ডুমুরিয়া (খুলনা) : আবাসন এলাকার সাঁকো ও কাজিরহুলার পাটাতন সাঁকো -সংবাদ
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাকো পার হয়ে সর্বদা স্কুলে যাচ্ছে কমলমতি শিক্ষার্থীরা! তড়িগড়ি সাঁকো পারাপারে অনেক সময় দুর্ঘটনারও শিকার হচ্ছে তারা। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভাণ্ডারপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্প সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ার এমন দৃশ্য যেন প্রতিনিয়ত।
জানা যায়, ভদ্রা নদী পুনঃখননের ৫ বছর আগে ভাণ্ডারপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্প বাসিন্দাদের কথা বিবেচনা করে সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে। ভাণ্ডারপাড়া ও শোভনা ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে বয়ে যেছে ভদ্রা নদী। আর এই নদীর উপরেই যাতায়াতের জন্য নির্মিত একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। নব্বইয়ের দশকে নদীটি পলি ভরাট হয়ে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়। ভরাটি নদীর বুকের উপর ফসলি আবাদ শুরু করে কৃষকরা। ১০১৪ সালো ভাণ্ডারপাড়া আবাসনে প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়। ২০১৬ সালে ভদ্রা নদী পুনঃখননের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২১ কিলোমিটার নদীর খনন কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করায় দু’পারের মানুষ এখন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। খননকৃত নদী জোলাখালে পরিনত হয়েছে।এ বিদ্যালয়ে নদীর ওপার চিংড়া গ্রাম থেকে অনেক শিক্ষার্থী এপারে এসে পড়া লেখা করে। তারা সর্বদা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে।নদীতে ভাটার সময় পানি থাকে না কিন্তু জোয়ারের সময় দু’কূল ছাপিয়ে উঠে। বিশেষ করে অমাবস্যা আর পূর্ডুমায় বেশির ভাগ পানিতে ডুবে যায়।
ভাণ্ডারপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান জানান, অপরিকল্পিতভাবে নদী খননের কারণে দু’পারের মানুষ আজ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। পারাপারের ব্যবস্থা না করেই নদী খনন করা হয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষেরা। আশপাশে কোন সেতু না থাকায় বিশেষ করে পন্য পারপার নিয়েও ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ভাণ্ডারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ৫/৭’শ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ দু’পারে আসা-যাওয়া করে। সাঁকোটি জরাজীর্ণ থাকায় অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তাছাড়া ভাণ্ডারপাড়া ও শোভনা এলাকা একটি কৃষি প্রধান এলাকা। এখানে সেতু নির্মাণের জরুরি দাবি এলাকাবাসীর। এই সাংবাদিক আরও জানান, একই নদীর উপর তিন কিলোমিটার গেলে কাজিরহুলা নামক স্থানে আরও একটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। সেটি দিয়েও দিনে রাতে সমানে লোক পারাপার হচ্ছে। শোভনা পারের কাকমারি, পাতিবুনিয়া, কদমতলা আর এপারের ১১ গ্রামের লোকজন ওই একটি মাত্র বাঁশের সাঁকোর উপর নির্ভরশীল। বিশেষত ওপারের লোকজন বাজারঘাট সব কিছু করতে আসেন এপারে। ছেলে মেয়েদের পড়তে আসতে হয়ও এপারে। তাদের সমস্যা ভাণ্ডারপাড়ার চেয়ে আরও বেশি। এ রিপোর্ট লেখার আগে কথা হয় আবাসন প্রকল্পের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল জব্বারের সঙ্গে। তিনি জানান, সাঁকোটি পারাপারে বিশেষ করে কমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। জোয়ারের পানির চাপে ইতোপূর্বে কয়েকবার ভেঙে গেছে। পরবর্তিতে বিভিন্ন জনের সহায়তায় সংস্কার করা হয়। সম্প্রতি সাঁকোটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, প্রায়ই জোয়ারের পানিতে বিদ্যালয়ের মাঠ প্লাবিত হয়। মাঠ ভরাটসহ মজবুত সাঁকো বা স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
