খোকসায় বীজ আলুর বাম্পার ফলন
খোকসা (কুষ্টিয়া) : আড়তে আলু হাতে এক চাষি -সংবাদ
কুষ্টিয়ার খোকসায় এ বছরও বিএডিসি আওতাধীন চাষিদের বীজ আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে অজানা কারণে লাভজনক এ চাষে নতুন কৃষক আসছেন না। কৃষি বিভাগে দাবি বিএডিসির সমন্বয়হীনতার ফলে সম্ভাবনা থাকলেও বীজ আলু চাষ বাড়ছে না।
খোকসা উপজেলার গোপগ্রাম, শোমসপুর ও আমবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় ২৫ জন কৃষক বিএনডিসির বীজ আলু আবাদ করে আসছেন। কিন্তু লাভজনক এ (বীজ আলু) চাষে নতুন কৃষক আসতে পারছে না।
বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসূমে খোকসায় প্রায় ২৫ জন কৃষক বীজ আলু চাষ করেছেন। তবে খোকসা ও কুমারখালী উপজেলার পদ্মানদী অববাহিকায় ৭২ একর জমিতে বীজ আলুর আবাদ হয়েছে। এ চাষের জন্য ৫০ জন কৃষককে বিএডিসির পক্ষ থেকে ঋণ দেয়া হয়েছে। কৃষকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঋণের টাকা বিপরীতে বিএডিসি বীজ আলু কিনে নেবে।
বিএডিসির সূত্রটি বলছে, যে কৃষক আলু চাষে ‘টেন্ডআপ’ হয়ে গেছেন, শুধু তারাই এ চায়ে বেশি আগ্রহী। নতুন করে কৃষক আর এ চাষে আগ্রহী হচ্ছে না। তবে বীজ আলু চাষের জন্য এলাকাটি উপযোগী।
এ বছর ডায়মন্ড, কাঠিলাল ও এলোইটা প্রজাতের আলুর চাষ হয়েছে। সম্প্রতি জমি থেকে বীজ আলু তোলা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিবিঘা জমিতে ৮০-৮৫ মণ আলুর ফলন হয়েছে।
বীজ আলুর সরকার নির্ধারিত দামে নিয়ে কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে। তাদের দাবি গত বছর বাজারমূলের থেকে কমে ৩৫ টাকা কেজি দরে বীজ আলু নিয়েছিল বিএডিসি।
এছাড়া বীজ যাচাই বাছায়ের সময়ও চাষি হয়রানির শিকার হন। এ বছর মৌসূমের শুরুতেই বাজার দর ভালো। কিন্তু বিএডিসি এখনো বীজ আলুর দর চাষিদের জানায়নি। সে ক্ষেত্রে বিএডিসির আলু দিলে চাষিদের লোকসান গুনতে হবে। অতিমাত্রায় বড় হয়ে যাওয়ায় প্রায় ২০ শতাংশ আলু খোলা বাজারে বিক্রি করতে হবে তাদের।
একই গ্রামের কৃষক বাহাদুর, তার অভিযোগ জমি থাকলেই বিএডিসি লোন দেয় না। অনেক চেষ্টা তদবিরের ব্যাপারও আছে। তিনি গত দুই বছর আগেও বিএডিসির লোন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাকে লোন দেয়া হয়নি। তার মতো অনেক কৃষক আছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
শোমসপুর ইউনিয়নের দক্ষিন নিশ্চিন্তবাড়ি গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান। তিনি বিএডিসি থেকে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা লোন নিয়ে প্রায় তিন একর জমিতে বীজ আলুর চাষ করেছিলেন। প্রত্যাশার থেকে ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু তিনি জানেন না বীজ আলুর সরকার নিদ্ধারিত দাম। তবে ফলন তিনি খুশি।
চাষি আতিয়ার রহমান মনে করেন, বীজ আলু চাষের উপযোগী জমি ও পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ন। উপজেলা কৃষি বিভাগ এ চাষ সম্পর্কে কোন সহযোগিতা করে না। তাই নিজে বুঝে চাষ করতে হয়। এই ঝুঁকি নতুন করে কেউ নিতে চায় না। এ ছাড়া অনেক টাকা বিনিয়োগ লাগে।
উপজেরা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল নোমান বলেন, ‘জমি আমার, কৃষক আমার, এলাকা আমার কিন্তু আমিই জানি না’। আলু চাষ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বীজ আলু চাষের জন্য এলাকাটি খুবই উপযোগী। কিন্তু বিএডিসির সমন্বয়হীনতার কারণে এ চাষের পরিধি বাড়ছে না।
বিএডিসি কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক (বীজ) মুহম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আগে থেকে যে সব চাষি ‘ট্রেন্ডআপ’ (প্রশিক্ষিত) হয়ে গেছে, তারাই এ চাষ করেন।
নতুন কৃষক এ চাষে আসতে চায় না। বীজ আলুর দাম নিয়ে কৃষকদের অনিহার ব্যাপারে তিনি বলেন, দাম নির্দ্ধারণ করে উচ্চ পর্যায় থেকে। এখানে তাদের হাত নেই।
খোকসায় বীজ আলুর বাম্পার ফলন
খোকসা (কুষ্টিয়া) : আড়তে আলু হাতে এক চাষি -সংবাদ
সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫
কুষ্টিয়ার খোকসায় এ বছরও বিএডিসি আওতাধীন চাষিদের বীজ আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে অজানা কারণে লাভজনক এ চাষে নতুন কৃষক আসছেন না। কৃষি বিভাগে দাবি বিএডিসির সমন্বয়হীনতার ফলে সম্ভাবনা থাকলেও বীজ আলু চাষ বাড়ছে না।
খোকসা উপজেলার গোপগ্রাম, শোমসপুর ও আমবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় ২৫ জন কৃষক বিএনডিসির বীজ আলু আবাদ করে আসছেন। কিন্তু লাভজনক এ (বীজ আলু) চাষে নতুন কৃষক আসতে পারছে না।
বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসূমে খোকসায় প্রায় ২৫ জন কৃষক বীজ আলু চাষ করেছেন। তবে খোকসা ও কুমারখালী উপজেলার পদ্মানদী অববাহিকায় ৭২ একর জমিতে বীজ আলুর আবাদ হয়েছে। এ চাষের জন্য ৫০ জন কৃষককে বিএডিসির পক্ষ থেকে ঋণ দেয়া হয়েছে। কৃষকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ঋণের টাকা বিপরীতে বিএডিসি বীজ আলু কিনে নেবে।
বিএডিসির সূত্রটি বলছে, যে কৃষক আলু চাষে ‘টেন্ডআপ’ হয়ে গেছেন, শুধু তারাই এ চায়ে বেশি আগ্রহী। নতুন করে কৃষক আর এ চাষে আগ্রহী হচ্ছে না। তবে বীজ আলু চাষের জন্য এলাকাটি উপযোগী।
এ বছর ডায়মন্ড, কাঠিলাল ও এলোইটা প্রজাতের আলুর চাষ হয়েছে। সম্প্রতি জমি থেকে বীজ আলু তোলা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিবিঘা জমিতে ৮০-৮৫ মণ আলুর ফলন হয়েছে।
বীজ আলুর সরকার নির্ধারিত দামে নিয়ে কৃষকদের অভিযোগ রয়েছে। তাদের দাবি গত বছর বাজারমূলের থেকে কমে ৩৫ টাকা কেজি দরে বীজ আলু নিয়েছিল বিএডিসি।
এছাড়া বীজ যাচাই বাছায়ের সময়ও চাষি হয়রানির শিকার হন। এ বছর মৌসূমের শুরুতেই বাজার দর ভালো। কিন্তু বিএডিসি এখনো বীজ আলুর দর চাষিদের জানায়নি। সে ক্ষেত্রে বিএডিসির আলু দিলে চাষিদের লোকসান গুনতে হবে। অতিমাত্রায় বড় হয়ে যাওয়ায় প্রায় ২০ শতাংশ আলু খোলা বাজারে বিক্রি করতে হবে তাদের।
একই গ্রামের কৃষক বাহাদুর, তার অভিযোগ জমি থাকলেই বিএডিসি লোন দেয় না। অনেক চেষ্টা তদবিরের ব্যাপারও আছে। তিনি গত দুই বছর আগেও বিএডিসির লোন পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাকে লোন দেয়া হয়নি। তার মতো অনেক কৃষক আছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
শোমসপুর ইউনিয়নের দক্ষিন নিশ্চিন্তবাড়ি গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান। তিনি বিএডিসি থেকে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার টাকা লোন নিয়ে প্রায় তিন একর জমিতে বীজ আলুর চাষ করেছিলেন। প্রত্যাশার থেকে ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু তিনি জানেন না বীজ আলুর সরকার নিদ্ধারিত দাম। তবে ফলন তিনি খুশি।
চাষি আতিয়ার রহমান মনে করেন, বীজ আলু চাষের উপযোগী জমি ও পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ন। উপজেলা কৃষি বিভাগ এ চাষ সম্পর্কে কোন সহযোগিতা করে না। তাই নিজে বুঝে চাষ করতে হয়। এই ঝুঁকি নতুন করে কেউ নিতে চায় না। এ ছাড়া অনেক টাকা বিনিয়োগ লাগে।
উপজেরা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লা আল নোমান বলেন, ‘জমি আমার, কৃষক আমার, এলাকা আমার কিন্তু আমিই জানি না’। আলু চাষ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বীজ আলু চাষের জন্য এলাকাটি খুবই উপযোগী। কিন্তু বিএডিসির সমন্বয়হীনতার কারণে এ চাষের পরিধি বাড়ছে না।
বিএডিসি কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক (বীজ) মুহম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, আগে থেকে যে সব চাষি ‘ট্রেন্ডআপ’ (প্রশিক্ষিত) হয়ে গেছে, তারাই এ চাষ করেন।
নতুন কৃষক এ চাষে আসতে চায় না। বীজ আলুর দাম নিয়ে কৃষকদের অনিহার ব্যাপারে তিনি বলেন, দাম নির্দ্ধারণ করে উচ্চ পর্যায় থেকে। এখানে তাদের হাত নেই।