alt

সারাদেশ

জগৎজুড়ে সমাদৃত হলেও বাংলাদেশে ব্রাত্য ব্রাহমা

শাফিউল আল ইমরান : রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

রংপুরের পীরগঞ্জের চতরার মাহাবুবার রহমান। ২০১৩ সালে তার দেশি গাভিতে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে পাওয়া ব্রাহমা ষাঁড়ের শুক্রাণু প্রয়োগ করা হয়।

এরপর যে এঁড়ে বাছুরটি জন্মেছিল সেটিকে দুই বছর পালন করেন তিনি। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সেসময় ষাঁড়টির ওজন হয়েছিলো ২০ মণ।’

কোটি কোটি টাকা খরচার পর ‘রহস্যজনক’ কারণে বন্ধ ব্রাহমা প্রকল্প

তিনি বলেন, ‘সেসময় আমার আশপাশে যাদের ব্রাহামা ছিল তারা আড়াই বছরের গরু বিক্রি করে ৫ লাখ টাকায়। তবে, এখন আর ব্রাহামা পাওয়া যায় না। ওই গরু পালন করা আসলেই লাভজনক।’

সেখানকার আকমল হোসেন বলেন, ‘আমার ব্রাহামা ষাঁড়টি ছিল শান্ত মেজাজের। খড়-ভুসি মহানন্দে চিবিয়ে চিবিয়ে খেত। আর আকৃতিতে যেন সবার বড়। তবে, অপরিচিত কাউকে দেখলে ফোঁসফোঁস করে ওঠতো। কিন্তু পরিচিত মানুষ কাছে পেলে রাগ কমে একেবারে শান্ত-শিষ্ট হয়ে যায়।’

মাংসের উৎপাদন বাড়াতে ব্রাহমা সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হলেও উল্টো ‘নিয়ন্ত্রণ’ করা হচ্ছে

মাহাবুবার, আকমল একই গ্রামের ও পাশের গ্রামের অনেকেই সরকারের বিফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রাহামা জাতের গরু পালনের সুযোগ পায়। তারা লাভবানও হয়।

ব্রাহামা পালনে লাভজনক ও বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হলেও ভালো নেই বাংলাদেশে। দিন কাটছে ‘নিষিদ্ধের’ তকমা নিয়ে। গত কোরবানিতে এই জাতের একটি গরু কোটি টাকা বিক্রি হওয়াকে ঘিরে শুরু হওয়া আলোচনার ডালপালা ছড়াতে এখন বিভিন্ন মাধ্যমেই এর লালন-পালন ও আমদানিকে নিষিদ্ধ বলা হচ্ছে। ‘নিষিদ্ধ’ কথায় দেশজুড়ে খামারিদের মাঝে দেখা দিয়েছে ‘আতঙ্ক’।

ব্রাহমাকে নিষিদ্ধ বলে চালানো প্রচারণাকে সহজভাবে নিচ্ছেন না প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের কৃষিকে ধ্বংসে অতীতেও নানা ‘ষড়যন্ত্র’ হয়েছে। মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে যে জাতটি সম্প্রসারণে সরকার ১০ বছর ধরে কাজ করেছে সেই জাতটি এখন ভুল প্রচারণায় হুমকিতে পড়েছে।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (দুগ্ধবিজ্ঞান) ড. এ কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ব্রাহমা গরু লালন-পালনের ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আইনে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে নীতিমালা অনুসরণ করে লালনপালন করতে হবে।’

ব্রাহামার ইতিহাস:

ভারতীয় উপ মহাদেশ থেকে এর পূর্বপুরুষদের সংগ্রহ করে ১৯৮৫ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত এর জাত উন্নয়নে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্র। মাত্র দুই বছর বয়সেই ১ হাজার কেজিরও বেশি মাংস উৎপাদনের সক্ষম এই জাতের গরু। এর নামকরণ করে আমেরিকান ব্রাহমা ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন।

