এ যেন ফ্যাশন শো’র মঞ্চ। র্যাম্পে হাঁটবেন কোনো সুদর্শনা। বাজনা বাজছে। ক্যামেরা প্রস্তুত। মঞ্চের চারপাশে শত শত দর্শকের ভিড়। প্রত্যেকের চোখে বিস্ময়। অনেকের উচ্ছ্বাস উপচে পড়ছে! কিন্তু এই বিস্ময় বা উচ্ছ্বাস কোনো ফ্যাশন শো’র জন্য নয়।
র্যাম্প শো মানেই রঙিন আলোর ঝলকানি, সুরের মূর্ছনায় হালফ্যাশনের পোশাকে মডেলদের বিভিন্ন ভঙ্গিতে হাঁটাচলা। কিন্তু বগুড়ায় আয়োজন করা হয়েছে ব্যতিক্রমী এক র্যাম্প শো, যেখানে মডেল হয়ে হেঁটেছে সুসজ্জিত গরু। ফলে দর্শকের কৌতূহল একটু বেশিই ছিল। আয়োজনেও ছিল চমক।
‘বিডিএফএ উত্তরবঙ্গ গরু মেলা’ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে বগুড়ার টিএমএসএস বিনোদন পার্কে গরুর এই র্যাম্প শোর আয়োজন করে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। বিডিএফএ সভাপতি ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদার, এসিআই এগ্রি বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারি।
এর আগে বেলা ১১টায় উত্তরবঙ্গ গরু মেলার উদ্বোধন করেন বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান। বিকেলে র্যাম্প শোতে বগুড়া ভান্ডার অ্যাগ্রো ফার্মের ১ হাজার ১০০ কেজির হলস্টাইন ফ্রিজিয়ান প্রজাতির গরু ‘ফিডো’, ৮০০ কেজি ওজনের শাহিওয়াল প্রজাতির গরু ‘টাইগার’ এবং ৭৫০ কেজি ওজনের দুটি শাহিওয়াল গরু ‘টম’ ও ‘জেরি’ ছাড়াও বেশ কিছু সুদর্শন বড় আকৃতির গরু অংশ নেয়।
উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলার আড়াইশ খামারি ৪৫০টি গরু নিয়ে মেলায় উপস্থিত হয়েছেন। মেলায় স্টল রয়েছে ২১৬টি। গরুর পাশাপাশি মেলায় গয়াল, মহিষ, দুম্বা, ছাগলসহ কুকুর, বেড়াল, বিদেশি জাতের মুরগিসহ বিভিন্ন পাখিও রয়েছে।
সরেজমিনে মেলায় দেখা যায়, শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়ানসহ নানা জাতের গরু নিয়ে মেলায় এসেছেন খামারিরা। তবে বিক্রির জন্য নয়, বরং প্রদর্শনের জন্যই এসব শৌখিন গরু আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজক ও খামার মালিকেরা। র্যাম্প শোর প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘ফিডো’ নামের গরুটি। মেলায় দুই শতাধিক খামারের ২৫০টির বেশি গরু প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া মেলায় নানা জাতের পোষা প্রাণী ও পাখি উঠেছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে সেরা গরু, ছাগল, গয়াল, মহিষ, ঘোড়া, ভেড়া, দুম্বাসহ শৌখিন পশু মেলায় এনেছেন খামারিরা।
দুপুর ২টায় র্যাম্পের মঞ্চে খামারিরা তাদের গরু নিয়ে একে একে প্রবেশ করেন। এরপর মিউজিকের তালে তালে গরুগুলোকে র্যাম্পে হাঁটানো হয়। এ সময় গরুর মালিকেরা গরুর জাত, বয়স এবং দাম উপস্থিত সবাইকে জানান। শো শেষে তারা গরু নিজ নিজ স্টলে নিয়ে যান।
সাদাত নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আমি আমার মেয়েকে নিয়ে মেলায় গরু দেখতে এসেছি। অনেকগুলো গরু দেখলাম। আমার মেয়ে এনজয় করছে! অনেক গরু এর আগে দেখিনি। এ ছাড়া গরু যে এত বড় হয় নিজে না দেখলে বিশ্বাস হতো না!
