alt

সারাদেশ

চা শিল্পের অগ্রগতির প্রতীক শ্রীমঙ্গলের ‘ফিনলে রানওয়ে’

প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : রোববার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চায়ের রাজধানী বলে বিশ্বব্যাপী পরিচিত শ্রীমঙ্গল তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে। এখানকার চা বাগান, রাবার ও অন্যান্য কৃষিপণ্য ছাড়াও রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান ‘ফিনলে রানওয়ে’। এই রানওয়ে একসময় ছিল ব্রিটিশ আমলের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিমানের ওঠানামার স্থান এবং আজও তা শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের অংশ হয়ে রয়েছে।

শ্রীমঙ্গল অঞ্চলটি চায়ের জন্য খ্যাত হলেও এর ইতিহাসও সমানভাবে সমৃদ্ধ। ১৮৩৯ সালে চায়ের চাষ শুরু হলেও ১৮৬০ সালে তৎকালীন দক্ষিণ শ্রীহট্ট (বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা) মহকুমায় প্রথম চা চাষ শুরু হয়। সে সময়ে দেশের চা শিল্পের যাত্রা শুরু হলেও ব্রিটিশরা শ্রীমঙ্গলে চায়ের চাষ ব্যাপকভাবে চালু করে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ফিনলে কোম্পানি’, যা চায়ের উৎপাদন এবং বাগান প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১৮৭১ সালে ইংল্যান্ডের ‘ফিনলে’ কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী জন ম্যুর ভারতে এসে চা বাগান প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই কোম্পানির অধীনে বিভিন্ন চা বাগান প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্থানীয় কর্মীদের নিয়োগের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আনা হয় চা উৎপাদনে দক্ষ বিদেশিকর্মী। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৯৪৫ সালে শ্রীমঙ্গলে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ফিনলে রানওয়ে’ বা বিমান ধাবনপথ।

প্রথম দিকে, ফিনলে কোম্পানির ইংলিশ কর্মকর্তা ওটি প্ল্যান্টাররা এই রানওয়ে ব্যবহার করতেন এবং শ্রীমঙ্গলে তাদের যাতায়াত ছিল সহজতর। এটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা যা শ্রীমঙ্গলের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকা পালন করতো। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আর ব্যবহৃত হয়নি, যদিও এটি এখনও শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের অংশ হিসেবে কীর্তিত রয়েছে।

বর্তমানে, ফিনলে রানওয়ে জায়গাটি আগের মত ব্যবহৃত না হলেও শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা চা বাগানের পাশেই অবস্থিত এই রানওয়ে, যা একসময় শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র ছিল। দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা এখানে এসে ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।

২০০৪ সালে ফিনলে কোম্পানি বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর, এই রানওয়ে প্রাঙ্গনটি কাটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় এবং এখন সেখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে, পর্যটকরা এখনো এই ঐতিহাসিক স্থানটি দেখতে আসেন এবং শ্রীমঙ্গলের অতীতের স্মৃতি ধারণ করে রাখেন।

ফিনলে রানওয়ে আজও শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে টিকে আছে। এটি শুধু শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের চা শিল্পের ইতিহাসের সাক্ষী নয়, বরং বাংলাদেশের চা শিল্পের অগ্রগতির প্রতীকও হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ছবি

গ্রামগঞ্জে বাঁশি বিক্রি করেই চলে আমিরের সংসার

ছবি

বেড়িবাঁধ কেটে রাস্তা: অভিযোগ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে

ছবি

ক্যাম্পসের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে সেবা পেল প্রায় ৩৫০০ মানুষ

সোনারগাঁয়ে এসি বিষ্ফোরণে ২ জন নিহত

ছবি

নেত্রকোনায় বাঁশি তৈরির কারিগর আমিরের মানবেতর জীবনযাপন

ছবি

পলাশে আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে সুরভিত চারিদিক

ছবি

তরমুজে স্বপ্ন বুনছেন খুলনার চাষিরা

সৈয়দপুরে সতীর্থের ৩ দিনের বইমেলার সমাপ্তি

নোয়াখালীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি, জরিমানা

ছবি

জাতীয় পতাকা নিয়ে হেঁটে দেশ ভ্রমণে দুই হাফেজ

মোরেলগঞ্জে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

রাজবাড়ী আ’লীগের সহসভাপতি জব্বার ফকির গ্রেপ্তার

নিখোঁজের তিন দিন পর ইমামের মরদেহ উদ্ধার

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কেঁচো সার উদ্বুদ্ধকরণে কৃষক প্রশিক্ষণ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

মান্দার নিভৃত পল্লীতে অনন্য বইমেলা

গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ডিমলায় ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার

পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনে উঠান বৈঠক

চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ২ আসামি জবানবন্দির পর কারাগারে

পিরোজপুরে বৈঠাকাটা নামে নতুন উপজেলা গঠনের উদ্যোগ

‘বিচার বিভাগ সংস্কার কার্যক্রমে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে’

সুন্দরবনে মাছ ধরার দায়ে ৮ নৌকাসহ ১৮ জেলে আটক

ছবি

ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা শেষ করে কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কের কাজ সম্পন্নের দাবি

ছবি

আট বছরেও স্থায়ী ক্যাম্পাস পায়নি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

কলারোয়ায় সাজাপ্রাপ্ত যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

পত্নীতলা রাস্তায় গাছ ফেলে ভয়াবহ ডাকাতি

যৌনপল্লী থেকে বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ১

ডেভিল হান্ট অভিযান বাগেরহাটে গ্রেপ্তার ৮

ধর্মপাশায় ঘরের আড়ায় ঝুলে যুবকের আত্মহত্যা

ছবি

খোকসায় অপর্যাপ্ত বরাদ্দ থাকায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প ব্যর্থ হতে বসেছে

ছবি

সিংড়ায় পানি সেচে বাধা, তিন ফসলি জমি অনাবাদি

বিয়ে বাড়িতে উচ্চস্বরে গান বাজানো নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১

লিবিয়ায় মাফিয়াদের বিষাক্ত ইনজেকশন নাসিরনগরের যুবকের মৃত্যু

বোয়ালখালীতে পোশাক কারখানায় আগুন

ছবি

রোভার স্কাউটসের চার সদস্য চট্টগ্রাম থেকে হেঁটে যাবেন কক্সবাজার

tab

সারাদেশ

চা শিল্পের অগ্রগতির প্রতীক শ্রীমঙ্গলের ‘ফিনলে রানওয়ে’

প্রতিনিধি, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)

রোববার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

চায়ের রাজধানী বলে বিশ্বব্যাপী পরিচিত শ্রীমঙ্গল তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোর জন্য বিখ্যাত হয়ে আছে। এখানকার চা বাগান, রাবার ও অন্যান্য কৃষিপণ্য ছাড়াও রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থান ‘ফিনলে রানওয়ে’। এই রানওয়ে একসময় ছিল ব্রিটিশ আমলের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিমানের ওঠানামার স্থান এবং আজও তা শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের অংশ হয়ে রয়েছে।

শ্রীমঙ্গল অঞ্চলটি চায়ের জন্য খ্যাত হলেও এর ইতিহাসও সমানভাবে সমৃদ্ধ। ১৮৩৯ সালে চায়ের চাষ শুরু হলেও ১৮৬০ সালে তৎকালীন দক্ষিণ শ্রীহট্ট (বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা) মহকুমায় প্রথম চা চাষ শুরু হয়। সে সময়ে দেশের চা শিল্পের যাত্রা শুরু হলেও ব্রিটিশরা শ্রীমঙ্গলে চায়ের চাষ ব্যাপকভাবে চালু করে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ফিনলে কোম্পানি’, যা চায়ের উৎপাদন এবং বাগান প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১৮৭১ সালে ইংল্যান্ডের ‘ফিনলে’ কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী জন ম্যুর ভারতে এসে চা বাগান প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই কোম্পানির অধীনে বিভিন্ন চা বাগান প্রতিষ্ঠা করেন এবং স্থানীয় কর্মীদের নিয়োগের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আনা হয় চা উৎপাদনে দক্ষ বিদেশিকর্মী। তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৯৪৫ সালে শ্রীমঙ্গলে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘ফিনলে রানওয়ে’ বা বিমান ধাবনপথ।

প্রথম দিকে, ফিনলে কোম্পানির ইংলিশ কর্মকর্তা ওটি প্ল্যান্টাররা এই রানওয়ে ব্যবহার করতেন এবং শ্রীমঙ্গলে তাদের যাতায়াত ছিল সহজতর। এটি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা যা শ্রীমঙ্গলের ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সহায়ক ভূমিকা পালন করতো। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আর ব্যবহৃত হয়নি, যদিও এটি এখনও শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের অংশ হিসেবে কীর্তিত রয়েছে।

বর্তমানে, ফিনলে রানওয়ে জায়গাটি আগের মত ব্যবহৃত না হলেও শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা চা বাগানের পাশেই অবস্থিত এই রানওয়ে, যা একসময় শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র ছিল। দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা এখানে এসে ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।

২০০৪ সালে ফিনলে কোম্পানি বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর, এই রানওয়ে প্রাঙ্গনটি কাটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় এবং এখন সেখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে, পর্যটকরা এখনো এই ঐতিহাসিক স্থানটি দেখতে আসেন এবং শ্রীমঙ্গলের অতীতের স্মৃতি ধারণ করে রাখেন।

ফিনলে রানওয়ে আজও শ্রীমঙ্গলের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে টিকে আছে। এটি শুধু শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের চা শিল্পের ইতিহাসের সাক্ষী নয়, বরং বাংলাদেশের চা শিল্পের অগ্রগতির প্রতীকও হয়ে দাঁড়িয়েছে।

back to top