দিনে অপেক্ষমাণ মাছবাহী নৌযান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে তোলা-সংবাদ
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বঙ্গোপসাগরের বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেলে মাছের ভরা প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করে চলছে মাছ ধরার মহোৎসব। বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে মাছ আহরণ করে বাঁশখালী সমুদ্র উপকূলের ৫টি স্পটে প্রতিদিন নোঙর করছে মাছভর্তী শত-শত ফিশিং বোট। কিছু ক্যাডার যুবকের পাহারায় প্রতি রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রধান সড়ক হয়ে ট্রাকে ট্রাকে চালান হচ্ছে এসব মাছ। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের মাথাব্যথা না থাকলেও বাঁশখালীর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী মুঠোফোনে দুষছেন লোকবল না থাকা এবং অন্যান্য দপ্তর থেকে সহযোগিতা না পাওয়াকে। ফলে বন্ধের মাঝেও যেন চলছে মাছ ধরার মহোৎসব।
মাছ ঘাটগুলোতে মৎস্য বিভাগের শক্ত কোন নজরদারি না থাকায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অধিকাংশ ট্রলার দিয়েই সমুদ্রে মাছ ধরা অব্যাহত রয়েছে। তবে জেলেদের সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ করতে না পারলেও, তাদের আইনের আওতায় আনার গতানুগতিক আশ্বাসের মধ্যেই আটকে আছে মৎস্য বিভাগ।
সমুদ্রে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন বৃদ্ধি, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এসময় সমুদ্রে কোন জাল ফেলা যাবে না। ধরা যাবে না ৪৭৫ প্রজাতির মাছ, চিংড়ি, হাঙ্গর, লবস্টার, কাঁকড়াসহ সাগরের কিছুই।
অথচ চলমান নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সাগর থেকে মণকে মণ মাছ নিয়ে ঘাটে নোঙর করছে শত-শত ফিশিং ট্রলার। অন্যদিকে খাটখালী ঘাট হয়ে জাল, বরফ ভরে প্রতিদিন সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছে শতাধিক ট্রলার। সব প্রস্তুতি নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করছে আরও অর্ধশতাধিক ফিশিং ট্রলার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশখালীর শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ, চাম্বল বাংলাবাজার, ছনুয়া-কুতুবদিয়া ঘাট, খানখানাবাদ, কদমরসুল— এ পাঁচ স্পটে সমুদ্র উপকূলে শতাধিক ফিশিং বোট প্রতিদিন সামুদ্রিক মাছ খালাস করছে। মাছগুলো প্রতিরাতে বাঁশখালীর প্রধান সড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চালান দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় জেলেরা জানান, প্রভাবশালী ‘বহদ্দারদের’ চাপের মুখে উপকূল ছেড়ে সহস্রাধিক ফিশিং বোট নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেছে কয়েক হাজার মাঝিমাল্লা। মাছ ধরতে না গেলে প্রভাবশালী বহদ্দারদের চাপে পড়তে হয় সাধারণ জেলেদের। অনেকটা বাধ্য হয়েই বন্ধের মাঝেও মাছ ধরতে যান বলেও জানান তারা।
জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আগামী ২৩ জুলাই। এর আগে ২০ মে থেকে শুরু হয়েছিল এই নিষেধাজ্ঞা। এদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আহরণকৃত মাছ রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের দায়ে পৃথক অভিযানে ৯৫ মণ লইট্টা-ফাইস্যা মিশ্র প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ও মাছ বোঝাই একটি বোট জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দপ্তর। এ সময় পৃথক অভিযানে সর্বমোট ৬ লক্ষ ২৬ হাজার ২শত টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল খালেক পাটোয়ারী এবং সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেরিন ফিশারিজ অফিসার সাইফুল ইসলাম, মৎস্য দপ্তরের ক্ষেত্র সহকারী মামুনুর রশীদসহ খাটখালী কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা।
