গাইবান্ধা : করতোয়া নদীর অলিরঘাট পারাপারে ৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো -সংবাদ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের গণকপাড়া গ্রামের সীমানা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর অলিরঘাট পারাপারে ৫টি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ একটি বাঁশের সাঁকো। একটি সেতুর অভাবে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভোগান্তির যেন কমতি নেই। স্বাধীনতা পূর্ববর্তীকাল হতে এই চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে ৫ গ্রামের মানুষের জীবন যাপন করে চলছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিমের সীমানা ঘেঁষে যাওয়া প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো গনকপাড়া গ্রামে সীমানায় করতোয়া নদীর অলিরঘাট। নদী হতে ঘাটের কিনারা অনেক উঁচু হওয়ায় নদী পারাপারে রিক্সা-ভ্যান, সাইকেল-মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এই কারণে উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের গনকপাড়া, জাফর, মুংলিশপুর, পালপাড়া, শীলপাড়া এবং জাইতর গ্রামের মানুষজন এপার থেকে ওপারে চলাচলের জন্য শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া ব্যবহার করেন। নদীর পানি শুকিয়ে গেলে চলাচলের জন্য স্থানীয় গ্রামবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাকো তৈরি করা হয়। নদীতে পানি বেড়ে গেলে পারাপারের জন্য নৌকার ব্যবস্থাও থাকে না। তখন ওই এলাকার মানুষের ভোগান্তি যেন আরো বেড়ে যায়। প্রতিদিন যাতায়াত করা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী এবং এনজিওকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এই অলিরঘাট দিয়ে চলাচল করে থাকেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে।
জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতির পরও বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও আজও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়নি। এই ভোগান্তি যেন পথচারীদের নিত্য-দিনের সঙ্গী। অলিরঘাট পেড়িয়ে পাশ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাটের দুরুত্ব ২ কিলোমিটার। যাতায়াতের বিকল্প ২ কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারের স্থলে পথচারীদের ঘুরতে হয় অন্তত ৮ কিলোমিটার রাস্তা। তাই এই ঘাট দিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য শিক্ষার্থী এবং কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। পথচারীরা এই ঘাট পার হয়ে বৃহত্তর হাট-বাজারগুলোতে যাতায়াত করে থাকেন। সাধারণ মানুষের দাবি এই গুরুত্বপুর্ণ স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা হোক।
গ্রামবাসী জানান, আশপাশের গ্রামের মানুষও এই ঘাট দিয়ে পারাপার হন। বিশেষ করে আমাদের গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ পার্শ্ববর্তী ঘোড়াঘাট ব্যবসা-বাণিজ্য এবং হাট-বাজার করেন। তারা অন্য ঘাট দিয়ে পার হয়ে গিয়ে দুপুরে বাড়িতে যখন আসে। তখন নদীর ওই পারে যানবাহন ও সাইকেল রেখে আসতে হয়। শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে পারাপারের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন সমস্যা পোহাতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা খুবই দরকার। উপজেলার সচেতন মহলের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে উক্ত এলাকার মানুষের পারাপারে জন্য একটি সেতু নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। সেতুটি নির্মাণ করা হলে সবার অনেক উপকার হবে। তখন আর কারো সমস্যায় ভুগতে হবে না। মানুষের যাওয়া আসা অনেক সহজ হবে। ৫টি গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তিও কমে আসবে। গনকপাড়া গ্রামের শাহ আলম জানান, ব্রিজের কারণে সন্তানদের পড়া লেখা কমে গেছে। এছাড়াও এই গ্রামের ছেলে মেয়েদের ভালো পরিবারে বিয়ে সাধিও হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশবাড়ী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী তপন চক্রবর্তী জানান, আমি পলামবাড়ী উপজেলায় নতুন যোগদান করলেও এর আগে আমি গাইবান্ধা জেলা অফিসে ছিলাম। আমার জানামতে, এই জেলায় অনেকগুলো সেতু নির্মাণের আবেদন পাঠানো হয়েছে। উক্ত স্থানের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জেনে সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আল-ইয়াসা রহমান তাপাদার জানান, ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা জনগুরুত্বপূর্ণ হলে জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রয়োজনীয় আবেদন জানানো হবে।
গাইবান্ধা : করতোয়া নদীর অলিরঘাট পারাপারে ৫ গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো -সংবাদ
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের গণকপাড়া গ্রামের সীমানা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর অলিরঘাট পারাপারে ৫টি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা ঝুঁকিপূর্ণ একটি বাঁশের সাঁকো। একটি সেতুর অভাবে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভোগান্তির যেন কমতি নেই। স্বাধীনতা পূর্ববর্তীকাল হতে এই চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে ৫ গ্রামের মানুষের জীবন যাপন করে চলছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিমের সীমানা ঘেঁষে যাওয়া প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো গনকপাড়া গ্রামে সীমানায় করতোয়া নদীর অলিরঘাট। নদী হতে ঘাটের কিনারা অনেক উঁচু হওয়ায় নদী পারাপারে রিক্সা-ভ্যান, সাইকেল-মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এই কারণে উপজেলার কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের গনকপাড়া, জাফর, মুংলিশপুর, পালপাড়া, শীলপাড়া এবং জাইতর গ্রামের মানুষজন এপার থেকে ওপারে চলাচলের জন্য শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া ব্যবহার করেন। নদীর পানি শুকিয়ে গেলে চলাচলের জন্য স্থানীয় গ্রামবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাকো তৈরি করা হয়। নদীতে পানি বেড়ে গেলে পারাপারের জন্য নৌকার ব্যবস্থাও থাকে না। তখন ওই এলাকার মানুষের ভোগান্তি যেন আরো বেড়ে যায়। প্রতিদিন যাতায়াত করা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী এবং এনজিওকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এই অলিরঘাট দিয়ে চলাচল করে থাকেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে।
জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতির পরও বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও আজও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়নি। এই ভোগান্তি যেন পথচারীদের নিত্য-দিনের সঙ্গী। অলিরঘাট পেড়িয়ে পাশ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাটের দুরুত্ব ২ কিলোমিটার। যাতায়াতের বিকল্প ২ কিলোমিটার রাস্তা ব্যবহারের স্থলে পথচারীদের ঘুরতে হয় অন্তত ৮ কিলোমিটার রাস্তা। তাই এই ঘাট দিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য শিক্ষার্থী এবং কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়। পথচারীরা এই ঘাট পার হয়ে বৃহত্তর হাট-বাজারগুলোতে যাতায়াত করে থাকেন। সাধারণ মানুষের দাবি এই গুরুত্বপুর্ণ স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা হোক।
গ্রামবাসী জানান, আশপাশের গ্রামের মানুষও এই ঘাট দিয়ে পারাপার হন। বিশেষ করে আমাদের গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ পার্শ্ববর্তী ঘোড়াঘাট ব্যবসা-বাণিজ্য এবং হাট-বাজার করেন। তারা অন্য ঘাট দিয়ে পার হয়ে গিয়ে দুপুরে বাড়িতে যখন আসে। তখন নদীর ওই পারে যানবাহন ও সাইকেল রেখে আসতে হয়। শুকনা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আর বর্ষা মৌসুমে পারাপারের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বিভিন্ন সমস্যা পোহাতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা খুবই দরকার। উপজেলার সচেতন মহলের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে উক্ত এলাকার মানুষের পারাপারে জন্য একটি সেতু নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। সেতুটি নির্মাণ করা হলে সবার অনেক উপকার হবে। তখন আর কারো সমস্যায় ভুগতে হবে না। মানুষের যাওয়া আসা অনেক সহজ হবে। ৫টি গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তিও কমে আসবে। গনকপাড়া গ্রামের শাহ আলম জানান, ব্রিজের কারণে সন্তানদের পড়া লেখা কমে গেছে। এছাড়াও এই গ্রামের ছেলে মেয়েদের ভালো পরিবারে বিয়ে সাধিও হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পলাশবাড়ী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী তপন চক্রবর্তী জানান, আমি পলামবাড়ী উপজেলায় নতুন যোগদান করলেও এর আগে আমি গাইবান্ধা জেলা অফিসে ছিলাম। আমার জানামতে, এই জেলায় অনেকগুলো সেতু নির্মাণের আবেদন পাঠানো হয়েছে। উক্ত স্থানের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জেনে সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আল-ইয়াসা রহমান তাপাদার জানান, ওই স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা জনগুরুত্বপূর্ণ হলে জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিকট প্রয়োজনীয় আবেদন জানানো হবে।