ড. এ কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ব্রাহমা আমাদের এই উপমহাদেশেরই গরুর একটি জাত, মাংসের গুণ ও উৎপাদনের দিক দিয়ে এ জাতের গরু অনেক ভালো। জাতটি এ অঞ্চলের আবহাওয়া উপযোগী ও রোগ প্রতিরোধী। তাই সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ সাপেক্ষে এ জাতের গরু লালন-পালন করে দেশের মাংসের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি মাংস রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্রাহমা গরু পালনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কয়েক দফায় শতকোটি টাকা খরচ করে। প্রথমে বিফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ১১ উপজেলায় তিন বছরের জন্য পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হয়। পরে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদেশ থেকে ৬০ হাজার শুক্রাণু এনে দেশি গাভীতে ঘটানো হয় প্রজনন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৮ জেলার ১৮৫ উপজেলায় ব্রাহমার বিস্তার ঘটানো হয়। এ ধারাবাহিকতায় এখনও খামারিরা ব্রাহমা জাতের গরু পালন করছেন। তবে, দুধ উৎপাদন কমার অজুহাত তুলে ২০১৮ সাল থেকে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সমাপ্তির ওপর ২০১৮ নভেম্বরে মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে ব্রাহমা জাতের মাংসাল গরু পালনে খামারিদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং এই খাতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। ফলে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকার সমস্যার সমাধান সহজতর হবে।

আরো বলা হয়, দেশের সাপ্তাহিক নিয়মিত গরুর হাটগুলোতে ব্রাহমা জাতের গরুর বিবরণ সম্বলিত সাইনবোর্ডসহ ব্রাহমা জাতের গরু প্রদর্শনী/বিক্রি করা কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ব্রাহমা জাতের গরুর আলাদা স্থান বরাদ্দ রাখার কথাও বলা হয়। সেই সঙ্গে, ব্রাহমা জাতের গরু পালন, মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি, অল্প খরচ ও স্বাভাবিকভাবে ব্রাহমা প্রযুক্তির গরু পালন করে অধিক লাভবান হওয়া সহজ ইত্যাদি প্রচার-প্রচারণা চালানোর কথাও বলা হয়।

সে সময়কার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক প্রকল্পের মধ্যবর্তী মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ব্রাহমা জাতের গরুর লালন-পালন কতোটা বা কেন দরকার এই প্রসঙ্গে লেখেন, ‘বাংলাদেশে ইতোপূর্বে একটি টেকসই, লাভজনক এবং অধিক মাংস উৎপাদনকারী গরুর কোন জাত না থাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাণিজ আমিষের উৎপাদন অত্যন্ত কম ছিল। ইতোমধ্যে দেশ মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন প্রয়োজন এর ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখা। একটি দেশিয় গরুর প্রাপ্ত বয়সে মাংস উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে মাত্র ৭০-৮০ কেজি, সেখানে ব্রাহমা জাতের একটি প্রাপ্ত বয়স্ক (২০-২৪ মাস) গরুর মাংস উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে ৮০০-১০০০ কেজি বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি। তাই, মাঠ পর্যায়ের কৃষক/খামারিদের মধ্যে ব্রাহমা জাতের গবাদিপশু পালনে আগ্রহ ও উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়েছে। এই প্রকল্পটি পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে ২-৩ বছর বয়সে একটি গরুর ওজন প্রায় ২৭ মণ বা ১ মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে। সঠিক মাত্রায় খাদ্য প্রদান করলে বাংলাদেশে একটি ব্রাহমা জাতের বাছুর দৈনিক গড়ে ৯০০-১০০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি পায়।

তবে মূল্যায়ন ইতিবাচক হলেও সরকারিভাবে ব্রাহমা গরু পালন প্রকল্পের কাজ এগোয়নি। উল্টো ব্রাহমা নিষিদ্ধ বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অথচ ব্রাহমা নিষিদ্ধ এক তথ্য সরকারের কোনো কাগজপত্রেই ‘নেই’। ২০১৬ সালে করা বেসরকারি পর্যায়ে গবাদিপশুর কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম পরিচালনার সংশোধিত নীতিমালাতে সীমেন আমদানি ও ব্যবহারে শর্তজুড়ে দেয়া থাকলেও কোথাও উল্লেখ করা হয়নি বাংলাদেশে ব্রাহমা গরু নিষিদ্ধ বা ব্রাহমার সীমেন ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। ২০০৭ সালের জাতীয় প্রাণিসম্পদ নীতিমালাতেও ব্রাহমাকে নিরুৎসাহিত করার মতো কিছু লেখা নেই।

সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন:

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ ইমরান বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো আইন ও নীতিমালায় ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ নয় তবে এটা নিয়ন্ত্রিত। ব্রাহমা লালন-পালন, সিমেন আমদানি ও বিধি মেনে ব্যবহারেও বাধা দেয়া হয়নি। তবে, কেন যেন এই জাতের গরু লালন-পালন ও সম্প্রসারণে বাধা দেয়া হয়। আসলে মূল সমস্যা হলো নিয়ন্ত্রিত ও নিষিদ্ধ নিয়ে এ দুইটা শব্দের মধ্য পার্থক্য আছে সেটা অনেকেই বুঝি না। যখন সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান এটাকে নিষিদ্ধ বলবে তখন মানুষের মনে হবে এটা অবৈধ কিছু। আসলে ব্রাহমা গরু নিষিদ্ধ নয় নিয়ন্ত্রিত।’

দেশে ব্রাহমার লালন-পালন ও বাজারজাতকরণ নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, ‘আমাদের বেসরকারি পর্যায়ে গবাদিপশু কৃত্রিম প্রজনন সংক্রান্ত একটি নীতিমালা আছে সেখানে বলা আছে, ব্রাহমা জাতের গরুকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু নিষিদ্ধ নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ ব্রাহমা জাতের গরুগুলো যদি আমাদের দেশি বা উন্নত জাতের গরুর সঙ্গে ক্রস হয়ে গেলে মারাত্মকভাবে দুধ উৎপাদন কমে যাবে। যেটা আমাদের দেশি জাত ও দুধ উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে সেজন্য আমরা এটা নিরুৎসাহিত করছি।’

নিষিদ্ধ না হলে কেন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এর জবাবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, ‘দেশি গাভীতে ব্রাহমার শুক্রাণু দিয়ে প্রজনন ঘটানো হলে যেসব ফিমেইল ক্যাটল জন্ম নেয়, সেগুলো থেকে কোনো দুধ পাওয়া যায় না। এখানেই দুধের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। ফলে সররকার প্রকল্প থেকেও সরে আসে। দুধও দেবে, মাংসও দেবে এমন জাতের গরু চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’

বিফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সাবেক পরিচালক এস এম এ সামাদ জানান, ব্রাহামা নিষিদ্ধ এমন তথ্য সরকারের কোনো দলিলপত্রে আমি খুঁজে পাইনি। ব্রাহামাতে খরচ কম। মাংসে চর্বির পরিমাণও তুলনামূলক কম। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের কম পুঁজির খামারি বা গৃহস্থ বাড়িতে খুব সহজেই এই জাতের গরু লালন-পালন করে বাজারে কমমূল্যে মাংসের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খামারিকে স্বপ্ন দেখিয়ে কার স্বার্থে আবার প্রকল্প বন্ধ করা হলো, সেটিও খোঁজা দরকার। প্রকল্পের অধীনে ছড়িয়ে পড়া ব্রাহমা গরুর ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবা প্রয়োজন। এই দেশে কৃষি নিয়ে কম ষড়যন্ত্র হয়নি। এবারও হয়তো প্রাণিসম্পদ খাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সরকারের উচিত তদন্ত করে এসব বের করা। সব মিলিয়ে প্রাণিসম্পদ খাতে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তা ঠেকানো না গেলে কয়েক বছরের মধ্যেই বিপর্যয় নামতে পারে। এতে কমতে পারে সার্বিক মাংস উৎপাদন।’

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ভোক্তাদরে কম দামে মাংস দিতে চাইলে মাংসাল জাতের দিকে চলে যেতে হবে। এটা শুধু গরু না, ছাগল-ভেড়ার ক্ষেত্রেও।’

