alt

সারাদেশ

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আঘাত হানতে পারে রোববার সন্ধ্যায়

শাফিউল আল ইমরান : শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

শনিবার বিকেলে কক্সবাজারে সতর্কতার অংশ হিসেবে লাল পতাকা টাঙানো হয়-সংবাদ

বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপ রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে- এটি আয়লা ও আম্ফানের মতো ক্ষতি ‘করতে পারে’।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক শনিবার (২৫ মে) রাত সাড়ে ৮টায় সংবাদকে বলেন, ‘রেমাল আঘাত হানবে রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা বা মধ্যবরাত নাগাদ।’

‘ইতোমধ্যে রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণিত হয়েছে। পায়রা এবং মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে আমরা ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছি।’

আবুল কালাম মল্লিক আরও বলেন, ‘রেমাল পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।’

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিমের (বিডব্লিউওটি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে ২৬ মে দিবাগত রাত থেকে ২৭ মে সকালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে পটুয়াখালীর ওপর দিয়ে যেকোনো জায়গা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এর সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট।

রেমালের প্রভাবে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরুর খবর পাওয়া গেছে। বিকেল থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বৃষ্টির সঙ্গে দমকা শুরু হয়।

শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজারে জড়ের আলামত দেখা যায়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে তীব্র গতির বাতাস বইছে। শুরু হয়েছে অঝোর ধারার বৃষ্টি। উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বরিশালে। বরিশালের নদীবন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে আবহাওয়া অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোন সময় এই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হতে পারে।’

ইতোমধ্যে রেমালের প্রভাবে ‘আতঙ্ক’ বাড়ছে উপকূলীয় জেলার নদী তীরবর্তী মানুষের মধ্যে।

শনিবার দুপুর ১টায় বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এর আগেই আবহাওয়ার অধিদপ্তর ইঙ্গিত দিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড়টি রোববার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে দেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করবে। তারা বলেছিল, ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনার কথা। শনিবার দুপুরে আবহাওয়া অধিপ্তরের ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে- এমন আশঙ্কায় বাড়ানো হয়েছে সতর্কতার মাত্রা।

সাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘রেমাল’।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি শনিবার রাত ৯টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে এবং আজ সকাল ৬টা নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

আবহাওয়ার ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৬ জেলার বিশেষ প্রস্তুতি
শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একসভায় প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৬ জেলার বিশেষ প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলাগুলো হলো; সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপকূলবর্তী সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী মহিববুর বলেন, ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, ভারতের আবহাওয়া অফিস, চীনের আবহাওয়া অফিস, জাপানের আবহাওয়া অফিস এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন। এখন চলছে সংকেত ৩। এটা (সতর্ক সংকেত) সন্ধ্যা নাগাদ বা রাতে ৪-এর উপরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

‘রাতে বিপদের পর্যায়ে চলে যেতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে মনে হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আসন্ন। সেটা মাথায় রেখে সেইভাবে আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি কাজ শুরু করে দিয়েছি।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরার উপকূল অঞ্চল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ৭ থেকে ৮ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এজন্য পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সব প্রস্তুতি রয়েছে। ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও উপকূলে ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।’

মহিববুর রহমান বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকায় ইফেক্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে। এখন ৫০০ থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থান করছে। বিশেষ করে পায়রা ও মোংলা বন্দরের সরাসরি দক্ষিণে।’

‘রোববার ভোর থেকে এটা প্রাথমিক আঘাত হানতে পারে। এরপর সন্ধ্যা নাগাদ মূলটা আঘাত হানবে।’

উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশ
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালকে কেন্দ্র করে উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটগুলোতে চলাচল করা লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযানের ব্যাপারে এখনও এমন কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

শনিবার বিকেলে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, আমরা ইতোমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় সব ধরনের লঞ্চ এবং নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ইন্টারনাল নদীবন্দরগুলোতে চলাচল করা লঞ্চের জন্য কী নির্দেশনা আসবে সেটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিএর সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রিমাল মোকাবিলায় বিআইডব্লিউটিএ ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে আবহাওয়া অফিস, কর্তৃপক্ষের সকল নদীবন্দরে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, বন্দরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা, নদীবন্দরের বিভিন্ন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এবং ড্রেজার বেইজের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখবেন। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য টেলিফোন নম্বর +৮৮০২২২৩৩৫২৩০৬ ও মোবাইল নম্বর ০১৯৫৮৬৫৮২১৩ ব্যবহারের অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী সব ধরনের নৌযানকে আবহাওয়া সংকেত ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জারি করা নির্দেশনা অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।

