কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দর্শনার্থীদেও উপচে পড়া ভিড়। দেশের প্রথম এই সাফারি পার্কের দর্শনীয় স্পটগুলোকে সরকার বিগত তিন অর্থবছরে মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামো খাতে দৃশ্যমান উন্নয়নের মাধ্যমে নবরূপে সাজিয়ে তুলেছেন। তাতে সাফারি পার্কের বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, হাতি, জলহস্তী, কুমিরসহ বন্যপ্রাণীর বেষ্টনীগুলোতে নান্দনিক ও নির্মল পরিবেশ ফিরে আসায় আগের তুলনায় এ বছর পার্ক ভ্রমণে এসে দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দে বিমোহিত হচ্ছেন।
অপরদিকে, ব্যাংক ডাকাতির জেরে পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে নিরাপত্তাজনিত সংকট দেখা দেয়ায় সেখানকার পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে।
এমন অবস্থায় এ বছর পর্যটন জেলা কক্সবাজারের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে পর্যটক দর্শনার্থী আগমন তুলনামূলক বেড়েছে। সম্প্রতি সরেজমিনে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ঘুরে একাধিক দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (রেঞ্জ অফিসার) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে প্রতিদিন সাফারি পার্ক ভ্রমণে আসতেন দুই থেকে তিন হাজার দর্শনার্থী। রোজার ঈদ ও বাংলা নববর্ষের ছুটিতে তা বেড়েছে দ্বিগুণ।
তিনি আরও বলেন, গত ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিন সাড়ে ৭ হাজার দর্শনার্থী পার্কে এসেছেন। পরদিন থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৪ দিন গড়ে ৫ হাজার করে দর্শনার্থী বন্যপ্রাণী দেখে বাড়ি ফিরেছেন। গত মঙ্গলবার সরকারিভাবে সাফারি পার্ক বন্ধ ছিল। এই হিসাবে ৫ দিনে ২৮ থেকে ৩০ হাজার দর্শনার্থী রোজার ঈদ ও নববর্ষের টানা ছুটিতে সাফারি পার্ক ভ্রমণ করেছেন। সাফারি পার্কের টিকেট কাউন্টারের পরিচালক দিপন দত্ত বলেন, ঈদের ছুটিতে ৫ দিনে আমরা মোট ১৪ লাখ টাকার টিকেট বিক্রি করেছি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক দর্শনার্থীর প্রবেশ ফি ৫০ টাকা। শিক্ষার্থী ও ছোট শিশুদের জন্য গেইট ইজারাদার চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদি কর্তৃক বিশেষ ছাড় দেয়া হয়।
জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৯ জানুয়ারি ২,২৫০ একর বনাঞ্চল নিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম এই সাফারি পার্ক। এর আগে ১৯৮০ সালে এটি ছিল হরিণ প্রজননকেন্দ্র। বর্তমানে পার্কের বিভিন্ন বেষ্টনীতে আছে সিংহ, বাঘ, জেব্রা, ওয়াইল্ড বিস্ট, জলহস্তী, ময়ুর, অজগর, কুমির, হাতি, ভাল্লুক, হরিণ, লামচিতা, শকুন, কচ্ছপ, রাজধনেশ, কাকধনেশ, ইগল, সাদা বক, রঙ্গিলা বক, সারস, কাস্তেচরা, মথুরা, নিশিবক, কানিবক এবং বনগরুসহ ৫২ প্রজাতির ৩৪১টি প্রাণী। সাফারি পার্কের প্রবেশমুখে রাস্তার পাশে রয়েছে অজগর, বানর, সাম্বার, চিত্রা হরিণ এবং কুমিরের বেষ্টনী। একটু ভেতরে গেলে দেখা মেলে চিত্রা হরিণ, ভাল্লুক, হাতি, জেব্রা, জলহস্তী এবং উটপাখির মনোমুগ্ধকর পদচারণা। দর্শনার্থীরাও কেউ হেঁটে আবার কেউ পার্কের গাড়িতে চড়ে পার্কের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য ও প্রাণীর দৌড়ঝাঁপ অবলোকন করছেন। সাফারি পার্কের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় বাঘবেষ্টনী। বেষ্টনীতে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছে জয়, জুঁই, আঁখি ও বড়ুয়া নামের ৪টি বাঘ।