শাম্মি নামে আরেক দর্শনাথী বলেন, ‘অনেক কৌতূহল নিয়ে মেলায় এসেছি। ভালো লেগেছে। গেটের সামনে বিশাল বড় একটা গরু। আবার কিছু দূর যেতেই ছোট একটা গরু দেখতে পেলাম। যেগুলো কখনও দেখিনি। অনেক এক্সাইটেড আমি! বাচ্চাদেরও নিয়ে এসেছি। তারাও খুব খুশি।’
মেলায় দেখা মিলছে ইন্দোনেশিয়ার নিরিলাবী জাতের মহিষ। সাদা রঙের এই মহিষ ঠাকুরগাঁও থেকে এনেছেন মো: ফজলে এলাহী। সঙ্গে এনেছেন পাখরা জাতের মহিষ। নেপালী খর্বাকৃতি গরুরও দেখা মিলেছে এই মেলায়।
মেলার প্রধান সমন্বয়ক বগুড়া ভান্ডার অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী তৌহিদ পারভেজ বলেন, ‘এই মেলার মাধ্যমে একটি ফার্মের সঙ্গে আরেকটি ফার্মের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা এবং খামারিদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে গরু সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে কীভাবে গরু মোটাতাজা করা যায়, সে বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।’
তৌহিদ পারভেজ আরও বলেন, ‘মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৭২টি পুরস্কার দেওয়া হবে। এই মেলা প্রান্তিক খামারিদের জন্য একটি বড় সুযোগ। এখানে তাঁরা পালন করা প্রতিটি গরুর ভালো দাম পেতে দেশের স্বনামধন্য খামারিদের কাছে প্রদর্শন করতে পারবেন। এটি সব খামারির মিলনমেলায় পরিণত হবে। পাশাপাশি সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হবে।’
শনিবার শেষ হবে এই মেলা।
শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
এ যেন ফ্যাশন শো’র মঞ্চ। র্যাম্পে হাঁটবেন কোনো সুদর্শনা। বাজনা বাজছে। ক্যামেরা প্রস্তুত। মঞ্চের চারপাশে শত শত দর্শকের ভিড়। প্রত্যেকের চোখে বিস্ময়। অনেকের উচ্ছ্বাস উপচে পড়ছে! কিন্তু এই বিস্ময় বা উচ্ছ্বাস কোনো ফ্যাশন শো’র জন্য নয়।
র্যাম্প শো মানেই রঙিন আলোর ঝলকানি, সুরের মূর্ছনায় হালফ্যাশনের পোশাকে মডেলদের বিভিন্ন ভঙ্গিতে হাঁটাচলা। কিন্তু বগুড়ায় আয়োজন করা হয়েছে ব্যতিক্রমী এক র্যাম্প শো, যেখানে মডেল হয়ে হেঁটেছে সুসজ্জিত গরু। ফলে দর্শকের কৌতূহল একটু বেশিই ছিল। আয়োজনেও ছিল চমক।
‘বিডিএফএ উত্তরবঙ্গ গরু মেলা’ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে বগুড়ার টিএমএসএস বিনোদন পার্কে গরুর এই র্যাম্প শোর আয়োজন করে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)। বিডিএফএ সভাপতি ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদার, এসিআই এগ্রি বিজনেসের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারি।
এর আগে বেলা ১১টায় উত্তরবঙ্গ গরু মেলার উদ্বোধন করেন বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান। বিকেলে র্যাম্প শোতে বগুড়া ভান্ডার অ্যাগ্রো ফার্মের ১ হাজার ১০০ কেজির হলস্টাইন ফ্রিজিয়ান প্রজাতির গরু ‘ফিডো’, ৮০০ কেজি ওজনের শাহিওয়াল প্রজাতির গরু ‘টাইগার’ এবং ৭৫০ কেজি ওজনের দুটি শাহিওয়াল গরু ‘টম’ ও ‘জেরি’ ছাড়াও বেশ কিছু সুদর্শন বড় আকৃতির গরু অংশ নেয়।
উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলার আড়াইশ খামারি ৪৫০টি গরু নিয়ে মেলায় উপস্থিত হয়েছেন। মেলায় স্টল রয়েছে ২১৬টি। গরুর পাশাপাশি মেলায় গয়াল, মহিষ, দুম্বা, ছাগলসহ কুকুর, বেড়াল, বিদেশি জাতের মুরগিসহ বিভিন্ন পাখিও রয়েছে।
সরেজমিনে মেলায় দেখা যায়, শাহিওয়াল, ফ্রিজিয়ানসহ নানা জাতের গরু নিয়ে মেলায় এসেছেন খামারিরা। তবে বিক্রির জন্য নয়, বরং প্রদর্শনের জন্যই এসব শৌখিন গরু আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজক ও খামার মালিকেরা। র্যাম্প শোর প্রধান আকর্ষণ ছিল ‘ফিডো’ নামের গরুটি। মেলায় দুই শতাধিক খামারের ২৫০টির বেশি গরু প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া মেলায় নানা জাতের পোষা প্রাণী ও পাখি উঠেছে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে সেরা গরু, ছাগল, গয়াল, মহিষ, ঘোড়া, ভেড়া, দুম্বাসহ শৌখিন পশু মেলায় এনেছেন খামারিরা।
দুপুর ২টায় র্যাম্পের মঞ্চে খামারিরা তাদের গরু নিয়ে একে একে প্রবেশ করেন। এরপর মিউজিকের তালে তালে গরুগুলোকে র্যাম্পে হাঁটানো হয়। এ সময় গরুর মালিকেরা গরুর জাত, বয়স এবং দাম উপস্থিত সবাইকে জানান। শো শেষে তারা গরু নিজ নিজ স্টলে নিয়ে যান।
সাদাত নামে এক দর্শনার্থী বলেন, আমি আমার মেয়েকে নিয়ে মেলায় গরু দেখতে এসেছি। অনেকগুলো গরু দেখলাম। আমার মেয়ে এনজয় করছে! অনেক গরু এর আগে দেখিনি। এ ছাড়া গরু যে এত বড় হয় নিজে না দেখলে বিশ্বাস হতো না!
শাম্মি নামে আরেক দর্শনাথী বলেন, ‘অনেক কৌতূহল নিয়ে মেলায় এসেছি। ভালো লেগেছে। গেটের সামনে বিশাল বড় একটা গরু। আবার কিছু দূর যেতেই ছোট একটা গরু দেখতে পেলাম। যেগুলো কখনও দেখিনি। অনেক এক্সাইটেড আমি! বাচ্চাদেরও নিয়ে এসেছি। তারাও খুব খুশি।’
মেলায় দেখা মিলছে ইন্দোনেশিয়ার নিরিলাবী জাতের মহিষ। সাদা রঙের এই মহিষ ঠাকুরগাঁও থেকে এনেছেন মো: ফজলে এলাহী। সঙ্গে এনেছেন পাখরা জাতের মহিষ। নেপালী খর্বাকৃতি গরুরও দেখা মিলেছে এই মেলায়।
মেলার প্রধান সমন্বয়ক বগুড়া ভান্ডার অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী তৌহিদ পারভেজ বলেন, ‘এই মেলার মাধ্যমে একটি ফার্মের সঙ্গে আরেকটি ফার্মের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা এবং খামারিদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে গরু সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে কীভাবে গরু মোটাতাজা করা যায়, সে বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।’
তৌহিদ পারভেজ আরও বলেন, ‘মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৭২টি পুরস্কার দেওয়া হবে। এই মেলা প্রান্তিক খামারিদের জন্য একটি বড় সুযোগ। এখানে তাঁরা পালন করা প্রতিটি গরুর ভালো দাম পেতে দেশের স্বনামধন্য খামারিদের কাছে প্রদর্শন করতে পারবেন। এটি সব খামারির মিলনমেলায় পরিণত হবে। পাশাপাশি সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপিত হবে।’
শনিবার শেষ হবে এই মেলা।