ছবি

রামুতে ডেঙ্গু আক্রান্ত অব্যাহত আক্রান্তের চেয়েও বেশি আতঙ্ক।

ছবি

শীতকালীন সবজির আগাম চাষে ব্যস্ত রামুর কৃষাণ-কৃষাণী

ছবি

বাকেরগঞ্জে দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর, দায়িত্বে অবহেলায় ওসিকে প্রত্যাহার

খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় টিএসসি’র শিক্ষার্থীসহ ১০জনের নামে মামলা, ভয়ে ক্লাশ বন্ধ

ছবি

খাগড়াছড়ির দুর্গাপূজা উপলক্ষে সেনা জোনের শুভেচ্ছা উপহার, প্রস্তুুতি দেখলেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার

ছবি

পাহাড় কেন্দ্রিক অপহরণ চক্রের সদস্য আলাউদ্দিন গ্রেফতার

ছবি

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু

ছবি

ফরিদপুরে ডিমের মূল্য নিয়ন্ত্রনে ভোক্তা অধিকারের অভিযান ও জরিমানা

ছবি

আখাউড়া সীমা‌ন্তে বিজিবি অভিযান,‌কোটি টাকার মালামাল উদ্ধার

ছবি

সোনারগাঁয়ে মুক্তিপণ দাবীতে আটক অপহৃত ছাত্র উদ্ধার গ্রেফতার ৩ অপহরণকারী

চাঁদপুরে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ, হাসপাতালে ভর্তি অর্ধশত রোগী

ছবি

নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি করছে ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস

ছবি

আট মাসে বজ্রপাতে মৃত্যু ২৯৭, বেশিরভাগই পুরুষ

ছবি

তিন উপজেলায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম

ছবি

জাহাজে আগুনের পর সমুদ্রে লাফ, এক নাবিকের মৃত্যু

ছবি

লঘুচাপে উত্তাল সমুদ্র, সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা

ছবি

সড়ক দুর্ঘটনায় টাঙ্গাইল ও জামালপুরে ৭ জনের মৃত্যু

ছবি

ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোষরদের শাস্তির আওতায় আনা হবে, নাইক্ষ্যংছড়িতে জাবেদ রেজা

ছবি

সমাজের মূল বৈষম্য দূর না হলে গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম হবে না- আনু মুহাম্মদ

ছবি

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তাল সাগর, সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচল বন্ধ

ছবি

সড়ক দুর্ঘটনা না পরিকল্পিত হত্যা: গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

ছবি

শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত পোশাক শ্রমিকের লাশ উত্তোলন

ছবি

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ২২ কিলোমিটার যানজট

ছবি

শেরপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানিবন্দি ৭ ইউনিয়নের হাজারো মানুষ

ছবি

টাঙ্গাইলে বাস-ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪

ছবি

বিজিবি মহাপরিচালক: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘সঠিক ছিল’

ছবি

আশুলিয়ায় পরিত্যক্ত কার্টন থেকে মিলল অজ্ঞাত নারীর খণ্ডিত লাশ

নাইক্ষ্যংছড়িতে পারিবারিক কলহের জেরে এক নারী বিষপানে আত্মহত্যা

ছবি

চকরিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় পরিচয়হীন বৃদ্ধ নিহত

ছবি

গাজীপুরে শান্তিপূর্ণভাবে চলছে বেশির ভাগ পোশাক কারখানা, ৮টি বন্ধ

ছবি

নোয়াখালীতে বজ্রপাতের শব্দে প্রাণ গেল বৃদ্ধার

ছবি

সাবেক সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম গ্রেপ্তার

ছবি

আগুনে একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু, সেই ঘরে ছিল ১০ লিটার ডিজেল

ছবি

খাগড়াছড়িতে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার

সিলেটে নিহত সাংবাদিক তোরাবের পরিবারের সাথে দেখা করলেন ফয়জুল করীম

শাহপরাণ (রহ.) মাজারে সিজদা ও অ সা মা জি ক কাজ থেকে বিরত থাকতে কর্তৃপক্ষের নোটিশ

tab

সারাদেশ

জগৎজুড়ে সমাদৃত হলেও বাংলাদেশে ব্রাত্য ব্রাহমা

শাফিউল আল ইমরান

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪

রংপুরের পীরগঞ্জের চতরার মাহাবুবার রহমান। ২০১৩ সালে তার দেশি গাভিতে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস থেকে পাওয়া ব্রাহমা ষাঁড়ের শুক্রাণু প্রয়োগ করা হয়।

