নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় মাদরাসাপড়ুয়া ১৪ বছর বয়সী কিশোরীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তি ভুক্তভোগী কিশোরীর পালক পিতা বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রোববার রাত সোয়া বারোটার দিকে বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের দু’টি ধারায় মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর পালক মা।

এর আগে শনিবার রাতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে (৪০) আটক করে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী। মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মামলার এজাহার ও প্রাথমিক তদন্তের বরাতে ওসি বলেন, ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা-মা সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাদের সাথে ভুক্তভোগীর কোনো যোগাযোগ নেই। এক বছর বয়স থেকে ওই কিশোরীকে লালন-পালন করেন মামলার বাদী। স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়েন ভুক্তভোগী।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে ঘুমন্ত কিশোরীর ‘আপত্তিকর ও অশ্লীল’ ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। ওইদিন যৌন নিপীড়নেরও শিকার হন ভুক্তভোগী। গত ২ মার্চ সকালে ভুক্তভোগীকে ওই ভিডিও দেখায় অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দেয়। যদিও সন্ধ্যায় তার মা কর্মস্থল থেকে বাড়িতে ফিরলে তাকে সব জানায়।

“পালক মা বিষয়টি জানার পর স্বামীকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে সে বিভিন্নভাবে অনুনয়-বিনয় করলে আইনি প্রক্রিয়ার দিকে আর যায়নি ভুক্তভোগী পরিবারটি। কিন্তু ওই কিশোরী এ বিষয়টি প্রতিবেশী একজনকে জানালে তার মাধ্যমে আশোপাশের লোকজন জানতে পারেন। পরে গত শনিবার রাতে লোকজন জড়ো হয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মারধর করে পুলিশে দেয়”, বলেন পুলিশ কর্মকর্তা তরিকুল।

এদিকে, গতরাতে স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক অবস্থায় এক ভিডিওতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “আমি অন্যায় করছি। আমার উপর তখন শয়তান ভর করছিল।”

বন্দর থানার ওসি তরিকুল আরও জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৪ ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। মামলার পর রোববার দুপুরে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় এবং ভুক্তভোগী কিশোরীর ২২ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।