খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীসহ ১০জনের নামে মামলা পুলিশ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে টিএসসি সাধারন ছাত্র/ছাত্রীরা আতংক ও ভয় থাকায় ক্লাশে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে(৪৮) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির তিন শিক্ষার্থীসহ ১০জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৪০০-৫০০জনকে।
গতকাল শুক্রবার(৪ঠা অক্টোবর) খাগড়াছড়ি সদর থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন এসআই মিজানুর রহমান। শনিবার(৫ই অক্টোবর) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন-নিমন্ত ত্রিপুরা(২২), টুনশু চাকমা, সজিব চাকমা (১৯), প্রনয় চাকমা(১৯), কোষ চাকমা(২১), টিনটু চাকমা(১৯), অম্লান ত্রিপুরা(২০), আইকন চাকমা(২০), নিউটন মারমা(২০) ও অনিল চাকমা(১৯)। এরমধ্যে সজিব চাকমা, প্রনয় চাকমা ও কোষ চাকমা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা জানান, একদিকে ক্লাশ বর্জন, অন্যদিকে অহতেুক পুলিশের আজ্ঞাত নামা মামলাটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ও আতংক বিরাজ করায় ক্লাশে আসতে পারছেনা, আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, নিহত সোহেল রানা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি সদরের খেজুরবাগান এলাকায় অবস্থিত। ২০২১সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সোহেল রানা কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। একই প্রতিষ্ঠানে তিনি যেন আবার যোগদান করতে না পারেন, সেই দাবি তুলে শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি বিক্ষোভ করেছিল। এরপর গতকাল আবার তাঁর বিরুদ্ধে অপর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
সোহেল রানার পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর পিছনের দিকে পরিলক্ষিত করলে দেখা যায়-ধর্ষক সোহেল রানা ২০১৮সালে কুষ্টিয়া দৌলতপুরে এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সুষ্ঠু বিচার হয়নি, তারপর বিভিন্ন জেলা স্কুলে বদলি করা হয়। পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বদলি হয়ে আসেন। নানা প্রতিবাদ, অভিযোগের পড়েও কর্তৃপক্ষ নীরব ভুমিকা পালন করেছে। গত ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ উক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে এবং ডিসির কাছে স্মারকলিপি পেশ করে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার সকালে পুরো শহর ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে খাবারের হোটেল, পরিবহন এবং আবাসিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সবখানেই চরম স্থবিরতা বিরাজ করছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় দুটি মামলাসহ আরেকটি করা হয়েছে। একটি ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা, আরেকটি ছাত্র ও বহিরাগত ব্যক্তিদের। ধর্ষণ মামলাটি করেছেন ঘটনার শিকার ছাত্রীর মা। ২টি’র মামলার বাদী পুলিশ।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার(১লা অক্টোবর) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে(৪৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৪৪ধারা জারি করে প্রশাসন। এ ঘটনার জেরে শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। চলে সংর্ঘষ, ভাংচুর, লোটপাত ও অগ্নিসংযোগ। কিন্তু তা সত্ত্বেও সন্ধ্যা পরও শহরের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ভাবে সংঘষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সদরের মহাজনপাড়া-৩২টি, পানখাইয়াপাড়া সড়কের চাইহ্লাউ পাড়ার ৩৭টি দোকান ও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভাঙচুর করা হয়। একদল দুর্বৃত্ত সন্ধ্যার পরও ভাংচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকেল ৩টা থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও পৌর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বুধবার বিকাল ৩টায় ১৪৪ধারা প্রত্যাহার করা হয়।
শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীসহ ১০জনের নামে মামলা পুলিশ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে টিএসসি সাধারন ছাত্র/ছাত্রীরা আতংক ও ভয় থাকায় ক্লাশে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে(৪৮) পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির তিন শিক্ষার্থীসহ ১০জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৪০০-৫০০জনকে।
গতকাল শুক্রবার(৪ঠা অক্টোবর) খাগড়াছড়ি সদর থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন এসআই মিজানুর রহমান। শনিবার(৫ই অক্টোবর) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন-নিমন্ত ত্রিপুরা(২২), টুনশু চাকমা, সজিব চাকমা (১৯), প্রনয় চাকমা(১৯), কোষ চাকমা(২১), টিনটু চাকমা(১৯), অম্লান ত্রিপুরা(২০), আইকন চাকমা(২০), নিউটন মারমা(২০) ও অনিল চাকমা(১৯)। এরমধ্যে সজিব চাকমা, প্রনয় চাকমা ও কোষ চাকমা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা জানান, একদিকে ক্লাশ বর্জন, অন্যদিকে অহতেুক পুলিশের আজ্ঞাত নামা মামলাটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয় ও আতংক বিরাজ করায় ক্লাশে আসতে পারছেনা, আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, নিহত সোহেল রানা খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ও সেফটি বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি সদরের খেজুরবাগান এলাকায় অবস্থিত। ২০২১সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সোহেল রানা কিছুদিন কারাগারে ছিলেন। একই প্রতিষ্ঠানে তিনি যেন আবার যোগদান করতে না পারেন, সেই দাবি তুলে শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি বিক্ষোভ করেছিল। এরপর গতকাল আবার তাঁর বিরুদ্ধে অপর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে।
সোহেল রানার পূর্ববর্তী ঘটনাগুলোর পিছনের দিকে পরিলক্ষিত করলে দেখা যায়-ধর্ষক সোহেল রানা ২০১৮সালে কুষ্টিয়া দৌলতপুরে এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সুষ্ঠু বিচার হয়নি, তারপর বিভিন্ন জেলা স্কুলে বদলি করা হয়। পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বদলি হয়ে আসেন। নানা প্রতিবাদ, অভিযোগের পড়েও কর্তৃপক্ষ নীরব ভুমিকা পালন করেছে। গত ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ উক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে এবং ডিসির কাছে স্মারকলিপি পেশ করে।
বুধ ও বৃহস্পতিবার সকালে পুরো শহর ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে খাবারের হোটেল, পরিবহন এবং আবাসিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সবখানেই চরম স্থবিরতা বিরাজ করছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোয় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় দুটি মামলাসহ আরেকটি করা হয়েছে। একটি ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, অপরটি পুলিশের ওপর হামলার মামলা, আরেকটি ছাত্র ও বহিরাগত ব্যক্তিদের। ধর্ষণ মামলাটি করেছেন ঘটনার শিকার ছাত্রীর মা। ২টি’র মামলার বাদী পুলিশ।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার(১লা অক্টোবর) এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে(৪৮) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৪৪ধারা জারি করে প্রশাসন। এ ঘটনার জেরে শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। চলে সংর্ঘষ, ভাংচুর, লোটপাত ও অগ্নিসংযোগ। কিন্তু তা সত্ত্বেও সন্ধ্যা পরও শহরের বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ভাবে সংঘষের ঘটনা ঘটে। এ সময় সদরের মহাজনপাড়া-৩২টি, পানখাইয়াপাড়া সড়কের চাইহ্লাউ পাড়ার ৩৭টি দোকান ও একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভাঙচুর করা হয়। একদল দুর্বৃত্ত সন্ধ্যার পরও ভাংচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিকেল ৩টা থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও পৌর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বুধবার বিকাল ৩টায় ১৪৪ধারা প্রত্যাহার করা হয়।