খোকসা (কুষ্টিয়া) : অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর পুড়ে যাওয়া ঘর -সংবাদ
বিদ্যুতের শট সার্কিটের আগুনে কৃষি শ্রমিক রওশন আলী ও তার দুই পুত্রের বসতঘর, সমিতি থেকে ঋণ করে এনে রাখা নগদ টাকাসহ সব ভস্ম হয়ে গেছে। তারপর থেকে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়া পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
খোকসা উপজেলা শোসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বি-মির্জাপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষি শ্রমিক রওশন আলী গত বুধবার দুপুরে নাতি নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন।
হঠাৎ করে তার বাড়ির বিদ্যুতের শট সার্কিট থেকে মিটারের আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে তার গোটা বাড়িতে। ভস্মে পরিণত হয় ৫ রুমের আধাপাকা বসতঘর, খাওয়ার জন্য রাখা ধান, পাট, আসবাবপত্র, সমিতি থেকে ঋণ করে এনে রাখা প্রায় ২ লাখ নগদ টাকাসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল।
অগ্নিকাণ্ডের সময় ঘর থেকে কিছুই বেড় করতে পারেনি স্থানীয় উদ্ধারকারীরা। পরনের কাপড় ছাড়া এই পরিবারের সদস্যদের আর কিছুই নেই।
অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি শ্রমিকের ছোট ছেলে টিপু। সে পাখি ভ্যান কেনার জন্য তিন দিন আগে সমিতি থেকে ঋণ করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ঘরে রেখে ছিলেন। ভ্যানের জন্য কিছু টাকা বায়নাও করে ছিলেন। বাকি সব টাকাই পুড়ে গেছে। বড় ছেলে মহম্মদ আলীরও পুড়ে গেছে ব্যবসার প্রায় শোয়া লাখ টাকা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর পোড়া ঘরের প্রায় অর্ধশতাধিক সিমেন্টের খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিমের পাশের বারান্দায় প্রতিবেশীদের দেয়া পুরাতন পলিথিন টানিয়ে ছোট ছেলে টিপু তার স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন। ঘর পোড়া আগুনের ধুয়ায় বড় ছেলে মহম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে অসুস্থ হয়ে পরায় সে এক প্রতিবেশীর বাড়ির আশ্রয় নিয়েছেন। নিকট আত্মীয়রা ছাই সরিয়ে পোড়াটিন ও আসবাবপত্রের অবশিষ্ট অংশ বের করে উঠানে স্তূপ দিচ্ছেন।
গৃহকর্তার স্ত্রী বৃদ্ধা রাজিয়া জানান, তিনি পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ছিলেন। প্রতিবেশীদের চিৎকারে তিনি ছুটে বাড়ির দিকে আসেন। ততক্ষণে আগুন তার গোটা বাড়িতে ছড়িয়ে পরেছে।
গরু ছাগল ছুটা ছুটি করছিল। লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে তার বাড়ির চারপাশ। তিল তিল করে গড়া ঘরবাড়ি চোখের সামনে পুরতে দেখেছেন, আর ডুক্কার পেরে কেঁদে ছিলেন।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রওশন আলীর ছোট ছেলে ভ্যান চালক টিপু জানান, ব্যাটারি চলা নতুন একটা ভ্যান কেনার জন্য দুই সমিতি থেকে প্রায় পৌনে এক লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন। তার প্রায় সব টাকাই পুড়ে গেছে। তার নতুন ভ্যান কেনার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। মাঝখানে কিছু দেনা হলেন।
রওশন আলী বলেন, জীবন নিয়ে বেঁচে ফিরেছেন এটাই বড় কথা। তিনি নাতি নিয়ে ঘরে শুয়ে ছিলেন। প্রতিবেশীদের চিৎকারে তার ঘুম ভাঙে। ঘর থেকে বেড় হতে না হতেই তার জীবনের সব অর্জন পুড়ে ছাই হয়ে গেলো।
তিনি আরও জানান, ঘরবাড়ি পোড়ার পর প্রতিবেশীদের দেয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন। তারাই কিছু কাপড় দিয়েছেন। সরকারি কোনো সহায়তা তিনি পাননি।
শোমসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আনারুল জানান, বাড়ির পাশেই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর বাড়ি। অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি নিজের উদ্ধার কাজে ছিলেন। তার পিঠেও আগুনের আঁচ লেগেছে। পরিবারটির সবই পুড়ে গেছে। তাদের সরকারী সাহায্য পাওয়া খুবই জরুরি।
খোকসা (কুষ্টিয়া) : অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর পুড়ে যাওয়া ঘর -সংবাদ
শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫
বিদ্যুতের শট সার্কিটের আগুনে কৃষি শ্রমিক রওশন আলী ও তার দুই পুত্রের বসতঘর, সমিতি থেকে ঋণ করে এনে রাখা নগদ টাকাসহ সব ভস্ম হয়ে গেছে। তারপর থেকে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়া পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
খোকসা উপজেলা শোসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বি-মির্জাপুর গ্রামের হতদরিদ্র কৃষি শ্রমিক রওশন আলী গত বুধবার দুপুরে নাতি নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন।
হঠাৎ করে তার বাড়ির বিদ্যুতের শট সার্কিট থেকে মিটারের আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে তার গোটা বাড়িতে। ভস্মে পরিণত হয় ৫ রুমের আধাপাকা বসতঘর, খাওয়ার জন্য রাখা ধান, পাট, আসবাবপত্র, সমিতি থেকে ঋণ করে এনে রাখা প্রায় ২ লাখ নগদ টাকাসহ প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালামাল।
অগ্নিকাণ্ডের সময় ঘর থেকে কিছুই বেড় করতে পারেনি স্থানীয় উদ্ধারকারীরা। পরনের কাপড় ছাড়া এই পরিবারের সদস্যদের আর কিছুই নেই।
অগ্নিকাণ্ডের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি শ্রমিকের ছোট ছেলে টিপু। সে পাখি ভ্যান কেনার জন্য তিন দিন আগে সমিতি থেকে ঋণ করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ঘরে রেখে ছিলেন। ভ্যানের জন্য কিছু টাকা বায়নাও করে ছিলেন। বাকি সব টাকাই পুড়ে গেছে। বড় ছেলে মহম্মদ আলীরও পুড়ে গেছে ব্যবসার প্রায় শোয়া লাখ টাকা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর পোড়া ঘরের প্রায় অর্ধশতাধিক সিমেন্টের খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিমের পাশের বারান্দায় প্রতিবেশীদের দেয়া পুরাতন পলিথিন টানিয়ে ছোট ছেলে টিপু তার স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন। ঘর পোড়া আগুনের ধুয়ায় বড় ছেলে মহম্মদ আলীর একমাত্র ছেলে অসুস্থ হয়ে পরায় সে এক প্রতিবেশীর বাড়ির আশ্রয় নিয়েছেন। নিকট আত্মীয়রা ছাই সরিয়ে পোড়াটিন ও আসবাবপত্রের অবশিষ্ট অংশ বের করে উঠানে স্তূপ দিচ্ছেন।
গৃহকর্তার স্ত্রী বৃদ্ধা রাজিয়া জানান, তিনি পুকুরে গোসল করতে গিয়ে ছিলেন। প্রতিবেশীদের চিৎকারে তিনি ছুটে বাড়ির দিকে আসেন। ততক্ষণে আগুন তার গোটা বাড়িতে ছড়িয়ে পরেছে।
গরু ছাগল ছুটা ছুটি করছিল। লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে তার বাড়ির চারপাশ। তিল তিল করে গড়া ঘরবাড়ি চোখের সামনে পুরতে দেখেছেন, আর ডুক্কার পেরে কেঁদে ছিলেন।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত রওশন আলীর ছোট ছেলে ভ্যান চালক টিপু জানান, ব্যাটারি চলা নতুন একটা ভ্যান কেনার জন্য দুই সমিতি থেকে প্রায় পৌনে এক লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন। তার প্রায় সব টাকাই পুড়ে গেছে। তার নতুন ভ্যান কেনার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। মাঝখানে কিছু দেনা হলেন।
রওশন আলী বলেন, জীবন নিয়ে বেঁচে ফিরেছেন এটাই বড় কথা। তিনি নাতি নিয়ে ঘরে শুয়ে ছিলেন। প্রতিবেশীদের চিৎকারে তার ঘুম ভাঙে। ঘর থেকে বেড় হতে না হতেই তার জীবনের সব অর্জন পুড়ে ছাই হয়ে গেলো।
তিনি আরও জানান, ঘরবাড়ি পোড়ার পর প্রতিবেশীদের দেয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন। তারাই কিছু কাপড় দিয়েছেন। সরকারি কোনো সহায়তা তিনি পাননি।
শোমসপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আনারুল জানান, বাড়ির পাশেই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি শ্রমিক রওশন আলীর বাড়ি। অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি নিজের উদ্ধার কাজে ছিলেন। তার পিঠেও আগুনের আঁচ লেগেছে। পরিবারটির সবই পুড়ে গেছে। তাদের সরকারী সাহায্য পাওয়া খুবই জরুরি।