alt

সারাদেশ

আখতারুজ্জামান, শিমুল-এরা কারা

মাসুদ রানা : বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীন। তিনি ঝিনাইদহের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। যে ফ্লাটে আজীমকে খুন করা হয় সেটি ভাড়া নিয়েছিলেন শাহীন। শাহীনের ভাই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর মেয়র। এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল আরেক বন্ধু ও চরমপন্থী নেতা আমানউল্লাহ আমানকে। কলকাতায় বসে হত্যার চূড়ান্ত ছক এঁকে বাংলাদেশে চলে আসেন শাহীন। পরে আমানসহ ছয়জন মিলে এমপি আজীমকে সঞ্জীবা গার্ডেন নামের একটি ফ্ল্যাটে ট্র্যাপে ফেলে ডেকে আনেন। এরপর তাকে জিম্মি করে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে ফেলা হয় অজ্ঞাত স্থানে।

আজীমকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকা দেয়ার কথা ছিল হত্যাকাণ্ডের পর। তাদের মিশন সফল হওয়ার পর আজীমের মরদেহের টুকরোগুলো গুম করতে সিয়াম ও জিহাদ নামের দুজনকে দায়িত্ব দিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আমান। ঢাকায় এসে দেখা করেন আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে। তবে শাহীন পরবর্তীসময়ে তাকে কত টাকা দিয়েছেন সেটা জানা যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ। তারা হলেন- এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানউল্লাহ আমান, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আজীকে খুন করা হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের মালিক সন্দ্বীপ রায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী। ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তবে আখতারুজ্জামান এখনও ধরা পড়েননি। ভারত থেকে নেপাল হয়ে এরইমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে খবর পেয়েছে ঢাকার পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন বলেন, ‘আপনার মতো আমিও শুনেছি যে মেয়র সাহেবের ভাই শাহীন মিয়ার পুরো নাম আখতারুজ্জামান। তবে আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে আগের কোনো অভিযোগ নেই বা কোনো ডকুমেন্ট নেই। কোটচাঁদপুরের মেয়র সহিদুজ্জামানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ওর পুরো নাম আখতারুজ্জামান। ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ওর পরিবার সেখানে থাকে। ও নিজেও সেখানে থাকে। এক সপ্তাহ আগে ও বাড়ি ছেড়েছিলেন।’

বাড়ি থেকে আক্তারুজ্জামান কোথায় গেছেন জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘সেটা আমি জানি না।’ তিনি ভারতে গেছেন কিনা জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘যেতে পারে।’ কলকাতায় আক্তারুজ্জামানের কোনো ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়া আছে কিনা প্রশ্ন করলে তার ভাই সহিদুজ্জামান বলেন, ‘ঠিক ভাড়া না, পরিচিত একজনের ফ্ল্যাটেও মাঝে মাঝে গিয়ে থাকত।’ কলকাতার পুলিশ বলছে, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আজীমকে খুন হয়েছেন, সেটি আখতারুজ্জামান ভাড়া নিয়েছিলেন, সে বিষয়ে কিছু জানেন কিনা এই প্রশ্নে মেয়র বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই।’ আখতারুজ্জামানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে সব কিছু বলা হবে। আমি সব বলে দিয়েছি, এখন আমরা ফারদার আর কিছু বলব না। আমাদের কাছে সব নিউজ আছে।

যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন মূল পরিকল্পনাকারী শাহীন

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সাজিয়ে দিয়ে ১০ মে ঢাকায় চলে আসেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। এমপি আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়টি দেশে আলোচিত হলে তিনি ১৮ মে আবারও ভারত হয়ে নেপালে চলে যান। ২১ মে নেপাল থেকে চলে যান দুবাই। ২২ মে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

শিমুল যেভাবে হয়ে ওঠেন আমানুল্লাহ

সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ঘটনাটি এখন সারাদেশে আলোচনায়। যাকে এমপি আজীমের ভাড়াটে খুনি বলছে পুলিশ। ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর শিমুল ভূঁইয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছেন, তার নাম সৈয়দ আমানুল্লাহ। তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বর্তমানে খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য আর ভাই শরীফ মোহাম্মদ ভূঁইয়া ওরফে শিপলু ভূঁইয়া ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।

কিন্তু খুলনার শীর্ষ চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়া কীভাবে হয়ে ওঠেন সৈয়দ আমানুল্লাহ? কীভাবেইবা খুনের রাজনীতিতে তার উত্থান? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল-জনযুদ্ধ) অন্যতম শীর্ষ নেতা। ভাই শিপলু ভূঁইয়া ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পর শিমুলের পাসপোর্টে বসিয়ে দেয়া হয় আমানুল্লাহ নামটি। আমানুল্লাহ নামের পাসপোর্ট ব্যবহার করেই তিনি ভারতে যাওয়া-আসা করতেন।

এমনকি ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করতে একই ভুয়া নামে জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) বানিয়ে নেন শিমুল। শিমুল থেকে আমানুল্লাহ হয়ে ওঠা এবং কীভাবে তিনি ভুয়া পাসপোর্ট ও ভুয়া এনআইডি তৈরি করলেন, এগুলোই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে এসেছে।

এমপি আজীম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিমুল ছাড়াও তার পরিবারের আরও তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন- শিমুলের স্ত্রী সাবিনা মুক্তা, বড় ভাই লাকি ভূঁইয়া ও ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দামোদরের অন্য প্রভাবশালী সরদার পরিবারের সঙ্গে ভূঁইয়া পরিবারের দ্বন্দ্ব অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে। এ দ্বন্দ্ব কেন্দ্র করে এরই মধ্যে দুই পরিবারের চারজন খুন হয়েছেন। তবু দুই পরিবারের দ্বন্দ্বের অবসান হয়নি।

এলাকাবাসী ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে ফুলতলা উপজেলা নকশাল বাহিনীর ঘাঁটি ছিল। তখন নকশাল সদস্যদের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে ভূঁইয়া পরিবারের। এ নিয়ে এলাকার সরদার পরিবারের সঙ্গে ভূঁইয়াদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই সময়ই শিমুল ভূঁইয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন।

দামোদরের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন ভূঁইয়ার ছয় ছেলের মধ্যে চতুর্থ ফজল ভূঁইয়া ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ। শিমুল ১৯৮৫ সালে দামোদর এমএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর দৌলতপুরের দিবা নৈশ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন রাজশাহী বিদ্যালয়ে।

তৎকালীন সময়েই স্থানীয় ডুমুরিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ইমরানকে হত্যার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসেন শিমুল ভূঁইয়া। রাজশাহীতে থাকাকালে ১৯৯১ সালে একটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে সাত বছর কারাভোগ করেন তিনি। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন কারাগারে। তার কারান্তরীণ অবস্থায় সরদার পরিবারের প্রবীণ সদস্য সরদার আবুল কাশেম দামোদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে দুই পরিবারের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আরও চরম রূপ নেয়।

এক পর্যায়ে ১৯৯৮ সালে সরদার আবুল কাশেমকে হত্যার মধ্য দিয়ে এ বিরোধে প্রবেশ করে অস্ত্রের রাজনীতি। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীসময়ে খুন হন আবুল কাশেমের বড় ছেলে দামোদরের ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আবু সাঈদ বাদলও। সরদার পরিবারের অভিযোগ, এ দুটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভূঁইয়া পরিবার জড়িত। কাশেম হত্যা মামলায় ভূঁইয়া পরিবারের শিমুল, শিপলু ও মমিনুরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। পরে ২০০০ সালে যশোরের অভয়নগর এলাকায় অন্য একটি হত্যা মামলায় ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন শিমুল ভূঁইয়া।

