হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে চলছে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। দিনরাত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে নদী পারের শত শত ফসলি জমি। এছাড়াও অবাধে বালু তোলার কারণে ভেঙে যাচ্ছে এলাকার রাস্তা ঘাট, বিলীন হচ্ছে ঘর বাড়ি। এমতাবস্থায় বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলেও নেয়া হচ্ছে না কার্যকরি কোন ব্যবস্থা। তাই এলাকাবাসীর স্বার্থে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি পরিবেশবাদীসহ সচেতন মহলের।
জানা যায়, হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। আর এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে ৫ নং দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুকসহ তার লোকজন। আর তার সঙ্গে সঙ্গ দিচ্ছে দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মনজু কুমার দাস। এছাড়াও তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির মিয়া, ইউপি সদস্য দবির মিয়া, বিএনপি নেতা হেদায়ত উল্লাহ, ইউপি সদস্য রমজান আলী, মাছু মিয়া, মইন উদ্দিন, সোহাগ চৌধুরী, শেখ নাছিম ও নুরুল হুদাসহ এলাকার আরও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।
খোঁজ নিযে জানা গেছে, চক্রটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তারা দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসলেও কথা বলার সাহস নেই কারো। আবার কোনো কোনো ব্যক্তি কথা বললেও তাদের উপর নেমে আসে নির্যাতন। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চক্রটি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেলেও সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। এমতাবস্থায় এলাকবাসীর স্বার্থে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসির।
সরেজমিনে দেখা যায়, হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় বড় একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে সেখান থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এতে কাজ করছে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক। বালু উত্তোলন শেষে তারা সেগুলোকে বড় নৌকায় করে মার্কুলি বাজারের পার্শ্ববর্তী একটি নিয়ে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে কুশিয়ারা নদী থেকে। যে কারণে নদীর তলদেশে সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল বিশাল গর্তের।
স্থানীয় বাসিন্দা মোজাহিদ মিয়া বলেন, অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বালু তোলার কারণে হুমকিতে রয়েছে নদী পারের ফসলিম জমি। অনেক স্থানে আবার ঘর বাড়িতে ধ্বসও দেখা দিয়েছে। তাই এখনই এসব বন্ধ করা জরুরি।
তারেক মিয়া নামে আরও ব্যক্তি বলেন, চক্রটি খুবই প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা নানাভাবে হয়রানী করে সাধারণ লোকজনদের। তাদের বালু তোলার কোনো ধরণের অনুমতি নেই। অথচ তারা দীর্ঘদিন যাবত পরিবেশ নষ্ট করে বালু উত্তোলন করে আসছে।
কাজল মিয়া বলেন, আমার সবজির জমিতে তারা জোরপুর্বক বালু স্তুপ করে রাখছে। তারা আমাকে বলেছিল ক্ষতিপূরণ দিবে কিন্তু দেইনি।
হবিগঞ্জ জেলা বাপা’র সাধারণ তোফাজ্জুল সোহেল বলেন- নদীর তলদেশ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন আমাদের পরিবেশের জন্য মরাত্মক হুমকি। এখন এর প্রভাব তেমন একটা না পড়লেও পরবর্তীতে বিস্তুর প্রভাব ফেলবে বালু তোলার ঘটনা। তাই পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুক জানান, আমার এলাকায় নদী ভাঙনরোধে একটি বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে এলাকার কিছু যুবকসহ লোকজন কুশিয়ারা নদী থেকে বালু-মাটি দিচ্ছে। তার নেতৃত্ব দিচ্ছে ইউপি সদস্য মনির ও হেদায়ত উল্ল্যাহ। বালু তোলার বিষয়ে আমি জড়িত না।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াংকা পাল বলেন, বালু তোলার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে তারা একটি আবেদন দিয়েছে আমাদের কাছে। আবেদনটি তদান্তাধীন রয়েছে। যদি তারা এরকমটি করে থাকে তা হলে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪
হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে চলছে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন। দিনরাত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তোলার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে নদী পারের শত শত ফসলি জমি। এছাড়াও অবাধে বালু তোলার কারণে ভেঙে যাচ্ছে এলাকার রাস্তা ঘাট, বিলীন হচ্ছে ঘর বাড়ি। এমতাবস্থায় বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলেও নেয়া হচ্ছে না কার্যকরি কোন ব্যবস্থা। তাই এলাকাবাসীর স্বার্থে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি পরিবেশবাদীসহ সচেতন মহলের।
জানা যায়, হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছেন স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। আর এ চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে ৫ নং দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুকসহ তার লোকজন। আর তার সঙ্গে সঙ্গ দিচ্ছে দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মনজু কুমার দাস। এছাড়াও তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করছে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনির মিয়া, ইউপি সদস্য দবির মিয়া, বিএনপি নেতা হেদায়ত উল্লাহ, ইউপি সদস্য রমজান আলী, মাছু মিয়া, মইন উদ্দিন, সোহাগ চৌধুরী, শেখ নাছিম ও নুরুল হুদাসহ এলাকার আরও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।
খোঁজ নিযে জানা গেছে, চক্রটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তারা দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আসলেও কথা বলার সাহস নেই কারো। আবার কোনো কোনো ব্যক্তি কথা বললেও তাদের উপর নেমে আসে নির্যাতন। দিনের পর দিন অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চক্রটি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেলেও সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। এমতাবস্থায় এলাকবাসীর স্বার্থে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসির।
সরেজমিনে দেখা যায়, হিলাল নগর ও তেলঘরি গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় বড় একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে সেখান থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এতে কাজ করছে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক। বালু উত্তোলন শেষে তারা সেগুলোকে বড় নৌকায় করে মার্কুলি বাজারের পার্শ্ববর্তী একটি নিয়ে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বালু ও মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে কুশিয়ারা নদী থেকে। যে কারণে নদীর তলদেশে সৃষ্টি হচ্ছে বিশাল বিশাল গর্তের।
স্থানীয় বাসিন্দা মোজাহিদ মিয়া বলেন, অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত ওই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বালু তোলার কারণে হুমকিতে রয়েছে নদী পারের ফসলিম জমি। অনেক স্থানে আবার ঘর বাড়িতে ধ্বসও দেখা দিয়েছে। তাই এখনই এসব বন্ধ করা জরুরি।
তারেক মিয়া নামে আরও ব্যক্তি বলেন, চক্রটি খুবই প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা নানাভাবে হয়রানী করে সাধারণ লোকজনদের। তাদের বালু তোলার কোনো ধরণের অনুমতি নেই। অথচ তারা দীর্ঘদিন যাবত পরিবেশ নষ্ট করে বালু উত্তোলন করে আসছে।
কাজল মিয়া বলেন, আমার সবজির জমিতে তারা জোরপুর্বক বালু স্তুপ করে রাখছে। তারা আমাকে বলেছিল ক্ষতিপূরণ দিবে কিন্তু দেইনি।
হবিগঞ্জ জেলা বাপা’র সাধারণ তোফাজ্জুল সোহেল বলেন- নদীর তলদেশ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন আমাদের পরিবেশের জন্য মরাত্মক হুমকি। এখন এর প্রভাব তেমন একটা না পড়লেও পরবর্তীতে বিস্তুর প্রভাব ফেলবে বালু তোলার ঘটনা। তাই পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের এসব বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
অভিযোগের বিষয়ে দৌলতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উমর ফারুক জানান, আমার এলাকায় নদী ভাঙনরোধে একটি বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে এলাকার কিছু যুবকসহ লোকজন কুশিয়ারা নদী থেকে বালু-মাটি দিচ্ছে। তার নেতৃত্ব দিচ্ছে ইউপি সদস্য মনির ও হেদায়ত উল্ল্যাহ। বালু তোলার বিষয়ে আমি জড়িত না।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াংকা পাল বলেন, বালু তোলার বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে তারা একটি আবেদন দিয়েছে আমাদের কাছে। আবেদনটি তদান্তাধীন রয়েছে। যদি তারা এরকমটি করে থাকে তা হলে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।