উপকূলের বাসিন্দাদের সচেতনতায় মাইকিং
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় ভোলায় উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে প্রচার চালাচ্ছে কোস্টগার্ড।

শনিবার সকালে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের সদস্যদের মাইকিং করতে দেখা গেছে।

কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট এইচ এম এম হারুন-অর-রশীদ জানান, সকাল থেকে ভোলার বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে ও নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের সচেতনতায় কাজ করছেন কোস্টগার্ড সদস্যরা।

এছাড়া কক্সবাজারের সৈকতে থাকা পর্যটকদেরকে বার বার মাইকিং করে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

ঘূর্ণিঝড়ের নাম যে কারণে রেমাল
এবারের ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এর নামকরণ করেছে ওমান। আরবিতে যার অর্থ বালু। অবশ্য এই নামে প্যালেস্টাইনের গাজা থেকে ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে একটি শহরও রয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা যেমন- বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লিউএমও), এশিয়ার জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়।

প্রথমে ঝড়ের নামকরণের কোনো নিয়ম ছিল না। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা এর জন্য একটি আদর্শ পদ্ধতি তৈরি করেন। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়, যাতে মানুষ ঝড়ের কথা মনে রাখতে ও শনাক্ত করতে পারেন। একটি নাম দিয়ে সচেতনতা তৈরি ও সতর্কতা পাঠানো যেন সহজ হয়।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের জন্য রাষ্ট্রসংঘের ওয়ার্ল্ড মেট্রোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন কিছু নিয়ম তৈরি করেছে। আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের অনুশীলন ১৯৫৩ সালে শুরু হয়েছিল। একই সময়ে, এটি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তা ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আটটি দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা।

এছাড়া ২০১৯ সালে ইরান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন যুক্ত হয়। যখন একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন এই ১৩টি দেশ তাদের ক্রম অনুসারে নাম নির্ধারণ করে। সোমালিয়ায় যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, তার নামকরণ করেছিল ভারত, যার নাম ছিল গতি। একই সঙ্গে ২০২৩ সালের ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। এবার ২০২৪-এ ‘রেমাল’ নামকরণ করেছে ওমান।

ছবি

ভাঙছে সীমান্ত নদী ইছামতীর বেড়িবাঁধ : এলাকায় আতঙ্ক

শিথিল কারফিউতে খুলেছে দোকানপাট, চলছে গাড়ি, আতঙ্ক কাটছে না জনমনে

ঢাকাসহ ৪ জেলায় ৯ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল

ছবি

ক্রেতা উপস্থিতি কম, বেচা-বিক্রি ‘ঠাণ্ডা’

বেরোবির উপাচার্যের বাসভবনে আক্রমণ-আগুন, যেভাবে উদ্ধার হলেন অবরুদ্ধ ২০ জন

ছবি

গুলিবিদ্ধ অনেকেই হারিয়েছেন পা

ঘটনার দশদিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ, উদ্ধার হয়নি লুট হওয়া ৭০ ভরি স্বর্ণের এক আনাও

সিলেটে সীমান্তকেন্দ্রিক চোরাচালান, ঘুরেফিরে তিনিই বিভিন্ন থানার ওসি

ছবি

অনেক পত্রিকায় খবর এলো, কিন্তু রুদ্র তো আর আসবে না

সহিংসতা-নাশকতার অভিযোগে ২০১ মামলা, গ্রেপ্তার ২২০৯

ছবি

কারফিউ শিথিলের সময় আরও ভিড়, যানজট

ছবি

রায়গঞ্জে অব্যবস্থাপনায় বন্ধের মুখে প্রাণিসম্পদ উপকেন্দ্রগুলো

এবার সারাদেশে পরীক্ষামূলক ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু

ছবি

নরসিংদী কারাগার থেকে পালানো ৩৩১ বন্দীর আত্মসমর্পণ

ছবি

ফুটেজ দেখে সেতু ভবনে আগুন-লুটপাটে জড়িতদের ধরা হচ্ছে : ডিবি

সোনারগাঁয়ে জ্বালাও পোড়াও ভাংচুর না হলেও নাশকতার মামলায় আসামি ৮ শতাধিক, গ্রেফতার অর্ধশত

সেন্টমার্টিনে ট্রলার ডুবিতে ছাত্রলীগ নেতা নিখোঁজ, কোস্টগার্ডের চৌকিতে হামলা

কক্সবাজারে ছাত্রলীগ নেতা মারধরের ঘটনায় আরও ১১ জন গ্রেফতার

ঢাকাসহ চার জেলায় আজ ও কাল ৭ ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল

ছবি

টাঙ্গাইলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত অর্ধশতাধিক

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আহত ২০

ছবি

আবারও বেপরোয়া সার্ভেয়ার বাকের ও হাসান সিন্ডিকেট ঘুষ ছাড়া ফাইল নড়ে না কক্সবাজার এলএ শাখায়

ছবি

রামু থেকে অস্ত্র ও গুলি নিয়ে সন্ত্রাসী আটক

ছবি

কক্সবাজারে ক্ষমতাসীনদের হামলায় ৫ সংবাদকর্মী আহত

ছবি

নিখোঁজের দুই দিন পর পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

টেকনাফ সমুদ্র উপকূলে পালিয়ে এলো ৫ রোহিঙ্গা

ছবি

টেকনাফগামী ট্রলারে মায়ানমারের গুলি

ছবি

কোটা আন্দোলন: রংপুরে সংঘর্ষ ও মৃত্যুর তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন

ছবি

শেখ হাসিনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্বে কুরুচিপূর্ন বক্তব্য দেওয়ায় গজারিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সভা

ছবি

নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের না’গঞ্জে মানববন্ধন

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের দাফন সম্পন্ন

ছবি

রামুতে মাদকসেবী ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

সারাদেশে স্কুল, কলেজ অনিদিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা

ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলন : কক্সবাজারে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

ছবি

চীন বা ভারত নয়, নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবী

ছবি

মায়ানমারে চলছে বোমা হামলা সীমান্তে এতো কড়াকড়িতেও রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

tab

সারাদেশ

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আঘাত হানতে পারে রোববার সন্ধ্যায়

শাফিউল আল ইমরান

শনিবার বিকেলে কক্সবাজারে সতর্কতার অংশ হিসেবে লাল পতাকা টাঙানো হয়-সংবাদ

শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপ রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে- এটি আয়লা ও আম্ফানের মতো ক্ষতি ‘করতে পারে’।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক শনিবার (২৫ মে) রাত সাড়ে ৮টায় সংবাদকে বলেন, ‘রেমাল আঘাত হানবে রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা বা মধ্যবরাত নাগাদ।’

‘ইতোমধ্যে রেমাল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণিত হয়েছে। পায়রা এবং মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে আমরা ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছি।’

আবুল কালাম মল্লিক আরও বলেন, ‘রেমাল পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।’

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিমের (বিডব্লিউওটি) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ক্যাটাগরি-১ শক্তিমাত্রার ঝড় হিসেবে ২৬ মে দিবাগত রাত থেকে ২৭ মে সকালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের দীঘা থেকে পটুয়াখালীর ওপর দিয়ে যেকোনো জায়গা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এর সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট।

রেমালের প্রভাবে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সাতক্ষীরায় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরুর খবর পাওয়া গেছে। বিকেল থেকে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বৃষ্টির সঙ্গে দমকা শুরু হয়।

শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজারে জড়ের আলামত দেখা যায়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। টেকনাফ, সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপে তীব্র গতির বাতাস বইছে। শুরু হয়েছে অঝোর ধারার বৃষ্টি। উত্তাল হয়ে উঠেছে সাগর।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বরিশালে। বরিশালের নদীবন্দর কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে আবহাওয়া অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোন সময় এই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হতে পারে।’

ইতোমধ্যে রেমালের প্রভাবে ‘আতঙ্ক’ বাড়ছে উপকূলীয় জেলার নদী তীরবর্তী মানুষের মধ্যে।

শনিবার দুপুর ১টায় বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিম্নচাপটি দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।

এর আগেই আবহাওয়ার অধিদপ্তর ইঙ্গিত দিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড়টি রোববার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে দেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করবে। তারা বলেছিল, ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনার কথা। শনিবার দুপুরে আবহাওয়া অধিপ্তরের ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে- এমন আশঙ্কায় বাড়ানো হয়েছে সতর্কতার মাত্রা।

সাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হবে ‘রেমাল’।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি শনিবার রাত ৯টা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে এবং আজ সকাল ৬টা নাগাদ প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

আবহাওয়ার ৭ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৬ জেলার বিশেষ প্রস্তুতি
শনিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একসভায় প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ৬ জেলার বিশেষ প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলাগুলো হলো; সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা।

সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। উপকূলবর্তী সব জেলাকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী মহিববুর বলেন, ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, ভারতের আবহাওয়া অফিস, চীনের আবহাওয়া অফিস, জাপানের আবহাওয়া অফিস এবং পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরা বুঝতে পেরেছি, ঘূর্ণিঝড়টি আসন্ন। এখন চলছে সংকেত ৩। এটা (সতর্ক সংকেত) সন্ধ্যা নাগাদ বা রাতে ৪-এর উপরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’

‘রাতে বিপদের পর্যায়ে চলে যেতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে মনে হয়েছে ঘূর্ণিঝড় আসন্ন। সেটা মাথায় রেখে সেইভাবে আমরা সর্বাত্মক প্রস্তুতি কাজ শুরু করে দিয়েছি।’ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরার উপকূল অঞ্চল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ৭ থেকে ৮ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে। এজন্য পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সব প্রস্তুতি রয়েছে। ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও উপকূলে ৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।’

মহিববুর রহমান বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত পুরো এলাকায় ইফেক্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে। এখন ৫০০ থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থান করছে। বিশেষ করে পায়রা ও মোংলা বন্দরের সরাসরি দক্ষিণে।’

‘রোববার ভোর থেকে এটা প্রাথমিক আঘাত হানতে পারে। এরপর সন্ধ্যা নাগাদ মূলটা আঘাত হানবে।’

উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চ চলাচল বন্ধের নির্দেশ
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালকে কেন্দ্র করে উপকূলীয় এলাকায় লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটগুলোতে চলাচল করা লঞ্চ ও অন্যান্য নৌযানের ব্যাপারে এখনও এমন কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।

শনিবার বিকেলে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন জানান, আমরা ইতোমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় সব ধরনের লঞ্চ এবং নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে ইন্টারনাল নদীবন্দরগুলোতে চলাচল করা লঞ্চের জন্য কী নির্দেশনা আসবে সেটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিএর সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রিমাল মোকাবিলায় বিআইডব্লিউটিএ ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে আবহাওয়া অফিস, কর্তৃপক্ষের সকল নদীবন্দরে স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, বন্দরের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা, নদীবন্দরের বিভিন্ন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এবং ড্রেজার বেইজের নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখবেন। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য টেলিফোন নম্বর +৮৮০২২২৩৩৫২৩০৬ ও মোবাইল নম্বর ০১৯৫৮৬৫৮২১৩ ব্যবহারের অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী সব ধরনের নৌযানকে আবহাওয়া সংকেত ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জারি করা নির্দেশনা অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে সংস্থাটি।

উপকূলের বাসিন্দাদের সচেতনতায় মাইকিং
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবিলায় ভোলায় উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে প্রচার চালাচ্ছে কোস্টগার্ড।

শনিবার সকালে জেলার বিভিন্ন এলাকায় কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের সদস্যদের মাইকিং করতে দেখা গেছে।

কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট এইচ এম এম হারুন-অর-রশীদ জানান, সকাল থেকে ভোলার বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করা হচ্ছে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে ও নদীর তীরবর্তী বাসিন্দাদের সচেতনতায় কাজ করছেন কোস্টগার্ড সদস্যরা।

এছাড়া কক্সবাজারের সৈকতে থাকা পর্যটকদেরকে বার বার মাইকিং করে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিচ্ছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

ঘূর্ণিঝড়ের নাম যে কারণে রেমাল
এবারের ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এর নামকরণ করেছে ওমান। আরবিতে যার অর্থ বালু। অবশ্য এই নামে প্যালেস্টাইনের গাজা থেকে ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে একটি শহরও রয়েছে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা যেমন- বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লিউএমও), এশিয়ার জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়।

প্রথমে ঝড়ের নামকরণের কোনো নিয়ম ছিল না। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা এর জন্য একটি আদর্শ পদ্ধতি তৈরি করেন। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়, যাতে মানুষ ঝড়ের কথা মনে রাখতে ও শনাক্ত করতে পারেন। একটি নাম দিয়ে সচেতনতা তৈরি ও সতর্কতা পাঠানো যেন সহজ হয়।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের জন্য রাষ্ট্রসংঘের ওয়ার্ল্ড মেট্রোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন কিছু নিয়ম তৈরি করেছে। আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের অনুশীলন ১৯৫৩ সালে শুরু হয়েছিল। একই সময়ে, এটি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে তা ২০১৪ সালে শুরু হয়েছিল। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আটটি দেশের মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা।

এছাড়া ২০১৯ সালে ইরান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন যুক্ত হয়। যখন একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন এই ১৩টি দেশ তাদের ক্রম অনুসারে নাম নির্ধারণ করে। সোমালিয়ায় যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, তার নামকরণ করেছিল ভারত, যার নাম ছিল গতি। একই সঙ্গে ২০২৩ সালের ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। এবার ২০২৪-এ ‘রেমাল’ নামকরণ করেছে ওমান।

back to top