রংপুর : আড়তে আলু সংরক্ষণের কাজ করছেন শ্রমিকরা -সংবাদ
দেশের সর্ববৃহৎ আলু উৎপাদনকারী এলাকা বলে খ্যাত রংপুরে মৌসুমের শুরুতে আলুর দাম ১০ থেকে ১২ টাকা কেজিতে নেমে এসেছে। আলু চাষিরা বলছেন আলুর বীজের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রতি কেজি আলু উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। ফলে আলু চাষিদের পানির দামে আলু বিক্রি করে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। অথচ খুচরা বাজারে এখনও প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে আলু চাষিরা কম দামে আলু বিক্রি করতে গিয়ে একদিকে সর্বস্বান্ত হচ্ছে, লাভবান হচ্ছে মহাজন আর পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রংপুরে চলতি মৌসুমে রংপুর জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এবছর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছিল ৫৩ হাজার ৯শ’ ৫০ হেক্টর জমি। অথচ এবার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে আলু চাষ হয়েছে ৬২ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত আলু চাষ হয়েছে যা স্বাধীনতার পরে সর্বচ্য আলু চাষের রেকর্ড।
আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর আলু চাষিরা তাদের উৎপাদিত আলুর দাম অপেক্ষাকৃত ভালো পাওয়ায় এবার রংপুরে বিপুল পরিমান জমিতে আলু চাষ করেছে চাষিরা। ইতিমধ্যেই ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু করেছে আলু চাষিরা। রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়া এলাকায় সোমবার সকালে ঘুরে দেখা গেছে দিগন্ত জোড়া আলু ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলনে ব্যাস্ত আলু চাষিরা।
মাহিগজ্ঞ এলাকার আলু চাষি মমতাজুল ইসলাম জানালেন গত বছর তারা মৌসুমের শুরুতেই প্রতি কেজি ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেঁজিতে আলু বিক্রি করেছেন এবার তার অর্ধেক দামও মিলছেনা। পীরগাছার পারুল এলাকার চাষি সোলায়মান , রহিম জানান এখন আলু ক্ষেত থেকে উত্তোলন করে বিক্রি করলে ধার দেনা করে কিংবা দাদন ব্যাবসায়ীদের কাছে ঋন নিয়ে আলু চাষ করেছেন আলুর দাম না পাওয়ায় তারা চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানান তারা। তারা আরও জানান হিমাগারে আলু রাখা ক্ষুদ্র প্রান্তিক আলু চাষিরা পারবেনা। যাদের টাকা আছে তারা ক্ষেত থেকে আলু কিনে হিমাগারে রাখার জন্য ষ্টক করছেন। কিন্তু এবার হিমাগারের ভাড়া সহ সব মিলিয়ে আলু রেখে লাভ পাবার আশা ক্ষীন বলে তারা মনে করেন।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান, এবার রেকর্ড পরিমান জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হওয়ায় রোগ বালাই না থাকায় ফলন বাম্পার হবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, রংপুর জেলার জন্য সারা বছরে মোট আলুর চাহিদা ২ থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদিত হওয়ায় জেলার চাহিদা মিটিয়ে ১৫ লাখ টনেরও বেশি আলু ঢাকা চট্টগ্রাম দেশের অনেক জেলার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
তবে কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন আলু চাষিরা যদি তাদের উপাদিত আলুর ন্যায্য মূল্য না পায় তাদের যদি এভাবেই লোকসান গুনতে হয় তাহলে তারা আলু চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে।
রংপুর : আড়তে আলু সংরক্ষণের কাজ করছেন শ্রমিকরা -সংবাদ
মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫
দেশের সর্ববৃহৎ আলু উৎপাদনকারী এলাকা বলে খ্যাত রংপুরে মৌসুমের শুরুতে আলুর দাম ১০ থেকে ১২ টাকা কেজিতে নেমে এসেছে। আলু চাষিরা বলছেন আলুর বীজের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রতি কেজি আলু উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। ফলে আলু চাষিদের পানির দামে আলু বিক্রি করে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হচ্ছে। অথচ খুচরা বাজারে এখনও প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে আলু চাষিরা কম দামে আলু বিক্রি করতে গিয়ে একদিকে সর্বস্বান্ত হচ্ছে, লাভবান হচ্ছে মহাজন আর পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রংপুরে চলতি মৌসুমে রংপুর জেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এবছর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছিল ৫৩ হাজার ৯শ’ ৫০ হেক্টর জমি। অথচ এবার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে আলু চাষ হয়েছে ৬২ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ১২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে অতিরিক্ত আলু চাষ হয়েছে যা স্বাধীনতার পরে সর্বচ্য আলু চাষের রেকর্ড।
আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর আলু চাষিরা তাদের উৎপাদিত আলুর দাম অপেক্ষাকৃত ভালো পাওয়ায় এবার রংপুরে বিপুল পরিমান জমিতে আলু চাষ করেছে চাষিরা। ইতিমধ্যেই ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু করেছে আলু চাষিরা। রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়া এলাকায় সোমবার সকালে ঘুরে দেখা গেছে দিগন্ত জোড়া আলু ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলনে ব্যাস্ত আলু চাষিরা।
মাহিগজ্ঞ এলাকার আলু চাষি মমতাজুল ইসলাম জানালেন গত বছর তারা মৌসুমের শুরুতেই প্রতি কেজি ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেঁজিতে আলু বিক্রি করেছেন এবার তার অর্ধেক দামও মিলছেনা। পীরগাছার পারুল এলাকার চাষি সোলায়মান , রহিম জানান এখন আলু ক্ষেত থেকে উত্তোলন করে বিক্রি করলে ধার দেনা করে কিংবা দাদন ব্যাবসায়ীদের কাছে ঋন নিয়ে আলু চাষ করেছেন আলুর দাম না পাওয়ায় তারা চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে জানান তারা। তারা আরও জানান হিমাগারে আলু রাখা ক্ষুদ্র প্রান্তিক আলু চাষিরা পারবেনা। যাদের টাকা আছে তারা ক্ষেত থেকে আলু কিনে হিমাগারে রাখার জন্য ষ্টক করছেন। কিন্তু এবার হিমাগারের ভাড়া সহ সব মিলিয়ে আলু রেখে লাভ পাবার আশা ক্ষীন বলে তারা মনে করেন।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান, এবার রেকর্ড পরিমান জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া ভালো হওয়ায় রোগ বালাই না থাকায় ফলন বাম্পার হবে বলে আশা করছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, রংপুর জেলার জন্য সারা বছরে মোট আলুর চাহিদা ২ থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদিত হওয়ায় জেলার চাহিদা মিটিয়ে ১৫ লাখ টনেরও বেশি আলু ঢাকা চট্টগ্রাম দেশের অনেক জেলার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
তবে কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন আলু চাষিরা যদি তাদের উপাদিত আলুর ন্যায্য মূল্য না পায় তাদের যদি এভাবেই লোকসান গুনতে হয় তাহলে তারা আলু চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে।