চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন, তবে আর্থিক ক্ষমতা সীমাবদ্ধ
বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের। পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে এই কর্মকর্তারা প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করবেন। তবে তাঁদের আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যা স্বাক্ষরিত হয়েছে উপসচিব কাজী মোহাম্মদ চাহেল তস্তুরীর মাধ্যমে।
জেলা পরিষদের প্রশাসনিক স্থবিরতা
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার জেলা পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা গত ৫ আগস্ট থেকে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় জেলা পরিষদের পাশাপাশি হস্তান্তরিত বিভাগের প্রশাসনিক কাজও সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। এর ফলে পরিষদের বিভিন্ন কাজ থমকে গেছে, এবং এই স্থবিরতা কাটাতে মন্ত্রণালয় এই অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নিয়েছে।
আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত ২৮টি সরকারি বিভাগের প্রশাসনিক কাজ এই পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তবে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনুপস্থিতিতে এই দায়িত্ব পালন করতে না পারায় প্রশাসনিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায়, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হলো মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের উপর।
আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় সীমিত ক্ষমতা
বান্দরবান জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানিয়েছেন, যদিও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তবুও আর্থিক লেনদেনের কোনো ক্ষমতা তাঁদের হাতে নেই। এর ফলে শুধুমাত্র প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে, যেমন কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলি ও দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়া। তবে আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আর্থিক ক্ষমতা ছাড়া আমাদের কাজ সীমিত, আমরা শুধু প্রতিবেদন দিচ্ছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পালন করছি। চেয়ারম্যান ছাড়া আর্থিক কাজ করা সম্ভব নয়, তাই আমরা আর্থিক বিষয়গুলোতে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না।”
অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিউল হক ছিদ্দিকী জানিয়েছেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের অন্তর্বর্তীকালীন একটি আদেশ দেওয়া হয়েছে। এটি শুধুমাত্র সাময়িকভাবে প্রশাসনিক কাজ চালানোর উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বর্তমানে চলমান এবং এই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব পালন করবেন।
জেলা পরিষদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, জেলা পরিষদগুলোর পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করার ফলে পরিষদের বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রম কিছুটা হলেও সচল থাকবে। তবে পুনর্গঠন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আর্থিক বিষয়গুলো স্থগিত থাকছে, যা পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজের গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষমতা সীমিত থাকায় তাঁরা আর্থিক সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না। ফলে হস্তান্তরিত বিভাগের অনেক কাজ এখন শুধুমাত্র প্রশাসনিক আদেশ পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখা
বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার প্রশাসনিক কাজ পরিচালনায় যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন এই পদক্ষেপ প্রশাসনিক স্থবিরতা কাটাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা তাঁদের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে কিছুটা হলেও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখতে পারবেন, যদিও আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় কার্যক্রম সীমিত থাকবে।
স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও তাঁরা আর্থিক ক্ষমতা প্রদান না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর্থিক ক্ষমতা ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তাঁরা আশাবাদী যে, সরকারের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে এবং তাঁরা স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে পারবেন।
মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করে সরকার একটি অন্তর্বর্তী সমাধান করেছে, যা কিছুটা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখবে। তবে আর্থিক ক্ষমতা ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজ এবং অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালানো সম্ভব হবে না।
রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন, তবে আর্থিক ক্ষমতা সীমাবদ্ধ
বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের। পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে এই কর্মকর্তারা প্রশাসনিক কাজ পরিচালনা করবেন। তবে তাঁদের আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যা স্বাক্ষরিত হয়েছে উপসচিব কাজী মোহাম্মদ চাহেল তস্তুরীর মাধ্যমে।
জেলা পরিষদের প্রশাসনিক স্থবিরতা
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার জেলা পরিষদগুলোর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা গত ৫ আগস্ট থেকে অনুপস্থিত রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় জেলা পরিষদের পাশাপাশি হস্তান্তরিত বিভাগের প্রশাসনিক কাজও সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। এর ফলে পরিষদের বিভিন্ন কাজ থমকে গেছে, এবং এই স্থবিরতা কাটাতে মন্ত্রণালয় এই অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নিয়েছে।
আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত ২৮টি সরকারি বিভাগের প্রশাসনিক কাজ এই পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তবে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনুপস্থিতিতে এই দায়িত্ব পালন করতে না পারায় প্রশাসনিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায়, চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হলো মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের উপর।
আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় সীমিত ক্ষমতা
বান্দরবান জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ জানিয়েছেন, যদিও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তবুও আর্থিক লেনদেনের কোনো ক্ষমতা তাঁদের হাতে নেই। এর ফলে শুধুমাত্র প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হবে, যেমন কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলি ও দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়া। তবে আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আর্থিক ক্ষমতা ছাড়া আমাদের কাজ সীমিত, আমরা শুধু প্রতিবেদন দিচ্ছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পালন করছি। চেয়ারম্যান ছাড়া আর্থিক কাজ করা সম্ভব নয়, তাই আমরা আর্থিক বিষয়গুলোতে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না।”
অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব
পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিউল হক ছিদ্দিকী জানিয়েছেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের অন্তর্বর্তীকালীন একটি আদেশ দেওয়া হয়েছে। এটি শুধুমাত্র সাময়িকভাবে প্রশাসনিক কাজ চালানোর উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বর্তমানে চলমান এবং এই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা এই দায়িত্ব পালন করবেন।
জেলা পরিষদের পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, জেলা পরিষদগুলোর পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করার ফলে পরিষদের বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রম কিছুটা হলেও সচল থাকবে। তবে পুনর্গঠন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আর্থিক বিষয়গুলো স্থগিত থাকছে, যা পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজের গতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষমতা সীমিত থাকায় তাঁরা আর্থিক সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না। ফলে হস্তান্তরিত বিভাগের অনেক কাজ এখন শুধুমাত্র প্রশাসনিক আদেশ পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।
প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখা
বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার প্রশাসনিক কাজ পরিচালনায় যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা নিরসনে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন এই পদক্ষেপ প্রশাসনিক স্থবিরতা কাটাতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা তাঁদের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে কিছুটা হলেও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখতে পারবেন, যদিও আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় কার্যক্রম সীমিত থাকবে।
স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও তাঁরা আর্থিক ক্ষমতা প্রদান না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর্থিক ক্ষমতা ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। তাঁরা আশাবাদী যে, সরকারের পুনর্গঠন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে এবং তাঁরা স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে পারবেন।
মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান করে সরকার একটি অন্তর্বর্তী সমাধান করেছে, যা কিছুটা হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখবে। তবে আর্থিক ক্ষমতা ছাড়া উন্নয়নমূলক কাজ এবং অন্যান্য কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালানো সম্ভব হবে না।