নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া পাহাড়ি মেয়ে রাজেরং ত্রিপুরার হত্যার বিচার দাবিতে মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা কেশবপুরে খ্রিস্টান মিশনের সামনে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তোপের মুখে মিশন কর্তৃপক্ষ ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ৩ পাহাড়ি মেয়েকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থী রাজেরং ত্রিপুরার মৃত্যু রহস্যজনক হওয়ায় তার মৃত্যুর খবর অভিভাবককে না জানিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিশন কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকায় নকল বাবা-মা সাজিয়ে মরদেহ হস্তান্তরের ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে অবশেষে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেয়। এঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, শহরের সাহাপাড়াস্থ খ্রিস্টান মিশনের অর্থায়নে বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রমেশ ত্রিপুরার মেয়ে ৯ম শ্রেণীর পড়–য়া রাজেরং ত্রিপুরাসহ একই এলাকার রেবেকা ত্রিপুরা ৮ম শ্রেণী ও ৬ষ্ঠ শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী জোসিন্তা ত্রিপুরা, স্বস্তিকা ত্রিপুরা কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পাড়াশোনা করে। মিশনের ভেতরেই ১৪ মার্চ জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় রাজেরং ত্রিপুরার মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। ঘটনাটি ৩দিন অতিবাহিত হতে চললেও মিশন কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর ঘটনাটি পরিবারকে অবহিত করে না। ফলে ৩ দিন ধরে অভিভাবকের অভাবে মরদেহ যশোর মর্গে পড়ে থাকে। অথচ মিশন কর্তৃপক্ষ এলাকায় প্রচারণা চালায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, মিশনের চেয়ারম্যান খ্রিষ্টোফার এ মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে একই জেলার লামা উপজেলার সত্যমানিক ত্রিপুরা ও হানিচরণ ত্রিপুরাকে রাজেরং ত্রিপুরার নকল বাবা-মা সাজিয়ে মরদেহ হস্তান্তরের চেষ্টা চালায়।
এখবর জানতে পেরে ১৭ মার্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষুব্ধ জনতা খ্রিস্টান মিশনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে আসলে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর সঠিক রহস্য উন্মোচনের দাবিসহ তার বাবার অভিযোগ গ্রহণের করে আসামিদের শাস্তির দাবি জানানো হয়। এ সময় মিশন কর্তৃপক্ষ গেটের দরজা না খুললে বিক্ষুব্ধ জনতা পাচিল টপকিয়ে ভেতরে ঢুকে গেট খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন রাজেরং ত্রিপুরার আসল বাবা রমেশ ত্রিপুরা ও চাচা বিজয় ত্রিপুরা, মামা আব্রাহাম ত্রিপুরাসহ স্বজনরা।
এ সময় রাজেরং ত্রিপুরার বাবা রমেশ ত্রিপুরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, মিশন কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের মৃত্যুর খবর জানায়নি। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে এসেছি। বাহিরে ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও তারা গেট খোলেনি। তাদের অভিযোগ, মিশন কর্তৃপক্ষ আমার মেয়েকে হত্যা করে মরদেহ জানায় ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালাচ্ছে।
মিশনের অপর তিন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে আব্রাহাম ত্রিপুরার অভিযোগ, লেখাপড়ার সমস্ত খরচ ফ্রি বলে রেবেকা ত্রিপুরা, জোসিন্তা ত্রিপুরা ও স্বস্তিকা ত্রিপুরাকে মিশনে রাখা হয়। কিন্তু এখানে থাকলে আমাদের মেয়েদেরও অকালে জীবন দিতে হবে। যে কারণে তাদের ফেরত নিতে এসেছি। কিন্তু মিশন কর্তৃপক্ষ তাদের ফেরৎ দিতে অস্বীকার করে। অবশেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে মিশন কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহযোগিতায় অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়। তিনি অভিযোগ করেন, খ্রিস্টান মিশনের অনাথ আশ্রমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সমস্ত খরচ ফ্রি। অথচ প্রতিমাসে তাদের কাছ থেকে ১২০০ টাকা করে নেয়া হয়।
মিশনের চেয়ারম্যান ক্রিস্টফার সরকার বলেন, ওই মেয়েটিকে তার শয়নকক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। মিশনে তাকে কেউ নির্যাতন করেনি।
এ ব্যাপারে কেশবপুর ও মনিরামপুর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এএসপি সার্কেল ইমদাদুল হক বলেন, নিহত ছাত্রীর বাবা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছে। মিশন ঘেরাওয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। আপনারা ন্যায় বিচার পবেন বলে তিনি জনগণকে আশ্বাস্ত করেন।
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া পাহাড়ি মেয়ে রাজেরং ত্রিপুরার হত্যার বিচার দাবিতে মঙ্গলবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শত শত বিক্ষুব্ধ জনতা কেশবপুরে খ্রিস্টান মিশনের সামনে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তোপের মুখে মিশন কর্তৃপক্ষ ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ৩ পাহাড়ি মেয়েকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে, শিক্ষার্থী রাজেরং ত্রিপুরার মৃত্যু রহস্যজনক হওয়ায় তার মৃত্যুর খবর অভিভাবককে না জানিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিশন কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকায় নকল বাবা-মা সাজিয়ে মরদেহ হস্তান্তরের ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে অবশেষে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেয়। এঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, শহরের সাহাপাড়াস্থ খ্রিস্টান মিশনের অর্থায়নে বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রমেশ ত্রিপুরার মেয়ে ৯ম শ্রেণীর পড়–য়া রাজেরং ত্রিপুরাসহ একই এলাকার রেবেকা ত্রিপুরা ৮ম শ্রেণী ও ৬ষ্ঠ শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী জোসিন্তা ত্রিপুরা, স্বস্তিকা ত্রিপুরা কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পাড়াশোনা করে। মিশনের ভেতরেই ১৪ মার্চ জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় রাজেরং ত্রিপুরার মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়। ঘটনাটি ৩দিন অতিবাহিত হতে চললেও মিশন কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর ঘটনাটি পরিবারকে অবহিত করে না। ফলে ৩ দিন ধরে অভিভাবকের অভাবে মরদেহ যশোর মর্গে পড়ে থাকে। অথচ মিশন কর্তৃপক্ষ এলাকায় প্রচারণা চালায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে, মিশনের চেয়ারম্যান খ্রিষ্টোফার এ মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে একই জেলার লামা উপজেলার সত্যমানিক ত্রিপুরা ও হানিচরণ ত্রিপুরাকে রাজেরং ত্রিপুরার নকল বাবা-মা সাজিয়ে মরদেহ হস্তান্তরের চেষ্টা চালায়।
এখবর জানতে পেরে ১৭ মার্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষুব্ধ জনতা খ্রিস্টান মিশনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হলে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে আসলে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর সঠিক রহস্য উন্মোচনের দাবিসহ তার বাবার অভিযোগ গ্রহণের করে আসামিদের শাস্তির দাবি জানানো হয়। এ সময় মিশন কর্তৃপক্ষ গেটের দরজা না খুললে বিক্ষুব্ধ জনতা পাচিল টপকিয়ে ভেতরে ঢুকে গেট খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন রাজেরং ত্রিপুরার আসল বাবা রমেশ ত্রিপুরা ও চাচা বিজয় ত্রিপুরা, মামা আব্রাহাম ত্রিপুরাসহ স্বজনরা।
এ সময় রাজেরং ত্রিপুরার বাবা রমেশ ত্রিপুরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, মিশন কর্তৃপক্ষ আমার মেয়ের মৃত্যুর খবর জানায়নি। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখে এসেছি। বাহিরে ৩ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও তারা গেট খোলেনি। তাদের অভিযোগ, মিশন কর্তৃপক্ষ আমার মেয়েকে হত্যা করে মরদেহ জানায় ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচারণা চালাচ্ছে।
মিশনের অপর তিন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে আব্রাহাম ত্রিপুরার অভিযোগ, লেখাপড়ার সমস্ত খরচ ফ্রি বলে রেবেকা ত্রিপুরা, জোসিন্তা ত্রিপুরা ও স্বস্তিকা ত্রিপুরাকে মিশনে রাখা হয়। কিন্তু এখানে থাকলে আমাদের মেয়েদেরও অকালে জীবন দিতে হবে। যে কারণে তাদের ফেরত নিতে এসেছি। কিন্তু মিশন কর্তৃপক্ষ তাদের ফেরৎ দিতে অস্বীকার করে। অবশেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে মিশন কর্তৃপক্ষ পুলিশের সহযোগিতায় অভিভাবকদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়। তিনি অভিযোগ করেন, খ্রিস্টান মিশনের অনাথ আশ্রমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সমস্ত খরচ ফ্রি। অথচ প্রতিমাসে তাদের কাছ থেকে ১২০০ টাকা করে নেয়া হয়।
মিশনের চেয়ারম্যান ক্রিস্টফার সরকার বলেন, ওই মেয়েটিকে তার শয়নকক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়। মিশনে তাকে কেউ নির্যাতন করেনি।
এ ব্যাপারে কেশবপুর ও মনিরামপুর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এএসপি সার্কেল ইমদাদুল হক বলেন, নিহত ছাত্রীর বাবা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছে। মিশন ঘেরাওয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। আপনারা ন্যায় বিচার পবেন বলে তিনি জনগণকে আশ্বাস্ত করেন।