ভালুকা (ময়নসিংহ) : ধামশুর গ্রামে সিংড়া বিলে সরকারি খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ -সংবাদ
ভালুকার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের ধামশুর গ্রাম দিয়ে উজানের ৫ গ্রামের পানি নিষ্কাশনের সিংড়া বিলের শতবর্ষী খালটি মাটি ফেলে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতায় বোরো ধান নষ্টের আশংকা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা জানান প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় ওই বিলের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত সিংড়ার খালটি সানি ফিড নামে একটি ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ মাটি দিয়ে ভরাট করে ওই স্থানে সানি ফিডের শেড নির্মাণ করেন। কতিপয় কৃষকের আবাদী বোরো জমি ক্রয় করে ওই সব জমিতে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়কের সানির মোড় হতে মামারিশপুর সড়কের সিংড়া খালের উপর অনুমান ৩০/৪০ ফুট দৈর্ঘের পাকা সেতুটি গুরুত্বহীন হয়ে পরবে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। বুধবার সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ধামশুর সিংড়া ব্রীজের উত্তরে বিলের মাঝখানে মাটি ফেলে এস্কেভেটর দিয়ে ভরাট কাজ চলছে। কয়েক বছর আগেও শুকনো মৌসুমে এখানে দিগন্তজোরা বোরো ধানের ক্ষেত ছিল। বৈশাখ জৈষ্ঠ মাসে বোরো ধান ঘরে তোলার পর বর্ষায় অথৈ পানিতে ভরে সিংড়া বিলের চারপাশ প্রকৃতির রুপরসে পরিপুর্ণ হয়ে থাকত। জল ফসলের সিংড়া বিলের শীতল বুকে এখন ধুলি উড়া কঠিন মাটির স্তর। ধামশুর গ্রামের আহেদ আলীসেখ জানান তিনি ১৫ কাঠা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন ফ্যাক্টরীর মাটি ভরাটের কারনে শত বছরের খালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে কোন সময় মৌসুমী বৃষ্টি হলে তাদের বোরো ধানের ক্ষেত পানির নীচে তলিয়ে যাবে। এতে তারা বোরো ধান ঘরে তুলতে পারবেন না। একি গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া জানান সিংড়া বিলের সরকারী খাল ও হালটের জমি ভরাটের কারনে উজানের প্রায় শতাধিক কৃষকের বোরো ফসল হুমকির মুখে পরবে। বর্ষা শুরু হলে খালের মুখে নতুন পানিতে এলাকার লোকাজন চার কাঠির ধর্মজাল দিয়ে মাছ ধরায় মেতে উঠতো। জালের কাঠি ও মাচা গুলি খালের মুখে স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। তিনি জানান উজানের হাজির বাজার, মামারিশপুর,ধামশুর ও গাদুমিয়া এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের বর্ষার অতি বর্ষণের পানি সিংড়া ব্রীজের নীচ দিয়ে সিংড়া খাল হয়ে ভালুকার খীরু নদীতে নামায় জলাবদ্ধতা হতে কৃষকের বোরো ধান রক্ষা পেতো। খালের উপর ব্রীজটি বিদ্যমান থাকলেও ব্রীজের উত্তরে ধানি জমি সহ খাল ভরাট হওয়ায় উজানের পানি নামার পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে কৃষকরা জানান। ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ বিলের পশ্চিম কিনার ধরে একটি সরু খালের মত রাখলেও তাতে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন হবেনা বলে কৃষকদের দাবী। কৃষকদের দাবী ওই বিলে মাটি ভরাট করে বন্ধ হওয়া পূর্বের খালটি ভূমি প্রশাসনের মাধ্যমে সঠিক তদন্ত পূর্বক পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা নিবেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্য সচিব কামরুল হাসান পাঠান কামাল জানান গত কয়েক বছরে ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল বিল সহ অনেক জলাশয় ভরাট হয়েছে যা এখনও অব্যাহত আছে। ধামশুর গ্রামে সিংড়া বিলের খালটি ওই এলাকার পানি প্রবাহের একমাত্র গতিপথ। দীর্ঘদিন যাবৎ একটি ফ্যক্টরী কর্তৃক ও খালসহ বিলের ফসলী জমি ভরাট কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে উজানে জলাবদ্ধতাসহ শত শত কৃষকের বোরো ধান নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। জলাশয় অইন সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদারকি না থাকায় এক শ্রেণীর মধ্যসত্বভোগিদের সহায়তায় প্রভাবশালীরা ইচ্ছেমত জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করে চলেছে। নির্বিচারে ফসলি জমি খাল বিল জলাধার ভরাটের কারনে একসময় প্রকৃতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে যার প্রভাব জীব বৈচিত্রের উপর। এ সবের প্রতিবাদে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
