ভৈরব : নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনভ্রমণ করছে মানুষ -সংবাদ
ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নেয়াখালী, চট্টগ্রাম-ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেন ভ্রমণ রোধে নিষেধ মানছেন না যাত্রী ও চালকরা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ না করতে বিভিন্ন রকমের প্রচার প্রচারণা চালালেও তার বাস্তবায়ন নেই। বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণ, ট্রেনের ছাদে, ইঞ্জিনে, দুই বগির সংযোগস্থল ও দরজার হাতলে ধরে বাদুর ঝুলা, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জন্য যাত্রী ও সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এক প্লাট ফরম থেকে আরেক প্লাট ফরমে যেতে রেল লাইন পারাপারে প্রতিনিয়তই ওভার ব্রিজ ব্যবহার করার সতর্ক বার্তা দেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এটা শুধু ঘোষণা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।
যাত্রীরা কোন অবস্থাতেই ওভার ব্রিজ দিয়ে পারাপার হোন না। যার কারণে ওভার ব্রিজ মাদকসেবী, ভিক্ষুক ও বখাটেদের দখলে চলে গেছে। স্টেশনকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে প্লাটফরমে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলতে প্ল্যাটফর্মের দোকানি ও যাত্রীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। উল্লেখিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নে প্রায়ই স্টেশনে যাত্রী ও স্থানীয়দের নিয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা করছেন রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেল কর্মচারী বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রেনের ইঞ্জিনের ভেতরেও যাত্রীদের ভ্রমণ করতে দেখা যায়। রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর চেষ্টায় ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ কিছুটা কমলেও ইঞ্জিনের ভেতরে বসিয়ে যাত্রী নেওয়া থেকে বিরত করা যাচ্ছে না চালকদের। ইঞ্জিনের ভেতর বসিয়ে নেওয়া পুরো ট্রেনের জন্যই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু অসাধু চালক তারা বাড়তি আয়ের জন্যই এমনটা করছেন। প্রায়ই দেখা যায় ভৈরব স্টেশনে ইঞ্জিন থেকে যাত্রী নামাতে গিয়ে রেলওয়ে পুলিশের সাথে চালকদের বাক বিতণ্ডা হতে। বিরতিহীন স্টেশনগুলোতে চালকরা ট্রেনকে ধীরগতি করে যাত্রী নামাতে গিয়ে কোন কোন যাত্রী ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গিয়েছে।
এদিকে নামমাত্র একটি খাবারের বগি রয়েছে। এখানে তো খাবার মিলেই না টিকেট না কেটে ভ্রমণের একমাত্র মাধ্যম এ খাবারের বগি। এই বগির ভেতরে ঢুকলেই যাত্রীকে দিতে হয় সর্বনিম্ন ২শ’ টাকা। এসব দেখেও না দেখার ভান করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভৈরব রেলওয়ে সূত্র জানায়, ট্রেনের ছাদে, বাফারে ও ইঞ্জিনে ভ্রমণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ করতে গিয়ে অনেক সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যাচ্ছে। ছাদে ভ্রমণ করতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের। বিনা টিকেটে ছাদে ভ্রমণ করায় সরকার বঞ্চিত হয় রাজস্ব থেকে। এ সকল অবৈধ ভ্রমণ রোধে যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক রেলওয়ে প্রশাসন নিয়মিত এ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষের অভিযানের ফলে যাত্রী সাধারণ ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত হবে। আর ছাদে ভ্রমণ রোধ করা গেলে বাড়বে রেলওয়ের রাজস্ব আয়।
যাত্রীরা জানান, ট্রেনের কামরার ভেতরে অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করতে হচ্ছে। টিকেট স্বল্পতার কারণে অনেক সময় টিকেট কাটাও সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করতে হচ্ছে। ছাদে ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ এখন জানতে পারলাম। ভবিষ্যতে আমরা আর কখনো ট্রেনের ছাদে বা ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ করব না।
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে রেলওয়ে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা প্লাট ফরমে ডিউটি করছে। যাত্রীদের কোনো অভিযোগ পেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে চুরি বা ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার এবং দুষ্কৃতকারীকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রেন ভ্রমণের সময় যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। স্টেশনে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যাত্রীদের কোন অভিযোগ তাৎক্ষণিক পেলে অপরাধীকে আইনের আওতায় নেয়া সম্ভব। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে প্ল্যাটফর্মে পুলিশের একটি বুথ রয়েছে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আর এন বি) ইনচার্জ হাসান মোহাম্মদ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ রোধে আমরা অভিযান পরিচালনা করে আসছি। ছাদে, ইঞ্জিনে, বাফারে করে ভ্রমণ যারা করছে আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। তবে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। অভিযানের কারণে যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ অনেকটাই কমে এসেছে।
ভৈরব : নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনভ্রমণ করছে মানুষ -সংবাদ
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নেয়াখালী, চট্টগ্রাম-ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রেন ভ্রমণ রোধে নিষেধ মানছেন না যাত্রী ও চালকরা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ না করতে বিভিন্ন রকমের প্রচার প্রচারণা চালালেও তার বাস্তবায়ন নেই। বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণ, ট্রেনের ছাদে, ইঞ্জিনে, দুই বগির সংযোগস্থল ও দরজার হাতলে ধরে বাদুর ঝুলা, ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জন্য যাত্রী ও সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এক প্লাট ফরম থেকে আরেক প্লাট ফরমে যেতে রেল লাইন পারাপারে প্রতিনিয়তই ওভার ব্রিজ ব্যবহার করার সতর্ক বার্তা দেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এটা শুধু ঘোষণা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ।
যাত্রীরা কোন অবস্থাতেই ওভার ব্রিজ দিয়ে পারাপার হোন না। যার কারণে ওভার ব্রিজ মাদকসেবী, ভিক্ষুক ও বখাটেদের দখলে চলে গেছে। স্টেশনকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে প্লাটফরমে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলতে প্ল্যাটফর্মের দোকানি ও যাত্রীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানান রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। উল্লেখিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নে প্রায়ই স্টেশনে যাত্রী ও স্থানীয়দের নিয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা করছেন রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেল কর্মচারী বলেন, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রেনের ইঞ্জিনের ভেতরেও যাত্রীদের ভ্রমণ করতে দেখা যায়। রেলওয়ে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর চেষ্টায় ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ কিছুটা কমলেও ইঞ্জিনের ভেতরে বসিয়ে যাত্রী নেওয়া থেকে বিরত করা যাচ্ছে না চালকদের। ইঞ্জিনের ভেতর বসিয়ে নেওয়া পুরো ট্রেনের জন্যই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু অসাধু চালক তারা বাড়তি আয়ের জন্যই এমনটা করছেন। প্রায়ই দেখা যায় ভৈরব স্টেশনে ইঞ্জিন থেকে যাত্রী নামাতে গিয়ে রেলওয়ে পুলিশের সাথে চালকদের বাক বিতণ্ডা হতে। বিরতিহীন স্টেশনগুলোতে চালকরা ট্রেনকে ধীরগতি করে যাত্রী নামাতে গিয়ে কোন কোন যাত্রী ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গিয়েছে।
এদিকে নামমাত্র একটি খাবারের বগি রয়েছে। এখানে তো খাবার মিলেই না টিকেট না কেটে ভ্রমণের একমাত্র মাধ্যম এ খাবারের বগি। এই বগির ভেতরে ঢুকলেই যাত্রীকে দিতে হয় সর্বনিম্ন ২শ’ টাকা। এসব দেখেও না দেখার ভান করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভৈরব রেলওয়ে সূত্র জানায়, ট্রেনের ছাদে, বাফারে ও ইঞ্জিনে ভ্রমণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ করতে গিয়ে অনেক সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যাচ্ছে। ছাদে ভ্রমণ করতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের। বিনা টিকেটে ছাদে ভ্রমণ করায় সরকার বঞ্চিত হয় রাজস্ব থেকে। এ সকল অবৈধ ভ্রমণ রোধে যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে রেল মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক রেলওয়ে প্রশাসন নিয়মিত এ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষের অভিযানের ফলে যাত্রী সাধারণ ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত হবে। আর ছাদে ভ্রমণ রোধ করা গেলে বাড়বে রেলওয়ের রাজস্ব আয়।
যাত্রীরা জানান, ট্রেনের কামরার ভেতরে অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করতে হচ্ছে। টিকেট স্বল্পতার কারণে অনেক সময় টিকেট কাটাও সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করতে হচ্ছে। ছাদে ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ এখন জানতে পারলাম। ভবিষ্যতে আমরা আর কখনো ট্রেনের ছাদে বা ঝুঁকি নিয়ে ভ্রমণ করব না।
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে রেলওয়ে পুলিশ ২৪ ঘণ্টা প্লাট ফরমে ডিউটি করছে। যাত্রীদের কোনো অভিযোগ পেলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে চুরি বা ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার এবং দুষ্কৃতকারীকে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ট্রেন ভ্রমণের সময় যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। স্টেশনে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যাত্রীদের কোন অভিযোগ তাৎক্ষণিক পেলে অপরাধীকে আইনের আওতায় নেয়া সম্ভব। যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে প্ল্যাটফর্মে পুলিশের একটি বুথ রয়েছে। সেখানে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আর এন বি) ইনচার্জ হাসান মোহাম্মদ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ রোধে আমরা অভিযান পরিচালনা করে আসছি। ছাদে, ইঞ্জিনে, বাফারে করে ভ্রমণ যারা করছে আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। তবে সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। অভিযানের কারণে যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ অনেকটাই কমে এসেছে।