ডুমুরিয়ায় ভদ্রা নদীর ওপর ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে লাগছে না। সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতায় সংযোগ সড়কের কাজ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে যানবাহন ছাড়াও এলাকাবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দে ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর উলা ও গজেন্দ্রপুর গ্রামের মধ্যে ভদ্রা নদীর উপর ৮৪ মিটার সেতু নির্মাণ শুরু করে সামছুদোহা কনস্টাশন। কাজের সময়সীমা ধরা হয় ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর। ২০২২ সালের প্রথম দিকে সংযোগ সড়কের ৭০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ ও জমির মূল্য বাবদ ২৮ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো এবং জমি অধিগ্রহণসহ সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড় পাওয়া যায়নি। ২০২৩ সালের জুন মাসে সেতুর কাজ শেষ হলেও বরাদ্দ না পাওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে আছে। ভদ্রা নদীর ওপর পাঁচ বছর আগে সেতুর কাজ শুরু হলে ওই সময় থেকেই এই সড়ক পথে যান চলাচল প্রায় বন্ধ আছে। শুস্ক মৌসুমে সেতুর পাশ ঘেঁষে মাটির একটি সরু রাস্তা দিয়ে কোনো রকমে একটি দুটি ভ্যানে স্কুলের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। তবে বর্ষায় দুর্ভোগ চরমে উঠে। ডুমুরিয়া সদর, শরাফপুর, সাহস, ভা-ারপাড়া ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষকে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়ত করতে হয়। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের টাকাও চলে যাচ্ছে। দ্রুত সংযোগ সড়কের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে অনেক বাড়ির ছেলে মেয়েদের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সেতু ঘিরে একটি ডিগ্রি কলেজ, ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩টি প্রথমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসা, ২টি হাসপাতাল, ও ১টি পুলিশ ক্যাম্প। এ রাস্তায় চলাচলে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের যাতায়তে দুর্ভোগের অন্ত নেই। এ রিপোর্ট লেখার আগে সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাজ ফেলে চলে গেছে ঠিকাদারের লোকজন। কাপালিডাঙ্গা গ্রামের স্কুল শিক্ষক গাজী আব্দুস সোবাহান জানান, আগে এখানে একটা কাঠের সেতু ছিল। তার ওপর দিয়ে লোকজন যাতায়াত করত। সেতুটি বেশ মজবুত ছিল। ভ্যানগাড়িসহ ছোট ছোট যানবাহন সেতু পার হয়ে যেতে পারতো। কাজ শুরু হলে সেটি অকেজো হয়ে গেছে। তার উপর দিয়ে লোকজন যাতায়াত করতে পারে না।
জানতে চাইলে ঠিকাদার আবু হানিফ বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণে সেতুর দুই পাশে জমি ছিল না। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা নিরসন ও অর্থ বরাদ্দ না পেলে অবশিষ্ট কাজ শেষ করা যাচ্ছে না।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার চিঠিও দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে। এদিকে ডুমুরিয়াতে আরও একটি সেতু কাজ শুরুর ছয় বছর পার হলেও এখনও অর্ধেক কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলার সিংগা নদীর ওপর একটি সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু আর টিপনা-সিংগা সড়কের ৯৫০ মিটার কাজের ব্যায় ধরা ছিল ৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আকন ট্রেডিং এবং মাহফুজ খান যৌথভাবে (জেভি) কাজটি পায়। কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা ছিল এক বছর। অথচ ছয় বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ৪৫ শতাংশ। সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি তৈরি করতে নদীতে কিছু পাইলিং ও উত্তর-দক্ষিণ পাশে কিছু অংশে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, অনেক আগে কাজ ফেলে ঠিকাদারের লোকজন চলে গেছে। তবে এই সেতুটি নির্মিত হলে উপজেলার ছয় ইউনিয়নের বাসিন্দারা উপকৃত হতো।
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
ডুমুরিয়ায় ভদ্রা নদীর ওপর ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে লাগছে না। সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেও জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতায় সংযোগ সড়কের কাজ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এতে যানবাহন ছাড়াও এলাকাবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দে ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর উলা ও গজেন্দ্রপুর গ্রামের মধ্যে ভদ্রা নদীর উপর ৮৪ মিটার সেতু নির্মাণ শুরু করে সামছুদোহা কনস্টাশন। কাজের সময়সীমা ধরা হয় ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর। ২০২২ সালের প্রথম দিকে সংযোগ সড়কের ৭০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ ও জমির মূল্য বাবদ ২৮ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো এবং জমি অধিগ্রহণসহ সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থছাড় পাওয়া যায়নি। ২০২৩ সালের জুন মাসে সেতুর কাজ শেষ হলেও বরাদ্দ না পাওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে আছে। ভদ্রা নদীর ওপর পাঁচ বছর আগে সেতুর কাজ শুরু হলে ওই সময় থেকেই এই সড়ক পথে যান চলাচল প্রায় বন্ধ আছে। শুস্ক মৌসুমে সেতুর পাশ ঘেঁষে মাটির একটি সরু রাস্তা দিয়ে কোনো রকমে একটি দুটি ভ্যানে স্কুলের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। তবে বর্ষায় দুর্ভোগ চরমে উঠে। ডুমুরিয়া সদর, শরাফপুর, সাহস, ভা-ারপাড়া ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষকে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়ত করতে হয়। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বিপুল অঙ্কের টাকাও চলে যাচ্ছে। দ্রুত সংযোগ সড়কের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে অনেক বাড়ির ছেলে মেয়েদের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সেতু ঘিরে একটি ডিগ্রি কলেজ, ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩টি প্রথমিক বিদ্যালয়, ২টি মাদ্রাসা, ২টি হাসপাতাল, ও ১টি পুলিশ ক্যাম্প। এ রাস্তায় চলাচলে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের যাতায়তে দুর্ভোগের অন্ত নেই। এ রিপোর্ট লেখার আগে সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাজ ফেলে চলে গেছে ঠিকাদারের লোকজন। কাপালিডাঙ্গা গ্রামের স্কুল শিক্ষক গাজী আব্দুস সোবাহান জানান, আগে এখানে একটা কাঠের সেতু ছিল। তার ওপর দিয়ে লোকজন যাতায়াত করত। সেতুটি বেশ মজবুত ছিল। ভ্যানগাড়িসহ ছোট ছোট যানবাহন সেতু পার হয়ে যেতে পারতো। কাজ শুরু হলে সেটি অকেজো হয়ে গেছে। তার উপর দিয়ে লোকজন যাতায়াত করতে পারে না।
জানতে চাইলে ঠিকাদার আবু হানিফ বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণে সেতুর দুই পাশে জমি ছিল না। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা নিরসন ও অর্থ বরাদ্দ না পেলে অবশিষ্ট কাজ শেষ করা যাচ্ছে না।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার চিঠিও দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে। এদিকে ডুমুরিয়াতে আরও একটি সেতু কাজ শুরুর ছয় বছর পার হলেও এখনও অর্ধেক কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। উপজেলার সিংগা নদীর ওপর একটি সেতুর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে সেতু আর টিপনা-সিংগা সড়কের ৯৫০ মিটার কাজের ব্যায় ধরা ছিল ৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আকন ট্রেডিং এবং মাহফুজ খান যৌথভাবে (জেভি) কাজটি পায়। কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা ছিল এক বছর। অথচ ছয় বছরে কাজ হয়েছে মাত্র ৪৫ শতাংশ। সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি তৈরি করতে নদীতে কিছু পাইলিং ও উত্তর-দক্ষিণ পাশে কিছু অংশে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, অনেক আগে কাজ ফেলে ঠিকাদারের লোকজন চলে গেছে। তবে এই সেতুটি নির্মিত হলে উপজেলার ছয় ইউনিয়নের বাসিন্দারা উপকৃত হতো।