বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি অংশ উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় তাঁরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে পদত্যাগের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।

নতুন নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানের যোগদান নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তিনি ক্যাম্পাসে যোগদান করতে এলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে তাঁকে ক্যাম্পাস ত্যাগে বাধ্য করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবু হেনা মোস্তফা কামালকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তাঁরা এবং তাঁকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

আজ বুধবার এ নিয়ে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, আবু হেনা মোস্তফা কামালকে নিয়োগে উপাচার্য সহযোগিতা করেছেন। ফলে বিকেলে এক মতবিনিময় সভায় উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিক্ষোভকারীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে বিতর্কিত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, উপাচার্য শুচিতা শরমিন ‘জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করেন না’ এবং বারবার স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্টদের সহযোগীদের পক্ষ নিয়েছেন।

বিক্ষোভে অংশ নিয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক বলেন, “বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তারা জনমত উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশে স্থবিরতা তৈরি করেছে। শিক্ষকেরা এ বিষয়ে অবগত এবং এর প্রতিবাদে আমরা আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।”

কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার বিভাগের চেয়ারম্যান হাফিজ আশরাফুল হক অভিযোগ করেন, “উপাচার্য শুচিতা শরমিন এবং সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ কোষাধ্যক্ষ নিয়োগে সংশ্লিষ্ট। আমরা ৫৩ জন শিক্ষক এবং অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী সংহতি প্রকাশ করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনড় থাকব।”

উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিনের প্রতিক্রিয়া জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আন্দোলনের মুখে ২০ আগস্ট পদত্যাগ করেন তৎকালীন উপাচার্য মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। পরবর্তীতে ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শুচিতা শরমিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান।

বর্তমানে কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে।