জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা জুলাই অভ্যুত্থানেও প্রেরণা যুগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি জানান, নজরুলের গান নিয়ে রক অ্যালবাম বের করা এবং কনসার্ট আয়োজনের ব্যাপারে নজরুল ইন্সটিটিউট কাজ করছে।
কাজী নজরুল ইসলামকে ‘বাংলাদেশে জাতীয় কবি’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির গেজেট প্রকাশ উদযাপন উপলক্ষে গত বুধবার ‘নজরুল র্যায়ালি’ তে অংশ নিয়ে এ কথা জানান উপদেষ্টা।
জাতীয় কবি হিসেবে এতদিন তার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছিল না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার এটি করা হয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে লেখা থাকুক বা না থাকুক, কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের সবার মাঝেই জাতীয় কবি হিসেবে ছিলেন। এখন এটা আনুষ্ঠানিকতা তৈরি হল।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে নজরুলের সমাধিতে গিয়ে শেষ হয় শোভাযাত্রা। এ সময় নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং হামদ ও নাত পরিবেশন করা হয়।সংস্কৃতি উপদেষ্টা মনে করেন, নজরুলের গান, কবিতাকে আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে নজরুল ইন্সটিটিউট কাজ করবে। এ সময় নজরুলের হামদ ও নাত পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা, নাশিদ কামাল, ইয়াকুব আলী খান ও সালাউদ্দিন আহমেদ। পরে কবির আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, তিনি এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেয়ার পর যখন প্রথম নজরুলের সমাধিতে যান, তখনই ‘মনে মনে প্রতিজ্ঞা’ করেছিলেন এই কাজটি তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করবেন। নিজের দায়িত্বকালীন সময়ে কাজটি করতে পেরে ‘ভীষণ ভালো লাগছে’ বলে মন্তব্য করেন লতিফুল ইসলাম।
এতদিন কাজী নজরুল ইসলামের ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে কোনো দালিলিক স্বীকৃতি ছিল না। গত ২৪ ডিসেম্বর ‘জাতীয় কবি’ স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ১৯৭২ সালের ৪ মে কাজী নজরুল ইসলাম দেশে ফেরেন, গেজেটে সেদিন থেকে তাকে জাতীয় কবির স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী; সেজন্য তিনি ছেলেবেলায় পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘দুখু মিয়া’ নামে।
১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় নজরুলের বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’। ব্রিটিশবিরোধী লেখার জন্য বেশ কয়েকবার কারারুদ্ধ হতে হয় তাকে। তার প্রকাশিত সাহিত্যকর্মের মধ্যে গ্রন্থ অগ্নিবীণা, প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়াপারের তরণী, ছায়ানট, বিষের বাঁশি, বাউয়ুলের আত্মকাহিনী, ব্যথার দান, ঘুমের ঘোরে, মৃত্যুক্ষুধা অন্যতম।
কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। তিনি ১৯৪২ সালে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ বাকশক্তি হারান। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ কবিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।
তাকে ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি তাকে ভূষিত করা হয় দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে।
এই বিদ্রোহী কবি ওই বছরের ২৯ আগস্ট ঢাকায় মারা যান। তাকে সমাহিত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের উত্তর পাশে। রেওয়াজ অনুযায়ী বাংলা পঞ্জিকার তারিখ মেনে তার জন্মদিন ও মৃত্যুদিন পালন করে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা জুলাই অভ্যুত্থানেও প্রেরণা যুগিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি জানান, নজরুলের গান নিয়ে রক অ্যালবাম বের করা এবং কনসার্ট আয়োজনের ব্যাপারে নজরুল ইন্সটিটিউট কাজ করছে।
কাজী নজরুল ইসলামকে ‘বাংলাদেশে জাতীয় কবি’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির গেজেট প্রকাশ উদযাপন উপলক্ষে গত বুধবার ‘নজরুল র্যায়ালি’ তে অংশ নিয়ে এ কথা জানান উপদেষ্টা।
জাতীয় কবি হিসেবে এতদিন তার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছিল না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এবার এটি করা হয়েছে। তবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে লেখা থাকুক বা না থাকুক, কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের সবার মাঝেই জাতীয় কবি হিসেবে ছিলেন। এখন এটা আনুষ্ঠানিকতা তৈরি হল।’
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে নজরুলের সমাধিতে গিয়ে শেষ হয় শোভাযাত্রা। এ সময় নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং হামদ ও নাত পরিবেশন করা হয়।সংস্কৃতি উপদেষ্টা মনে করেন, নজরুলের গান, কবিতাকে আরও বেশি ছড়িয়ে দিতে নজরুল ইন্সটিটিউট কাজ করবে। এ সময় নজরুলের হামদ ও নাত পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা, নাশিদ কামাল, ইয়াকুব আলী খান ও সালাউদ্দিন আহমেদ। পরে কবির আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
নজরুল ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী বলেন, তিনি এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেয়ার পর যখন প্রথম নজরুলের সমাধিতে যান, তখনই ‘মনে মনে প্রতিজ্ঞা’ করেছিলেন এই কাজটি তিনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করবেন। নিজের দায়িত্বকালীন সময়ে কাজটি করতে পেরে ‘ভীষণ ভালো লাগছে’ বলে মন্তব্য করেন লতিফুল ইসলাম।
এতদিন কাজী নজরুল ইসলামের ‘জাতীয় কবি’ হিসেবে কোনো দালিলিক স্বীকৃতি ছিল না। গত ২৪ ডিসেম্বর ‘জাতীয় কবি’ স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করে সরকার। ১৯৭২ সালের ৪ মে কাজী নজরুল ইসলাম দেশে ফেরেন, গেজেটে সেদিন থেকে তাকে জাতীয় কবির স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ সালের ২৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী; সেজন্য তিনি ছেলেবেলায় পরিচিত হয়ে ওঠেন ‘দুখু মিয়া’ নামে।
১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় নজরুলের বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’। ব্রিটিশবিরোধী লেখার জন্য বেশ কয়েকবার কারারুদ্ধ হতে হয় তাকে। তার প্রকাশিত সাহিত্যকর্মের মধ্যে গ্রন্থ অগ্নিবীণা, প্রলয়োল্লাস, আগমনী, খেয়াপারের তরণী, ছায়ানট, বিষের বাঁশি, বাউয়ুলের আত্মকাহিনী, ব্যথার দান, ঘুমের ঘোরে, মৃত্যুক্ষুধা অন্যতম।
কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস। তিনি ১৯৪২ সালে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ বাকশক্তি হারান। স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ কবিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।
তাকে ১৯৭৬ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি তাকে ভূষিত করা হয় দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে।
এই বিদ্রোহী কবি ওই বছরের ২৯ আগস্ট ঢাকায় মারা যান। তাকে সমাহিত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের উত্তর পাশে। রেওয়াজ অনুযায়ী বাংলা পঞ্জিকার তারিখ মেনে তার জন্মদিন ও মৃত্যুদিন পালন করে বাংলাদেশ।