নাজিরপুর (পিরোজপুর) : উপজেলার দেউলবাড়ি এলাকার ইদুরে ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেত -সংবাদ
পিরোজপুরের নাজিরপুরে অনুকূল আবহাওয়া ও যতত্নশীল পরিচর্যায় বোরো ধানের খেত সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠেছে। তবে আমন মৌসুমে আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের ওপর ভরসা করছিলেন। কিন্তু ধানক্ষেতে ইঁদুরের ভয়াবহ উপদ্রব তাদের স্বপ্ন ভেঙে দিচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বোরো ধানক্ষেতেই ইঁদুরের তা-ব চলছে। কৃষকেরা নানান কৌশল ঝান্ডা, কাকতাড়ুয়া, ফাঁদ ব্যবহার করেও ইঁদুরের হাত থেকে ধান রক্ষা করতে পারছেন না। এমনকি অনেকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ ব্যবহার করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
শেখমাটিয়া, শ্রীরামকাঠি ও মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত আমন মৌসুমে ইঁদুরের উৎপাত দেখা গেলেও এবার বোরো মৌসুমেও তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই ইঁদুরগুলো সাধারণ ইঁদুরের চেয়ে আকারে বড়, দেশি বিড়ালের মতো দেখতে এবং দ্রুতগতির। এগুলো দিনের বেলা ডোবা, ঝোপঝাড় ও গাছে লুকিয়ে থেকে রাতের বেলা ধানক্ষেতে হানা দেয়।
সদর ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের কৃষক মোয়াজ্জেম শেখ বলেন, ‘ঝান্ডা, কাকতাড়ুয়া, ফাঁদ সবকিছুই ব্যবহার করছি, কিন্তু তাতেও ইঁদুর দমন করা যাচ্ছে না।’
শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের কৃষক মো. আব্দুল গফুর জানান, ‘ধানক্ষেত কাইচথোর হওয়ার পর থেকেই ইঁদুর কেটে সাবাড় করছে। কোনো উপায়েই ধান রক্ষা করতে পারছি না, এতে উৎপাদন অনেক কমে যাবে।’
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ইঁদুরের উপদ্রব তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকদের ধানক্ষেতের আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার, নিশান ও কাকতাড়ুয়া স্থাপন এবং জমিতে গ্যাসবোম প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে কৃষকেরা কার্যকর কোনো সমাধান না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইশরাতুন্নেছা এশা জানান, ইঁদুর একটি ন্যাচারাল প্রাণী। এক জোড়া ইঁদুর বছরের ৩ হাজারের বেশি বাচ্চা দেয়। তাই ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ায় এদেরকে দমন করা খুবই কঠিন। এদেরকে প্রাকৃতিকভাবে দমন করার জন্য বোরো চাষীদের পরামর্শ দেই। সে ক্ষেত্রে গুইসাপ, বন বিড়াল, শকুন, ঈগল, পেঁচা এদের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে এবং চাষাবাদে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে হবে। এরপরেও আমরা কৃষকদের ইঁদুর দমনে লেনির্যাট ফসটকসীন রসায়নিক ওষুধ ব্যবহার করতে বলি। এছাড়াও ইঁদুরের গর্তে ধোয়া ব্যবহার করাসহ ইঁদুর মারার বিভিন্ন বৈধ ফাঁদ ব্যবহারের পরামর্শ দেই।
নাজিরপুর (পিরোজপুর) : উপজেলার দেউলবাড়ি এলাকার ইদুরে ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেত -সংবাদ
সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
পিরোজপুরের নাজিরপুরে অনুকূল আবহাওয়া ও যতত্নশীল পরিচর্যায় বোরো ধানের খেত সবুজ ও সতেজ হয়ে উঠেছে। তবে আমন মৌসুমে আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের ওপর ভরসা করছিলেন। কিন্তু ধানক্ষেতে ইঁদুরের ভয়াবহ উপদ্রব তাদের স্বপ্ন ভেঙে দিচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বোরো ধানক্ষেতেই ইঁদুরের তা-ব চলছে। কৃষকেরা নানান কৌশল ঝান্ডা, কাকতাড়ুয়া, ফাঁদ ব্যবহার করেও ইঁদুরের হাত থেকে ধান রক্ষা করতে পারছেন না। এমনকি অনেকে বৈদ্যুতিক ফাঁদ ব্যবহার করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
শেখমাটিয়া, শ্রীরামকাঠি ও মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত আমন মৌসুমে ইঁদুরের উৎপাত দেখা গেলেও এবার বোরো মৌসুমেও তা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই ইঁদুরগুলো সাধারণ ইঁদুরের চেয়ে আকারে বড়, দেশি বিড়ালের মতো দেখতে এবং দ্রুতগতির। এগুলো দিনের বেলা ডোবা, ঝোপঝাড় ও গাছে লুকিয়ে থেকে রাতের বেলা ধানক্ষেতে হানা দেয়।
সদর ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের কৃষক মোয়াজ্জেম শেখ বলেন, ‘ঝান্ডা, কাকতাড়ুয়া, ফাঁদ সবকিছুই ব্যবহার করছি, কিন্তু তাতেও ইঁদুর দমন করা যাচ্ছে না।’
শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের কৃষক মো. আব্দুল গফুর জানান, ‘ধানক্ষেত কাইচথোর হওয়ার পর থেকেই ইঁদুর কেটে সাবাড় করছে। কোনো উপায়েই ধান রক্ষা করতে পারছি না, এতে উৎপাদন অনেক কমে যাবে।’
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ইঁদুরের উপদ্রব তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকদের ধানক্ষেতের আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার, নিশান ও কাকতাড়ুয়া স্থাপন এবং জমিতে গ্যাসবোম প্রয়োগের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে কৃষকেরা কার্যকর কোনো সমাধান না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইশরাতুন্নেছা এশা জানান, ইঁদুর একটি ন্যাচারাল প্রাণী। এক জোড়া ইঁদুর বছরের ৩ হাজারের বেশি বাচ্চা দেয়। তাই ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ায় এদেরকে দমন করা খুবই কঠিন। এদেরকে প্রাকৃতিকভাবে দমন করার জন্য বোরো চাষীদের পরামর্শ দেই। সে ক্ষেত্রে গুইসাপ, বন বিড়াল, শকুন, ঈগল, পেঁচা এদের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে এবং চাষাবাদে কীটনাশকের ব্যবহার কমাতে হবে। এরপরেও আমরা কৃষকদের ইঁদুর দমনে লেনির্যাট ফসটকসীন রসায়নিক ওষুধ ব্যবহার করতে বলি। এছাড়াও ইঁদুরের গর্তে ধোয়া ব্যবহার করাসহ ইঁদুর মারার বিভিন্ন বৈধ ফাঁদ ব্যবহারের পরামর্শ দেই।