নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দকৃত অন্যান্য বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে বরাদ্দকৃত এসব ঘরের ১৭টির মধ্যে ৭টি অবশিষ্ট বসতঘরের কাজ শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি দৈনিক সংবাদে খবর প্রকাশ হলে ওই সকল ঘরের কাজ শুরু করেন সাবেক পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ।
একাধিক সূত্র জানা গেছে, বর্তমানে ১৭টি ঘরের কাজ এখনো চলমান রয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই তাদের বরাদ্দকৃত ঘরের কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা ও জেলা প্রশাসন।
এর আগে গত রোববার ও সোমবার (৩ ও ৪ মার্চ) আদিবাসীদের ১৭টি ঘরের কাজ শেষ না করেই বরাদ্দের টাকা উঠালেন ইউএনও এই শিরোনামে দৈনিক সংবাদে প্রথমে অনলাইনে এরপর প্রিন্ট পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে এলে ওই ৭ টি ঘরের কাজ শুরু হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। এছাড়া অন্যান্য ঘরের কাজগুলোও দ্রুতগতিতে চলছে। এছাড়া তদন্ত ঘরগুলোর বিষয়ে তদন্তও হয়েছে বলে জানা যায়।
শিহাড়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের চাতু উরাও এর ছেলে সূর্য বরণ বলেন, ৬-৭দিন আগে আমাদের ঘরের কাজ শুরু হয়েছে। ইটসহ বিভিন্ন ঝামেলার কারণে এতোদিন দেরি হয়েছে। একইভাবে ৫-৬দিন আগে কাজ শুরু হয়েছে জানালেন কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের গুপিনগর গ্রামের সুবিধাভোগী জগেন মার্ডি। এখনও ঘরের কাজ শেয় হয়নি জানিয়ে নির্মইল ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের সুবিধাভোগী এলিজাবেদ টুডু বলেন, ঘরের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি আর কয়েকদিনের মধ্যে ঘরে উঠতে পারবো। আর আরেক সুবিধাভোগী খাযা সিন্ডা জানালেন তার ঘরের কাজ চলমান আছে। এছাড়া অপর দুই সুবিধাভোগীর দেখা পাওয়া যায়নি এবং আরেক সুবিধাভোগীর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার কারণে তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে আদিবাসী নেতা নরেন পাহান মুঠোফোনে বলেন, অসমাপ্ত ৭টি ঘরের কাজ চলমান আছে। খুব শীঘ্রই শেষ হবে। তবে ব্যস্ততার কারণে খোঁজ নেওয়া হয়নি। কেন দেরি হলো জানতে চাইলে তিনি মিটিং এ আছি, এবিষয়ে পরে কথা বলবো।
এবিষয়ে তৎকালিন পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমানে আদমদিঘী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: রুমানা আফরোজ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে পরে কথা বলছি। এরপর আর ফোন করেননি।
বর্তমানে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার বলেন, অসম্পূর্ণ সকল ঘরের কাজ চলমান আছে।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায় মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি জানার পরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিদর্শণ করা হয়েছে। সবগুলো ঘরের কাজ শুরু হয়েছে এবং চলমান আছে। এছাড়া বিষয়টি আমাদের নলেজে আছে এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাদের জমি আছে কিন্তু গৃহ নির্মাণের সামর্থ্য নেই এমন দরিদ্রের জন্য আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করার কার্যক্রম শুরু করেন সরকার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলাতে ২৫টি ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর (আদিবাসী) গৃহহীন পরিবারের জন্য বসতঘর বরাদ্দ আসে। ইতিপূর্বে আরও ২০টি ঘর বরাদ্দ পান আদিবাসীরা। প্রতিটি বসতঘরের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। ওই সময়ে ঘরগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ। এরপর ১৭ টি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন না করেই কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করেন। পরে ঘরের নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ রেখে বদলি হয়ে চলে যান পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলাতে। এদিকে এই প্রকল্পের দিন পেড়িয়ে মেয়াদ শেষ হয়েছে আরও ৬ মাস পূর্বে। তবে এখনো সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ওই ৭ টি ঘরের ভিত খুড়তে শুরু হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। তার মধ্যে উপজেলার মাটিয়ান্দর ইউনিয়নে বেনজামিন মারান্ডির বরাদ্দকৃত ঘর, আকবরপুর ইউনিয়নে বালক সরদার, শিহাড়া ইউনিয়নে জামালপুর গ্রামে চাতু উরাও, একই ইউনিয়নে খাযা সিন্ডা, নির্মইল ইউনিয়নে বটতলী গ্রামের এলিজাবেদ টুডু, পত্নীতলা সদর ইউনিয়নে আরতি রানী কর্মকার ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের গুপিনগর গ্রামের জগেন মার্ডির বসতঘরের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা যায়।
শনিবার, ০৯ মার্চ ২০২৪
নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত আদিবাসীদের জন্য বরাদ্দকৃত অন্যান্য বসতঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে বরাদ্দকৃত এসব ঘরের ১৭টির মধ্যে ৭টি অবশিষ্ট বসতঘরের কাজ শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি দৈনিক সংবাদে খবর প্রকাশ হলে ওই সকল ঘরের কাজ শুরু করেন সাবেক পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ।
একাধিক সূত্র জানা গেছে, বর্তমানে ১৭টি ঘরের কাজ এখনো চলমান রয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই তাদের বরাদ্দকৃত ঘরের কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা ও জেলা প্রশাসন।
এর আগে গত রোববার ও সোমবার (৩ ও ৪ মার্চ) আদিবাসীদের ১৭টি ঘরের কাজ শেষ না করেই বরাদ্দের টাকা উঠালেন ইউএনও এই শিরোনামে দৈনিক সংবাদে প্রথমে অনলাইনে এরপর প্রিন্ট পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে এলে ওই ৭ টি ঘরের কাজ শুরু হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। এছাড়া অন্যান্য ঘরের কাজগুলোও দ্রুতগতিতে চলছে। এছাড়া তদন্ত ঘরগুলোর বিষয়ে তদন্তও হয়েছে বলে জানা যায়।
শিহাড়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের চাতু উরাও এর ছেলে সূর্য বরণ বলেন, ৬-৭দিন আগে আমাদের ঘরের কাজ শুরু হয়েছে। ইটসহ বিভিন্ন ঝামেলার কারণে এতোদিন দেরি হয়েছে। একইভাবে ৫-৬দিন আগে কাজ শুরু হয়েছে জানালেন কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের গুপিনগর গ্রামের সুবিধাভোগী জগেন মার্ডি। এখনও ঘরের কাজ শেয় হয়নি জানিয়ে নির্মইল ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের সুবিধাভোগী এলিজাবেদ টুডু বলেন, ঘরের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি আর কয়েকদিনের মধ্যে ঘরে উঠতে পারবো। আর আরেক সুবিধাভোগী খাযা সিন্ডা জানালেন তার ঘরের কাজ চলমান আছে। এছাড়া অপর দুই সুবিধাভোগীর দেখা পাওয়া যায়নি এবং আরেক সুবিধাভোগীর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার কারণে তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে আদিবাসী নেতা নরেন পাহান মুঠোফোনে বলেন, অসমাপ্ত ৭টি ঘরের কাজ চলমান আছে। খুব শীঘ্রই শেষ হবে। তবে ব্যস্ততার কারণে খোঁজ নেওয়া হয়নি। কেন দেরি হলো জানতে চাইলে তিনি মিটিং এ আছি, এবিষয়ে পরে কথা বলবো।
এবিষয়ে তৎকালিন পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমানে আদমদিঘী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: রুমানা আফরোজ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে পরে কথা বলছি। এরপর আর ফোন করেননি।
বর্তমানে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার বলেন, অসম্পূর্ণ সকল ঘরের কাজ চলমান আছে।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায় মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি জানার পরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিদর্শণ করা হয়েছে। সবগুলো ঘরের কাজ শুরু হয়েছে এবং চলমান আছে। এছাড়া বিষয়টি আমাদের নলেজে আছে এবং সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাদের জমি আছে কিন্তু গৃহ নির্মাণের সামর্থ্য নেই এমন দরিদ্রের জন্য আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করার কার্যক্রম শুরু করেন সরকার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলাতে ২৫টি ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর (আদিবাসী) গৃহহীন পরিবারের জন্য বসতঘর বরাদ্দ আসে। ইতিপূর্বে আরও ২০টি ঘর বরাদ্দ পান আদিবাসীরা। প্রতিটি বসতঘরের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টাকা। ওই সময়ে ঘরগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ। এরপর ১৭ টি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন না করেই কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করেন। পরে ঘরের নির্মাণের কাজ অসম্পূর্ণ রেখে বদলি হয়ে চলে যান পার্শ্ববর্তী জেলা বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলাতে। এদিকে এই প্রকল্পের দিন পেড়িয়ে মেয়াদ শেষ হয়েছে আরও ৬ মাস পূর্বে। তবে এখনো সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ওই ৭ টি ঘরের ভিত খুড়তে শুরু হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। তার মধ্যে উপজেলার মাটিয়ান্দর ইউনিয়নে বেনজামিন মারান্ডির বরাদ্দকৃত ঘর, আকবরপুর ইউনিয়নে বালক সরদার, শিহাড়া ইউনিয়নে জামালপুর গ্রামে চাতু উরাও, একই ইউনিয়নে খাযা সিন্ডা, নির্মইল ইউনিয়নে বটতলী গ্রামের এলিজাবেদ টুডু, পত্নীতলা সদর ইউনিয়নে আরতি রানী কর্মকার ও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের গুপিনগর গ্রামের জগেন মার্ডির বসতঘরের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানা যায়।