এরপর যে এঁড়ে বাছুরটি জন্মেছিল সেটিকে দুই বছর পালন করেন তিনি। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘সেসময় ষাঁড়টির ওজন হয়েছিলো ২০ মণ।’

কোটি কোটি টাকা খরচার পর ‘রহস্যজনক’ কারণে বন্ধ ব্রাহমা প্রকল্প

তিনি বলেন, ‘সেসময় আমার আশপাশে যাদের ব্রাহামা ছিল তারা আড়াই বছরের গরু বিক্রি করে ৫ লাখ টাকায়। তবে, এখন আর ব্রাহামা পাওয়া যায় না। ওই গরু পালন করা আসলেই লাভজনক।’

সেখানকার আকমল হোসেন বলেন, ‘আমার ব্রাহামা ষাঁড়টি ছিল শান্ত মেজাজের। খড়-ভুসি মহানন্দে চিবিয়ে চিবিয়ে খেত। আর আকৃতিতে যেন সবার বড়। তবে, অপরিচিত কাউকে দেখলে ফোঁসফোঁস করে ওঠতো। কিন্তু পরিচিত মানুষ কাছে পেলে রাগ কমে একেবারে শান্ত-শিষ্ট হয়ে যায়।’

মাংসের উৎপাদন বাড়াতে ব্রাহমা সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হলেও উল্টো ‘নিয়ন্ত্রণ’ করা হচ্ছে

মাহাবুবার, আকমল একই গ্রামের ও পাশের গ্রামের অনেকেই সরকারের বিফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রাহামা জাতের গরু পালনের সুযোগ পায়। তারা লাভবানও হয়।

ব্রাহামা পালনে লাভজনক ও বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হলেও ভালো নেই বাংলাদেশে। দিন কাটছে ‘নিষিদ্ধের’ তকমা নিয়ে। গত কোরবানিতে এই জাতের একটি গরু কোটি টাকা বিক্রি হওয়াকে ঘিরে শুরু হওয়া আলোচনার ডালপালা ছড়াতে এখন বিভিন্ন মাধ্যমেই এর লালন-পালন ও আমদানিকে নিষিদ্ধ বলা হচ্ছে। ‘নিষিদ্ধ’ কথায় দেশজুড়ে খামারিদের মাঝে দেখা দিয়েছে ‘আতঙ্ক’।

ব্রাহমাকে নিষিদ্ধ বলে চালানো প্রচারণাকে সহজভাবে নিচ্ছেন না প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বাংলাদেশের কৃষিকে ধ্বংসে অতীতেও নানা ‘ষড়যন্ত্র’ হয়েছে। মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে যে জাতটি সম্প্রসারণে সরকার ১০ বছর ধরে কাজ করেছে সেই জাতটি এখন ভুল প্রচারণায় হুমকিতে পড়েছে।

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (দুগ্ধবিজ্ঞান) ড. এ কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ব্রাহমা গরু লালন-পালনের ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আইনে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে নীতিমালা অনুসরণ করে লালনপালন করতে হবে।’

ব্রাহামার ইতিহাস:

ভারতীয় উপ মহাদেশ থেকে এর পূর্বপুরুষদের সংগ্রহ করে ১৯৮৫ থেকে ১৯২৬ সাল পর্যন্ত এর জাত উন্নয়নে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্র। মাত্র দুই বছর বয়সেই ১ হাজার কেজিরও বেশি মাংস উৎপাদনের সক্ষম এই জাতের গরু। এর নামকরণ করে আমেরিকান ব্রাহমা ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন।

ড. এ কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ব্রাহমা আমাদের এই উপমহাদেশেরই গরুর একটি জাত, মাংসের গুণ ও উৎপাদনের দিক দিয়ে এ জাতের গরু অনেক ভালো। জাতটি এ অঞ্চলের আবহাওয়া উপযোগী ও রোগ প্রতিরোধী। তাই সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ সাপেক্ষে এ জাতের গরু লালন-পালন করে দেশের মাংসের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি মাংস রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্রাহমা গরু পালনে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কয়েক দফায় শতকোটি টাকা খরচ করে। প্রথমে বিফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের মাধ্যমে ১১ উপজেলায় তিন বছরের জন্য পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হয়। পরে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বিদেশ থেকে ৬০ হাজার শুক্রাণু এনে দেশি গাভীতে ঘটানো হয় প্রজনন। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪৮ জেলার ১৮৫ উপজেলায় ব্রাহমার বিস্তার ঘটানো হয়। এ ধারাবাহিকতায় এখনও খামারিরা ব্রাহমা জাতের গরু পালন করছেন। তবে, দুধ উৎপাদন কমার অজুহাত তুলে ২০১৮ সাল থেকে প্রকল্পটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিফ ক্যাটেল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সমাপ্তির ওপর ২০১৮ নভেম্বরে মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে ব্রাহমা জাতের মাংসাল গরু পালনে খামারিদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং এই খাতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। ফলে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বেকার সমস্যার সমাধান সহজতর হবে।

আরো বলা হয়, দেশের সাপ্তাহিক নিয়মিত গরুর হাটগুলোতে ব্রাহমা জাতের গরুর বিবরণ সম্বলিত সাইনবোর্ডসহ ব্রাহমা জাতের গরু প্রদর্শনী/বিক্রি করা কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ব্রাহমা জাতের গরুর আলাদা স্থান বরাদ্দ রাখার কথাও বলা হয়। সেই সঙ্গে, ব্রাহমা জাতের গরু পালন, মাংস উৎপাদন বৃদ্ধি, অল্প খরচ ও স্বাভাবিকভাবে ব্রাহমা প্রযুক্তির গরু পালন করে অধিক লাভবান হওয়া সহজ ইত্যাদি প্রচার-প্রচারণা চালানোর কথাও বলা হয়।

সে সময়কার প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক প্রকল্পের মধ্যবর্তী মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ব্রাহমা জাতের গরুর লালন-পালন কতোটা বা কেন দরকার এই প্রসঙ্গে লেখেন, ‘বাংলাদেশে ইতোপূর্বে একটি টেকসই, লাভজনক এবং অধিক মাংস উৎপাদনকারী গরুর কোন জাত না থাকায় চাহিদার তুলনায় প্রাণিজ আমিষের উৎপাদন অত্যন্ত কম ছিল। ইতোমধ্যে দেশ মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন প্রয়োজন এর ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখা। একটি দেশিয় গরুর প্রাপ্ত বয়সে মাংস উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে মাত্র ৭০-৮০ কেজি, সেখানে ব্রাহমা জাতের একটি প্রাপ্ত বয়স্ক (২০-২৪ মাস) গরুর মাংস উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে ৮০০-১০০০ কেজি বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি। তাই, মাঠ পর্যায়ের কৃষক/খামারিদের মধ্যে ব্রাহমা জাতের গবাদিপশু পালনে আগ্রহ ও উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়েছে। এই প্রকল্পটি পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে ২-৩ বছর বয়সে একটি গরুর ওজন প্রায় ২৭ মণ বা ১ মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে। সঠিক মাত্রায় খাদ্য প্রদান করলে বাংলাদেশে একটি ব্রাহমা জাতের বাছুর দৈনিক গড়ে ৯০০-১০০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন বৃদ্ধি পায়।

তবে মূল্যায়ন ইতিবাচক হলেও সরকারিভাবে ব্রাহমা গরু পালন প্রকল্পের কাজ এগোয়নি। উল্টো ব্রাহমা নিষিদ্ধ বলে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অথচ ব্রাহমা নিষিদ্ধ এক তথ্য সরকারের কোনো কাগজপত্রেই ‘নেই’। ২০১৬ সালে করা বেসরকারি পর্যায়ে গবাদিপশুর কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম পরিচালনার সংশোধিত নীতিমালাতে সীমেন আমদানি ও ব্যবহারে শর্তজুড়ে দেয়া থাকলেও কোথাও উল্লেখ করা হয়নি বাংলাদেশে ব্রাহমা গরু নিষিদ্ধ বা ব্রাহমার সীমেন ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। ২০০৭ সালের জাতীয় প্রাণিসম্পদ নীতিমালাতেও ব্রাহমাকে নিরুৎসাহিত করার মতো কিছু লেখা নেই।

সংশ্লিষ্টরা যা বলছেন:

বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ ইমরান বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো আইন ও নীতিমালায় ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ নয় তবে এটা নিয়ন্ত্রিত। ব্রাহমা লালন-পালন, সিমেন আমদানি ও বিধি মেনে ব্যবহারেও বাধা দেয়া হয়নি। তবে, কেন যেন এই জাতের গরু লালন-পালন ও সম্প্রসারণে বাধা দেয়া হয়। আসলে মূল সমস্যা হলো নিয়ন্ত্রিত ও নিষিদ্ধ নিয়ে এ দুইটা শব্দের মধ্য পার্থক্য আছে সেটা অনেকেই বুঝি না। যখন সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান এটাকে নিষিদ্ধ বলবে তখন মানুষের মনে হবে এটা অবৈধ কিছু। আসলে ব্রাহমা গরু নিষিদ্ধ নয় নিয়ন্ত্রিত।’

দেশে ব্রাহমার লালন-পালন ও বাজারজাতকরণ নিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর বলেন, ‘আমাদের বেসরকারি পর্যায়ে গবাদিপশু কৃত্রিম প্রজনন সংক্রান্ত একটি নীতিমালা আছে সেখানে বলা আছে, ব্রাহমা জাতের গরুকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কিন্তু নিষিদ্ধ নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘ ব্রাহমা জাতের গরুগুলো যদি আমাদের দেশি বা উন্নত জাতের গরুর সঙ্গে ক্রস হয়ে গেলে মারাত্মকভাবে দুধ উৎপাদন কমে যাবে। যেটা আমাদের দেশি জাত ও দুধ উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে সেজন্য আমরা এটা নিরুৎসাহিত করছি।’

নিষিদ্ধ না হলে কেন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এর জবাবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বলেন, ‘দেশি গাভীতে ব্রাহমার শুক্রাণু দিয়ে প্রজনন ঘটানো হলে যেসব ফিমেইল ক্যাটল জন্ম নেয়, সেগুলো থেকে কোনো দুধ পাওয়া যায় না। এখানেই দুধের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। ফলে সররকার প্রকল্প থেকেও সরে আসে। দুধও দেবে, মাংসও দেবে এমন জাতের গরু চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’

বিফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সাবেক পরিচালক এস এম এ সামাদ জানান, ব্রাহামা নিষিদ্ধ এমন তথ্য সরকারের কোনো দলিলপত্রে আমি খুঁজে পাইনি। ব্রাহামাতে খরচ কম। মাংসে চর্বির পরিমাণও তুলনামূলক কম। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের কম পুঁজির খামারি বা গৃহস্থ বাড়িতে খুব সহজেই এই জাতের গরু লালন-পালন করে বাজারে কমমূল্যে মাংসের চাহিদা মেটানো সম্ভব।

বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খামারিকে স্বপ্ন দেখিয়ে কার স্বার্থে আবার প্রকল্প বন্ধ করা হলো, সেটিও খোঁজা দরকার। প্রকল্পের অধীনে ছড়িয়ে পড়া ব্রাহমা গরুর ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবা প্রয়োজন। এই দেশে কৃষি নিয়ে কম ষড়যন্ত্র হয়নি। এবারও হয়তো প্রাণিসম্পদ খাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সরকারের উচিত তদন্ত করে এসব বের করা। সব মিলিয়ে প্রাণিসম্পদ খাতে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তা ঠেকানো না গেলে কয়েক বছরের মধ্যেই বিপর্যয় নামতে পারে। এতে কমতে পারে সার্বিক মাংস উৎপাদন।’

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ভোক্তাদরে কম দামে মাংস দিতে চাইলে মাংসাল জাতের দিকে চলে যেতে হবে। এটা শুধু গরু না, ছাগল-ভেড়ার ক্ষেত্রেও।’

back to top