alt

সারাদেশ

আশ্রয়ণের জমি নিয়ে মামলা, মানবেতর জীবনে ৭০ পরিবার

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট : সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

লালমনিরহাট : আশ্রয়ণ প্রকল্পের অসহায় বাসিন্দারা -সংবাদ

লালমনিরহাট আবাসনের জরাজীর্ণ পুরাতন ঘর ভেঙে নতুন করে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ। মামলা জটিলতায় মানবেতর জীবন কাটছে লালমনিরহাটের গৃহহারা ৭০টি ভূমিহীন পরিবারের।

দীর্ঘ আট মাস ধরে বৃষ্টি-শীত উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এসব পরিবার।

ভুক্তভোগীরা জানান, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য বিগত বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে আবাসন নির্মাণ করেন।

তৎকালীন সেনাবাহিনী ৬ সিগন্যাল ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ওই গ্রামের সরকারি খাস জমিতে ৭০টি পরিবারের জন্য টিনশেডের এ আবাসন তৈরি করেন। পরে তা সুফলভোগীদের কাছে বুঝে দেয় সরকার। সেই থেকে আবাসনে বসবাস করে আসছেন ৭০টি ভূমিহীন পরিবার।

কালের পরিক্রমায় এ আবাসনটির ছাউনির টিনসহ সবকিছু নষ্ট হলে বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়ে।

সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিলেও তার বরাদ্দ না থাকায় সংস্কার করেনি সরকার বা সুফলভোগীরা। এক পর্যায়ে সুফলভোগীদের দুর্ভোগ বিবেচনা করে আবাসন সংস্কার না করে আবাসনের জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর করে দেয়ার প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। গত অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে ৭০ পরিবারকে পুনর্বাসন করতে নতুন করে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। নতুন করে ঘর নির্মাণ করতে পুরাতন ঘর সরাতে বলা হলে সুফলভোগীরা যে যার যার মতো তাদের জিনিসপত্রসহ ঘর ভেঙে ফেলে জায়গা ফাঁকা করেন।

সুফলভোগী ৭০ পরিবার আবাসনের পাশে, অন্যের বাসা বাড়ির উঠানে, রাস্তার ধারে, বাঁশ ঝাড়, পুকুর পাড়ে তাবু বা পলিথিন টানিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বলা হয়েছিল দুই-তিন মাসের মধ্যে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ শেষ হলে তারা পুনরায় ফিরবেন সেই নতুন ঘরে। এরপর নতুন করে আশ্রয়ণ করতে গত জুলাই মাসে কাজ শুরু করে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে জমিটা ফাঁকা হলে সুযোগ বুঝে তা নিজেদের দাবি করে কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা গ্রামের মৃত শিশির কুমারের স্ত্রী আরতি রানী চন্দ্র বাদী হয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসকসহ পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়। সেই মামলায় গত অক্টোবর মাসে ৮ তারিখ নির্মাণ কাজের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন উচ্চ আদালত। যার কারণে আশ্রয়ণের নির্মাণকাজের শুরুতেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আবাসন থেকে সরে যাওয়া ৭০ পরিবার পড়েছেন চরম বিপাকে।

সুফলভোগী ৭০ পরিবার অন্যের জমিতে বাসা বাড়িতে কেউ বাঁশঝাড়ে অস্থায়ীভাবে তাঁবু ও পলিথিন টানিয়ে বসবাস করছিলেন। এরই মধ্যে বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে ঘুমহীন রাত কেটেছে তাদের। চলছে শীতকাল। ঘনকুয়াশা আর কনকনে ঠা-ায় তাবু বা পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে থাকা নিদারুণ কষ্টের।

বৃষ্টি শীত উপেক্ষা করে দীর্ঘ ৮ মাস ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে ৭০টি পরিবার। এদিকে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত কবে হবে। আদৌ আশ্রয়ণ হবে কিনা? তা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন এসব পরিবার।

ভুক্তভোগী সহিজন বেওয়া (৯০) বলেন, আগে আবাসনের ঘরে টিনে ফুটো থাকলেও পলিথিনে মুড়িয়ে থাকতাম। নতুন ঘর করে দেয়ার কথা বলে সব ভেঙে দিল ইউএনও স্যার। তখন অন্যের জমিতে দুই মাসের জন্য টিনের ছায়লা পেতে ছিলাম। এখন আট মাস হলো জমির মালিক থাকতে দিচ্ছে না।

এখন কোথায় যাই। আগের জমি ফাঁকা পড়ে আছে। বলেছি সেখানে ছায়লা বানিয়ে থাকি। সেটারও অনুমতি নেই। গরিব মানুষ হামরা কোনটে যাই বাপু।

ভুক্তভোগী আর্জিনা বেগম বলেন, জুন মাসে আবাসন ভেঙে দিয়েছে। দুই মাসের মধ্যে নতুন করে ঘর করে দেয়ার কথা। আট মাস হচ্ছে এখন পর্যন্ত নতুন ঘর নির্মাণ শুরুই করেনি। দুই মাসের জন্যে অন্যের বাড়ির বারান্দায় পলিথিনের ঘর বানিয়ে কোনো রকম করে আছি। তারাও আর থাকতে দিচ্ছে না। সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাই বলেন তো?

