# স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে লাগবে না ভোটারদের স্বাক্ষর # ছাপানো যাবে রঙিন পোস্টার # আইন মন্ত্রণালয় সায় দিলে কার্যকর
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানতের পরিমাণ বহুগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া রঙিন পোস্টার ব্যবহার, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ২৫০ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে ইসি।
মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে আইন মন্ত্রণালয়ের সায় লাগবে।
আগামী মে মাসে চার ধাপে ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবে ইসি। প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ আগামী ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ২৫ মে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে গতকাল নির্বাচন ভবনে ২৮তম কমিশন সভা হয়। উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণবিধিতে সংশোধনের লক্ষ্যে সভায় একগুচ্ছ প্রস্তাব
অনুমোদন করা হয়।
সভা শেষ ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আগের জামানত বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন কমিশন।’
বর্তমান নির্বাচন বিধিমালায় চেয়ারম্যান পদে জামানত ১০ হাজার এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের জামানত ৫ হাজার টাকা। আর সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে জামানত দিতে হয় ২৫ হাজার টাকা।
এখন কোনো প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট না পেলে তার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হয়। ইসি সচিব জানান, এটি ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন।
অর্থাৎ, এই প্রস্তাব কার্যকর হলে প্রার্থী নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ না পেলে তার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।
এ ছাড়া সাদাকালো পোস্টারের পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ছাপানো যাবে, এমন প্রস্তাবও অনুমোদন হয়েছে বলেও জানান সচিব।
তবে ইসি সিদ্ধান্ত নিলেও এখনই এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে না। ইসির এসব সিদ্ধান্ত ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে তা আবার ইসির কাছে ফেরত পাঠাবে। তারপর ইসি পর্যালোচনা করে তা আবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, আরও যেসব প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, তার মধ্যে আছে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে প্রতীক বরাদ্দের আগপর্যন্ত সময়ে সর্বোচ্চ ৫ জন সঙ্গে নিয়ে জনসংযোগ করতে পারবেন। আগে বিধিমালায় এ বিধান ছিল না।
ইসি সচিব জানান, গত বছর গণপ্রতিনিধত্ব আদেশ সংশোধন করে কিছু ক্ষেত্রে সাজা ও ক্ষমতা বাড়ানো হয়। উপজেলা নির্বাচন বিধিমালায় এটি সমন্বয় করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা এবার স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেবে না। ফলে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। এর মধ্যেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিধান শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিল ইসি।
সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনও বর্জন করবে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনেই দলটি অংশ নেবে না বলে আগেই জানিয়েছে। তবে বিএনপির তৃণমূলের অনেক নেতাই আগের মতো এবারও স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে আলোচনা আছে।
নির্বাচন বিধিমালায় আরও যেসব সংশোধনী প্রস্তাব
স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালায় আরও যেসব সংশোধনের প্রস্তাব করেছে ইসি তার মধ্যে রয়েছে-
অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান। সমভোটের ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ। চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের নির্বাচনি ব্যয় ২৫ লাখ টাকা এবং মহিলা সদস্যদের ১ লাখ টাকা। মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াদের অন্তর্ভুক্ত করা।
আচরণ বিধিমালায় যেসব সংশোধন প্রস্তাব
স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় আরও যেসব সংশোধনের প্রস্তাব করেছে ইসি তার মধ্যে রয়েছে- পোস্টার, ব্যানার সাদা-কালো অথবা রঙিন করা। প্রতীক বরাদ্দের আগে জনসংযোগ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচরণা করা। ৫ জনের অধিক কর্মী বা সমর্থককে নিয়ে জনসংযোগ না করা।
প্রতি ইউনিয়নে একটি এবং পৌরসভার প্রতি তিনটি ওয়ার্ডে একটির বেশি নির্বাচনি ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন না করা। নির্বাচনি ক্যাম্প বা অফিসের আয়তন ৬০০ বর্গফুটের বেশি না হওয়া।
নির্বাচনি প্রচারণায় একটির বেশি শব্দযন্ত্র (হর্ন) বা জনসভায় চারটির বেশি শব্দযন্ত্র (হর্ন) ব্যবহার না করা। শব্দ বর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মান মাত্রা ৬০ ডেসিবলের অতিরিক্ত না হওয়া। প্রচারণায় পোস্টার বা ব্যানারে পলিথিনের ব্যবহার না করা।
