alt

সারাদেশ

কেশবপুরে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু

প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর) : শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

আজ ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালী কবি ও নাট্যকার তথা বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী। তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কপোতাক্ষ নদ তীরে জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে চলছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা। লাখো প্রাণের উচ্ছ্বাসে গতকাল বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

মধুসূদন সাগরদাঁড়ি গ্রামে ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জমিদার বাবা রাজনারাছু দত্ত ও মা জাহ্নবী দেবীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক কবি, প্রথম সার্থক নাট্যকার। মধুসূদন সাত বছর বয়সে কলকাতা যান। খিদিরপুর স্কুলে দুই বছর পড়ার পর ১৮৩৩ সালে কবি হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। বাংলা, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষা লাভ করেন। ১৮৪৪ সাল থেকে ১৮৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতায় বিশব কলেজে অধ্যায়ন করেন। সেখানে গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখেন। তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভুক্ত হাইস্কুলে শিক্ষাকতা করেন। মাদ্রাজ থেকে প্রকাশিত পত্রিকা মাদ্রাজ স্পেক্টেটরের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৬২ সালের ৯ জুন ব্যারিস্টারি পড়ার জন্যে তিনি বিলেত যান। ১৮৬৬ সালে তার স্বপ্নের ব্যারিস্টারি পাশ করেন।

মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তিনি বাংলা সাহিত্যের পাশাপাশি ইংরেজি সাহিত্যেও অসামান্য অবদান রাখায় বিশ্ববাসী এই ধীমান কবিকে মনে রেখেছে কৃতজ্ঞচিত্তে। যদিও তার প্রথম ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ ‘ঞযব ঈধঢ়ঃরাব খধফরব’কে ইংরেজরা তখন সাদরে গ্রহণ করেনি। পাশ্চত্যের প্রতি আর্কষিত মধুসূদন ১৮৪৩ সালে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হয়ে ‘মাইকেল’ উপাধি ধারণ করেন। তিনি ইংরেজদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এটি রচনা করলে গ্রন্থটি তৎকালিন ইংরেজ সাহিত্যিকদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। মধুসূদন থাকলে তাদের সাহিত্যকর্ম স্থান পাবে না এই সংশয় তাদের মাঝে প্রকটভাবে দানা বাধতে থাকে। ইংরেজি সাহিত্যে তার কীর্তির যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় তিনি মনক্ষুণ হয়ে পড়েন। তখনই বুঝতে পারেন শেকড় ভোলার জ্বালা। ইংরেজি সাহিত্য থেকে ছিটকে পড়ে বন্ধু মহলের পরামর্শে মধুসূদন বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে উপহার দেন শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী, তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য, কৃষ্ণকুমারী, মেঘনাদবদ কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেক্টরবধ এর মতো বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম।

মধুসূদন দত্ত নাট্যকার হিসেবেই প্রথম বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে পদার্পণ করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৯৬০ সালে রচনা করেন দুটি প্রহসন ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ এবং পূর্ণাঙ্গ পদ্মাবতী নাটক। পদ্মাবতী নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। একের পর এক রচনা করেন ‘মেঘনাদ বধ কাব্য’ (১৮৬১), নামে মহাকাব্য, ‘ব্রজাঙ্গনা’ কাব্য (১৮৬১), ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক (১৮৬১), চতুর্দশপদী কবিতা (১৮৬৬)।

মধুসূদনের শেষ জীবন চরম দুঃখ ও দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। আইন ব্যবসায় তিনি তেমন সাফল্য লাভ করতে পারেননি। তা ছাড়া অমিতব্যয়ী স্বভাবের জন্য তিনি ঋতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। মহান এ কবি ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন আলিপুর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ছবি

রায়গঞ্জে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীর কাঁধে সংসারের বোঝা

ছবি

বগুড়া ওয়াইএমসিএ কলেজে পিঠা উৎসব

ছবি

হাকালুকি হাওরে বিষটোপে শিকার করায় কমছে পাখির সংখ্যা

ছবি

রায়গঞ্জে জমি থেকে সরিষা তুলে নেয়ার অভিযোগ

লক্ষ্যাপারের দুদিনব্যাপী শাস্ত্রীয় সংগীত সম্মেলনের সমাপ্তি

ছবি

আগৈলঝাড়ার গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল

ছবি

গোদাগাড়ী মহিলা কলেজের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর

বিনার উচ্চ ফলনশীল সরিষার চাষাবাদ নিয়ে কৃষক প্রশিক্ষণ

আক্কেলপুরে দুর্ঘটনায় ভ্যানচালকের মৃত্যু

শাহজাদপুরে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২০

শিক্ষা সুপারভাইজার কর্মশালা অনুষ্ঠিত

কালীগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন

খুলনায় যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

ছবি

রাণীনগরে দুই প্রতিবন্ধীর জীবন কাটছে চার দেওয়ালের ভেতরে

বাউফলে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, প্রাণনাশের হুমকি, গ্রেপ্তার দুই

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে স্থলবন্দর নির্মাণের কথা ভাবছে সরকার নৌপরিবহন উপদেষ্টা

বেরোবিতে ১৬ জুলাই পালিত হবে শহীদ আবু সাঈদ দিবস

ত্বকী হত্যার বিচার নিয়ে সরকার নিষ্ক্রিয় রফিউর রাব্বি

ছবি

মাদারীপুর পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশন নেই সড়কের পাশে ময়লা ফেলায় বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

মাদারীপুরে ভাই-বোনের মরদেহ উদ্ধার

করিমগঞ্জে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো মুক্তিযুদ্ধের স্মারক

‘যারাই ক্ষমতায় যায়, তারাই স্বৈরাচার হয়ে যায়’

ভৈরবের যুবক সৌদি আরব পার্কে আত্মহত্যা

অপারেশন ডেভিল হান্ট সাভার-আশুলিয়া-ধামরাই থানায় গ্রেপ্তার নেই কেউ

শরীয়তপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ৫ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ

বাগেরহাটে আ’লীগের ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

সিংগাইরে কবরস্থান থেকে ৫ লাশের মাথা চুরি, এলাকায় আতঙ্ক

মহাদেবপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এটেন্ডেন্স মেশিন ক্রয়ে দুর্নীতি

ছবি

সৈয়দপুরে রেল শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ধর্মঘট

ছবি

লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে ভাটার সময় চলে না ফেরি

ছবি

কক্সবাজারের সাবেক ডিসি রুহুল আমিন আবারও কারাগারে

ছবি

দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা করতে ময়দান বুঝে পেলেন সাদপন্থিরা

গাজীপু‌রে ‘অপা‌রেশন ডেভিল হান্ট’ অ‌ভিযা‌নে ৮৭ জনকে‌ গ্রেফতার

ছবি

শিবির নেতা হত্যা মামলায় নদভী রিমান্ডে

ছবি

শেখ হেলাল-তন্ময়সহ আ.লীগের ৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

গাজীপুরে আওয়ামী লীগের ৪০ নেতাকর্মী আটক

tab

সারাদেশ

কেশবপুরে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা শুরু

প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর)

শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

আজ ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট বাঙালী কবি ও নাট্যকার তথা বাংলার নবজাগরণ সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী। তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কপোতাক্ষ নদ তীরে জন্মস্থান সাগরদাঁড়িতে চলছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা। লাখো প্রাণের উচ্ছ্বাসে গতকাল বিকেলে মেলার উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

মধুসূদন সাগরদাঁড়ি গ্রামে ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জমিদার বাবা রাজনারাছু দত্ত ও মা জাহ্নবী দেবীর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম আধুনিক কবি, প্রথম সার্থক নাট্যকার। মধুসূদন সাত বছর বয়সে কলকাতা যান। খিদিরপুর স্কুলে দুই বছর পড়ার পর ১৮৩৩ সালে কবি হিন্দু কলেজে ভর্তি হন। বাংলা, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষা লাভ করেন। ১৮৪৪ সাল থেকে ১৮৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতায় বিশব কলেজে অধ্যায়ন করেন। সেখানে গ্রিক, ল্যাটিন ও সংস্কৃত ভাষা শেখেন। তিনি মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভুক্ত হাইস্কুলে শিক্ষাকতা করেন। মাদ্রাজ থেকে প্রকাশিত পত্রিকা মাদ্রাজ স্পেক্টেটরের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৮৬২ সালের ৯ জুন ব্যারিস্টারি পড়ার জন্যে তিনি বিলেত যান। ১৮৬৬ সালে তার স্বপ্নের ব্যারিস্টারি পাশ করেন।

মাইকেল মধুসূদন বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তিনি বাংলা সাহিত্যের পাশাপাশি ইংরেজি সাহিত্যেও অসামান্য অবদান রাখায় বিশ্ববাসী এই ধীমান কবিকে মনে রেখেছে কৃতজ্ঞচিত্তে। যদিও তার প্রথম ইংরেজি কাব্যগ্রন্থ ‘ঞযব ঈধঢ়ঃরাব খধফরব’কে ইংরেজরা তখন সাদরে গ্রহণ করেনি। পাশ্চত্যের প্রতি আর্কষিত মধুসূদন ১৮৪৩ সালে খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হয়ে ‘মাইকেল’ উপাধি ধারণ করেন। তিনি ইংরেজদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এটি রচনা করলে গ্রন্থটি তৎকালিন ইংরেজ সাহিত্যিকদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। মধুসূদন থাকলে তাদের সাহিত্যকর্ম স্থান পাবে না এই সংশয় তাদের মাঝে প্রকটভাবে দানা বাধতে থাকে। ইংরেজি সাহিত্যে তার কীর্তির যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় তিনি মনক্ষুণ হয়ে পড়েন। তখনই বুঝতে পারেন শেকড় ভোলার জ্বালা। ইংরেজি সাহিত্য থেকে ছিটকে পড়ে বন্ধু মহলের পরামর্শে মধুসূদন বাংলা ভাষায় সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেন। তিনি বাংলা সাহিত্যে উপহার দেন শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী, তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য, কৃষ্ণকুমারী, মেঘনাদবদ কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেক্টরবধ এর মতো বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম।

মধুসূদন দত্ত নাট্যকার হিসেবেই প্রথম বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে পদার্পণ করেন। ১৮৫৯ সালে তিনি রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৯৬০ সালে রচনা করেন দুটি প্রহসন ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ ও বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ এবং পূর্ণাঙ্গ পদ্মাবতী নাটক। পদ্মাবতী নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। একের পর এক রচনা করেন ‘মেঘনাদ বধ কাব্য’ (১৮৬১), নামে মহাকাব্য, ‘ব্রজাঙ্গনা’ কাব্য (১৮৬১), ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক (১৮৬১), চতুর্দশপদী কবিতা (১৮৬৬)।

মধুসূদনের শেষ জীবন চরম দুঃখ ও দারিদ্র্যের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়। আইন ব্যবসায় তিনি তেমন সাফল্য লাভ করতে পারেননি। তা ছাড়া অমিতব্যয়ী স্বভাবের জন্য তিনি ঋতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। মহান এ কবি ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন আলিপুর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

back to top