পুলিশ জানিয়েছে, বাদল হত্যা মামলাটির বিচার চলাকালে শিমুলের সেজ ভাই মুকুল ভূঁইয়া ওরফে হাতকাটা মুকুল পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত হন। এর পেছনে স্থানীয় নেতা সরদার আলাউদ্দিন মিঠুর যোগসাজশ থাকতে পারে বলে মনে করে ভূঁইয়া পরিবার। ২০১৭ সালে জেলে অবস্থান করেই ফুলতলা উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিঠুকেও হত্যা করেন শিমুল। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদের এক আত্মীয় (পুলিশ কর্মকর্তা) খুলনা থেকে যশোর গিয়ে শিমুলকে খুলনায় নিয়ে আসেন।

এলাকাবাসী বলছেন, রাজশাহীতে থাকাকালীন শিমুলের যাতায়াত ছিল ঝিনাইদহে। সেখানে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল-জনযুদ্ধ) শীর্ষ নেতা আবদুর রশিদ মালিথা ওরফে দাদা তপনের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। একাধিকবার জেলখাটার কারণে লেখাপড়া বন্ধ করে চরমপন্থি দলে যোগ দেন শিমুল। দায়িত্ব পান খুলনা অঞ্চলের। এরপর তিনি ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা হয়ে ওঠেন আরও বেপরোয়া।

২০১০ সালের আগ পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চরমপন্থিরা। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রমতে, সেই সময়ে শিমুল ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। খুলনার শীর্ষ চরমপন্থি নেতা আবদুর রশিদ তাপু, ডুমুরিয়ার মৃণাল, শৈলেন, দেবু সবাই ছিলেন শিমুলের অধীনে। শিমুল প্রকাশ্যে না এলেও তার নামেই চলতো সবকিছু। তার প্রভাবে সর্বশেষ খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্ত্রী সাবিনা মুক্তা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হন। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, শিমুলের ছোট ভাই শিপলু ভূঁইয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর শিমুলের পাসপোর্ট আমানুল্লাহ নামে করে দেন, যা নিয়ে শিমুল ভারতে যাতায়াত করে আসছিলেন।

ছবি

ভাঙছে সীমান্ত নদী ইছামতীর বেড়িবাঁধ : এলাকায় আতঙ্ক

শিথিল কারফিউতে খুলেছে দোকানপাট, চলছে গাড়ি, আতঙ্ক কাটছে না জনমনে

ঢাকাসহ ৪ জেলায় ৯ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল

ছবি

ক্রেতা উপস্থিতি কম, বেচা-বিক্রি ‘ঠাণ্ডা’

বেরোবির উপাচার্যের বাসভবনে আক্রমণ-আগুন, যেভাবে উদ্ধার হলেন অবরুদ্ধ ২০ জন

ছবি

গুলিবিদ্ধ অনেকেই হারিয়েছেন পা

ঘটনার দশদিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ, উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ৭০ ভরি স্বর্ণের এক আনাও

সিলেটে সীমান্তকেন্দ্রিক চোরাচালান, ঘুরেফিরে তিনিই বিভিন্ন থানার ওসি

ছবি

অনেক পত্রিকায় খবর এলো, কিন্তু রুদ্র তো আর আসবে না

সহিংসতা-নাশকতার অভিযোগে ২০১ মামলা, গ্রেপ্তার ২২০৯

ছবি

কারফিউ শিথিলের সময় আরও ভিড়, যানজট

ছবি

রায়গঞ্জে অব্যবস্থাপনায় বন্ধের মুখে প্রাণিসম্পদ উপকেন্দ্রগুলো

এবার সারাদেশে পরীক্ষামূলক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু

ছবি

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ৩৩১ বন্দীর আত্মসমর্পণ

ছবি

ফুটেজ দেখে সেতু ভবনে আগুন-লুটপাটে জড়িতদের ধরা হচ্ছে : ডিবি

সোনারগাঁয়ে জ্বালাও পোড়াও ভাংচুর না হলেও নাশকতার মামলায় আসামি ৮ শতাধিক, গ্রেফতার অর্ধশত

সেন্টমার্টিনে ট্রলার ডুবিতে ছাত্রলীগ নেতা নিখোঁজ, কোস্টগার্ডের চৌকিতে হামলা

কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা মারধরের ঘটনায় আরও ১১ জন গ্রেফতার

ঢাকাসহ চার জেলায় আজ ও কাল ৭ ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল

ছবি

টাঙ্গাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত ২০

ছবি

আবারও বেপরোয়া সার্ভেয়ার বাকের ও হাসান সিন্ডিকেট ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না কক্সবাজার এলএ শাখায়

ছবি

রামু থেকে অস্ত্র ও গুলি নিয়ে সন্ত্রাসী আটক

ছবি

কক্সবাজারে ক্ষমতাসীনদের হামলায় ৫ সংবাদকর্মী আহত

ছবি

নিখোঁজের দুই দিন পর পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

টেকনাফ সমুদ্র উপকূলে পালিয়ে এলো ৫ রোহিঙ্গা

ছবি

টেকনাফগামী ট্রলারে মায়ানমারের গুলি

ছবি

কোটা আন্দোলন: রংপুরে সংঘর্ষ ও মৃত্যুর তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন

ছবি

শেখ হাসিনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্বে কুরুচিপূর্ন বক্তব্য দেওয়ায় গজারিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সভা

ছবি

নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের না’গঞ্জে মানববন্ধন

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের দাফন সম্পন্ন

ছবি

রামুতে মাদকসেবী ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

সারাদেশে স্কুল, কলেজ অনিদিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন : কক্সবাজারে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

ছবি

চীন বা ভারত নয়, নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবী

ছবি

মায়ানমারে চলছে বোমা হামলা সীমান্তে এতো কড়াকড়িতেও রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

tab

সারাদেশ

আখতারুজ্জামান, শিমুল-এরা কারা

মাসুদ রানা

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীন। তিনি ঝিনাইদহের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। যে ফ্লাটে আজীমকে খুন করা হয় সেটি ভাড়া নিয়েছিলেন শাহীন। শাহীনের ভাই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর মেয়র। এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল আরেক বন্ধু ও চরমপন্থী নেতা আমানউল্লাহ আমানকে। কলকাতায় বসে হত্যার চূড়ান্ত ছক এঁকে বাংলাদেশে চলে আসেন শাহীন। পরে আমানসহ ছয়জন মিলে এমপি আজীমকে সঞ্জীবা গার্ডেন নামের একটি ফ্ল্যাটে ট্র্যাপে ফেলে ডেকে আনেন। এরপর তাকে জিম্মি করে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে ফেলা হয় অজ্ঞাত স্থানে।

আজীমকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকা দেয়ার কথা ছিল হত্যাকাণ্ডের পর। তাদের মিশন সফল হওয়ার পর আজীমের মরদেহের টুকরোগুলো গুম করতে সিয়াম ও জিহাদ নামের দুজনকে দায়িত্ব দিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আমান। ঢাকায় এসে দেখা করেন আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে। তবে শাহীন পরবর্তীসময়ে তাকে কত টাকা দিয়েছেন সেটা জানা যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ। তারা হলেন- এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানউল্লাহ আমান, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আজীকে খুন করা হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের মালিক সন্দ্বীপ রায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী। ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তবে আখতারুজ্জামান এখনও ধরা পড়েননি। ভারত থেকে নেপাল হয়ে এরইমধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন বলে খবর পেয়েছে ঢাকার পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন বলেন, ‘আপনার মতো আমিও শুনেছি যে মেয়র সাহেবের ভাই শাহীন মিয়ার পুরো নাম আখতারুজ্জামান। তবে আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে আগের কোনো অভিযোগ নেই বা কোনো ডকুমেন্ট নেই। কোটচাঁদপুরের মেয়র সহিদুজ্জামানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ওর পুরো নাম আখতারুজ্জামান। ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ওর পরিবার সেখানে থাকে। ও নিজেও সেখানে থাকে। এক সপ্তাহ আগে ও বাড়ি ছেড়েছিলেন।’

বাড়ি থেকে আক্তারুজ্জামান কোথায় গেছেন জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘সেটা আমি জানি না।’ তিনি ভারতে গেছেন কিনা জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘যেতে পারে।’ কলকাতায় আক্তারুজ্জামানের কোনো ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়া আছে কিনা প্রশ্ন করলে তার ভাই সহিদুজ্জামান বলেন, ‘ঠিক ভাড়া না, পরিচিত একজনের ফ্ল্যাটেও মাঝে মাঝে গিয়ে থাকত।’ কলকাতার পুলিশ বলছে, যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আজীমকে খুন হয়েছেন, সেটি আখতারুজ্জামান ভাড়া নিয়েছিলেন, সে বিষয়ে কিছু জানেন কিনা এই প্রশ্নে মেয়র বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই।’ আখতারুজ্জামানের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে সব কিছু বলা হবে। আমি সব বলে দিয়েছি, এখন আমরা ফারদার আর কিছু বলব না। আমাদের কাছে সব নিউজ আছে।

যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়েছেন মূল পরিকল্পনাকারী শাহীন

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সাজিয়ে দিয়ে ১০ মে ঢাকায় চলে আসেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। এমপি আনোয়ারুল আজীম নিখোঁজের বিষয়টি দেশে আলোচিত হলে তিনি ১৮ মে আবারও ভারত হয়ে নেপালে চলে যান। ২১ মে নেপাল থেকে চলে যান দুবাই। ২২ মে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

শিমুল যেভাবে হয়ে ওঠেন আমানুল্লাহ

সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। ঘটনাটি এখন সারাদেশে আলোচনায়। যাকে এমপি আজীমের ভাড়াটে খুনি বলছে পুলিশ। ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর শিমুল ভূঁইয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছেন, তার নাম সৈয়দ আমানুল্লাহ। তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বর্তমানে খুলনা জেলা পরিষদের সদস্য আর ভাই শরীফ মোহাম্মদ ভূঁইয়া ওরফে শিপলু ভূঁইয়া ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান।

কিন্তু খুলনার শীর্ষ চরমপন্থি নেতা শিমুল ভূঁইয়া কীভাবে হয়ে ওঠেন সৈয়দ আমানুল্লাহ? কীভাবেইবা খুনের রাজনীতিতে তার উত্থান? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিমুল ভূঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ চরমপন্থি সংগঠন পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল-জনযুদ্ধ) অন্যতম শীর্ষ নেতা। ভাই শিপলু ভূঁইয়া ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পর শিমুলের পাসপোর্টে বসিয়ে দেয়া হয় আমানুল্লাহ নামটি। আমানুল্লাহ নামের পাসপোর্ট ব্যবহার করেই তিনি ভারতে যাওয়া-আসা করতেন।

এমনকি ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করতে একই ভুয়া নামে জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) বানিয়ে নেন শিমুল। শিমুল থেকে আমানুল্লাহ হয়ে ওঠা এবং কীভাবে তিনি ভুয়া পাসপোর্ট ও ভুয়া এনআইডি তৈরি করলেন, এগুলোই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে এসেছে।

এমপি আজীম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিমুল ছাড়াও তার পরিবারের আরও তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন- শিমুলের স্ত্রী সাবিনা মুক্তা, বড় ভাই লাকি ভূঁইয়া ও ভাতিজা তানভীর ভূঁইয়া। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দামোদরের অন্য প্রভাবশালী সরদার পরিবারের সঙ্গে ভূঁইয়া পরিবারের দ্বন্দ্ব অর্ধশত বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে। এ দ্বন্দ্ব কেন্দ্র করে এরই মধ্যে দুই পরিবারের চারজন খুন হয়েছেন। তবু দুই পরিবারের দ্বন্দ্বের অবসান হয়নি।

এলাকাবাসী ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে ফুলতলা উপজেলা নকশাল বাহিনীর ঘাঁটি ছিল। তখন নকশাল সদস্যদের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে ভূঁইয়া পরিবারের। এ নিয়ে এলাকার সরদার পরিবারের সঙ্গে ভূঁইয়াদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই সময়ই শিমুল ভূঁইয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন।

দামোদরের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন ভূঁইয়ার ছয় ছেলের মধ্যে চতুর্থ ফজল ভূঁইয়া ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ। শিমুল ১৯৮৫ সালে দামোদর এমএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর দৌলতপুরের দিবা নৈশ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন রাজশাহী বিদ্যালয়ে।

তৎকালীন সময়েই স্থানীয় ডুমুরিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান ইমরানকে হত্যার মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসেন শিমুল ভূঁইয়া। রাজশাহীতে থাকাকালে ১৯৯১ সালে একটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে সাত বছর কারাভোগ করেন তিনি। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন কারাগারে। তার কারান্তরীণ অবস্থায় সরদার পরিবারের প্রবীণ সদস্য সরদার আবুল কাশেম দামোদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে দুই পরিবারের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আরও চরম রূপ নেয়।

এক পর্যায়ে ১৯৯৮ সালে সরদার আবুল কাশেমকে হত্যার মধ্য দিয়ে এ বিরোধে প্রবেশ করে অস্ত্রের রাজনীতি। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীসময়ে খুন হন আবুল কাশেমের বড় ছেলে দামোদরের ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আবু সাঈদ বাদলও। সরদার পরিবারের অভিযোগ, এ দুটি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভূঁইয়া পরিবার জড়িত। কাশেম হত্যা মামলায় ভূঁইয়া পরিবারের শিমুল, শিপলু ও মমিনুরের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। পরে ২০০০ সালে যশোরের অভয়নগর এলাকায় অন্য একটি হত্যা মামলায় ২০০০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জেল খাটেন শিমুল ভূঁইয়া।

পুলিশ জানিয়েছে, বাদল হত্যা মামলাটির বিচার চলাকালে শিমুলের সেজ ভাই মুকুল ভূঁইয়া ওরফে হাতকাটা মুকুল পুলিশের ক্রসফায়ারে নিহত হন। এর পেছনে স্থানীয় নেতা সরদার আলাউদ্দিন মিঠুর যোগসাজশ থাকতে পারে বলে মনে করে ভূঁইয়া পরিবার। ২০১৭ সালে জেলে অবস্থান করেই ফুলতলা উপজেলার নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিঠুকেও হত্যা করেন শিমুল। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাদের এক আত্মীয় (পুলিশ কর্মকর্তা) খুলনা থেকে যশোর গিয়ে শিমুলকে খুলনায় নিয়ে আসেন।

এলাকাবাসী বলছেন, রাজশাহীতে থাকাকালীন শিমুলের যাতায়াত ছিল ঝিনাইদহে। সেখানে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল-জনযুদ্ধ) শীর্ষ নেতা আবদুর রশিদ মালিথা ওরফে দাদা তপনের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। একাধিকবার জেলখাটার কারণে লেখাপড়া বন্ধ করে চরমপন্থি দলে যোগ দেন শিমুল। দায়িত্ব পান খুলনা অঞ্চলের। এরপর তিনি ও তার পরিবারের অন্য সদস্যরা হয়ে ওঠেন আরও বেপরোয়া।

২০১০ সালের আগ পর্যন্ত খুলনা অঞ্চলে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চরমপন্থিরা। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রমতে, সেই সময়ে শিমুল ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। খুলনার শীর্ষ চরমপন্থি নেতা আবদুর রশিদ তাপু, ডুমুরিয়ার মৃণাল, শৈলেন, দেবু সবাই ছিলেন শিমুলের অধীনে। শিমুল প্রকাশ্যে না এলেও তার নামেই চলতো সবকিছু। তার প্রভাবে সর্বশেষ খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্ত্রী সাবিনা মুক্তা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সদস্য নির্বাচিত হন। গোয়েন্দা সূত্র বলছে, শিমুলের ছোট ভাই শিপলু ভূঁইয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর শিমুলের পাসপোর্ট আমানুল্লাহ নামে করে দেন, যা নিয়ে শিমুল ভারতে যাতায়াত করে আসছিলেন।

back to top