রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ঘরের মধ্যে দাউ দাউ করা আগুন হতে নিতুন (১৪) নামে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রকে উদ্ধার করে স্থানীয় একদল যুবক ও এলাকাবাসী।

আটকে পড়া ছাত্রকে ঘরের দেওয়াল ভেঙে দগ্ধ অবস্থায় বের করে গোয়ালন্দ উপজেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লা পাড়ায় হাসেম বেপারীর বাড়িতে মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪ টার দিকে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে দগ্ধ হয়েছেন আরো দুইজন। পুড়ে গেছে বড় একটি চৌচালা টিনশেড ঘর এবং ঘরের ভেতরে বসবাসকারী ৪ টি ভাড়াটিয়ার সকল মালামাল। এতে সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ১৫-২০ লাখ টাকা।

ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি সরকারী গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের পাশে সড়কের মধ্যে বিভিন্ন নির্মান সামগ্রী ফেলে রাখায় এবং অপরিকল্পিত একটি ভবনের দেয়ালের জন্য দ্রুত সময়ে ঘটনাস্থলেই পৌঁছাতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।

ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া দীনবন্ধুর ঘর থেকে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন আশপাশের মোট চারটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে।

এ সময় আশপাশের প্রতিবেশীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করতে থাকেন। এরমধ্যেই ঘটে নিতুনের আটকে পড়ার ঘটনা। সে বাড়ির ভাড়াটিয়া ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার নিমাই সরকারের ছেলে। আগুনে আরো দগ্ধ হয়েছেন ভাড়াটিয়া জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী সোমা বেগম (৪০) এবং অজ্ঞাতনামা আরো একজন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংবাদ পেয়ে গোয়ালন্দঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফাইটাররা ঘটনাস্থলে পৌছে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ক্ষতিগ্রস্ত ৪ জন ভাড়াটিয়া হলেন দীন বন্ধু, কাঞ্চন বিশ্বাস, পলাশ ও জাহিদুল ইসলাম।

উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেওয়া স্থানীয় যুবক সাইদ, সিয়াম, শামীম, তন্বী, লিজা, আজাদ সবুজ সহ কয়েকজন বলেন, তারা অন্য কোনো উপায় না দেখে দেয়াল ভেঙে ভেতর থেকে নিতুনকে উদ্ধার করে। সে অনেকটা দগ্ধ হয়েছে। তবে তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছি বলে ভালো লাগছে। তারা অভিযোগ করেন, বাড়িটি অনেক বড়। বাড়ির মালিকসহ অনেক ভাড়াটিয়া ওই বাড়িতে থাকেন। কিন্তু বাড়িতে প্রবেশের জন্য মাত্র একটি দরজা রয়েছে।

গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের টিম লিডার মো. সাবেকুল ইসলাম জানান, বৈদ্যুতিক শার্ট শার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আমরা সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সরকারী কামরুল ইসলাম কলেজ সংলগ্ন সড়কের মধ্যে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় এবং অপরিকল্পিত একটি ভবনের দেয়ালের জন্য আমাদের অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ঘটনাস্থলেই পৌছাতে পারেনি। পরে ফিতা টেনে নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি।