নিষেধাজ্ঞা শেষে পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে নেমেছে চাঁদপুরের জেলেরা। ধরে আনা ইলিশ বিক্রি করতে আনেন নদী উপকূলীয় আড়তগুলোতে। তিন সপ্তাহ পরে আবারও আড়তগুলো ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে উঠেছে। নিষেধাজ্ঞার আগের চাইতে ইলিশের দামও এখন কিছুটা কম।
গতকাল সকালে সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাট দেখা যায়, আড়তগুলোতে ইলিশ নিয়ে আসছেন জেলেরা। আবার অনেক জেলে নৌকা ও জাল নিয়ে পদ্মা-মেঘনায় বেরিয়ে পড়ছেন। বরফ ছাড়া এসব ইলিশ জেলেদের উপস্থিতিতে হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন আড়তদাররা। মুহূর্তেই বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি পাঙ্গাস মাছও বিক্রি হচ্ছে। তবে সংখ্যায় কম।
উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া গ্রামের জেলে মো. শরীফ জানান, মেঘনায় ভোর রাতে এক নৌকায় তারা তিনজন নেমেছেন ইলিশ ধরতে। তাদের পাওয়া ছোট-বড় ইলিশ বিক্রি করেছেন ৫ হাজার টাকা। কিছু সময় বিরতি দিয়ে আবারও নামবেন নদীতে।
নরসিংদী জেলা থেকে ইলিশ কিনতে এসেছেন কয়েকজন যুবক। তাদের মধ্যে মোস্তাক নামে একজন বলেন, এর আগেও তাজা ইলিশ কিনতে হরিণা মাছঘাটে এসেছি। এবারও এসেছি। এ ঘাটের ইলিশে কোনো ভেজাল নেই। ছোট বড় ১৩ হাজার টাকার ইলিশ কিনেছি। দামও তুলনামূলক কম।
পাঙ্গাস মাছের পাইকারি বিক্রেতা কালু পাটওয়ারী বলেন, গত বছর এই সময়ে ইলিশের জালে অনেক পাঙ্গাস ধরা পড়েছে। এ বছর সংখ্যায় খুবই কম। আজকে ছোট সাইজের পাঙ্গাস প্রতিকেজি ৭০০ টাকা এবং বড় সাইজের পাঙ্গাস প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা। জেলেদের ধরে আনা প্রতি পাঙ্গাসের ওজন ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৮ থেকে ১০ কেজি।
ঘাটের আড়তদার সেলিম সৈয়াল বলেন, আমাদের এই ঘাটে ইলিশ হালিতে বিক্রি হয়। ছোট সাইজের একহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। মাঝারি সাইজের (৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম ওজন) এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকা। ফরিদগঞ্জ উপজেলার রামপুর বাজার থেকে ইলিশ কিনতে এসেছেন আক্তার হোসেন নামে ক্রেতা। তিনি বলেন, আজকে আগের তুলনায় দাম একটু কম আছে। ৪৫০ টাকা করে ৫ হালি ইলিশ কিনেছি। ওজন ২৫০ থেকে ৩০০গ্রাম। নিষেধাজ্ঞার আগে এই সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
এই আড়তের সবচাইতে প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল বলেন, ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য সরকার ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন যে নিষাধাজ্ঞা দিয়েছে, তা আমরা মেনেছি। আজকে সকাল থেকেই জেলেরা ইলিশ নিয়ে আসছে। তবে ইলিশের সাইজ ছোট। বড় ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। আবার কিছু ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ডিম ছেড়ে দেয়া। তবে কয়েকদিন অতিবাহিত হলে বুঝা যাবে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের বিচরণ কি পরিমাণ আছে।
ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান ইলিশের প্রাপ্যতা সম্পর্কে বলেন, ইলিশ পরিভ্রমণশীল মাছ। বছর জুড়েই ইলিশ ডিম ছাড়ে। কিন্তু এই সময়টাতে সাগর থেকে ডিম ছাড়ার জন্য মিঠা পানিতে আসে। তবে ইলিশের চলার পথ সুগম করলে নদীতেও বছরজুড়ে ইলিশ পাবেন জেলেরা।
মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪
নিষেধাজ্ঞা শেষে পদ্মা-মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে নেমেছে চাঁদপুরের জেলেরা। ধরে আনা ইলিশ বিক্রি করতে আনেন নদী উপকূলীয় আড়তগুলোতে। তিন সপ্তাহ পরে আবারও আড়তগুলো ক্রেতা-বিক্রেতায় সরগরম হয়ে উঠেছে। নিষেধাজ্ঞার আগের চাইতে ইলিশের দামও এখন কিছুটা কম।
গতকাল সকালে সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাট দেখা যায়, আড়তগুলোতে ইলিশ নিয়ে আসছেন জেলেরা। আবার অনেক জেলে নৌকা ও জাল নিয়ে পদ্মা-মেঘনায় বেরিয়ে পড়ছেন। বরফ ছাড়া এসব ইলিশ জেলেদের উপস্থিতিতে হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন আড়তদাররা। মুহূর্তেই বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি পাঙ্গাস মাছও বিক্রি হচ্ছে। তবে সংখ্যায় কম।
উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের গোবিন্দিয়া গ্রামের জেলে মো. শরীফ জানান, মেঘনায় ভোর রাতে এক নৌকায় তারা তিনজন নেমেছেন ইলিশ ধরতে। তাদের পাওয়া ছোট-বড় ইলিশ বিক্রি করেছেন ৫ হাজার টাকা। কিছু সময় বিরতি দিয়ে আবারও নামবেন নদীতে।
নরসিংদী জেলা থেকে ইলিশ কিনতে এসেছেন কয়েকজন যুবক। তাদের মধ্যে মোস্তাক নামে একজন বলেন, এর আগেও তাজা ইলিশ কিনতে হরিণা মাছঘাটে এসেছি। এবারও এসেছি। এ ঘাটের ইলিশে কোনো ভেজাল নেই। ছোট বড় ১৩ হাজার টাকার ইলিশ কিনেছি। দামও তুলনামূলক কম।
পাঙ্গাস মাছের পাইকারি বিক্রেতা কালু পাটওয়ারী বলেন, গত বছর এই সময়ে ইলিশের জালে অনেক পাঙ্গাস ধরা পড়েছে। এ বছর সংখ্যায় খুবই কম। আজকে ছোট সাইজের পাঙ্গাস প্রতিকেজি ৭০০ টাকা এবং বড় সাইজের পাঙ্গাস প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা। জেলেদের ধরে আনা প্রতি পাঙ্গাসের ওজন ৫ কেজি থেকে শুরু করে ৮ থেকে ১০ কেজি।
ঘাটের আড়তদার সেলিম সৈয়াল বলেন, আমাদের এই ঘাটে ইলিশ হালিতে বিক্রি হয়। ছোট সাইজের একহালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। মাঝারি সাইজের (৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম ওজন) এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকা। ফরিদগঞ্জ উপজেলার রামপুর বাজার থেকে ইলিশ কিনতে এসেছেন আক্তার হোসেন নামে ক্রেতা। তিনি বলেন, আজকে আগের তুলনায় দাম একটু কম আছে। ৪৫০ টাকা করে ৫ হালি ইলিশ কিনেছি। ওজন ২৫০ থেকে ৩০০গ্রাম। নিষেধাজ্ঞার আগে এই সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
এই আড়তের সবচাইতে প্রবীণ মাছ ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সৈয়াল বলেন, ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য সরকার ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন যে নিষাধাজ্ঞা দিয়েছে, তা আমরা মেনেছি। আজকে সকাল থেকেই জেলেরা ইলিশ নিয়ে আসছে। তবে ইলিশের সাইজ ছোট। বড় ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে। আবার কিছু ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ডিম ছেড়ে দেয়া। তবে কয়েকদিন অতিবাহিত হলে বুঝা যাবে পদ্মা-মেঘনায় ইলিশের বিচরণ কি পরিমাণ আছে।
ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান ইলিশের প্রাপ্যতা সম্পর্কে বলেন, ইলিশ পরিভ্রমণশীল মাছ। বছর জুড়েই ইলিশ ডিম ছাড়ে। কিন্তু এই সময়টাতে সাগর থেকে ডিম ছাড়ার জন্য মিঠা পানিতে আসে। তবে ইলিশের চলার পথ সুগম করলে নদীতেও বছরজুড়ে ইলিশ পাবেন জেলেরা।