alt

সারাদেশ

জলবায়ু পরিবর্তন : উৎপাদন অঞ্চলেও সবজির দাম বেশি

শাফিউল আল ইমরান, রংপুর ও গাইবান্ধা ঘুরে এসে : শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

অবিশ্বাস্য গতিতে ছুটছে সব ধরনের সবজির দাম। রাজধানী ও উৎপাদন অঞ্চলের দামে খুব একটা পার্থক্য নেই। কাঁচা মরিচ, টমেটো, পেঁপে রাজধানী এবং যেখানে উৎপাদন হয় দুই জায়গায়ই একই দামে বিক্রি হচ্ছে। শশা ও করোলার দামে কয়েক টাকার ব্যাবধান। বাকি সবজির দামের ব্যাবধান বেশি।

উৎপাদন এলাকা রংপুর ও গাইবান্দায় সব ধরনের সবজির দামই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দাম বেশি হওয়ায় কারণে মফস্বলের ক্রেতা ও বিক্রেতা দুইপক্ষই ‘অস্বস্তিতে’। তবে স্থানীয় ক্রেতারা সরকারের বাজার ‘তদারকি না থাকাকে’ দুষছেন।

কৃষকরা বলছেন, টানা বর্ষা ও বন্যার কারণে খেতে সবজি নষ্ট হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে উৎপাদন কমে গিয়েছে। ক্ষেতে ফুল এলেও বৃষ্টির কারণে মরে ঝরে পড়েছে। আবার টিকে যাওয়া ফলও কয়েক দিন পর পচে যাচ্ছে। কোনো কীটনাশকেও কাজে আসছে না। এতে সবজির উৎপাদনে ‘বিপর্যয়’ ঘটেছে। স্থানীয় হাটগুলোতে সবজির সরবরাহ কমে গেছে।

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা হাট বাজারে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, করোল্লা ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ১২০ টাকা, লাল শাক ৩ আটি ২০ টাকা, আলু কার্ডিনাল ৫৫ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, পেয়াঁজ ১১০ টাকা, ওল ৮০ টাকা ও লাউ এক পিছ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল রাজধানী শ্যামলী কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বেগুন এক কেজি ১৬০-২২০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শশা ৮০ টাকা, করোল্লা ১০০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, মুলা ১০০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, সিম ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ঝড় ও অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষেত আবার ফসল উৎপাদনের উপযোগী করতে সময় লেগে যায়। অতি বৃষ্টির কারণে ফলনের উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হয়েও উৎপাদন কম হয়েছে।

আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে কৃষকরা বার বার প্রাকৃতির দুর্যোগের মধ্যে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা।

রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের বেগুন চাষি এমামুল হক বলেন, ‘এই বছর কাঁচামালের দাম পেয়ে ভালো নাগচে (লাগছে)। একমন বাগুন (বেগুন) ২৫শ’ থেকে ২৭শ’ ট্যাকায় বিক্রি করেছি। তবে, আগের বছর গুলার (অন্যান্য বছরের) তুলনায় এবছর বাগুনের (বেগুনের) আবাদ কম হচে (হয়েছে)।’

কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বাগুন (বেগুন) গাছত (গাছে) ফল আসার আগেই পাতা হলদ্যা (হলুদ) হয়া (হয়ে) কুকুড়ে যায়, এছাড়া গাছের মাথাত (মাথায়) জট নাগে (লেগে যায়)। যার (যে) কারণে এই এলাকাত (এলাকায়) এবার বাগুনের (বেগুনের) আবাদ কম হচ্ছে (হয়েছে)।

সেখানকারই আরেক কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, ‘প্রচণ্ড তাপমাত্রায় একসময় সবজি গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আবার তাপমাত্রা যখন কমেছে তখন অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গাছে পচন ধরেছে, ফলনও কম হয়েছে।’

মোকছেদ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ‘শীতকালিন সবজি শীমের আবাদও ভালো হচ্ছে না। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে ক্ষেতেই শীম গাছের পাতায় হলুদ রং দেখা দিয়েছ। তাই এখন মনে হচ্ছে শিম চাষিরাও ভালো দামে বিক্রি করতে পারলেও ফলন ভালো পাওয়া যাবে না।’

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপের হাটের কৃষক মো. সোলেমান আলী বলেন, ‘বৃষ্টিতে হামার ভিউ (ক্ষেতের) ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে হাটে সবজি আসা (সরবরাহ) কমে গেছে। এ কারণেই সব প্রকার সবজির দাম বেড়ে গেছে। এখানকার ধাপেরহাট হাটে আগে ট্রাকে ট্রাকে সবজির ট্রাক অনলোড হতো। এখন সেটা চোখে পড়ে না।’

এই এলাকার বেশির ভাগ সবজি ক্ষেত ‘নষ্ট’ হয়ে গেছে বলে জানান গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পাটোয়া গ্রামের কৃষক মো. শাহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মাসখানেক ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিই ফসল নষ্টের মুল কারণ। ক্ষেতের জমিতে পানি জমে মরিচ, বেগুনসহ সব ধরনের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। ভালো উৎপাদন না হওয়ায় এখানকার বাজারেও সরবরাহ নেই।’

স্থানীয় চতরা হাটের সবজি খুচরা বিক্রেতা লাবলু মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, মাসুদ মিয়া জানান, কম দামের কাচামাল (সবজি বা অনান্য নিত্যপণ্য) কিনতে পারলে কমদামেই বিক্রি করা যায়। কিন্ত পাইকারি হাটে চাষিরা এক বস্তা কাঁচামাল নিয়ে আসলে খুচরা বিক্রেতারা তার চারপাশে ঘিরে ধরে। প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়, কে কত দাম দিয়ে আগে কিনতে পারে।

তবে, বাজারে স্থানীয় চাহিদা পুরণের জন্য যে পরিমাণ পণ্যের প্রয়োজন সেই পরিমাণ পণ্য হাটে উঠে না, তাই স্থানীয় বাজারেও দাম বাড়ার কথা জানান স্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা।

ছবি

পাঁচবিবি সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে বিএসএফকে বাধা বিজিবির

ছবি

ফরিদপুরে সরকারী রাস্তার ইট তুলে বিক্রির অভিযোগ

ছবি

সীতাকুণ্ডে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার, অভিযান টিমের উপর হামলা , ১৫ জেলে আটক

ছবি

গাজীপুরে বেতনের দাবিতে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

নাটোরে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ২

ছবি

বগুড়ায় ট্রাক-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ২

সিদ্ধিরগঞ্জে পঁঞ্চাষোর্ধ স্বামী স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

চাহিদা থাকায় ঢাকা-কক্সবাজার রুটে আবারও বিশেষ ট্রেন

ছবি

দোহারে চায়ের দোকানে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

ছবি

নেত্রকোনায় পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মনির হোসেন গ্রেপ্তার

ছবি

বঙ্গোপসাগরে ট্রলারসহ ৪৮ ভারতীয় জেলে আটক

ছবি

ফুলবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী বউমেলা, ক্রেতা যেখানে শুধুই নারী

ছবি

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে : নবজাতককে জীবিত উদ্ধার

ছবি

রামুর বাঁকখালী নদীতে বৌদ্ধদের কল্পজাহাজ ভাসা উৎসব উৎযাপিত

ছবি

ব্যবসায়ী জামিল হত্যা: স্ত্রী, ভায়রাসহ তিনজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ছবি

সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় সাবেক শিবির নেতা নিহত

ছবি

বিস্ফোরণের শব্দে রাতভর কাঁপল টেকনাফ, ২৫টি বসতঘরে ফাটল

ছবি

সাবেক তিন এমপির বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

খাগড়াছড়ির পানছড়িতে আঞ্চলিক সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে গোলাগুলি, নিহত-১

