alt

সারাদেশ

পলাশে মাছ কেটে সংসার চলে শতাধিক পরিবারের

এস কে দেবনাথ সমীর,পলাশ (নরসিংদী) : সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

এমন বাঙালি পাওয়া যাবেনা মাছ খেতে পছন্দ করেনা। মাছ খেতে হলেই কাটতে হয়। এই কাটাকুটি বিষয়টি অনেকের কাছে বিরক্তিকর। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে মাছকাটাকে জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে অনেকে। এমন কিছু লোক পলাশেও আছে। কেউ কেউ এটাকে বাড়তি উপার্জনও হিসেবে নিয়েছেন।

পলাশে ছোটবড় বাজারের সংখ্যা ২২টি। এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি।

প্রতিটি বাজারের মাছ বাজারের পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায় মাছ কাটুনীদের। ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে, পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দেয়। কাটনীরা বড়মাছ প্রতি কেজি ২০টাকা, ছোটমাছ প্রতিকেজি ৫০-৬০টাকা নিয়ে থাকে।

সরেজমিনে বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বাজারেই ৭/৮জন তাদের হেল্পারসহ মাছ কাটুনী রয়েছে। বাজারগুলোতে সকাল ৪/৫ ঘন্টা বিকেলের বাজারে ৫/৬ ঘন্টা তারা মাছ কাটে। পলাশ- ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চল থাকায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি।

পলাশের বাজারগুলোতে অনেকদিন ধরে মাছ কাটছে হরিদাস দাস, লিটন দাস,আয়ান মিয়া। হরিদাস জানায়, আমরা যারা সকাল বিকেল মাছ কাটি প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত হতে হাজার টাকা ইনকাম করি। সংসারও ভালই চলে।

অনেক বেকার ছেলে আগে কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়ে। তারাও ভাল আয় করছে। ঘোড়াশাল বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। জানা যায় এই দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা। ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়।

এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে। সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা।

পঞ্চাশোর্ধ মাছ কাটুনী এক মহিলা আগে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করতো। টাকা জমিয়ে একটি ধারালো বটি কিনে সে মাছ কাটার কাজে নেমে পড়েন। এখন মাছ কেটে স্বাবলম্বী। প্রায় চার বছর সে এই পেশায় নিয়োজিত।

শুধুই মাছ কাটা নয়,মাছ কাটার পর মাছে আঁশ জমিয়ে শুকিয়ে বিক্রি করেও টাকা আয় করছে তারা।

এই পেশায় আয় কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছ কাটলে তার আয় হয় ৪০০-৫০০টাকা। রাত পর্যন্ত করলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। তবে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকার কারণে মাছের চাহিদা বেশি থাকে। চাকুরীজীবীরা এসে বাজার থেকে বেশি বেশি মাছ কেটে বাড়ি নিয়ে যান। এদিন একটু আয় ভালো হয়।

ঘোড়াশাল বাজারে মাছ কাটাচ্ছিলেন এলাকার এক গৃহিণী। তিনি বললেন, বর্তমানে সন্তানদের লেখাপড়া, স্কুল, কোচিংসহ সংসারের অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপর আবার রান্নাবান্নার কাজ করতে হয়। তাই মাছ কাটার তেমন সময় হয় না। বাড়তি ২০-৩০ টাকা খরচ হলেও সময় অল্প লাগে, ঝামেলা থেকেও বেঁচে যাই। পাইকসা গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, এখন তো টাকা দিয়েও কাজের মানুষ পাওয়া যায় না। তাই সময় বাঁচাতে বাজার থেকে কেনা মাছগুলো কেটে নিয়ে যাই। বরং তারা না থাকলে অনেক বড় ছোট মাছ খাওয়াই হতো না।

ঘোড়াশাল বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারি বলেন, মাছ কেটেও যে সংসার চালানো যায় এটা একটা সংসার চালানোর এক নতুন উদ্যোগ। তবে আমরা ক্রেতারাও তাদের জন্য উপকৃত হচ্ছি। কারণ অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করে, এতে তাদের সময়টা বেঁচে যায়।

