সিরাজগঞ্জ : রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা -সংবাদ
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬ সালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে বারবার গোলকধাঁধায় পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের বাজেট মোট আটবার সংশোধন করে পাঠানোর পরও এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এতে পাঠগ্রহণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অন্ত নেই।
শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের পর গত ৩০ জানুয়ারি ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন পরবর্তী প্রকল্পটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এবার আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটির বিষয়ে সভা ডেকেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তবে প্রতিটি ধাপে আবারও দীর্ঘসূত্রতায় শিক্ষার্থীদের মনে শঙ্কা, আবারও কি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে যাচ্ছে সংশোধনের গোলকধাঁধায়?
সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্দেশ্যে প্রকল্প প্রস্তাব করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৮ সালে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরই নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্দেশ্যে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সেই প্রকল্প প্রস্তাবের অনুমোদন মেলেনি। বিশাল বাজেটের প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন না দিয়ে বারবার ব্যয় কমানোর জন্য সংশোধনের সুপারিশসহ ফেরত পাঠানো হয়েছে।
একবার-দুবার নয়, আটবার ফেরত পাঠানো হয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব। এ সময়ের মধ্যে অনুমোদন তো মেলেইনি, প্রকল্পের আকার ও ব্যয় কমানো ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতিও হয়নি। ফলে বারবার পুনর্গঠন আর সংশোধনের গোলকধাঁধায় আটকে আছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পটি। অবশেষে এ থেকে বেরিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথম প্রকল্প প্রস্তাব করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি ফেরত দিয়ে ব্যয় এবং আকার কমানোর সুপারিশ করা হয়। পরে আরও পাঁচবার প্রস্তাব করা হলেও অনুমোদন না দিয়ে সংশোধনের জন্য একইভাবে ফেরত দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আকার ও ব্যয় কমানো ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যয় সংকোচন-নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গতবছরের ডিসেম্বরে সাতবারের মতো প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। এবার ব্যয় আগের থেকে ৮৯ শতাংশ কমিয়ে প্রস্তাব করা হয় ৯৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। তাতেও সাড়া মেলেনি। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পর্যালোচনা সভায় আবারও ব্যয় কমানোর সুপারিশ করা হয়।
এদিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলন করেন স্থানীয় ছাত্র-জনতাও।
এর আগে প্রতিষ্ঠার পর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ শুরুর সুদীর্ঘ দেরির বিষয়ে সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছিলেন, স্থায়ী ক্যাম্পাসের ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট জমা দেওয়া হলেও সরকারের পরামর্শে তা মোট আটবার সংকুচিত করতে করতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়েছে।
বর্তমান অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার বলেন, সর্বশেষ প্রকল্প বাজেট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তা অনুমোদন হয়ে বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। এটি নিয়ে আলোচনা করতে সভা ডাকা হয়েছে। এই ধাপ পার হলে তা একনেকে যেতে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৮ মে বিশ্বকবির ১৫৪তম জন্মবার্ষিকীতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালের ১১ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ আইন,২০১৫’-এর খসড়া অনুমোদন পাওয়ার পর ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই সংসদে পাস হয় ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় আইন।
সিরাজগঞ্জ : রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত নকশা -সংবাদ
রোববার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৬ সালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে বারবার গোলকধাঁধায় পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের বাজেট মোট আটবার সংশোধন করে পাঠানোর পরও এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এতে পাঠগ্রহণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির অন্ত নেই।
শিক্ষার্থীদের আলটিমেটামের পর গত ৩০ জানুয়ারি ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন পরবর্তী প্রকল্পটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এবার আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটির বিষয়ে সভা ডেকেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। তবে প্রতিটি ধাপে আবারও দীর্ঘসূত্রতায় শিক্ষার্থীদের মনে শঙ্কা, আবারও কি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে যাচ্ছে সংশোধনের গোলকধাঁধায়?
সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা এবং নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্দেশ্যে প্রকল্প প্রস্তাব করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৮ সালে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরই নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের উদ্দেশ্যে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সেই প্রকল্প প্রস্তাবের অনুমোদন মেলেনি। বিশাল বাজেটের প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদন না দিয়ে বারবার ব্যয় কমানোর জন্য সংশোধনের সুপারিশসহ ফেরত পাঠানো হয়েছে।
একবার-দুবার নয়, আটবার ফেরত পাঠানো হয়েছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব। এ সময়ের মধ্যে অনুমোদন তো মেলেইনি, প্রকল্পের আকার ও ব্যয় কমানো ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতিও হয়নি। ফলে বারবার পুনর্গঠন আর সংশোধনের গোলকধাঁধায় আটকে আছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পটি। অবশেষে এ থেকে বেরিয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রথম প্রকল্প প্রস্তাব করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প প্রস্তাবটি ফেরত দিয়ে ব্যয় এবং আকার কমানোর সুপারিশ করা হয়। পরে আরও পাঁচবার প্রস্তাব করা হলেও অনুমোদন না দিয়ে সংশোধনের জন্য একইভাবে ফেরত দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে প্রকল্পের আকার ও ব্যয় কমানো ছাড়া দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যয় সংকোচন-নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গতবছরের ডিসেম্বরে সাতবারের মতো প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। এবার ব্যয় আগের থেকে ৮৯ শতাংশ কমিয়ে প্রস্তাব করা হয় ৯৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। তাতেও সাড়া মেলেনি। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ওপর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পর্যালোচনা সভায় আবারও ব্যয় কমানোর সুপারিশ করা হয়।
এদিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলন করেন স্থানীয় ছাত্র-জনতাও।
এর আগে প্রতিষ্ঠার পর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ শুরুর সুদীর্ঘ দেরির বিষয়ে সাংবাদিকদের দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছিলেন, স্থায়ী ক্যাম্পাসের ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট জমা দেওয়া হলেও সরকারের পরামর্শে তা মোট আটবার সংকুচিত করতে করতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়েছে।
বর্তমান অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম হাসান তালুকদার বলেন, সর্বশেষ প্রকল্প বাজেট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তা অনুমোদন হয়ে বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। এটি নিয়ে আলোচনা করতে সভা ডাকা হয়েছে। এই ধাপ পার হলে তা একনেকে যেতে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৮ মে বিশ্বকবির ১৫৪তম জন্মবার্ষিকীতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালের ১১ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ আইন,২০১৫’-এর খসড়া অনুমোদন পাওয়ার পর ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই সংসদে পাস হয় ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় আইন।