সিদ্ধিরগঞ্জে মোঃ আবুল কালাম (৬২) ও আমেনা বেগম ময়না (৫৭) নামে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী স্কুলের পাশে প্রবাসী আবুল কালাম আজাদের ভাড়া বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মোঃ আবুল কালাম মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকার খলিল মুন্সীর ছেলে ও আমেনা বেগম ময়না আরব আলী শেখের মেয়ে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন), এসবি ও সিআইডি ক্রাইমসিহ ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্যসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা যায়, নিহত আবুল কালাম তার স্ত্রী আমেনা বেগম ময়নাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। তাদের মানিক ও সাইফুল নামে দুইটি ছেলে রয়েছে। ছেলেরা স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে অন্যত্র ভাড়া বাসায় বসবাস করায় তাদের দেখাশোনা করার কেউ ছিল না।

বড় ছেলে মানিক জানায়, আমরা দুই ভাই পিকআপ চালক। সামান্য আয়ে নিজের সংসার চালিয়ে যা পারি তা বাবা-মাকে দিয়ে সহযোগিতা করতাম। সে আরও জানায়, মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল। প্যারালাইসিসের রোগী। তার দেখাশুনা বাবা একাই করত। মৃত্যুর খবর পেয়ে বাসায় এসে দেখি তারা দুজনেই খাটের উপর মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

পাশের ঘরের ভাড়াটিয়া আকলিমা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তাদের সাথে শেষ কথা হয়েছে। ঔষধ খেয়ে শুয়ে পড়েছে।

শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত তাদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরে গিয়ে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই। পরে পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল মতিন জানায়, ময়না বেগম দীর্ঘদিন যাবত প্যারালাইসিস রোগে অসুস্থ্য ছিলেন। তাকে তার স্বামী আবুল কালাম দেখা শুনা করত। তাদের কোন শত্রু ছিলনা বলেও তিনি জানান। এলাকাবাসীর ধারণা তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন জানায়, মৃতদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তারা মূলত দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ্য হয়ে বাসায় ছিল। কি কারণে মৃত্যু হয়েছে সেটি এখনো নিশ্চিত নই।

নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ তরিকুল ইসলাম রাত সাড়ে ৮টায় বলেন, স্বামী-স্ত্রীর এক সঙ্গে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সিআইডি’র ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। তারা আসলে লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার মৃত্যুর আসল কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।