মায়ানমারের জলসীমার ভেতর তিনটি যুদ্ধ জাহাজ নোঙর করে রেখেছে দেশটি। মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মিকে ঠেকাতে এসব জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। প্রতিবেশী হিসেবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। তবে এদিকে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন।
মায়ানমারের মংডু, রাথেডওং আর রামরি শহর দখল নেওয়ার জন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি লড়াই করছে সরকার বাহিনীর সাথে। গোলাগুলির শব্দ আসছে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে। বিদ্রোহীদের আক্রমণ ঠেকাতে মায়ানমারে জলসীমার ভেতরেই তিনটি যুদ্ধ জাহাজ নোঙর করে রেখেছে দেশটি। একই জলসীমার ভেতরে অবস্থান নিয়েছে আরাকান আর্মিও।
বাংলাদেশের জলসীমায় ডুবোচরের কারণে মায়ানমারের জলসীমা ব্যবহার করে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যায় নৌযান। তবে বর্তমানে সেই পথ দিয়ে কোনো নৌযান গেলেই মায়ানমার থেকে গুলি ছুঁড়ছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন, আমাদের বাংলাদেশের জলসীমায় মায়ানমারের কোনো যুদ্ধ জাহাজ নেই। আমাদের সীমানা নিরাপদ। দুই একটা জাহাজের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো তাদের সীমানায় আছে, তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের সীমানার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। তবে নাফ নদীতে নৌযান চলাচলে সতর্ক হওয়া জরুরি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে সাধারণত আমরা যে রুট ব্যবহার করি, সেটা তিন থেকে চারশ মিটার আনুমানিক। যেহেতু এবার যুদ্ধ হচ্ছে এর প্রেক্ষিতে আমরা এই পথ এড়িয়ে যাবো। যুদ্ধ চলছে নিরাপত্তার বিষয় আছে। আমরা বিকল্প রুটের ব্যবস্থা করছি। গতকাল শুক্রবার সেন্টমার্টিনে এক মাসের খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। বিকল্প পথে নৌযান চলাচলেও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিনে মায়ানমারের বিস্ফোরণের বিকট শব্দ বন্ধ হয়েছে। শনিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে কোনো বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়নি সীমান্ত এলাকার মানুষ। কিন্তু টানা ৪ দিন ধরে নাফনদীর সীমান্তে মায়ানমারের ৩টি জাহাজ অবস্থান করছে। তিনি জানান, গেল ৭ দিন ধরে সেন্টমার্টিন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপের ১০ হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছে। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, মায়ানমারের অভ্যন্তরের সংঘাত পর্যাবেক্ষণ করা হচ্ছে। সার্ভিস ট্রলারগুলো বিকল্প পথে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করছে। পাঠানো হয়েছে খাদ্যপণ্যও।
২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের জান্তা বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে তাদের নিপীড়ন-নির্যাতন ও হামলায় অন্তত সাড়ে চার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বন্দী করা হয়েছে ২৫ হাজার মানুষকে। জান্তার হামলায় মিয়ানমার জুড়ে অন্তত ৭৮ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মিসহ দেশটির একাধিক বিদ্রোহী সংগঠন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। এর ফলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
মায়ানমারের রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যুদ্ধ চলছে। যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্তের গ্রামগুলোতে। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের জেরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪
মায়ানমারের জলসীমার ভেতর তিনটি যুদ্ধ জাহাজ নোঙর করে রেখেছে দেশটি। মায়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মিকে ঠেকাতে এসব জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। প্রতিবেশী হিসেবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ। তবে এদিকে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন।
মায়ানমারের মংডু, রাথেডওং আর রামরি শহর দখল নেওয়ার জন্য বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি লড়াই করছে সরকার বাহিনীর সাথে। গোলাগুলির শব্দ আসছে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে। বিদ্রোহীদের আক্রমণ ঠেকাতে মায়ানমারে জলসীমার ভেতরেই তিনটি যুদ্ধ জাহাজ নোঙর করে রেখেছে দেশটি। একই জলসীমার ভেতরে অবস্থান নিয়েছে আরাকান আর্মিও।
বাংলাদেশের জলসীমায় ডুবোচরের কারণে মায়ানমারের জলসীমা ব্যবহার করে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যায় নৌযান। তবে বর্তমানে সেই পথ দিয়ে কোনো নৌযান গেলেই মায়ানমার থেকে গুলি ছুঁড়ছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন, আমাদের বাংলাদেশের জলসীমায় মায়ানমারের কোনো যুদ্ধ জাহাজ নেই। আমাদের সীমানা নিরাপদ। দুই একটা জাহাজের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো তাদের সীমানায় আছে, তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের সীমানার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। তবে নাফ নদীতে নৌযান চলাচলে সতর্ক হওয়া জরুরি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে সাধারণত আমরা যে রুট ব্যবহার করি, সেটা তিন থেকে চারশ মিটার আনুমানিক। যেহেতু এবার যুদ্ধ হচ্ছে এর প্রেক্ষিতে আমরা এই পথ এড়িয়ে যাবো। যুদ্ধ চলছে নিরাপত্তার বিষয় আছে। আমরা বিকল্প রুটের ব্যবস্থা করছি। গতকাল শুক্রবার সেন্টমার্টিনে এক মাসের খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। বিকল্প পথে নৌযান চলাচলেও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিনে মায়ানমারের বিস্ফোরণের বিকট শব্দ বন্ধ হয়েছে। শনিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে কোনো বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পায়নি সীমান্ত এলাকার মানুষ। কিন্তু টানা ৪ দিন ধরে নাফনদীর সীমান্তে মায়ানমারের ৩টি জাহাজ অবস্থান করছে। তিনি জানান, গেল ৭ দিন ধরে সেন্টমার্টিন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে দ্বীপের ১০ হাজার মানুষ বিপাকে পড়েছে। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, মায়ানমারের অভ্যন্তরের সংঘাত পর্যাবেক্ষণ করা হচ্ছে। সার্ভিস ট্রলারগুলো বিকল্প পথে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করছে। পাঠানো হয়েছে খাদ্যপণ্যও।
২০২১ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের জান্তা বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে তাদের নিপীড়ন-নির্যাতন ও হামলায় অন্তত সাড়ে চার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। বন্দী করা হয়েছে ২৫ হাজার মানুষকে। জান্তার হামলায় মিয়ানমার জুড়ে অন্তত ৭৮ হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মিসহ দেশটির একাধিক বিদ্রোহী সংগঠন জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। এর ফলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
মায়ানমারের রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যুদ্ধ চলছে। যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্তের গ্রামগুলোতে। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের জেরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে।