alt

সারাদেশ

কোটি টাকার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ

নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার, ভাঙছে সড়ক বাড়ছে জনদুর্ভোগ

প্রতিনিধি, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : রাস্তার এক পাশ কেটে ফেলায় জনদুর্ভোগ চরমে -সংবাদ

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গাজীপুর থেকে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক উন্নীতকরণের কাজের ধীরগতির কারণে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের রাস্তা ভেঙে দুপাশে ধসে পড়ায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০১ কোটি ৫৩ লাখ ১৩হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলো গত ৩১ ডিসেম্বর। তবে প্রকল্পের ১০শতাংশ কাজও হয়নি দাবি এলাকাবাসীর। সড়ক ও জনপদ বিভাগের দাবি, এখন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, কাজের মেয়াদ শেষ। এরপরেও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। প্রভাবশালী মহল বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে সাধারণ মানুষকে উচ্ছেদের অভিযোগ করেন উচাখিলার তারা মিয়া, আবুল হোসেন ও মো. জয়নাল আবেদিন। তাদের দাবি, দুর্নীতিবাজ একটি চক্র জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই একদিকে নিম্নমানের কাজ করছে, অপরদিকে কৃষকের টাকা নিয়ে তালবাহানা করছে।

কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঈশ্বরগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম জানান, এ প্রকল্পের নাম কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন গৌরীপুর-আনন্দগঞ্জ-মধুপুর- দেওয়ানগঞ্জ বাজার- হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ যা ২০২০ সনের ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনা কমিশন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগরে ১ অক্টোবর তারিখে প্রদত্ত পর্যবেক্ষণের আলোকে পুনগঠিত হয়েছে। এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণখাতে ৩৯৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, সড়ক ও আধুনিকায়ন খাতে ৩০১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাহের ব্রাদার্স প্রা. লিমিটেডকে কার্যাদেশ দেয়া হয় ২০২৩সনের ১০ মে। জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে কাজ করতে বিঘ্ন ঘটছে।

প্রকল্প এলাকায় তাহের ব্রাদার্স লিমিটেডের সাইনবোর্ডে দেখা যায়, টেন্ডার আইডি ৭৫১১২৮-এ ১৩৬ কোটি ৮৩ লাখ ৭০হাজার ৪৫টাকায় ব্রিজ, বক্সকালভার্ট (ইউড্রেন) নির্মাণ, আরসিসি ঢালাই, প্যালাসাইডিং নির্মাণ, ফুটপাথ তৈরি, সিসি ব্লক ইত্যাদি কাজের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ মন্ডল বলেন, সড়কই নেই; আবার মহাসড়ক! এখন গাড়ি চলে না। ভারী যানবাহন আসে না। রাস্তা ভেঙে পুকুর হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে এ সড়কে যানবাহনে চলাচল করাই যাচ্ছে না। বড় বড় গর্তের কারণ সিএনজি আর অটোরিকশা চলাচল করা কষ্টকর। একেকস্থানে ভেঙে এখন সড়ক খাল আর পুকুর হয়ে গেছে। এভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে উন্নয়ন কার্যক্রম চলতে পারে না।

এলাকাবাসীর অভিযোগ রাস্তা নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের মাটি-বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। বালির গুনগত মানও ভালো নয়। সাদা রঙের মরা (হালকা) পাথরও ব্যবহার করা চলছে। মহাসড়কটি নতুনভাবে নির্মাণের বিধান থাকলেও অধিকাংশস্থানে পুরাতন সড়কের উপরের অংশ ভেঙে সেই পুরাতন পাথর ও সুরকি ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা যায়, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক থেকে গাজীপুরের প্রবেশপত্রে আরসিসি সড়ক নির্মাণ করা হলেও পানি নিষ্কাষনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়।

জলাবদ্ধতার কারণে দোকানপাঁ বন্ধ হয়ে যায়। শুকনা মৌসুমে খানা-খন্দকে বাতাসে উড়ে ধুলোবালি। গাজীপুরের মোড় অতিক্রম করার পরেই দু’পাশে পুকুর থাকায় যানবাহন চলাচল চরমভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। লেবুর মোড় এলাকায় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে রাস্তার বর্ধিত অংশের বক্স কাটা হলেও বিলম্বের কারণে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। রামনগর এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, ধুলাবালির কারণে রাস্তার দু’পাশের বাড়িঘরে থাকা কষ্টকর। দোকানও খোলা যায় না। মাঝেমধ্যে রাস্তা পানি দেয়া হয়। তবে নিয়মিত পানি না দেয়ায় এ দুর্ভোগ বেড়েছে। ঈশ^রগঞ্জ সড়ক উপবিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম জানান, কয়েকটি স্থানে স্থানীয় লোকজনের বাঁধা দেয়ায় কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। রাস্তায় নিয়মিত পানি দেয়া ও জনদুর্ভোগ যেনো না হয় সে বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে বালিহাটা আল আকসা জামে মসজিদের সামনে দীর্ঘসড়কে খোঁড়াখুড়ি করে রাখা হয়েছে। একপাশে গর্ত অন্যপাশে সড়কে ভাঙন। ধুলোবালি মসিজদের রঙও বদরে দিয়েছে। ঈশ^রগঞ্জের উচাখিলা ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ ব্রিজের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অসমাপ্ত ব্রিজে হাঁসের খামার করতেও দেখা যায়। ব্রিজের রডেও জং ধরেছে। মেয়াদ শেষ হলেও বর্তমান কাজ চলছে ধীরগতিতে। বিশাল ব্রিজ নির্মাণ এলাকায় ৫/৬ জন শ্রমিকের দেখা মিলে।

কিশোরগঞ্জের জিরানী এলাকায় একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ অসমাপ্ত। রাস্তার দু’পাশে প্রায় একবছর আগে বক্সকেটে মাটি ভরাট করা হলেও সেই মাটিতে দুর্বাঘাস আর আগাছা জন্ম নিয়েছে। অসমাপ্ত সড়কে পানি দিতেও দেখেনি কেউ। ফলে ধুলাবালির রাজস্ব সড়ক জুড়ে।

মইশকুড়া আর বিরাশি’র সীমান্তবর্তী এলাকায়ও সড়কের আঁকাবাঁকা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মইশকুড়া গ্রামের আবুল হোসেন (৫৫) বলেন, এখন গাড়ি কম চলছে। এক সময় গাড়ি বাড়বে। এতো বাঁকা সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করলে ব্রহ্মছেলে নদে গিয়ে গাড়ি পড়বে। হোসেনপুরের বরি কাটালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’পাশের সড়কও দীর্ঘদিন যাবত অবহেলিতভাবে পড়ে রয়েছে। কোথাও মাটির উঁচু ঢিবি, কোথাও ঢিবিতে ঘাস জন্মাচ্ছে। ভাংগা-চোরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। হাজীপুর বাজারে একপাশে আরসিসি আর অন্যপাশে বক্সকেটে রাখায় দোকানীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, ৩১ ডিসেম্বর ছিল একনেকে পাশকৃত এ প্রকল্পের মূল সময়সীমা। আমরা দেড়বছর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠিয়েছি যা আমাদের দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এ সড়কের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ। অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ১০এলএ মোকদ্দমা রয়েছে। এরমধ্যে ২টি কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে আর ৮টি ময়মনসিংহে। এগুলো শেষ হলে কাজ করতে সর্বোচ্চ একবছর সময় লাগতে পারে।

সিলেটে ফেব্রুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জনের প্রাণহানি

ছবি

সিলেটে গাছ সুরক্ষায় পেরেক অপসারণ শুরু

কুষ্টিয়া-দৌলতপুর চরাঞ্চলে হঠাৎ চরমপন্থি আতঙ্ক

রাজশাহীতে ট্রাক-অ্যাম্বুলেন্স সংঘর্ষে নিহত ৩

নির্ধারিত সময়ে অফিসে না আসায় ভোগান্তিতে সেবাগ্রহীতারা

বগুড়ায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত, আহত ১

কেরানীগঞ্জে অপহৃত শ্রমিক উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬

সরিষাবাড়ীতে অবৈধ ইটভাটাকে জরিমানা

ছবি

রংপুরে আলুর কেজি ১০ টাকা, কৃষক সর্বস্বান্ত

ছবি

ভালুকায় বোরো খেতে সবুজের সমারোহ আগাছা তুলতে ব্যস্ত নারী শ্রমিকরা

শার্শায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ৪ জনকে কুপিয়ে জখম

সীমান্তে ৫ বাংলাদেশি নাগরিক আটক

বাগহাটায় ফিলিং স্টেশন ভাঙচুরের প্রতিবাদে নরসিংদীর ২২ সিএনজি স্টেশন বন্ধ

হবিগঞ্জে জরিমানা করায় ক্যাব সভাপতির বাসায় হামলা

ছবি

গাইবান্ধায় মাসব্যাপী ইফতার ও রাতের খাবার কর্মসূচি

নড়াইলে বাজার মনিটরিংয়ে ৩ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

অবশেষে মহাদেবপুরের আত্রাই নদীর বালুমহাল ইজারা না দেয়ার সিদ্ধান্ত

বালুর বস্তাচাপা অবস্থায় শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

সাপাহারে বাতাসে বইছে আম্র মুকুলের মৌ মৌ ঘ্রাণ

ফরিদপুরে দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, আহত ৩

আদমদীঘিতে কৃষকের চার গরু চুরি

মান্দায় ৩ মাদকসেবীর কারাদণ্ড

ছবি

রূপগঞ্জে ভালো নেই জামদানি শিল্পের কারিগররা

ছবি

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা: যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার, দেশি অস্ত্র উদ্ধার

সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে নিহত দুইজনের পরিচয় মিলেছে

ছবি

মাতামুহুরি নদীর চর থেকে মরদেহ উদ্ধার

ছবি

অল্প টাকার জন্য মারামারি, প্রাণ গেল দলিল লেখকের

ছবি

ফতুল্লায় বিদেশি অস্ত্র ও গুলি সহ দুই ভাই গ্রেপ্তার

সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ ৮

ছবি

মজানের দ্বিতীয় দিনে উখিয়ায় বাজার মনিটরিং, অর্থদণ্ড

ছবি

অল্প টাকার জন্য মারামারি, প্রাণ গেল দলিল লেখকের

রাজারহাটে মাদকসহ দুই কারবারি আটক

কক্সবাজারে ছয় ছিনতাইকারি গ্রেপ্তার

ট্রাফিক সদস্যের নাক ফাটানোয় ছাত্রদল নেতা আটক

চাঁদা না পেয়ে হকারকে অপহরণ, যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে বাজার মনিটরিং টাস্কফোর্সের অভিযান

tab

সারাদেশ

কোটি টাকার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ

নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার, ভাঙছে সড়ক বাড়ছে জনদুর্ভোগ

প্রতিনিধি, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) : রাস্তার এক পাশ কেটে ফেলায় জনদুর্ভোগ চরমে -সংবাদ

মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের গাজীপুর থেকে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক উন্নীতকরণের কাজের ধীরগতির কারণে বাড়ছে জনদুর্ভোগ। গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের রাস্তা ভেঙে দুপাশে ধসে পড়ায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০১ কোটি ৫৩ লাখ ১৩হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলো গত ৩১ ডিসেম্বর। তবে প্রকল্পের ১০শতাংশ কাজও হয়নি দাবি এলাকাবাসীর। সড়ক ও জনপদ বিভাগের দাবি, এখন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, কাজের মেয়াদ শেষ। এরপরেও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। প্রভাবশালী মহল বিজ্ঞ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে সাধারণ মানুষকে উচ্ছেদের অভিযোগ করেন উচাখিলার তারা মিয়া, আবুল হোসেন ও মো. জয়নাল আবেদিন। তাদের দাবি, দুর্নীতিবাজ একটি চক্র জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই একদিকে নিম্নমানের কাজ করছে, অপরদিকে কৃষকের টাকা নিয়ে তালবাহানা করছে।

কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঈশ্বরগঞ্জ অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম জানান, এ প্রকল্পের নাম কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগাধীন গৌরীপুর-আনন্দগঞ্জ-মধুপুর- দেওয়ানগঞ্জ বাজার- হোসেনপুর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণ যা ২০২০ সনের ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনা কমিশন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগরে ১ অক্টোবর তারিখে প্রদত্ত পর্যবেক্ষণের আলোকে পুনগঠিত হয়েছে। এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণখাতে ৩৯৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, সড়ক ও আধুনিকায়ন খাতে ৩০১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাহের ব্রাদার্স প্রা. লিমিটেডকে কার্যাদেশ দেয়া হয় ২০২৩সনের ১০ মে। জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে কাজ করতে বিঘ্ন ঘটছে।

প্রকল্প এলাকায় তাহের ব্রাদার্স লিমিটেডের সাইনবোর্ডে দেখা যায়, টেন্ডার আইডি ৭৫১১২৮-এ ১৩৬ কোটি ৮৩ লাখ ৭০হাজার ৪৫টাকায় ব্রিজ, বক্সকালভার্ট (ইউড্রেন) নির্মাণ, আরসিসি ঢালাই, প্যালাসাইডিং নির্মাণ, ফুটপাথ তৈরি, সিসি ব্লক ইত্যাদি কাজের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ মন্ডল বলেন, সড়কই নেই; আবার মহাসড়ক! এখন গাড়ি চলে না। ভারী যানবাহন আসে না। রাস্তা ভেঙে পুকুর হয়ে গেছে। বর্ষা মৌসুমে এ সড়কে যানবাহনে চলাচল করাই যাচ্ছে না। বড় বড় গর্তের কারণ সিএনজি আর অটোরিকশা চলাচল করা কষ্টকর। একেকস্থানে ভেঙে এখন সড়ক খাল আর পুকুর হয়ে গেছে। এভাবে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে উন্নয়ন কার্যক্রম চলতে পারে না।

এলাকাবাসীর অভিযোগ রাস্তা নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের মাটি-বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। বালির গুনগত মানও ভালো নয়। সাদা রঙের মরা (হালকা) পাথরও ব্যবহার করা চলছে। মহাসড়কটি নতুনভাবে নির্মাণের বিধান থাকলেও অধিকাংশস্থানে পুরাতন সড়কের উপরের অংশ ভেঙে সেই পুরাতন পাথর ও সুরকি ব্যবহার করে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে।

সরজমিনে দেখা যায়, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক থেকে গাজীপুরের প্রবেশপত্রে আরসিসি সড়ক নির্মাণ করা হলেও পানি নিষ্কাষনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে পুরো এলাকা প্লাবিত হয়।

জলাবদ্ধতার কারণে দোকানপাঁ বন্ধ হয়ে যায়। শুকনা মৌসুমে খানা-খন্দকে বাতাসে উড়ে ধুলোবালি। গাজীপুরের মোড় অতিক্রম করার পরেই দু’পাশে পুকুর থাকায় যানবাহন চলাচল চরমভাবে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। লেবুর মোড় এলাকায় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ডৌহাখলা উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে রাস্তার বর্ধিত অংশের বক্স কাটা হলেও বিলম্বের কারণে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। রামনগর এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জানান, ধুলাবালির কারণে রাস্তার দু’পাশের বাড়িঘরে থাকা কষ্টকর। দোকানও খোলা যায় না। মাঝেমধ্যে রাস্তা পানি দেয়া হয়। তবে নিয়মিত পানি না দেয়ায় এ দুর্ভোগ বেড়েছে। ঈশ^রগঞ্জ সড়ক উপবিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুস সালাম জানান, কয়েকটি স্থানে স্থানীয় লোকজনের বাঁধা দেয়ায় কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। রাস্তায় নিয়মিত পানি দেয়া ও জনদুর্ভোগ যেনো না হয় সে বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

অপরদিকে বালিহাটা আল আকসা জামে মসজিদের সামনে দীর্ঘসড়কে খোঁড়াখুড়ি করে রাখা হয়েছে। একপাশে গর্ত অন্যপাশে সড়কে ভাঙন। ধুলোবালি মসিজদের রঙও বদরে দিয়েছে। ঈশ^রগঞ্জের উচাখিলা ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ ব্রিজের কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অসমাপ্ত ব্রিজে হাঁসের খামার করতেও দেখা যায়। ব্রিজের রডেও জং ধরেছে। মেয়াদ শেষ হলেও বর্তমান কাজ চলছে ধীরগতিতে। বিশাল ব্রিজ নির্মাণ এলাকায় ৫/৬ জন শ্রমিকের দেখা মিলে।

কিশোরগঞ্জের জিরানী এলাকায় একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ অসমাপ্ত। রাস্তার দু’পাশে প্রায় একবছর আগে বক্সকেটে মাটি ভরাট করা হলেও সেই মাটিতে দুর্বাঘাস আর আগাছা জন্ম নিয়েছে। অসমাপ্ত সড়কে পানি দিতেও দেখেনি কেউ। ফলে ধুলাবালির রাজস্ব সড়ক জুড়ে।

মইশকুড়া আর বিরাশি’র সীমান্তবর্তী এলাকায়ও সড়কের আঁকাবাঁকা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মইশকুড়া গ্রামের আবুল হোসেন (৫৫) বলেন, এখন গাড়ি কম চলছে। এক সময় গাড়ি বাড়বে। এতো বাঁকা সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করলে ব্রহ্মছেলে নদে গিয়ে গাড়ি পড়বে। হোসেনপুরের বরি কাটালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’পাশের সড়কও দীর্ঘদিন যাবত অবহেলিতভাবে পড়ে রয়েছে। কোথাও মাটির উঁচু ঢিবি, কোথাও ঢিবিতে ঘাস জন্মাচ্ছে। ভাংগা-চোরা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। হাজীপুর বাজারে একপাশে আরসিসি আর অন্যপাশে বক্সকেটে রাখায় দোকানীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, ৩১ ডিসেম্বর ছিল একনেকে পাশকৃত এ প্রকল্পের মূল সময়সীমা। আমরা দেড়বছর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব পাঠিয়েছি যা আমাদের দপ্তর থেকে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। এ সড়কের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ। অধিগ্রহণ সংক্রান্ত ১০এলএ মোকদ্দমা রয়েছে। এরমধ্যে ২টি কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে আর ৮টি ময়মনসিংহে। এগুলো শেষ হলে কাজ করতে সর্বোচ্চ একবছর সময় লাগতে পারে।

back to top