ভালুকা (ময়নসিংহ) : ধামশুর গ্রামে সিংড়া বিলে সরকারি খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫
ভালুকার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের ধামশুর গ্রাম দিয়ে উজানের ৫ গ্রামের পানি নিষ্কাশনের সিংড়া বিলের শতবর্ষী খালটি মাটি ফেলে ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতায় বোরো ধান নষ্টের আশংকা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা জানান প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় ওই বিলের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত সিংড়ার খালটি সানি ফিড নামে একটি ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ মাটি দিয়ে ভরাট করে ওই স্থানে সানি ফিডের শেড নির্মাণ করেন। কতিপয় কৃষকের আবাদী বোরো জমি ক্রয় করে ওই সব জমিতে মাটি ফেলে ভরাট করা হয়েছে। ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়কের সানির মোড় হতে মামারিশপুর সড়কের সিংড়া খালের উপর অনুমান ৩০/৪০ ফুট দৈর্ঘের পাকা সেতুটি গুরুত্বহীন হয়ে পরবে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। বুধবার সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, ধামশুর সিংড়া ব্রীজের উত্তরে বিলের মাঝখানে মাটি ফেলে এস্কেভেটর দিয়ে ভরাট কাজ চলছে। কয়েক বছর আগেও শুকনো মৌসুমে এখানে দিগন্তজোরা বোরো ধানের ক্ষেত ছিল। বৈশাখ জৈষ্ঠ মাসে বোরো ধান ঘরে তোলার পর বর্ষায় অথৈ পানিতে ভরে সিংড়া বিলের চারপাশ প্রকৃতির রুপরসে পরিপুর্ণ হয়ে থাকত। জল ফসলের সিংড়া বিলের শীতল বুকে এখন ধুলি উড়া কঠিন মাটির স্তর। ধামশুর গ্রামের আহেদ আলীসেখ জানান তিনি ১৫ কাঠা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন ফ্যাক্টরীর মাটি ভরাটের কারনে শত বছরের খালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে কোন সময় মৌসুমী বৃষ্টি হলে তাদের বোরো ধানের ক্ষেত পানির নীচে তলিয়ে যাবে। এতে তারা বোরো ধান ঘরে তুলতে পারবেন না। একি গ্রামের কৃষক দুলাল মিয়া জানান সিংড়া বিলের সরকারী খাল ও হালটের জমি ভরাটের কারনে উজানের প্রায় শতাধিক কৃষকের বোরো ফসল হুমকির মুখে পরবে। বর্ষা শুরু হলে খালের মুখে নতুন পানিতে এলাকার লোকাজন চার কাঠির ধর্মজাল দিয়ে মাছ ধরায় মেতে উঠতো। জালের কাঠি ও মাচা গুলি খালের মুখে স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। তিনি জানান উজানের হাজির বাজার, মামারিশপুর,ধামশুর ও গাদুমিয়া এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের বর্ষার অতি বর্ষণের পানি সিংড়া ব্রীজের নীচ দিয়ে সিংড়া খাল হয়ে ভালুকার খীরু নদীতে নামায় জলাবদ্ধতা হতে কৃষকের বোরো ধান রক্ষা পেতো। খালের উপর ব্রীজটি বিদ্যমান থাকলেও ব্রীজের উত্তরে ধানি জমি সহ খাল ভরাট হওয়ায় উজানের পানি নামার পথ বন্ধ হয়ে গেছে বলে কৃষকরা জানান। ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ বিলের পশ্চিম কিনার ধরে একটি সরু খালের মত রাখলেও তাতে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন হবেনা বলে কৃষকদের দাবী। কৃষকদের দাবী ওই বিলে মাটি ভরাট করে বন্ধ হওয়া পূর্বের খালটি ভূমি প্রশাসনের মাধ্যমে সঠিক তদন্ত পূর্বক পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা নিবেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার সদস্য সচিব কামরুল হাসান পাঠান কামাল জানান গত কয়েক বছরে ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল বিল সহ অনেক জলাশয় ভরাট হয়েছে যা এখনও অব্যাহত আছে। ধামশুর গ্রামে সিংড়া বিলের খালটি ওই এলাকার পানি প্রবাহের একমাত্র গতিপথ। দীর্ঘদিন যাবৎ একটি ফ্যক্টরী কর্তৃক ও খালসহ বিলের ফসলী জমি ভরাট কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে উজানে জলাবদ্ধতাসহ শত শত কৃষকের বোরো ধান নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। জলাশয় অইন সংশ্লিষ্ট বিভাগের তদারকি না থাকায় এক শ্রেণীর মধ্যসত্বভোগিদের সহায়তায় প্রভাবশালীরা ইচ্ছেমত জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করে চলেছে। নির্বিচারে ফসলি জমি খাল বিল জলাধার ভরাটের কারনে একসময় প্রকৃতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে যার প্রভাব জীব বৈচিত্রের উপর। এ সবের প্রতিবাদে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন কর্মসূচিসহ স্বারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।