইবরাহীম খা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানালেন এ চরের প্রায় সবাই কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। কম বেশি সবাই কৃষি কাজ করে। চরাঞ্চলের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি কাজ। তার বাবাও একজন কৃষক। তাদের সব ধরনের ফসল চাষ করে। তারমতে, কম খরচে অধিক ফসল পাওয়া যায়। চরে বেশি চাষ হয় ভতা। ভালো লাভ পান চরের কৃষকরা। রাজীব মিয়া(২৩) নামের এক কৃষক জানালেন, এবার তিনি চরে তিন বিঘা ভুট্টা, দুই বিঘা মাষকালাই ও ১৫ শতাংশ কালো জিরা চাষ করেছে। শুধু রাজীব, আব্দুর রহমান, গোলাম রব্বানী, জাহাঙ্গীর আলমই নন তাদের মত চর তালতলা, চর শুশুয়া, বেহারির চর, জঙ্গিচর, চরসোহাগভাগা, চরকালিপুর, চরচন্দনি, চরবাসুদেবসহ বিভিন্ন চরের মানুষ তারা কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। কৃষি কাজ করে চলে তাদের জীবন জীবিকা। প্রতিবছর তারা কৃষি কাজে ভালো লাভ পান। বাড়িতে গবাদিপশু পালন করেও লাভ পেয়ে থাকে । বর্ষাকালে কৃষি ফসল, কাজ থাকে না বিধায় এ মৌসুমে কৃষি ফসলের সঙ্গে বাড়ি হাঁস মুরগি গরু ছাগল ভেড়া ঘোড়া পালন করে। বর্ষার আগেই গবাদিপশু বিক্রি করে দেয়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান দিদারুল আলম খান মাহবুব জানালেন, চরের কৃষকদের সরকারি কৃষি সেবা প্রণোদনা দেয়া হয়ে থাকে । তবে সবাই পান না। চরের পলি উর্বর থাকার কারণে সোনা ফলে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ঘোড়া গাড়ী আর মাথা করে চরের ফসল বাড়িতে উঠাতে হয়। এ সময়ে চরের সবুজ ফসলে ভরা।

ভুইয়াপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, চরাঞ্চলে কিছু কিছু কৃষি ফসলের জন্য বিশেষ উপযোগি। বাদাম, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, মরিচসহ অন্যান্য ফসলে ভালো জন্মে। বন্যায় চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পলি পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে কৃষি ফসল ভালো ফলন হয়ে থাকে। তিনি জানান, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের রবি মৌসুমে ভুইয়াপুর উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছে ৩৫৭০ হেক্টর।

back to top