অপর ভুক্তভোগী মোফাজ্জল মিস্ত্রী বলেন, দুই মাসের জন্য পাশের এক জমি মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে টিনের ছায়লা করেছি। দুই মাসের জায়গায় আট মাস হলো। ৪০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হলো। নতুন ঘরও হচ্ছে না।

মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে কি চলা যায়?। মামলার দ্রুত সমাধান করতে সরকারের প্রতি আকূল আবেদন জানান তিনি। পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউল ইসলাম ফাতেমী পাভেল বলেন, আবাসনের ৭০ পরিবারের দুর্ভোগ লাগবে দ্রুত সমাধান করতে প্রতিটি সভায় বিষয়টি তুলে ধরেছি। এ এলাকায় এমন কোনো পরিত্যাক্ত বা খাস জমি নেই যেখানে এসব পরিবারকে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা যায়। জমি না থাকায় লোকজন বিভিন্নভাবে অন্যের জমি বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলা প্রশাসন উচ্চ আদালতের এ মামলটি ফেস করেছে এবং চলতি মাসে এর সমাধান আসবে বলে শুনেছি। ভূমিহীন পরিবারগুলোর দুর্দশা লাগবে দ্রুত সমাধান করতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

উপজেলা আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরই আলম সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘদিনের পুরাতন আবাসনটি কালের পরিক্রমায় জরাজীর্ণ হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল।

তাই সেটি ভেঙ্গে আশ্রয়ণের ঘর করে ওই ৭০ পরিবারকে পুনর্বাসন করতে আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। জুলাই মাসে কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশে আবার কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে খুব তাড়তাড়ি এর সমাধান হবে। সমাধান হলেই নির্মাণকাজ শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, ভিপি ল্যান্ডে (খাস খতিয়ান না হওয়া ভূমি) ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে আবাসন করে তৎকালিন সরকার। কিন্তু ভিপিকৃত জমি পুনরায় নিজেদের দাবি করে আরতী রানী চন্দ্র নামে এক নারী উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। জমির কাগজ অনুপাতে সরকার সঠিক পথেই রয়েছে। আগামী ধার্য দিনে এ মামলার সমাধান আসবে বলে আমরা আশাবাদী।

ছবি

কমিশনার অপসারণের দাবিতে খুলনায় টানা কর্মসূচি, রোববার থেকে সর্বাত্মক অবরোধের হুঁশিয়ারি

ছবি

চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা: চিন্ময়ের ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ দায়ী, বলছে পুলিশ

ছবি

রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রথ মেলায় চাঁদাবাজি বন্ধ করায় সস্তিতে ব্যবসায়ীরা

২৩ বছর পর পটুয়াখালীতে বিএনপির সম্মেলন আজ

ছাতকে ইউএনওর সাথে সাংবাদিকদের মত বিনিময়

করিমগঞ্জে প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার বিতরণ

ছবি

মাতামুহুরীর চরের জমিতে পেঁপে চাষে সৌখিন চাষি বাদশা লাভবান

১৩ বছর ধরে অবৈধভাবে শিক্ষকতা বেরোবির তাবিউর রহমান প্রধানের বিরুদ্ধে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

পূর্বাচলে ঘোড়ার মাংসসহ গ্রেপ্তার ১

ছবি

পলাশে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার সৌন্দর্যের প্রতীক তালগাছ

