তথ্য প্রযুক্তির যুগে মানুষ নিজেদেরকে নতুন করে চেনাতে ফোইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক বা ইউটিউবে প্রোফাইল বানাতে অভ্যস্থ, যা আসলে ওই ব্যাক্তির ‘ডিজিটাল প্রোফাইল’। কিন্তু আমরা কী ভেবেছি; নদীরও ডিজিটাল প্রোফাইল হয়! আর সেই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস। প্রতিষ্ঠানটি মূলতঃ একটি নদীর উৎস থেকে তার শেষ গন্তব্য পর্যন্ত সম্পূর্ণ গতিপথ সম্পর্কে জানাতে ‘পাখির চোখে’ নদী দেখার এক ‘অভিনব’ প্রচেষ্টা সফল করেছেন।
এরফলে, নদীর সম্পূর্ণ গতিপথ নদীগুলোর উৎসস্থল, সম্পূর্ণ গতিপথ, দৈর্ঘ্য, বিস্তৃতি, শাখা নদী, উপনদী, নদীতীরবর্তী শহর-জনপদ, নদীর অববাহিকা অঞ্চল, নদী নেটওয়ার্ক, এর নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সহজেই জানা যাবে। এছাড়াও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, জীবন-জীবিকা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সমর্ম্পকে জানা যাবে। নদীগুলোর শেষ গন্তব্যে (সাগর/নদী/হ্রদ) মিলিত হওয়ার স্থান, জলবায়ু সংক্রান্ত অভিঘাত, দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চল চিহ্নিতকরণ প্রভৃতিসহ বিভিগ্রধারণের পর্যাপ্ত মৌলিক তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা থাকে বলে এটি একটি নদীর একটি পরিপূর্ণভাবে জানা যায়। ইতোমধ্যে ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস এর পক্ষ থেকে ১৩টি নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
নদীগুলো হল; বাংলাদেশের তিস্তা, কর্ণফুলী, সাঙ্গু, গোমতি, ভারতের অলকানন্দা, ভাগিরথী, জেমু গ্লেসিয়ার, চীনের ইয়ারলুং স্যাংপো (ব্রহ্মপুত্র), নেপালের সপ্তকোশি, ইংল্যান্ডের টেমস, ফ্রান্সের সীন, উগান্ডার ভিক্টোরিয়ান নীল, আমেরিকা-কানাডার নায়াগ্রা নদী। এর মধ্যে ছয়টি নদী আন্তঃসীমান্ত নদী।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী নদী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য এই উদ্যোগ একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’
তিনি জানান, নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির ধারণাটি একেবারেই নতুন এবং ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাসের মাধ্যমেই এর যাত্রা শুরু। বর্তমানে প্রথাগতভাবে একটি নদী সম্পর্কে জানতে গেলে আমাদের অসংখ্য রেফারেন্স বুক, মানচিত্র, ইন্টারনেট প্রভৃতির সাহায্য নিতে হয় যা সময়সাপেক্ষ ও শ্রমসাধ্য কাজ। নদী সম্পর্কিত এই তথ্যসমূহ অনেক সময় খন্ডিত, বিচ্ছিন্ন বা বিক্ষিপ্তভাবে থাকে। ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস এই সময় এবং শ্রমের অপচয় কমিয়ে প্রতিটি নদী সম্পর্কে একটি তথ্যবহুল ‘ভিজুয়াল এক্সপেরিয়েন্স’ দেবে।
মনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই নদী নিয়ে আমার জানার আগ্রহ। বড় হয়ে পেশাগতভাবে ২০০৭ সাল থেকে জলবায়ু পরিবর্তন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছি। পেশাগত কারণেই নদী বিষয়ে জানার প্রচেষ্টাটি এখনও চলমান। সেই জানার চাহিদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন ম্যাপ, ছবি, ভিডিও, নদী বিষয়ক বই, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন, বিভিন্ন রেফারেন্স বুক, ইন্টারনেট ইত্যাদি ঘেঁটে তথ্য সংগ্রহ করতে হত। কিন্তু কোথাও একটি নদীর পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতাম না। তখন শুধু মনে হত যে এমন যদি কোনো ভিডিও কেউ করত যাতে করে একটি নদীর উৎস থেকে এর গন্তব্য পর্যন্ত এর পুরো গতিপথটা একটা ভিডিওতেই দেখা যেত। সেই ভিডিওর সঙ্গে সেই নদী বিষয়ক মৈলিক কিছু তথ্য যদি পাওয়া যেত তাহলে সেটা আরও ভালো হত। ইন্টারনেটে অনেক ঘাঁটাঘাটি করেও এমন কোনো কাজ খুঁজে পাইনি। পরে নিজের প্রচেষ্টায় নদীর ডিজিটাল প্রোফাইলের কাজ শুরু করলাম। এই নদীর প্রোফাইল তৈরির উদ্যোগের শুরু ২০১৬ সালে, নানা কারিগরী বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যা আজকের অবস্থায় এসেছে।’
একটি নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির কাজটি বিভিন্ন ধাপে শেষ হয়। মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কোন একটি কাজের শুরুতেই অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট নদীর সম্পূর্ণ গতিপথের অসংখ্য স্যাটেলাইট স্থির চিত্র নেয়া হয়। নদীর দৈর্ঘ্য বিবেচনায় সেই স্থির চিত্রের সংখ্যা কয়েক হাজার থেকে কয়েক লাখ পর্যন্ত হতে পারে। পরে সেইসব স্থিরচিত্রগুলো মালার মত সাজিয়ে একটি ‘র’ ভিডিও আকারে তৈরি করা হয়।
সেই র-ভিডিওর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেই নির্দিষ্ট নদী সংক্রান্ত নানাবিধ বৈজ্ঞানিক ও গবেষণায় পাওয়া তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত তথ্যসমূহ যাচাই-বাছাই করে সম্পাদনার মাধ্যমে সর্বসাধারণের উপযোগী করে সহজ ও সাবলীল ভাষায় রূপান্তর করা হয়। এরপর এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিওটিকে পূর্ণতা দেয়া হয়।
নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির এই উদ্যোগটি ইতিহাসে ‘প্রথম’ বলে উল্লেখ করছেন মনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নদী নিয়ে এই ধরণের উদ্যোগ বাংলাদেশে তো বটেই, সারাবিশ্বেই এটি প্রথম। এত বিস্তৃত পরিসরে স্যাটেলাইট ভিডিও নিয়ে একটি নদীর উৎস থেকে তার গন্তব্য পর্যন্ত পুরো গতিপথ নিয়ে ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির কাজ ইতিপূর্বে কেউ করেছে বলে আমাদের জানা নেই।’
ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে মনোয়ারুল ইসলাম জানান, কাজটি অনেক সময় ও শ্রমসাধ্য কাজ। এখন পর্যন্ত এ কাজের যে অগ্রগতি তা সম্পূর্ণ নিজের অর্থায়নে এগিয়ে নিয়েছি। এটিকে ব্যাপক পরিসরে এগিয়ে নেয়ার যথেষ্ঠ সুযোগ আছে, তবে তার জন্য সরকারি/বেসররকারি পর্যায় থেকে আর্থিক সমর্থন দরকার। যথাযথ সহায়তা পেলে বাংলাদেশের সব আন্তঃদেশীয় এবং আভান্তরীণ প্রধান প্রধান নদ-নদীসমূহের কমপ্লিট ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি করা সম্ভব হবে।
তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘আগামীতে বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ নদীসমূহের ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির ব্যপারেও আমাদের পরিকল্পনা আছে। আর সব নদীর ডিজটাল প্রোফাইল এক স্থানে পাওয়ার জন্য একটি ইন্টার-এক্টিভ ওয়েবসাইট তৈরির কাজ চলমান, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি ভিজুয়্যাল রিভার এনসাইক্লপেডিয়া হিসেবে কাজ করবে।’
‘নদী সংক্রান্ত নানাবিধ গবেষণার পাশাপাশি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নদী শিক্ষন ক্যাম্পের মাধ্যমে নদী সংরক্ষণ সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা বিষয়ে প্রতিষ্টানটি কাজ করবে’, আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইতোমধ্যে ভিডিওগুলো ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাসের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে বাংলা ও ইংরেজী দুই ভাষার সাবটাইটেলসহ এ আপলোড করা হয়েছে।
শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪
তথ্য প্রযুক্তির যুগে মানুষ নিজেদেরকে নতুন করে চেনাতে ফোইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক বা ইউটিউবে প্রোফাইল বানাতে অভ্যস্থ, যা আসলে ওই ব্যাক্তির ‘ডিজিটাল প্রোফাইল’। কিন্তু আমরা কী ভেবেছি; নদীরও ডিজিটাল প্রোফাইল হয়! আর সেই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস। প্রতিষ্ঠানটি মূলতঃ একটি নদীর উৎস থেকে তার শেষ গন্তব্য পর্যন্ত সম্পূর্ণ গতিপথ সম্পর্কে জানাতে ‘পাখির চোখে’ নদী দেখার এক ‘অভিনব’ প্রচেষ্টা সফল করেছেন।
এরফলে, নদীর সম্পূর্ণ গতিপথ নদীগুলোর উৎসস্থল, সম্পূর্ণ গতিপথ, দৈর্ঘ্য, বিস্তৃতি, শাখা নদী, উপনদী, নদীতীরবর্তী শহর-জনপদ, নদীর অববাহিকা অঞ্চল, নদী নেটওয়ার্ক, এর নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সহজেই জানা যাবে। এছাড়াও অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, জীবন-জীবিকা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সমর্ম্পকে জানা যাবে। নদীগুলোর শেষ গন্তব্যে (সাগর/নদী/হ্রদ) মিলিত হওয়ার স্থান, জলবায়ু সংক্রান্ত অভিঘাত, দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চল চিহ্নিতকরণ প্রভৃতিসহ বিভিগ্রধারণের পর্যাপ্ত মৌলিক তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা থাকে বলে এটি একটি নদীর একটি পরিপূর্ণভাবে জানা যায়। ইতোমধ্যে ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস এর পক্ষ থেকে ১৩টি নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
নদীগুলো হল; বাংলাদেশের তিস্তা, কর্ণফুলী, সাঙ্গু, গোমতি, ভারতের অলকানন্দা, ভাগিরথী, জেমু গ্লেসিয়ার, চীনের ইয়ারলুং স্যাংপো (ব্রহ্মপুত্র), নেপালের সপ্তকোশি, ইংল্যান্ডের টেমস, ফ্রান্সের সীন, উগান্ডার ভিক্টোরিয়ান নীল, আমেরিকা-কানাডার নায়াগ্রা নদী। এর মধ্যে ছয়টি নদী আন্তঃসীমান্ত নদী।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মনোয়ারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী নদী নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য এই উদ্যোগ একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।’
তিনি জানান, নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির ধারণাটি একেবারেই নতুন এবং ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাসের মাধ্যমেই এর যাত্রা শুরু। বর্তমানে প্রথাগতভাবে একটি নদী সম্পর্কে জানতে গেলে আমাদের অসংখ্য রেফারেন্স বুক, মানচিত্র, ইন্টারনেট প্রভৃতির সাহায্য নিতে হয় যা সময়সাপেক্ষ ও শ্রমসাধ্য কাজ। নদী সম্পর্কিত এই তথ্যসমূহ অনেক সময় খন্ডিত, বিচ্ছিন্ন বা বিক্ষিপ্তভাবে থাকে। ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস এই সময় এবং শ্রমের অপচয় কমিয়ে প্রতিটি নদী সম্পর্কে একটি তথ্যবহুল ‘ভিজুয়াল এক্সপেরিয়েন্স’ দেবে।
মনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই নদী নিয়ে আমার জানার আগ্রহ। বড় হয়ে পেশাগতভাবে ২০০৭ সাল থেকে জলবায়ু পরিবর্তন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছি। পেশাগত কারণেই নদী বিষয়ে জানার প্রচেষ্টাটি এখনও চলমান। সেই জানার চাহিদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন ম্যাপ, ছবি, ভিডিও, নদী বিষয়ক বই, সংবাদপত্রের প্রতিবেদন, বিভিন্ন রেফারেন্স বুক, ইন্টারনেট ইত্যাদি ঘেঁটে তথ্য সংগ্রহ করতে হত। কিন্তু কোথাও একটি নদীর পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতাম না। তখন শুধু মনে হত যে এমন যদি কোনো ভিডিও কেউ করত যাতে করে একটি নদীর উৎস থেকে এর গন্তব্য পর্যন্ত এর পুরো গতিপথটা একটা ভিডিওতেই দেখা যেত। সেই ভিডিওর সঙ্গে সেই নদী বিষয়ক মৈলিক কিছু তথ্য যদি পাওয়া যেত তাহলে সেটা আরও ভালো হত। ইন্টারনেটে অনেক ঘাঁটাঘাটি করেও এমন কোনো কাজ খুঁজে পাইনি। পরে নিজের প্রচেষ্টায় নদীর ডিজিটাল প্রোফাইলের কাজ শুরু করলাম। এই নদীর প্রোফাইল তৈরির উদ্যোগের শুরু ২০১৬ সালে, নানা কারিগরী বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যা আজকের অবস্থায় এসেছে।’
একটি নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির কাজটি বিভিন্ন ধাপে শেষ হয়। মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কোন একটি কাজের শুরুতেই অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট নদীর সম্পূর্ণ গতিপথের অসংখ্য স্যাটেলাইট স্থির চিত্র নেয়া হয়। নদীর দৈর্ঘ্য বিবেচনায় সেই স্থির চিত্রের সংখ্যা কয়েক হাজার থেকে কয়েক লাখ পর্যন্ত হতে পারে। পরে সেইসব স্থিরচিত্রগুলো মালার মত সাজিয়ে একটি ‘র’ ভিডিও আকারে তৈরি করা হয়।
সেই র-ভিডিওর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেই নির্দিষ্ট নদী সংক্রান্ত নানাবিধ বৈজ্ঞানিক ও গবেষণায় পাওয়া তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত তথ্যসমূহ যাচাই-বাছাই করে সম্পাদনার মাধ্যমে সর্বসাধারণের উপযোগী করে সহজ ও সাবলীল ভাষায় রূপান্তর করা হয়। এরপর এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিওটিকে পূর্ণতা দেয়া হয়।
নদীর ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির এই উদ্যোগটি ইতিহাসে ‘প্রথম’ বলে উল্লেখ করছেন মনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নদী নিয়ে এই ধরণের উদ্যোগ বাংলাদেশে তো বটেই, সারাবিশ্বেই এটি প্রথম। এত বিস্তৃত পরিসরে স্যাটেলাইট ভিডিও নিয়ে একটি নদীর উৎস থেকে তার গন্তব্য পর্যন্ত পুরো গতিপথ নিয়ে ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির কাজ ইতিপূর্বে কেউ করেছে বলে আমাদের জানা নেই।’
ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাস এর ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে মনোয়ারুল ইসলাম জানান, কাজটি অনেক সময় ও শ্রমসাধ্য কাজ। এখন পর্যন্ত এ কাজের যে অগ্রগতি তা সম্পূর্ণ নিজের অর্থায়নে এগিয়ে নিয়েছি। এটিকে ব্যাপক পরিসরে এগিয়ে নেয়ার যথেষ্ঠ সুযোগ আছে, তবে তার জন্য সরকারি/বেসররকারি পর্যায় থেকে আর্থিক সমর্থন দরকার। যথাযথ সহায়তা পেলে বাংলাদেশের সব আন্তঃদেশীয় এবং আভান্তরীণ প্রধান প্রধান নদ-নদীসমূহের কমপ্লিট ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি করা সম্ভব হবে।
তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সর্ম্পকে তিনি বলেন, ‘আগামীতে বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ নদীসমূহের ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরির ব্যপারেও আমাদের পরিকল্পনা আছে। আর সব নদীর ডিজটাল প্রোফাইল এক স্থানে পাওয়ার জন্য একটি ইন্টার-এক্টিভ ওয়েবসাইট তৈরির কাজ চলমান, যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি ভিজুয়্যাল রিভার এনসাইক্লপেডিয়া হিসেবে কাজ করবে।’
‘নদী সংক্রান্ত নানাবিধ গবেষণার পাশাপাশি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে নদী শিক্ষন ক্যাম্পের মাধ্যমে নদী সংরক্ষণ সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা বিষয়ে প্রতিষ্টানটি কাজ করবে’, আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইতোমধ্যে ভিডিওগুলো ভিজুয়াল রিভার অ্যাটলাসের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে বাংলা ও ইংরেজী দুই ভাষার সাবটাইটেলসহ এ আপলোড করা হয়েছে।