নওগাঁর রাণীনগরে বিভিন্ন হাট-বাজারে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নিত্যপণ্যের খাজনা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় ৫ থেকে ১০গুণ বেশি আদায় করছে ইজারাদারের লোকজন। এক প্রকার ভয়েই ক্রেতা, বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা সরকারি রেটের বেশি খাজনা দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ- উপজেলার বড় দুটি হাট আবাদপুকুর হাট ও ত্রিমোহনী হাটের ইজারাদারের খাজনা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে।
ক্রেতা-বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের অভিযোগ- সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত খাজনা আদায় না করে আদায়কারীরা তাদের ইচ্ছে মতো খাজনা আদায় করছে।
বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে হাট-বাজারে খাজনা আদায়কারীরা অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হলেও রহস্যজনক কারণে নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সরকারের বেঁধে দেওয়া খাজনা আদায়ের তালিকা শুধুমাত্র ইজারাদারের ঘরের দেওয়ালেই শোভা পাচ্ছে। উপজেলার অধিকাংশ হাটের কোনো স্থানে খাজনা আদায়ের দৃশ্যমান সাইনবোর্ড রাখা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় মিলে মোট ১৬টি হাট-বাজার রয়েছে। এসব হাটের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট আবাদপুকুর ও ত্রিমোহনী হাট। রোববার ও বুধবার বসে আবাদপুকুর হাট এবং শনিবার ও মঙ্গলবার বসে ত্রিমোহনী হাট। মামলা জটিলতার কারণে আবাদপুকুর হাট থেকে খাস আদায় করা হচ্ছে। আর অন্য হাটগুলো ইজারা দেওয়া রয়েছে।
সরেজমিনে আবাদপুকুর হাটে গিয়ে জানা যায়, গরু-মহিষে ৫০০ টাকার খাজনা ৬শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা, ভেড়া-ছাগলে ২শ’ টাকার খাসনা ৩শ’ টাকা, ধান গরু মহিষের গাড়ি প্রতি ১৩ টাকার খাজনা ২০ থেকে ৩০ টাকা ও ধানের চারা প্রতিপণ ৪ টাকার খাজনা ২০ থেকে ৪০ টাকা, মাছ দোকানে ১২ টাকার খাজনা ৫০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টি দোকান ও তরকারি এবং সবজি দোকানসহ বিভিন্ন পণ্যে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
ত্রিমোহনী হাটেও প্রতি পণ ধানের চারার খাজনা হিসেবে ক্রেতার কাছ থেকে ৪০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। বিক্রেতার কাছ থেকেও আদায় করা হচ্ছে খাজনা। অথচ সরকারের বেঁধে দেওয়া খাজনার তালিকা অনুযায়ী প্রতিপণ ধানের চারার খাজনা ৪ টাকা। প্রতি ভ্যানগাড়ি ধানের খাজনা ৫ টাকা হলেও প্রতি মণ ধানের খাজনা হিসেবে আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা করে। গরু, ভেড়া ছাগল, হাঁস মুরগি, মাছ বাজার ও তরকারি বাজারে আলুর বীজ, পেঁয়াজের চারা সহ পুরো হাটের বিভিন্ন অংশে খাজনা আদায়ের নামে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে ইজারাদাররা।
ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতা জানান, সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া খাজনা সম্পর্কে তাদের ধারনা নেই। হাটের কোন স্থানে খাজনা আদায়ের দৃশ্যমান সাইনবোর্ড রাখা হয়নি। খাজনা আদায়কারীরা যা চান, তাই দিতে হয়।
নুর সরদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, বুধবার আবাদপুকুর হাট থেকে বড় একটি গরু কিনেছি। গরুর ছাপ বাবদ (খাজনা) ৬শ’ টাকা দিতে হয়েছে। ৫০ টাকা কম দিতে চাইলেও খাজনা আদায়কারীরা নেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাদপুকুর হাটের এক মিষ্টি দোকানদার বলেন, ছোট্ট একটা দোকানে আমি মিষ্টি জাতীয় জিনিসপত্র বিক্রি করি। আমার দোকানের খাজনা দিতে হয় ৩০ টাকা।
ত্রিমোহনী হাটে ধানের চারা কিনতে আসা ক্রেতা আব্দুস জানান, তিনি ত্রিমোহনী হাট থেকে ৩ পণ জিরাশাইল ধানের চারা কিনেছেন। খাজনা হিসেবে হাটের আদায়কারী প্রথমে তার কাছে ১২০ টাকা খাজনা চায়। এরপর অনেক অনুরোধ করায় ১শ টাকা নিয়েছে।
আবাদপুকুর হাটের খাজনা আদায়কারীর নেতৃত্বে থাকা হেলু ম-ল বলেন, হাটে অতিরিক্ত কোন খাজনা আদায় করা হচ্ছে না। খাজনা আদায়ের দৃশ্যমান সাইনবোর্ড হাটে ঝুলে রাখা হয়েছে। সরকারি নির্ধারিত রেট অনুযায়ী খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
ত্রিমোহনী হাটের ইজারাদার আতিকুজ্জামান হিটলার বলেন, অনেক দিন হলো আমি হাটেই যাইনি। অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার কথা আমি জানি না।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান বলেন, হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