ইতিহাস, ঐতিহ্য ও গৌরবের সিলেট মুরারি চাঁদ কলেজ

মাদক কারবারিদের হামলায় ডিবি পুলিশ আহত

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে

ডিমলায় জমি নিয়ে বিরোধ, নিহত ১

ভৈরবে পাইকারি চাল বাজারে অভিযান জরিমানা

ছবি

প্রধান শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

১০১ পরিবারকে ঘর দিচ্ছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন

দুর্গাপুরে জনবসতি এলাকায় ময়লার ভাগাড় হুমকিতে জনস্বাস্থ্য

নরসিংদীতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে-গুলি করে হত্যা

ছবি

সিরাজগঞ্জে বর্ষার আগমনে জেলে পরিবারগুলোতে ফিরেছে স্বস্তি

ঝালকাঠি পৌরসভায় ট্রাক স্ট্যান্ড না থাকায় আবাসিক এলাকায় পার্কিং

বেতাগীতে ডেঙ্গুতে শিক্ষকের মৃত্যু

গাইবান্ধায় বাড়ছে অপরাধ, জনমনে উদ্বেগ

ছবি

গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসের সমাবেশ

রামুতে পরিত্যক্ত অস্ত্র উদ্ধার আটক ২

বোয়ালখালী পৌরসভার ২৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

রামুতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ড্রেজার মেশিন জব্দ

ঝালকাঠিতে রোপা আমনের প্রণোদনা সাড়ে ১৬ লাখ টাকা

বেগমগঞ্জে অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

ছবি

দশমিনার তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে নেই রূপালী ইলিশ

বেগমগঞ্জে শিশু নির্যাতনকারীকে গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন

লালমাইয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিসে তালা দিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতারা!

পুর্ব-সুন্দরবনে ফাঁদসহ হরিণ শিকারি আটক

ছবি

বিনা অনুমতিতে সেবা, চার প্রতিষ্ঠানে জরিমানা ১ লাখ ১৫ হাজার

ছবি

কুমিল্লা চান্দিনা বাজারের রাস্তা বেহাল

সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে ৮০ হাজার যানবাহন চলাচলের অযোগ্য

tab

সারাদেশ

আশ্রয়ণের জমি নিয়ে মামলা, মানবেতর জীবনে ৭০ পরিবার

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট

লালমনিরহাট : আশ্রয়ণ প্রকল্পের অসহায় বাসিন্দারা -সংবাদ

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

লালমনিরহাট আবাসনের জরাজীর্ণ পুরাতন ঘর ভেঙে নতুন করে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ রয়েছে নির্মাণকাজ। মামলা জটিলতায় মানবেতর জীবন কাটছে লালমনিরহাটের গৃহহারা ৭০টি ভূমিহীন পরিবারের।

দীর্ঘ আট মাস ধরে বৃষ্টি-শীত উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নিচে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন এসব পরিবার।

ভুক্তভোগীরা জানান, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য বিগত বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ২০০৩-২০০৪ অর্থবছরে আবাসন নির্মাণ করেন।

তৎকালীন সেনাবাহিনী ৬ সিগন্যাল ব্যাটালিয়নের সদস্যরা ওই গ্রামের সরকারি খাস জমিতে ৭০টি পরিবারের জন্য টিনশেডের এ আবাসন তৈরি করেন। পরে তা সুফলভোগীদের কাছে বুঝে দেয় সরকার। সেই থেকে আবাসনে বসবাস করে আসছেন ৭০টি ভূমিহীন পরিবার।

কালের পরিক্রমায় এ আবাসনটির ছাউনির টিনসহ সবকিছু নষ্ট হলে বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে পড়ে।

সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিলেও তার বরাদ্দ না থাকায় সংস্কার করেনি সরকার বা সুফলভোগীরা। এক পর্যায়ে সুফলভোগীদের দুর্ভোগ বিবেচনা করে আবাসন সংস্কার না করে আবাসনের জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর করে দেয়ার প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। গত অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে ৭০ পরিবারকে পুনর্বাসন করতে নতুন করে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। নতুন করে ঘর নির্মাণ করতে পুরাতন ঘর সরাতে বলা হলে সুফলভোগীরা যে যার যার মতো তাদের জিনিসপত্রসহ ঘর ভেঙে ফেলে জায়গা ফাঁকা করেন।

সুফলভোগী ৭০ পরিবার আবাসনের পাশে, অন্যের বাসা বাড়ির উঠানে, রাস্তার ধারে, বাঁশ ঝাড়, পুকুর পাড়ে তাবু বা পলিথিন টানিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। বলা হয়েছিল দুই-তিন মাসের মধ্যে আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণ শেষ হলে তারা পুনরায় ফিরবেন সেই নতুন ঘরে। এরপর নতুন করে আশ্রয়ণ করতে গত জুলাই মাসে কাজ শুরু করে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে জমিটা ফাঁকা হলে সুযোগ বুঝে তা নিজেদের দাবি করে কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা গ্রামের মৃত শিশির কুমারের স্ত্রী আরতি রানী চন্দ্র বাদী হয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসকসহ পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়। সেই মামলায় গত অক্টোবর মাসে ৮ তারিখ নির্মাণ কাজের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন উচ্চ আদালত। যার কারণে আশ্রয়ণের নির্মাণকাজের শুরুতেই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আবাসন থেকে সরে যাওয়া ৭০ পরিবার পড়েছেন চরম বিপাকে।

সুফলভোগী ৭০ পরিবার অন্যের জমিতে বাসা বাড়িতে কেউ বাঁশঝাড়ে অস্থায়ীভাবে তাঁবু ও পলিথিন টানিয়ে বসবাস করছিলেন। এরই মধ্যে বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে ঘুমহীন রাত কেটেছে তাদের। চলছে শীতকাল। ঘনকুয়াশা আর কনকনে ঠা-ায় তাবু বা পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে থাকা নিদারুণ কষ্টের।

বৃষ্টি শীত উপেক্ষা করে দীর্ঘ ৮ মাস ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে ৭০টি পরিবার। এদিকে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত কবে হবে। আদৌ আশ্রয়ণ হবে কিনা? তা নিয়েই চিন্তায় পড়েছেন এসব পরিবার।

ভুক্তভোগী সহিজন বেওয়া (৯০) বলেন, আগে আবাসনের ঘরে টিনে ফুটো থাকলেও পলিথিনে মুড়িয়ে থাকতাম। নতুন ঘর করে দেয়ার কথা বলে সব ভেঙে দিল ইউএনও স্যার। তখন অন্যের জমিতে দুই মাসের জন্য টিনের ছায়লা পেতে ছিলাম। এখন আট মাস হলো জমির মালিক থাকতে দিচ্ছে না।

এখন কোথায় যাই। আগের জমি ফাঁকা পড়ে আছে। বলেছি সেখানে ছায়লা বানিয়ে থাকি। সেটারও অনুমতি নেই। গরিব মানুষ হামরা কোনটে যাই বাপু।

ভুক্তভোগী আর্জিনা বেগম বলেন, জুন মাসে আবাসন ভেঙে দিয়েছে। দুই মাসের মধ্যে নতুন করে ঘর করে দেয়ার কথা। আট মাস হচ্ছে এখন পর্যন্ত নতুন ঘর নির্মাণ শুরুই করেনি। দুই মাসের জন্যে অন্যের বাড়ির বারান্দায় পলিথিনের ঘর বানিয়ে কোনো রকম করে আছি। তারাও আর থাকতে দিচ্ছে না। সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাই বলেন তো?

অপর ভুক্তভোগী মোফাজ্জল মিস্ত্রী বলেন, দুই মাসের জন্য পাশের এক জমি মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে টিনের ছায়লা করেছি। দুই মাসের জায়গায় আট মাস হলো। ৪০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হলো। নতুন ঘরও হচ্ছে না।

মাসে ৫ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে কি চলা যায়?। মামলার দ্রুত সমাধান করতে সরকারের প্রতি আকূল আবেদন জানান তিনি। পলাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউল ইসলাম ফাতেমী পাভেল বলেন, আবাসনের ৭০ পরিবারের দুর্ভোগ লাগবে দ্রুত সমাধান করতে প্রতিটি সভায় বিষয়টি তুলে ধরেছি। এ এলাকায় এমন কোনো পরিত্যাক্ত বা খাস জমি নেই যেখানে এসব পরিবারকে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা যায়। জমি না থাকায় লোকজন বিভিন্নভাবে অন্যের জমি বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলা প্রশাসন উচ্চ আদালতের এ মামলটি ফেস করেছে এবং চলতি মাসে এর সমাধান আসবে বলে শুনেছি। ভূমিহীন পরিবারগুলোর দুর্দশা লাগবে দ্রুত সমাধান করতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।

উপজেলা আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরই আলম সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘদিনের পুরাতন আবাসনটি কালের পরিক্রমায় জরাজীর্ণ হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল।

তাই সেটি ভেঙ্গে আশ্রয়ণের ঘর করে ওই ৭০ পরিবারকে পুনর্বাসন করতে আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। জুলাই মাসে কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশে আবার কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে খুব তাড়তাড়ি এর সমাধান হবে। সমাধান হলেই নির্মাণকাজ শুরু হবে।

তিনি আরও বলেন, ভিপি ল্যান্ডে (খাস খতিয়ান না হওয়া ভূমি) ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে আবাসন করে তৎকালিন সরকার। কিন্তু ভিপিকৃত জমি পুনরায় নিজেদের দাবি করে আরতী রানী চন্দ্র নামে এক নারী উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। জমির কাগজ অনুপাতে সরকার সঠিক পথেই রয়েছে। আগামী ধার্য দিনে এ মামলার সমাধান আসবে বলে আমরা আশাবাদী।

back to top