ছবি

পিলখানা হত্যাকান্ডে ভারত জড়িত ছিলো : এ্যাডভোকেট রাকিন আহমেদ

ছবি

উখিয়ায় ৩১ হাজার ইয়াবাসহ রোহিঙ্গা মাদককারবারী আটক

ছবি

‘সেন্টমার্টিনে রাত্রীযাপন নিষিদ্ধকরণ ও ভ্রমণ সীমিতকরন পর্যটন শিল্পের জন্য হুমকি’

ছবি

গোপালগঞ্জে দুই চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত

ছবি

সাভারে কবর থেকে উত্তোলন, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা

ছবি

শ্রমিকদের পেনশন দিতে শিল্প মালিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন শ্রম উপদেষ্টা

ছবি

মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা, দালাল-রোহিঙ্গাসহ আটক ২০

ছবি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, দীর্ঘ যানজট

ছবি

প্রথম মোবাইল অপারেটর কোম্পানি সিটিসেল লাইসেন্স ফেরত চায়

ছবি

প্রকৃতিতে হস্তক্ষেপের পর আত্মঘাতী প্রকল্পের বহর : ভবদহ অঞ্চলে দুর্বিষহ জীবনের শেষ কোথায়

ছবি

ফরিদপুর-মীরসরাই : সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৩ জন সহ ৮ জনের মৃত্যু

ছবি

মহালছড়িতে প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বিশেষ নিরাপত্তা সমন্বয় সভা

ছবি

শরীয়তপুরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন

ছবি

বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে দারাজ

ছবি

রাখাইনে সংঘাত : ওপারে বিস্ফোরণের শব্দ, আকাশে যুদ্ধবিমানের চক্কর

tab

সারাদেশ

জলবায়ু পরিবর্তন : উৎপাদন অঞ্চলেও সবজির দাম বেশি

শাফিউল আল ইমরান, রংপুর ও গাইবান্ধা ঘুরে এসে

শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

অবিশ্বাস্য গতিতে ছুটছে সব ধরনের সবজির দাম। রাজধানী ও উৎপাদন অঞ্চলের দামে খুব একটা পার্থক্য নেই। কাঁচা মরিচ, টমেটো, পেঁপে রাজধানী এবং যেখানে উৎপাদন হয় দুই জায়গায়ই একই দামে বিক্রি হচ্ছে। শশা ও করোলার দামে কয়েক টাকার ব্যাবধান। বাকি সবজির দামের ব্যাবধান বেশি।

উৎপাদন এলাকা রংপুর ও গাইবান্দায় সব ধরনের সবজির দামই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। দাম বেশি হওয়ায় কারণে মফস্বলের ক্রেতা ও বিক্রেতা দুইপক্ষই ‘অস্বস্তিতে’। তবে স্থানীয় ক্রেতারা সরকারের বাজার ‘তদারকি না থাকাকে’ দুষছেন।

কৃষকরা বলছেন, টানা বর্ষা ও বন্যার কারণে খেতে সবজি নষ্ট হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে উৎপাদন কমে গিয়েছে। ক্ষেতে ফুল এলেও বৃষ্টির কারণে মরে ঝরে পড়েছে। আবার টিকে যাওয়া ফলও কয়েক দিন পর পচে যাচ্ছে। কোনো কীটনাশকেও কাজে আসছে না। এতে সবজির উৎপাদনে ‘বিপর্যয়’ ঘটেছে। স্থানীয় হাটগুলোতে সবজির সরবরাহ কমে গেছে।

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা হাট বাজারে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, করোল্লা ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ১২০ টাকা, লাল শাক ৩ আটি ২০ টাকা, আলু কার্ডিনাল ৫৫ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, পেয়াঁজ ১১০ টাকা, ওল ৮০ টাকা ও লাউ এক পিছ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল রাজধানী শ্যামলী কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সেখানে বেগুন এক কেজি ১৬০-২২০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শশা ৮০ টাকা, করোল্লা ১০০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, মুলা ১০০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, টমেটো ২০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, ঝিঙ্গা ১০০ টাকা, সিম ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ঝড় ও অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়েছে। ক্ষেত আবার ফসল উৎপাদনের উপযোগী করতে সময় লেগে যায়। অতি বৃষ্টির কারণে ফলনের উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত হয়েও উৎপাদন কম হয়েছে।

আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে কৃষকরা বার বার প্রাকৃতির দুর্যোগের মধ্যে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা।

রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার জামালপুর গ্রামের বেগুন চাষি এমামুল হক বলেন, ‘এই বছর কাঁচামালের দাম পেয়ে ভালো নাগচে (লাগছে)। একমন বাগুন (বেগুন) ২৫শ’ থেকে ২৭শ’ ট্যাকায় বিক্রি করেছি। তবে, আগের বছর গুলার (অন্যান্য বছরের) তুলনায় এবছর বাগুনের (বেগুনের) আবাদ কম হচে (হয়েছে)।’

কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, বাগুন (বেগুন) গাছত (গাছে) ফল আসার আগেই পাতা হলদ্যা (হলুদ) হয়া (হয়ে) কুকুড়ে যায়, এছাড়া গাছের মাথাত (মাথায়) জট নাগে (লেগে যায়)। যার (যে) কারণে এই এলাকাত (এলাকায়) এবার বাগুনের (বেগুনের) আবাদ কম হচ্ছে (হয়েছে)।

সেখানকারই আরেক কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, ‘প্রচণ্ড তাপমাত্রায় একসময় সবজি গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। আবার তাপমাত্রা যখন কমেছে তখন অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। গাছে পচন ধরেছে, ফলনও কম হয়েছে।’

মোকছেদ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ‘শীতকালিন সবজি শীমের আবাদও ভালো হচ্ছে না। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে ক্ষেতেই শীম গাছের পাতায় হলুদ রং দেখা দিয়েছ। তাই এখন মনে হচ্ছে শিম চাষিরাও ভালো দামে বিক্রি করতে পারলেও ফলন ভালো পাওয়া যাবে না।’

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপের হাটের কৃষক মো. সোলেমান আলী বলেন, ‘বৃষ্টিতে হামার ভিউ (ক্ষেতের) ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে হাটে সবজি আসা (সরবরাহ) কমে গেছে। এ কারণেই সব প্রকার সবজির দাম বেড়ে গেছে। এখানকার ধাপেরহাট হাটে আগে ট্রাকে ট্রাকে সবজির ট্রাক অনলোড হতো। এখন সেটা চোখে পড়ে না।’

এই এলাকার বেশির ভাগ সবজি ক্ষেত ‘নষ্ট’ হয়ে গেছে বলে জানান গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পাটোয়া গ্রামের কৃষক মো. শাহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মাসখানেক ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিই ফসল নষ্টের মুল কারণ। ক্ষেতের জমিতে পানি জমে মরিচ, বেগুনসহ সব ধরনের সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। ভালো উৎপাদন না হওয়ায় এখানকার বাজারেও সরবরাহ নেই।’

স্থানীয় চতরা হাটের সবজি খুচরা বিক্রেতা লাবলু মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, মাসুদ মিয়া জানান, কম দামের কাচামাল (সবজি বা অনান্য নিত্যপণ্য) কিনতে পারলে কমদামেই বিক্রি করা যায়। কিন্ত পাইকারি হাটে চাষিরা এক বস্তা কাঁচামাল নিয়ে আসলে খুচরা বিক্রেতারা তার চারপাশে ঘিরে ধরে। প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়, কে কত দাম দিয়ে আগে কিনতে পারে।

তবে, বাজারে স্থানীয় চাহিদা পুরণের জন্য যে পরিমাণ পণ্যের প্রয়োজন সেই পরিমাণ পণ্য হাটে উঠে না, তাই স্থানীয় বাজারেও দাম বাড়ার কথা জানান স্থানীয় খুচরা বিক্রেতারা।

back to top