নওগাঁর রাণীনগরে বিভিন্ন হাট-বাজারে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নিত্যপণ্যের খাজনা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় ৫ থেকে ১০গুণ বেশি আদায় করছে ইজারাদারের লোকজন। এক প্রকার ভয়েই ক্রেতা, বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা সরকারি রেটের বেশি খাজনা দিতে বাধ্য হচ্ছে। এতে ভোক্তা পর্যায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ- উপজেলার বড় দুটি হাট আবাদপুকুর হাট ও ত্রিমোহনী হাটের ইজারাদারের খাজনা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে।
ক্রেতা-বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের অভিযোগ- সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত খাজনা আদায় না করে আদায়কারীরা তাদের ইচ্ছে মতো খাজনা আদায় করছে।
বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে হাট-বাজারে খাজনা আদায়কারীরা অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হলেও রহস্যজনক কারণে নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সরকারের বেঁধে দেওয়া খাজনা আদায়ের তালিকা শুধুমাত্র ইজারাদারের ঘরের দেওয়ালেই শোভা পাচ্ছে। উপজেলার অধিকাংশ হাটের কোনো স্থানে খাজনা আদায়ের দৃশ্যমান সাইনবোর্ড রাখা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় মিলে মোট ১৬টি হাট-বাজার রয়েছে। এসব হাটের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট আবাদপুকুর ও ত্রিমোহনী হাট। রোববার ও বুধবার বসে আবাদপুকুর হাট এবং শনিবার ও মঙ্গলবার বসে ত্রিমোহনী হাট। মামলা জটিলতার কারণে আবাদপুকুর হাট থেকে খাস আদায় করা হচ্ছে। আর অন্য হাটগুলো ইজারা দেওয়া রয়েছে।
সরেজমিনে আবাদপুকুর হাটে গিয়ে জানা যায়, গরু-মহিষে ৫০০ টাকার খাজনা ৬শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা, ভেড়া-ছাগলে ২শ’ টাকার খাসনা ৩শ’ টাকা, ধান গরু মহিষের গাড়ি প্রতি ১৩ টাকার খাজনা ২০ থেকে ৩০ টাকা ও ধানের চারা প্রতিপণ ৪ টাকার খাজনা ২০ থেকে ৪০ টাকা, মাছ দোকানে ১২ টাকার খাজনা ৫০ থেকে ১০০ টাকা, মিষ্টি দোকান ও তরকারি এবং সবজি দোকানসহ বিভিন্ন পণ্যে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
ত্রিমোহনী হাটেও প্রতি পণ ধানের চারার খাজনা হিসেবে ক্রেতার কাছ থেকে ৪০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। বিক্রেতার কাছ থেকেও আদায় করা হচ্ছে খাজনা। অথচ সরকারের বেঁধে দেওয়া খাজনার তালিকা অনুযায়ী প্রতিপণ ধানের চারার খাজনা ৪ টাকা। প্রতি ভ্যানগাড়ি ধানের খাজনা ৫ টাকা হলেও প্রতি মণ ধানের খাজনা হিসেবে আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা করে। গরু, ভেড়া ছাগল, হাঁস মুরগি, মাছ বাজার ও তরকারি বাজারে আলুর বীজ, পেঁয়াজের চারা সহ পুরো হাটের বিভিন্ন অংশে খাজনা আদায়ের নামে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে ইজারাদাররা।
ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতা জানান, সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া খাজনা সম্পর্কে তাদের ধারনা নেই। হাটের কোন স্থানে খাজনা আদায়ের দৃশ্যমান সাইনবোর্ড রাখা হয়নি। খাজনা আদায়কারীরা যা চান, তাই দিতে হয়।
নুর সরদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, বুধবার আবাদপুকুর হাট থেকে বড় একটি গরু কিনেছি। গরুর ছাপ বাবদ (খাজনা) ৬শ’ টাকা দিতে হয়েছে। ৫০ টাকা কম দিতে চাইলেও খাজনা আদায়কারীরা নেয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আবাদপুকুর হাটের এক মিষ্টি দোকানদার বলেন, ছোট্ট একটা দোকানে আমি মিষ্টি জাতীয় জিনিসপত্র বিক্রি করি। আমার দোকানের খাজনা দিতে হয় ৩০ টাকা।
ত্রিমোহনী হাটে ধানের চারা কিনতে আসা ক্রেতা আব্দুস জানান, তিনি ত্রিমোহনী হাট থেকে ৩ পণ জিরাশাইল ধানের চারা কিনেছেন। খাজনা হিসেবে হাটের আদায়কারী প্রথমে তার কাছে ১২০ টাকা খাজনা চায়। এরপর অনেক অনুরোধ করায় ১শ টাকা নিয়েছে।
আবাদপুকুর হাটের খাজনা আদায়কারীর নেতৃত্বে থাকা হেলু ম-ল বলেন, হাটে অতিরিক্ত কোন খাজনা আদায় করা হচ্ছে না। খাজনা আদায়ের দৃশ্যমান সাইনবোর্ড হাটে ঝুলে রাখা হয়েছে। সরকারি নির্ধারিত রেট অনুযায়ী খাজনা আদায় করা হচ্ছে।
ত্রিমোহনী হাটের ইজারাদার আতিকুজ্জামান হিটলার বলেন, অনেক দিন হলো আমি হাটেই যাইনি। অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার কথা আমি জানি না।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাকিবুল হাসান বলেন, হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।