# স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে লাগবে না ভোটারদের স্বাক্ষর # ছাপানো যাবে রঙিন পোস্টার # আইন মন্ত্রণালয় সায় দিলে কার্যকর
মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামানতের পরিমাণ বহুগুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া রঙিন পোস্টার ব্যবহার, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ২৫০ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর তুলে দেওয়ার প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে ইসি।
মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে কমিশন সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে আইন মন্ত্রণালয়ের সায় লাগবে।
আগামী মে মাসে চার ধাপে ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবে ইসি। প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ আগামী ৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ১১ মে, তৃতীয় ধাপে ১৮ মে এবং চতুর্থ ধাপের ভোট হবে ২৫ মে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে গতকাল নির্বাচন ভবনে ২৮তম কমিশন সভা হয়। উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন বিধিমালা ও আচরণবিধিতে সংশোধনের লক্ষ্যে সভায় একগুচ্ছ প্রস্তাব
অনুমোদন করা হয়।
সভা শেষ ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আগের জামানত বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন কমিশন।’
বর্তমান নির্বাচন বিধিমালায় চেয়ারম্যান পদে জামানত ১০ হাজার এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের জামানত ৫ হাজার টাকা। আর সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে জামানত দিতে হয় ২৫ হাজার টাকা।
এখন কোনো প্রার্থী প্রদত্ত ভোটের সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট না পেলে তার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হয়। ইসি সচিব জানান, এটি ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কমিশন।
অর্থাৎ, এই প্রস্তাব কার্যকর হলে প্রার্থী নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ না পেলে তার জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে।
এ ছাড়া সাদাকালো পোস্টারের পাশাপাশি রঙিন পোস্টার ছাপানো যাবে, এমন প্রস্তাবও অনুমোদন হয়েছে বলেও জানান সচিব।
তবে ইসি সিদ্ধান্ত নিলেও এখনই এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে না। ইসির এসব সিদ্ধান্ত ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে তা আবার ইসির কাছে ফেরত পাঠাবে। তারপর ইসি পর্যালোচনা করে তা আবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠালে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।
সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানান, আরও যেসব প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, তার মধ্যে আছে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে প্রতীক বরাদ্দের আগপর্যন্ত সময়ে সর্বোচ্চ ৫ জন সঙ্গে নিয়ে জনসংযোগ করতে পারবেন। আগে বিধিমালায় এ বিধান ছিল না।
ইসি সচিব জানান, গত বছর গণপ্রতিনিধত্ব আদেশ সংশোধন করে কিছু ক্ষেত্রে সাজা ও ক্ষমতা বাড়ানো হয়। উপজেলা নির্বাচন বিধিমালায় এটি সমন্বয় করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে জানিয়েছে, তারা এবার স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেবে না। ফলে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হবে মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। এর মধ্যেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিধান শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিল ইসি।
সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনও বর্জন করবে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনেই দলটি অংশ নেবে না বলে আগেই জানিয়েছে। তবে বিএনপির তৃণমূলের অনেক নেতাই আগের মতো এবারও স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে আলোচনা আছে।
নির্বাচন বিধিমালায় আরও যেসব সংশোধনী প্রস্তাব
স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালায় আরও যেসব সংশোধনের প্রস্তাব করেছে ইসি তার মধ্যে রয়েছে-
অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের বিধান। সমভোটের ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ। চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের নির্বাচনি ব্যয় ২৫ লাখ টাকা এবং মহিলা সদস্যদের ১ লাখ টাকা। মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াদের অন্তর্ভুক্ত করা।
আচরণ বিধিমালায় যেসব সংশোধন প্রস্তাব
স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় আরও যেসব সংশোধনের প্রস্তাব করেছে ইসি তার মধ্যে রয়েছে- পোস্টার, ব্যানার সাদা-কালো অথবা রঙিন করা। প্রতীক বরাদ্দের আগে জনসংযোগ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচরণা করা। ৫ জনের অধিক কর্মী বা সমর্থককে নিয়ে জনসংযোগ না করা।
প্রতি ইউনিয়নে একটি এবং পৌরসভার প্রতি তিনটি ওয়ার্ডে একটির বেশি নির্বাচনি ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন না করা। নির্বাচনি ক্যাম্প বা অফিসের আয়তন ৬০০ বর্গফুটের বেশি না হওয়া।
নির্বাচনি প্রচারণায় একটির বেশি শব্দযন্ত্র (হর্ন) বা জনসভায় চারটির বেশি শব্দযন্ত্র (হর্ন) ব্যবহার না করা। শব্দ বর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মান মাত্রা ৬০ ডেসিবলের অতিরিক্ত না হওয়া। প্রচারণায় পোস্টার বা ব্যানারে পলিথিনের ব্যবহার না করা।