সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে কয়েকটি কারখানার ভেতরে বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা আবারও বিক্ষোভ করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ‘বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে’ অন্তত ৩২টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম জানান, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শারমিন গ্রুপ ও হা-মীম গ্রুপ ছুটি দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এরপর আশুলিয়ার অন্তত ৩২টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
শিল্প পুলিশ বলছে, যেসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের দাবি কর্তৃপক্ষ সমাধান করতে পারে নাই ঝামেলা সেখানে হচ্ছে। তবে কয়েকদিন ধরে শ্রমিক বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখে পুরো আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও শিল্প পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। কয়েকটি কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ হলেও কোথায়ও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে আশুলিয়ার ডিইপিজেডসহ অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় দলবেঁধে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। এর আগে মাইকিং করে তাদের কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানায় যৌথবাহিনী। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নরসিংদীপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে চালু রয়েছে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশেপাশের অধিকাংশ কারখানা। কোনো কারখানায় হামলা-ভাঙচুর বা সড়ক অবরোধ করতে দেখা যায়নি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার বলেন, ‘সকালে হা-মীম গ্রুপের শ্রমিকরা কারখানায় গেলেও কর্মবিরতি করে ভেতরে বসে ছিলেন। দুপুরের পর কর্তৃপক্ষ কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে শ্রমিকদের চলে যেতে বলে। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শারমিন গ্রুপসহ আশেপাশের কারখানাগুলোতেও ছুটি ঘোষণা করা শুরু হয়।’
‘গত কয়েকদিন ধরে অসন্তোষ চলা নাসা গ্রুপও সকালে চালু ছিল। দুপুরের পর সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। নিউ এইজ ও আল মুসলিম গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কারখানায় এসে কাজ যোগ না দেয়ায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তবে ইপিজেডসহ অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে।’
শ্রমিকদের আবার বিক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে শিল্প পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘মূলত আগের দাবি-দাওয়া নিয়েই তারা বিক্ষোভ করছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দাবি-দাওয়া নিয়ে ম্যানেজমেন্ট সমাধান করতে পারে নাই, সেখানে ঝামেলা হচ্ছে। তবে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি আজকে অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। যেসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেসব কারখানার শ্রমিকরাও চলে গেছে।’
শিল্পাঞ্চলের যেসব জায়গায় গণ্ডগোল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেসব জায়গায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছে বলেও জানান পুলিশ সুপার সারোয়ার।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পযর্ন্ত ২-১টি কারখানা বাদে সব কারখানা স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল। দুপুরের পর প্রায় ৩০-৩৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। অনেকেই ছুটির পর শান্তিপূর্ণভাবে চলে গেলেও অনেকেই আবার কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করছে।’
এদিকে পোশাক শিল্পকে ‘অস্থিতিশীল করতে’ সন্দেহভাজন হিসেবে আরও পাঁচজনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে শনিবার দুপুরে জামগড়া এলাকার ইয়াগী বাংলাদেশ গামেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিক হৃদয়কে কারখানা থেকে আটক করে যৌথবাহিনী।
সে তার পরিচয়পত্র দিয়ে বহিরাগত একজনকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করেছিল বলে জানা গেছে। তাকে আটকের সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাভার প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে ছিলেন। এর আগে গত শনিবার রাতে চারজনকে আটক করা হয়। তাদের মধে?্য দুজনকে যৌথবাহিনী ও বাকিদের থানা পুলিশ আটক করে। আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নির্মল চন্দ্র আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটক চারজন হলেন-পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানার মোতালেব হোসেন (২৫), জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার সেলিম রেজা (২১), ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার মো. রাসেল (২৩) এবং নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার লিটন কুমার দাস (২৩)। তারা সবাই আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসায় থাকেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানেও বিক্ষোভ
প্রতিনিধি, টঙ্গী (গাজীপুর) জানান, টঙ্গীতে চার দিন শান্ত থাকার পর বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টঙ্গী এলাকার বিভিন্ন স্থানে চারটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা এসব বিক্ষোভ করেছে।
এলাকার লোকজন জানায়, টঙ্গীর স্কুইব রোড সংলগ্ন এলাকায় ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এমট্রানেট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও ব্রাভো এপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে। টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় বিক্ষোভ করছে প্রিন্স জ্যাকার্ড লিমিটেডের শ্রমিকেরা।
জানা যায়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে টঙ্গীর স্কুইব রোড সংলগ্ন কারখানার সামনে ১৪ দফা দাবিতে ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বিক্ষোভ করে। শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো, শ্রমিক সংগঠন তৈরি করা ও শ্রমিকের চাকরিচ্যুত বা পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে শ্রম আইনের ধারা অনুসরণ করা, নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন না করাসহ ১৪দফা দাবি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত রাখে এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। শ্রমিক-মালিক পক্ষের মধ্যে আলেচনার পর ন্যাশনাল পলিমারের সমস্যা সমধান হয়েছে।
এদিকে শনিবার বিকেলে টঙ্গী বিসিকের মেঘনা রোডের এমট্রানেট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও ব্রাভো এপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের দাবিগুলো হলো- প্রতি মাসের ৩-৭ তারিখের মধ্যে সব শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দেয়া, সব শ্রমিক ও স্টাফদের বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধিসহ ১০০০ টাকা হাজিরা বোনাসসহ ১৩ দফা। শনিবার বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত শ্রমিকদের এ আন্দোলনটি চলতে দেখা যায়। গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, এমট্রানেট গ্রুপের সব শ্রমিক, স্টাফ ও কর্মচারীদের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির সম্মেলন কক্ষে আলোচনা চলছে। আশা করি সমস্যা সমাধান হবে। এদিকে প্রিন্স জ্যাকার্ড লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে বিকেল ৪টার দিকে চলে যায়। তবে ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার আবার আন্দোলন হবে বলে জানা গেছে।
রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে কয়েকটি কারখানার ভেতরে বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা আবারও বিক্ষোভ করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ‘বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে’ অন্তত ৩২টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম জানান, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শারমিন গ্রুপ ও হা-মীম গ্রুপ ছুটি দিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এরপর আশুলিয়ার অন্তত ৩২টি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
শিল্প পুলিশ বলছে, যেসব প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের দাবি কর্তৃপক্ষ সমাধান করতে পারে নাই ঝামেলা সেখানে হচ্ছে। তবে কয়েকদিন ধরে শ্রমিক বিক্ষোভের কথা মাথায় রেখে পুরো আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও শিল্প পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। কয়েকটি কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ হলেও কোথায়ও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে আশুলিয়ার ডিইপিজেডসহ অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় দলবেঁধে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। এর আগে মাইকিং করে তাদের কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানায় যৌথবাহিনী। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের নরসিংদীপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে চালু রয়েছে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশেপাশের অধিকাংশ কারখানা। কোনো কারখানায় হামলা-ভাঙচুর বা সড়ক অবরোধ করতে দেখা যায়নি।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার বলেন, ‘সকালে হা-মীম গ্রুপের শ্রমিকরা কারখানায় গেলেও কর্মবিরতি করে ভেতরে বসে ছিলেন। দুপুরের পর কর্তৃপক্ষ কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে শ্রমিকদের চলে যেতে বলে। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শারমিন গ্রুপসহ আশেপাশের কারখানাগুলোতেও ছুটি ঘোষণা করা শুরু হয়।’
‘গত কয়েকদিন ধরে অসন্তোষ চলা নাসা গ্রুপও সকালে চালু ছিল। দুপুরের পর সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। নিউ এইজ ও আল মুসলিম গার্মেন্টসের শ্রমিকরা কারখানায় এসে কাজ যোগ না দেয়ায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তবে ইপিজেডসহ অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে।’
শ্রমিকদের আবার বিক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে শিল্প পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘মূলত আগের দাবি-দাওয়া নিয়েই তারা বিক্ষোভ করছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দাবি-দাওয়া নিয়ে ম্যানেজমেন্ট সমাধান করতে পারে নাই, সেখানে ঝামেলা হচ্ছে। তবে শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি আজকে অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল। যেসব কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেসব কারখানার শ্রমিকরাও চলে গেছে।’
শিল্পাঞ্চলের যেসব জায়গায় গণ্ডগোল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেসব জায়গায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে আছে বলেও জানান পুলিশ সুপার সারোয়ার।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পযর্ন্ত ২-১টি কারখানা বাদে সব কারখানা স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল। দুপুরের পর প্রায় ৩০-৩৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। অনেকেই ছুটির পর শান্তিপূর্ণভাবে চলে গেলেও অনেকেই আবার কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করছে।’
এদিকে পোশাক শিল্পকে ‘অস্থিতিশীল করতে’ সন্দেহভাজন হিসেবে আরও পাঁচজনকে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে শনিবার দুপুরে জামগড়া এলাকার ইয়াগী বাংলাদেশ গামেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিক হৃদয়কে কারখানা থেকে আটক করে যৌথবাহিনী।
সে তার পরিচয়পত্র দিয়ে বহিরাগত একজনকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করেছিল বলে জানা গেছে। তাকে আটকের সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাভার প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে ছিলেন। এর আগে গত শনিবার রাতে চারজনকে আটক করা হয়। তাদের মধে?্য দুজনকে যৌথবাহিনী ও বাকিদের থানা পুলিশ আটক করে। আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নির্মল চন্দ্র আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আটক চারজন হলেন-পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানার মোতালেব হোসেন (২৫), জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার সেলিম রেজা (২১), ভোলা জেলার চরফ্যাশন থানার মো. রাসেল (২৩) এবং নওগাঁ জেলার আত্রাই থানার লিটন কুমার দাস (২৩)। তারা সবাই আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসায় থাকেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানেও বিক্ষোভ
প্রতিনিধি, টঙ্গী (গাজীপুর) জানান, টঙ্গীতে চার দিন শান্ত থাকার পর বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টঙ্গী এলাকার বিভিন্ন স্থানে চারটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা এসব বিক্ষোভ করেছে।
এলাকার লোকজন জানায়, টঙ্গীর স্কুইব রোড সংলগ্ন এলাকায় ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এমট্রানেট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও ব্রাভো এপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে। টঙ্গীর সাতাইশ এলাকায় বিক্ষোভ করছে প্রিন্স জ্যাকার্ড লিমিটেডের শ্রমিকেরা।
জানা যায়, শনিবার সকাল ৮টা থেকে টঙ্গীর স্কুইব রোড সংলগ্ন কারখানার সামনে ১৪ দফা দাবিতে ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বিক্ষোভ করে। শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো, শ্রমিক সংগঠন তৈরি করা ও শ্রমিকের চাকরিচ্যুত বা পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে শ্রম আইনের ধারা অনুসরণ করা, নির্বাহী পরিচালকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন না করাসহ ১৪দফা দাবি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত রাখে এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। শ্রমিক-মালিক পক্ষের মধ্যে আলেচনার পর ন্যাশনাল পলিমারের সমস্যা সমধান হয়েছে।
এদিকে শনিবার বিকেলে টঙ্গী বিসিকের মেঘনা রোডের এমট্রানেট গ্রুপের প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেড ও ব্রাভো এপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের দাবিগুলো হলো- প্রতি মাসের ৩-৭ তারিখের মধ্যে সব শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দেয়া, সব শ্রমিক ও স্টাফদের বেতন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধিসহ ১০০০ টাকা হাজিরা বোনাসসহ ১৩ দফা। শনিবার বিকেল সোয়া ৪টা পর্যন্ত শ্রমিকদের এ আন্দোলনটি চলতে দেখা যায়। গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, এমট্রানেট গ্রুপের সব শ্রমিক, স্টাফ ও কর্মচারীদের সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, সেনাবাহিনী, ফ্যাক্টরি কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকরা ফ্যাক্টরির সম্মেলন কক্ষে আলোচনা চলছে। আশা করি সমস্যা সমাধান হবে। এদিকে প্রিন্স জ্যাকার্ড লিমিটেডের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে বিকেল ৪টার দিকে চলে যায়। তবে ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার আবার আন্দোলন হবে বলে জানা গেছে।