ছবি

৭টি ইউনিটই বন্ধ, উৎপাদনে ফিরতে গ্যাস চায় ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র

ছবি

আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ত্রিপুরায় পৌঁছাল ৬০ কার্টন হাঁড়িভাঙ্গা আম

ছবি

টানা বৃষ্টিতে বেগমগঞ্জে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগ

দৌলতপুরে একই ক্লিনিকে এক মাসে দুই প্রসূতির মৃত্যু : ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা

বিএনপি সমর্থিত ড্যাবের নির্বাচন নিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে মতবিনিময়

ফকিরহাটে হ্যামকো কোম্পানির কারখানায় ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৯ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার

জুলাই শহীদদের স্মরণে সিরাজগঞ্জে স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন

চান্দিনা পৌরসভার বাজেট ঘোষণা

বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক

চট্টগ্রামে খাবারে তেলাপোকা, জরিমানা গুনল ৩ হোটেল

ছবি

বোয়ালখালীতে আমনের বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত কৃষক

ডুমুরিয়ার বাজারে বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম

দোহারে ডাকাতি মামলায় আটক ৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৪ খুনের মামলায় আরসা প্রধান আতাউল্লাহ রিমান্ডে

ছবি

খাগড়াছড়িতে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ, দীঘিনালা-লংগদু সড়কে যান চলাচল বন্ধ

ছবি

নদের পাড় কেটে নৌকার উপর শত শত জিও ব্যাগ ভর্তি

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহতের বাড়িতে এনসিপি নেতারা

ছবি

পূর্বধলায় গাছের চারা বিতরণ

মুন্সীগঞ্জে পরিত্যক্ত কক্ষে যুবকের মরদেহ

ছবি

বোয়ালখালীতে ব্যক্তি উদ্যোগে রাস্তা সংস্কার

ঝর্ণা দেখতে গিয়ে আটকে পড়া ৮ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করল পুলিশ

সীমান্ত দিয়ে নারীসহ সাতজনকে পুশইন

মাদারগঞ্জ সড়কে আহত ৩, পা বিছিন্ন ১

মাওয়ায় স্পিডবোট ট্রলার সংঘর্ষের ৬ দিন পর নিখোঁজ যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

আষাঢ় ঘনালেই জেগে ওঠে পদ্মা তীরের জেলেপাড়া

পীরগাছায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ আহত ৫০

ছবি

পরিবেশের ক্ষতিকর গাছের চারা ধ্বংস কার্যক্রমের উদ্বোধন

কেশবপুরে খালের জলকপাট ভেঙে লোকালয়ে পানি

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, আসামি ৫ হাজার

চাঁদপুরে অস্ত্রসহ ৬ কিশোর গ্রেপ্তার

ছবি

দুমকিতে অতি বৃষ্টিতে জনজীবনে ভোগান্তি

মোরেলগঞ্জে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবকে অব্যাহতি

চাঁদপুরে ৭ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

বাগেরহাটে এক পরিবারের ৮টি গরু চুরি

জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দোকান ভাঙচুর-লুটপাট

যমজ শিশুকে হত্যা করেছে মা নিজেই, আদালতে জবানবন্দি

tab

সারাদেশ

পলাশে মাছ কেটে সংসার চলে শতাধিক পরিবারের

এস কে দেবনাথ সমীর,পলাশ (নরসিংদী)

সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫

এমন বাঙালি পাওয়া যাবেনা মাছ খেতে পছন্দ করেনা। মাছ খেতে হলেই কাটতে হয়। এই কাটাকুটি বিষয়টি অনেকের কাছে বিরক্তিকর। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে মাছকাটাকে জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছে অনেকে। এমন কিছু লোক পলাশেও আছে। কেউ কেউ এটাকে বাড়তি উপার্জনও হিসেবে নিয়েছেন।

পলাশে ছোটবড় বাজারের সংখ্যা ২২টি। এর মধ্যে বড় বাজার ১৪টি।

প্রতিটি বাজারের মাছ বাজারের পাশে ধারালো বটি নিয়ে বসে মাছ কাটতে দেখা যায় মাছ কাটুনীদের। ক্রেতাদের ইচ্ছামত তারা মাছ কেটে, পরিষ্কার করে পলিথিন ব্যাগে ভরে দেয়। কাটনীরা বড়মাছ প্রতি কেজি ২০টাকা, ছোটমাছ প্রতিকেজি ৫০-৬০টাকা নিয়ে থাকে।

