চকরিয়া (কক্সবাজার) : শিক্ষক সংকটে শিক্ষা ব্যাহত -সংবাদ
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ছিটমহল খ্যাত পাহাড়ি জনপদের দুর্গম ইউনিয়ন বমুবিলছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চরম শিক্ষক সংকট চলছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নিরিবিচ্ছন্ন পাঠদান কার্যক্রম। এই অবস্থার কারণে সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে চরম উদ্বেগ আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় অভিভাবকমহল।
একাধিক অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধোরে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কবলে পড়ে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে পাঠদানের ক্ষেত্রে কর্মরত অল্প শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অভিভাবক মহল।
এ অবস্থায় সম্প্রতি সময়ে সরকারিভাবে ৩য় ধাপের নিয়োগ দেয়া শিক্ষকদের পিছিয়েপড়া জনপদ বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পোস্টিং দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন অভিভাবক মহল।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, সরকারি ভাবে প্রতিবার শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে নানামুখী অনিয়মের কারণে সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় না। আবার অনেকে বদলি হলেও উপজেলা সদর থেকে দূরের জনপদ হওয়ায় বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে কেউ আসতে চায় না। এমন পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার কাক্সিক্ষত সুফল থেকে যুগের পর যুগ ধরে বঞ্চিত হচ্ছে। এই অবস্থায় এলাকাবাসি ও অভিভাবক মহল পাহাড়ি জনপদের বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক পোস্টিং দিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে সরেজমিনে দেখা যায়, বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে চারটি। এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অনুমোদিত শিক্ষক পদ আছে ২৬টি। তদস্থলে বর্তমান সেখানে কর্মরত রয়েছেন মোট ১১ জন শিক্ষক। তার মধ্যে শুধু প্রধান শিক্ষক আছে একটি বিদ্যালয়ে। অপর তিনটি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এভাবে কোনোমতে চলছে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম। চারটি বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ বর্তমানে ১৫ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অধিদফতর সুত্রে জানা গেছে, বমু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৮টি, কর্মরত শিক্ষক আছেন ২ জন, ৬ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
একইভাবে বিলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষকের পদ ৮টির বিপরীতে কর্মরত আছেন শিক্ষক ৫ জন, শূন্য রয়েছে তিনজন শিক্ষকের পদ। ইউনিয়নের নাজমা ইয়াছমিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষক পদ ৫টি, কর্মরত রয়েছেন তিনজন শিক্ষক, শূন্যপদ রয়েছে দুজন শিক্ষকের। আলহাজ হাকিম আব্দুল গণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষকের ৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন একজন শিক্ষক, শূন্য রয়েছে চারজন শিক্ষকের পদ।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে এটা সত্য। কতৃপক্ষ সেখানে শিক্ষকদের পোস্টিং দিলেও তারা নানা ধরনের অজুহাত দেখিয়ে অন্য এলাকায় চলে যায়। তিনি বলেন, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি প্রতি মাসেই জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে প্রতিবেদন সহকারে জমা দেয়া হচ্ছে। আশা করি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সেখানে পোস্টিং দেয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসার স্যারকে জানানো হবে।
জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীন মিয়া বলেন, পাহাড়ি জনপদ বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে অনেক শিক্ষক পদ শূন্য হয়েছে বিষয়টি নজরে এসেছে। সামনে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পোস্টিং হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে শিক্ষক সংকট লাগবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চকরিয়া (কক্সবাজার) : শিক্ষক সংকটে শিক্ষা ব্যাহত -সংবাদ
রোববার, ০৯ মার্চ ২০২৫
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ছিটমহল খ্যাত পাহাড়ি জনপদের দুর্গম ইউনিয়ন বমুবিলছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চরম শিক্ষক সংকট চলছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নিরিবিচ্ছন্ন পাঠদান কার্যক্রম। এই অবস্থার কারণে সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে চরম উদ্বেগ আতঙ্কে ভুগছেন স্থানীয় অভিভাবকমহল।
একাধিক অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধোরে শিক্ষক স্বল্পতার কারণে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কবলে পড়ে বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে পাঠদানের ক্ষেত্রে কর্মরত অল্প শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অভিভাবক মহল।
এ অবস্থায় সম্প্রতি সময়ে সরকারিভাবে ৩য় ধাপের নিয়োগ দেয়া শিক্ষকদের পিছিয়েপড়া জনপদ বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পোস্টিং দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সচেতন অভিভাবক মহল।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, সরকারি ভাবে প্রতিবার শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে নানামুখী অনিয়মের কারণে সুবিধা বঞ্চিত এলাকায় নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় না। আবার অনেকে বদলি হলেও উপজেলা সদর থেকে দূরের জনপদ হওয়ায় বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে কেউ আসতে চায় না। এমন পরিস্থিতিতে পিছিয়ে পড়া সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার কাক্সিক্ষত সুফল থেকে যুগের পর যুগ ধরে বঞ্চিত হচ্ছে। এই অবস্থায় এলাকাবাসি ও অভিভাবক মহল পাহাড়ি জনপদের বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত শিক্ষক পোস্টিং দিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে সরেজমিনে দেখা যায়, বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে চারটি। এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ অনুমোদিত শিক্ষক পদ আছে ২৬টি। তদস্থলে বর্তমান সেখানে কর্মরত রয়েছেন মোট ১১ জন শিক্ষক। তার মধ্যে শুধু প্রধান শিক্ষক আছে একটি বিদ্যালয়ে। অপর তিনটি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এভাবে কোনোমতে চলছে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম। চারটি বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ বর্তমানে ১৫ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। চকরিয়া উপজেলা শিক্ষা অধিদফতর সুত্রে জানা গেছে, বমু সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৮টি, কর্মরত শিক্ষক আছেন ২ জন, ৬ জন শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
একইভাবে বিলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষকের পদ ৮টির বিপরীতে কর্মরত আছেন শিক্ষক ৫ জন, শূন্য রয়েছে তিনজন শিক্ষকের পদ। ইউনিয়নের নাজমা ইয়াছমিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষক পদ ৫টি, কর্মরত রয়েছেন তিনজন শিক্ষক, শূন্যপদ রয়েছে দুজন শিক্ষকের। আলহাজ হাকিম আব্দুল গণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুমোদিত শিক্ষকের ৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন একজন শিক্ষক, শূন্য রয়েছে চারজন শিক্ষকের পদ।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মহিউদ্দিন মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে এটা সত্য। কতৃপক্ষ সেখানে শিক্ষকদের পোস্টিং দিলেও তারা নানা ধরনের অজুহাত দেখিয়ে অন্য এলাকায় চলে যায়। তিনি বলেন, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি প্রতি মাসেই জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে প্রতিবেদন সহকারে জমা দেয়া হচ্ছে। আশা করি নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সেখানে পোস্টিং দেয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসার স্যারকে জানানো হবে।
জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহীন মিয়া বলেন, পাহাড়ি জনপদ বমুবিলছড়ি ইউনিয়নে অনেক শিক্ষক পদ শূন্য হয়েছে বিষয়টি নজরে এসেছে। সামনে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পোস্টিং হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে শিক্ষক সংকট লাগবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।