চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে নিহত মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও মোহাম্মদ সালেক (৩৫) হত্যার আগে অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। নেজামের ছোড়া গুলিতেই চারজন আহত হন, এবং ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তলটি ছিল কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। রাউজানে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার মামলায় দুই আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি সাতকানিয়ার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন দলের পতনের পর চট্টগ্রাম নগরের আটটি থানা ও আটটি পুলিশ ফাঁড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৮১৩টি অস্ত্র ও ৪৪ হাজার ৩২৪টি গুলি লুট হয়ে যায়, যার বেশিরভাগই এখনও উদ্ধার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, “গণপিটুনির ঘটনার সময় যে পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র। এটি কীভাবে নেজামের হাতে এল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “নেজাম ও সালেক এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরা নিয়মিত স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভয় দেখাতেন। চার-পাঁচ দিন আগেও তাঁরা এক ইউপি সদস্যের স্ত্রীকে মারধর করেছিলেন, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাতের ঘোষণা দেওয়া হলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হন। এরপর গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন নেজাম ও সালেক।
পুলিশ বলছে, “নেজাম সেদিন অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি চালান, যা স্থানীয়দের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে।”
এই ঘটনায় স্থানীয় এক দোকানিসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন নিহতদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোছেন দাবি করেন, “নেজাম ও সালেক জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁদের সালিস বৈঠকের কথা বলে ডেকে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
তবে জামায়াতের উপজেলা আমির মাওলানা কামাল উদ্দিন জানান, “তাঁরা দলের তালিকাভুক্ত কর্মী নন, তবে যেহেতু সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় জামায়াতের জনসমর্থন বেশি, হয়তো তাঁরা জামায়াতকে ভালোবাসতেন।”
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, “গণপিটুনির ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিশেষ কোনো দলের চেয়ারম্যান বা নেতার উপস্থিতিও ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “এটি স্থানীয় বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা। প্রশাসন যে নীরব, তা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। প্রকৃত সত্য উদঘাটনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত সালেকের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা ও বিস্ফোরকসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে, আর নেজামের বিরুদ্ধে রয়েছে একটি মামলা।
এই ঘটনায় গণপিটুনিতে জড়িতদের শনাক্ত ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য তদন্ত চলছে। পুলিশ বলছে, “অস্ত্র কাদের হাতে গেছে, তা বের করতে আরও সময় লাগবে।”
প্রশাসন জানিয়েছে, গণপিটুনিতে যারা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। একইসঙ্গে, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে।
বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে নিহত মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও মোহাম্মদ সালেক (৩৫) হত্যার আগে অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। নেজামের ছোড়া গুলিতেই চারজন আহত হন, এবং ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তলটি ছিল কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। রাউজানে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার মামলায় দুই আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি সাতকানিয়ার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন দলের পতনের পর চট্টগ্রাম নগরের আটটি থানা ও আটটি পুলিশ ফাঁড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় ৮১৩টি অস্ত্র ও ৪৪ হাজার ৩২৪টি গুলি লুট হয়ে যায়, যার বেশিরভাগই এখনও উদ্ধার হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, “গণপিটুনির ঘটনার সময় যে পিস্তলটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র। এটি কীভাবে নেজামের হাতে এল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, “নেজাম ও সালেক এলাকায় আধিপত্য বিস্তার এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরা নিয়মিত স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ভয় দেখাতেন। চার-পাঁচ দিন আগেও তাঁরা এক ইউপি সদস্যের স্ত্রীকে মারধর করেছিলেন, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে।
সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাতের ঘোষণা দেওয়া হলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হন। এরপর গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন নেজাম ও সালেক।
পুলিশ বলছে, “নেজাম সেদিন অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি চালান, যা স্থানীয়দের আরও ক্ষুব্ধ করে তোলে।”
এই ঘটনায় স্থানীয় এক দোকানিসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন নিহতদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোছেন দাবি করেন, “নেজাম ও সালেক জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁদের সালিস বৈঠকের কথা বলে ডেকে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।”
তবে জামায়াতের উপজেলা আমির মাওলানা কামাল উদ্দিন জানান, “তাঁরা দলের তালিকাভুক্ত কর্মী নন, তবে যেহেতু সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় জামায়াতের জনসমর্থন বেশি, হয়তো তাঁরা জামায়াতকে ভালোবাসতেন।”
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, “গণপিটুনির ঘটনায় কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিশেষ কোনো দলের চেয়ারম্যান বা নেতার উপস্থিতিও ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “এটি স্থানীয় বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা। প্রশাসন যে নীরব, তা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। প্রকৃত সত্য উদঘাটনে যা কিছু প্রয়োজন, তা করা হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত সালেকের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা ও বিস্ফোরকসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে, আর নেজামের বিরুদ্ধে রয়েছে একটি মামলা।
এই ঘটনায় গণপিটুনিতে জড়িতদের শনাক্ত ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য তদন্ত চলছে। পুলিশ বলছে, “অস্ত্র কাদের হাতে গেছে, তা বের করতে আরও সময় লাগবে।”
প্রশাসন জানিয়েছে, গণপিটুনিতে যারা প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। একইসঙ্গে, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত হবে।