দিনে অপেক্ষমাণ মাছবাহী নৌযান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে তোলা-সংবাদ
রোববার, ১৪ জুলাই ২০২৪
দক্ষিণ চট্টগ্রামের বঙ্গোপসাগরের বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেলে মাছের ভরা প্রজনন মৌসুমে সামুদ্রিক মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করে চলছে মাছ ধরার মহোৎসব। বাঁশখালী-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে মাছ আহরণ করে বাঁশখালী সমুদ্র উপকূলের ৫টি স্পটে প্রতিদিন নোঙর করছে মাছভর্তী শত-শত ফিশিং বোট। কিছু ক্যাডার যুবকের পাহারায় প্রতি রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রধান সড়ক হয়ে ট্রাকে ট্রাকে চালান হচ্ছে এসব মাছ। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের মাথাব্যথা না থাকলেও বাঁশখালীর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী মুঠোফোনে দুষছেন লোকবল না থাকা এবং অন্যান্য দপ্তর থেকে সহযোগিতা না পাওয়াকে। ফলে বন্ধের মাঝেও যেন চলছে মাছ ধরার মহোৎসব।
মাছ ঘাটগুলোতে মৎস্য বিভাগের শক্ত কোন নজরদারি না থাকায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অধিকাংশ ট্রলার দিয়েই সমুদ্রে মাছ ধরা অব্যাহত রয়েছে। তবে জেলেদের সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ করতে না পারলেও, তাদের আইনের আওতায় আনার গতানুগতিক আশ্বাসের মধ্যেই আটকে আছে মৎস্য বিভাগ।
সমুদ্রে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন বৃদ্ধি, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এসময় সমুদ্রে কোন জাল ফেলা যাবে না। ধরা যাবে না ৪৭৫ প্রজাতির মাছ, চিংড়ি, হাঙ্গর, লবস্টার, কাঁকড়াসহ সাগরের কিছুই।
অথচ চলমান নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সাগর থেকে মণকে মণ মাছ নিয়ে ঘাটে নোঙর করছে শত-শত ফিশিং ট্রলার। অন্যদিকে খাটখালী ঘাট হয়ে জাল, বরফ ভরে প্রতিদিন সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছে শতাধিক ট্রলার। সব প্রস্তুতি নিয়ে ঘাটে অপেক্ষা করছে আরও অর্ধশতাধিক ফিশিং ট্রলার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁশখালীর শেখেরখীল ফাঁড়ির মুখ, চাম্বল বাংলাবাজার, ছনুয়া-কুতুবদিয়া ঘাট, খানখানাবাদ, কদমরসুল— এ পাঁচ স্পটে সমুদ্র উপকূলে শতাধিক ফিশিং বোট প্রতিদিন সামুদ্রিক মাছ খালাস করছে। মাছগুলো প্রতিরাতে বাঁশখালীর প্রধান সড়ক হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চালান দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় জেলেরা জানান, প্রভাবশালী ‘বহদ্দারদের’ চাপের মুখে উপকূল ছেড়ে সহস্রাধিক ফিশিং বোট নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেছে কয়েক হাজার মাঝিমাল্লা। মাছ ধরতে না গেলে প্রভাবশালী বহদ্দারদের চাপে পড়তে হয় সাধারণ জেলেদের। অনেকটা বাধ্য হয়েই বন্ধের মাঝেও মাছ ধরতে যান বলেও জানান তারা।
জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আগামী ২৩ জুলাই। এর আগে ২০ মে থেকে শুরু হয়েছিল এই নিষেধাজ্ঞা। এদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আহরণকৃত মাছ রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের দায়ে পৃথক অভিযানে ৯৫ মণ লইট্টা-ফাইস্যা মিশ্র প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ও মাছ বোঝাই একটি বোট জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দপ্তর। এ সময় পৃথক অভিযানে সর্বমোট ৬ লক্ষ ২৬ হাজার ২শত টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল খালেক পাটোয়ারী এবং সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মেরিন ফিশারিজ অফিসার সাইফুল ইসলাম, মৎস্য দপ্তরের ক্ষেত্র সহকারী মামুনুর রশীদসহ খাটখালী কোস্টগার্ডের কর্মকর্তারা।