বেশির ভাগ দর্শনার্থীর নজর বাঘের দিকে। বেষ্টনীতে দাঁড়িয়ে কিংবা ঘরের ছাদে উঠে অনেকে বাঘ দেখছেন। পাশেই রয়েছে সিংহবেষ্টনী। পৃথক দুটি কক্ষের একটিতে আছে সম্রাট নামের একটি পুরুষ সিংহ, অপর কক্ষে আছে দুটি স্ত্রী জাতের সিংহ। দর্শনার্থীরা দূর থেকে সিংহের গর্জন শুনছিলেন।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, রোজার ঈদ ও নববর্ষের টানা ছুটিতে কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে এসেছেন বেশুমার পর্যটক। তাঁদের অনেকেই সাফারি পার্কে ঘুরতে এসেছেন। সাফারি পার্ক দেখতে আসা ২৮ হাজার দর্শনার্থীর ৮০ শতাংশ কক্সবাজারের বাসিন্দা। বাকি ২০ শতাংশ বাইরের জেলার পর্যটক।
তিনি আরো বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সাফারি পার্কে দৈনিক গড়ে দুই থেকে তিন হাজার দর্শনার্থী আসেন। সাফারি পার্ক ঘুরে দেখতে আছে একটি এসি ও দুটি নন–এসি বাস। পার্কে ভ্রসণ করতে চাইলে টিকিট কাটতে হয়।
প্রাপ্তবয়স্কদের ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের (১৫ বছরের নিচে) টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাফারি পার্ক খোলা থাকে। সপ্তাহে একদিন (মঙ্গলবার) সাফারি পার্কটি বন্ধ থাকে। সবমিলিয়ে এবারের রোজার ঈদ ও নববর্ষের ছুটিতে দর্শনার্থীরা সাফারি পার্কে একটি ভালো সময় কাটিয়েছেন।
বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দর্শনার্থীদেও উপচে পড়া ভিড়। দেশের প্রথম এই সাফারি পার্কের দর্শনীয় স্পটগুলোকে সরকার বিগত তিন অর্থবছরে মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অবকাঠামো খাতে দৃশ্যমান উন্নয়নের মাধ্যমে নবরূপে সাজিয়ে তুলেছেন। তাতে সাফারি পার্কের বাঘ, সিংহ, ভাল্লুক, হাতি, জলহস্তী, কুমিরসহ বন্যপ্রাণীর বেষ্টনীগুলোতে নান্দনিক ও নির্মল পরিবেশ ফিরে আসায় আগের তুলনায় এ বছর পার্ক ভ্রমণে এসে দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দে বিমোহিত হচ্ছেন।
অপরদিকে, ব্যাংক ডাকাতির জেরে পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে নিরাপত্তাজনিত সংকট দেখা দেয়ায় সেখানকার পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে।
এমন অবস্থায় এ বছর পর্যটন জেলা কক্সবাজারের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে পর্যটক দর্শনার্থী আগমন তুলনামূলক বেড়েছে। সম্প্রতি সরেজমিনে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক ঘুরে একাধিক দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা বলে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (রেঞ্জ অফিসার) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে প্রতিদিন সাফারি পার্ক ভ্রমণে আসতেন দুই থেকে তিন হাজার দর্শনার্থী। রোজার ঈদ ও বাংলা নববর্ষের ছুটিতে তা বেড়েছে দ্বিগুণ।
তিনি আরও বলেন, গত ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিন সাড়ে ৭ হাজার দর্শনার্থী পার্কে এসেছেন। পরদিন থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৪ দিন গড়ে ৫ হাজার করে দর্শনার্থী বন্যপ্রাণী দেখে বাড়ি ফিরেছেন। গত মঙ্গলবার সরকারিভাবে সাফারি পার্ক বন্ধ ছিল। এই হিসাবে ৫ দিনে ২৮ থেকে ৩০ হাজার দর্শনার্থী রোজার ঈদ ও নববর্ষের টানা ছুটিতে সাফারি পার্ক ভ্রমণ করেছেন। সাফারি পার্কের টিকেট কাউন্টারের পরিচালক দিপন দত্ত বলেন, ঈদের ছুটিতে ৫ দিনে আমরা মোট ১৪ লাখ টাকার টিকেট বিক্রি করেছি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক দর্শনার্থীর প্রবেশ ফি ৫০ টাকা। শিক্ষার্থী ও ছোট শিশুদের জন্য গেইট ইজারাদার চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদি কর্তৃক বিশেষ ছাড় দেয়া হয়।
জানা গেছে, ২০০১ সালের ১৯ জানুয়ারি ২,২৫০ একর বনাঞ্চল নিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম এই সাফারি পার্ক। এর আগে ১৯৮০ সালে এটি ছিল হরিণ প্রজননকেন্দ্র। বর্তমানে পার্কের বিভিন্ন বেষ্টনীতে আছে সিংহ, বাঘ, জেব্রা, ওয়াইল্ড বিস্ট, জলহস্তী, ময়ুর, অজগর, কুমির, হাতি, ভাল্লুক, হরিণ, লামচিতা, শকুন, কচ্ছপ, রাজধনেশ, কাকধনেশ, ইগল, সাদা বক, রঙ্গিলা বক, সারস, কাস্তেচরা, মথুরা, নিশিবক, কানিবক এবং বনগরুসহ ৫২ প্রজাতির ৩৪১টি প্রাণী। সাফারি পার্কের প্রবেশমুখে রাস্তার পাশে রয়েছে অজগর, বানর, সাম্বার, চিত্রা হরিণ এবং কুমিরের বেষ্টনী। একটু ভেতরে গেলে দেখা মেলে চিত্রা হরিণ, ভাল্লুক, হাতি, জেব্রা, জলহস্তী এবং উটপাখির মনোমুগ্ধকর পদচারণা। দর্শনার্থীরাও কেউ হেঁটে আবার কেউ পার্কের গাড়িতে চড়ে পার্কের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য ও প্রাণীর দৌড়ঝাঁপ অবলোকন করছেন। সাফারি পার্কের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় বাঘবেষ্টনী। বেষ্টনীতে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছে জয়, জুঁই, আঁখি ও বড়ুয়া নামের ৪টি বাঘ।
বেশির ভাগ দর্শনার্থীর নজর বাঘের দিকে। বেষ্টনীতে দাঁড়িয়ে কিংবা ঘরের ছাদে উঠে অনেকে বাঘ দেখছেন। পাশেই রয়েছে সিংহবেষ্টনী। পৃথক দুটি কক্ষের একটিতে আছে সম্রাট নামের একটি পুরুষ সিংহ, অপর কক্ষে আছে দুটি স্ত্রী জাতের সিংহ। দর্শনার্থীরা দূর থেকে সিংহের গর্জন শুনছিলেন।
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, রোজার ঈদ ও নববর্ষের টানা ছুটিতে কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে এসেছেন বেশুমার পর্যটক। তাঁদের অনেকেই সাফারি পার্কে ঘুরতে এসেছেন। সাফারি পার্ক দেখতে আসা ২৮ হাজার দর্শনার্থীর ৮০ শতাংশ কক্সবাজারের বাসিন্দা। বাকি ২০ শতাংশ বাইরের জেলার পর্যটক।
তিনি আরো বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সাফারি পার্কে দৈনিক গড়ে দুই থেকে তিন হাজার দর্শনার্থী আসেন। সাফারি পার্ক ঘুরে দেখতে আছে একটি এসি ও দুটি নন–এসি বাস। পার্কে ভ্রসণ করতে চাইলে টিকিট কাটতে হয়।
প্রাপ্তবয়স্কদের ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের (১৫ বছরের নিচে) টিকিটের মূল্য ২০ টাকা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাফারি পার্ক খোলা থাকে। সপ্তাহে একদিন (মঙ্গলবার) সাফারি পার্কটি বন্ধ থাকে। সবমিলিয়ে এবারের রোজার ঈদ ও নববর্ষের ছুটিতে দর্শনার্থীরা সাফারি পার্কে একটি ভালো সময় কাটিয়েছেন।