ডুমুরিয়া (খুলনা) : আবাসন এলাকার সাঁকো ও কাজিরহুলার পাটাতন সাঁকো -সংবাদ
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাকো পার হয়ে সর্বদা স্কুলে যাচ্ছে কমলমতি শিক্ষার্থীরা! তড়িগড়ি সাঁকো পারাপারে অনেক সময় দুর্ঘটনারও শিকার হচ্ছে তারা। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ভাণ্ডারপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্প সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আসা যাওয়ার এমন দৃশ্য যেন প্রতিনিয়ত।
জানা যায়, ভদ্রা নদী পুনঃখননের ৫ বছর আগে ভাণ্ডারপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্প বাসিন্দাদের কথা বিবেচনা করে সরকার আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে। ভাণ্ডারপাড়া ও শোভনা ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে বয়ে যেছে ভদ্রা নদী। আর এই নদীর উপরেই যাতায়াতের জন্য নির্মিত একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। নব্বইয়ের দশকে নদীটি পলি ভরাট হয়ে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়। ভরাটি নদীর বুকের উপর ফসলি আবাদ শুরু করে কৃষকরা। ১০১৪ সালো ভাণ্ডারপাড়া আবাসনে প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়। ২০১৬ সালে ভদ্রা নদী পুনঃখননের উদ্যোগ নেয় সরকার। ২১ কিলোমিটার নদীর খনন কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করায় দু’পারের মানুষ এখন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। খননকৃত নদী জোলাখালে পরিনত হয়েছে।এ বিদ্যালয়ে নদীর ওপার চিংড়া গ্রাম থেকে অনেক শিক্ষার্থী এপারে এসে পড়া লেখা করে। তারা সর্বদা ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে।নদীতে ভাটার সময় পানি থাকে না কিন্তু জোয়ারের সময় দু’কূল ছাপিয়ে উঠে। বিশেষ করে অমাবস্যা আর পূর্ডুমায় বেশির ভাগ পানিতে ডুবে যায়।
ভাণ্ডারপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমান জানান, অপরিকল্পিতভাবে নদী খননের কারণে দু’পারের মানুষ আজ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। পারাপারের ব্যবস্থা না করেই নদী খনন করা হয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষেরা। আশপাশে কোন সেতু না থাকায় বিশেষ করে পন্য পারপার নিয়েও ব্যাপক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ভাণ্ডারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পার হয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে ৫/৭’শ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ দু’পারে আসা-যাওয়া করে। সাঁকোটি জরাজীর্ণ থাকায় অনেক ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তাছাড়া ভাণ্ডারপাড়া ও শোভনা এলাকা একটি কৃষি প্রধান এলাকা। এখানে সেতু নির্মাণের জরুরি দাবি এলাকাবাসীর। এই সাংবাদিক আরও জানান, একই নদীর উপর তিন কিলোমিটার গেলে কাজিরহুলা নামক স্থানে আরও একটি বাঁশের সাঁকো রয়েছে। সেটি দিয়েও দিনে রাতে সমানে লোক পারাপার হচ্ছে। শোভনা পারের কাকমারি, পাতিবুনিয়া, কদমতলা আর এপারের ১১ গ্রামের লোকজন ওই একটি মাত্র বাঁশের সাঁকোর উপর নির্ভরশীল। বিশেষত ওপারের লোকজন বাজারঘাট সব কিছু করতে আসেন এপারে। ছেলে মেয়েদের পড়তে আসতে হয়ও এপারে। তাদের সমস্যা ভাণ্ডারপাড়ার চেয়ে আরও বেশি। এ রিপোর্ট লেখার আগে কথা হয় আবাসন প্রকল্পের স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল জব্বারের সঙ্গে। তিনি জানান, সাঁকোটি পারাপারে বিশেষ করে কমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। জোয়ারের পানির চাপে ইতোপূর্বে কয়েকবার ভেঙে গেছে। পরবর্তিতে বিভিন্ন জনের সহায়তায় সংস্কার করা হয়। সম্প্রতি সাঁকোটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, প্রায়ই জোয়ারের পানিতে বিদ্যালয়ের মাঠ প্লাবিত হয়। মাঠ ভরাটসহ মজবুত সাঁকো বা স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।