সরেজমিনে বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব বাজারেই ৭/৮জন তাদের হেল্পারসহ মাছ কাটুনী রয়েছে। বাজারগুলোতে সকাল ৪/৫ ঘন্টা বিকেলের বাজারে ৫/৬ ঘন্টা তারা মাছ কাটে। পলাশ- ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চল থাকায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেশি।

পলাশের বাজারগুলোতে অনেকদিন ধরে মাছ কাটছে হরিদাস দাস, লিটন দাস,আয়ান মিয়া। হরিদাস জানায়, আমরা যারা সকাল বিকেল মাছ কাটি প্রতিদিনই গড়ে ৬ শত হতে হাজার টাকা ইনকাম করি। সংসারও ভালই চলে।

অনেক বেকার ছেলে আগে কোন কাজ না পেয়ে মাছ কাটায় নেমে পড়ে। তারাও ভাল আয় করছে। ঘোড়াশাল বাজারে এক দম্পতি মাছ কাটে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহিলাকে তার স্বামী সাহায্য করে। জানা যায় এই দম্পতির আয় দৈনিক আটশত হতে বারশত টাকা। ভাগ্য ভালো হলে হাটের দুদিন ১৫০০ টাকাও হয়।

এই আয় দিয়েই তাদের সংসার ভালোই চলছে। সপ্তাহে ছুটির দিনগুলোতে বাজারে ক্রেতা বেশি থাকায় কিছুটা বাড়তি আয় হয়। তাই সপ্তাহের বন্ধের দিনের আশায় থাকেন তারা।

পঞ্চাশোর্ধ মাছ কাটুনী এক মহিলা আগে মানুষের বাসায় বাসায় কাজ করতো। টাকা জমিয়ে একটি ধারালো বটি কিনে সে মাছ কাটার কাজে নেমে পড়েন। এখন মাছ কেটে স্বাবলম্বী। প্রায় চার বছর সে এই পেশায় নিয়োজিত।

শুধুই মাছ কাটা নয়,মাছ কাটার পর মাছে আঁশ জমিয়ে শুকিয়ে বিক্রি করেও টাকা আয় করছে তারা।

এই পেশায় আয় কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাছ কাটলে তার আয় হয় ৪০০-৫০০টাকা। রাত পর্যন্ত করলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। তবে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকার কারণে মাছের চাহিদা বেশি থাকে। চাকুরীজীবীরা এসে বাজার থেকে বেশি বেশি মাছ কেটে বাড়ি নিয়ে যান। এদিন একটু আয় ভালো হয়।

ঘোড়াশাল বাজারে মাছ কাটাচ্ছিলেন এলাকার এক গৃহিণী। তিনি বললেন, বর্তমানে সন্তানদের লেখাপড়া, স্কুল, কোচিংসহ সংসারের অন্যান্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপর আবার রান্নাবান্নার কাজ করতে হয়। তাই মাছ কাটার তেমন সময় হয় না। বাড়তি ২০-৩০ টাকা খরচ হলেও সময় অল্প লাগে, ঝামেলা থেকেও বেঁচে যাই। পাইকসা গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, এখন তো টাকা দিয়েও কাজের মানুষ পাওয়া যায় না। তাই সময় বাঁচাতে বাজার থেকে কেনা মাছগুলো কেটে নিয়ে যাই। বরং তারা না থাকলে অনেক বড় ছোট মাছ খাওয়াই হতো না।

ঘোড়াশাল বাজার বণিক সমিতির সেক্রেটারি বলেন, মাছ কেটেও যে সংসার চালানো যায় এটা একটা সংসার চালানোর এক নতুন উদ্যোগ। তবে আমরা ক্রেতারাও তাদের জন্য উপকৃত হচ্ছি। কারণ অনেক দম্পতি দুজনই চাকরি করে, এতে তাদের সময়টা বেঁচে যায়।

back to top