ৃশ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানে বাহা উৎসবে আদিবাসী নারীরা -সংবাদ
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় মুণ্ডা,ওঁরাও,খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী বাহা উৎসব উদযাপিত হয়। বাহা হচ্ছে মুণ্ডা,ওঁরাও,খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব। বাহা শব্দের আক্ষরিক অর্থ ফুল। সেজন্যই বাহা উৎসবকে ফুল বা বসন্ত উৎসব নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। উৎসবকে সাহরুল নামে পালন করে থাকে।
জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানে দূর্গাবাড়ি ম-পে (১৪ মার্চ) বিকাল ৪ টা মণিপুরী ললিতকলা একাডেমির আয়োজনে মুণ্ডা,ওঁরাও, খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর বাহা উৎসবের আলোচনা সভায় মণিপুরী ললিতকলা একাডেমির উপ পরিচালক ( অতি; দায়িত্ব) প্রবাস চন্দ্র সিংহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই জনগোষ্ঠী ১ লা মাঘকে নতুন শস্য বর্ষ সূচনার প্রথম দিন হিসাবে পালন করে। সেদিন থেকেই জমিতে লাঙ্গল দিয়ে কৃষি কার্যের সূচনা করা তারা। আর দোল পূর্ণিমার পর চৈত্র মাস পর্যন্ত প্রতিটি গ্রামে বাহা উৎসব পালিত হয়।
লাল পলাশ ফুল ফোটার সাথে সাথেই বাহা উৎসবের আগমনী বার্তা ঘোষিত হয়। পুরনো পাতা ঝরে যাওয়ার পর নতুন পাতা ও ফুল দিয়ে যখন প্রকৃতি ভরে ওঠে তখনই গ্রামে গ্রামে বাহা উৎসবের সাড়ম্বর ঘোষণা শুরু হয়। মহুল ফুলের কুঁড়ি উদ্গমের সাথে সাথেই যুবক-যুবতীদের মধ্যে উৎসব পালনের প্রস্তুতি শুরু করে। প্রকৃতি যখন নতুন সাজে সেজে ওঠে লাল পলাশের রঙে ও গন্ধে তখন প্রকৃতির পূজারী এ জনগোষ্ঠীর মধ্যেও আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়।
কৃষি কাজ শুরু হওয়ার পূর্বে আদিম সাম্যবাদী সমাজে মানুষ যখন প্রকৃতি নির্ভর ছিল তখন শীতের শেষে গাছের পাতা ঝরে যাওয়ায় নতুন পাতা ও ফুলে গাছগুলো যখন ভরে ওঠে তখনই নতুন প্রকৃতিকে বরণের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি অধিক ফলমূল দিয়ে মানব জীবনকে নিরাপত্তা দেবে এই কামনাতেই বাহা উৎসবের’ সূচনা।
মেয়েরা খোঁপায় নতুন ফুল গুঁজবে না যতক্ষণ না বাহা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাহা পূজার পূর্বে কোন মানুষ নতুন ফল খাবে না। সে জন্য অত্যন্ত পবিত্রতার সাথে সাহা পূজা বা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
বাহা উৎসবের প্রথম দিন উম অর্থাৎ স্নান বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিন। উৎসবে পূর্ব থেকেই ঘরবাড়ি পরিস্কার করার কাজ শুরু করে। গিরু মাটি, গোবর এবং খড় পুড়িয়ে নিজ রঙ তৈরি করে ঘর দুয়ার সাজিয়ে তোলা হয়। যে কোনো গ্রামে এই রঙ এবং দেওয়ালে বিভিন্ন পশুপাখি, ফুল-পাতা-পাতার চিত্র দেখে পাড়া বা গৃহকে পৃথকভাবে চিনে নিতে একটুও অসুবিধা হয় না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন গৃহ বা বাসনকোসন তাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছিন্ন অঙ্গ।
এই উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে তারা এখানে উৎসবে এসে মিলিত হয়েছে । খুপায় ফুল ও বাহারী শাড়ি পড়ে এই জনগোষ্ঠী আনন্দে মেতে উঠে ঐতিহ্যবাহী উৎসব পালন করে।
ৃশ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানে বাহা উৎসবে আদিবাসী নারীরা -সংবাদ
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় মুণ্ডা,ওঁরাও,খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী বাহা উৎসব উদযাপিত হয়। বাহা হচ্ছে মুণ্ডা,ওঁরাও,খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব। বাহা শব্দের আক্ষরিক অর্থ ফুল। সেজন্যই বাহা উৎসবকে ফুল বা বসন্ত উৎসব নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। উৎসবকে সাহরুল নামে পালন করে থাকে।
জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানে দূর্গাবাড়ি ম-পে (১৪ মার্চ) বিকাল ৪ টা মণিপুরী ললিতকলা একাডেমির আয়োজনে মুণ্ডা,ওঁরাও, খাড়িয়া জনগোষ্ঠীর বাহা উৎসবের আলোচনা সভায় মণিপুরী ললিতকলা একাডেমির উপ পরিচালক ( অতি; দায়িত্ব) প্রবাস চন্দ্র সিংহ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই জনগোষ্ঠী ১ লা মাঘকে নতুন শস্য বর্ষ সূচনার প্রথম দিন হিসাবে পালন করে। সেদিন থেকেই জমিতে লাঙ্গল দিয়ে কৃষি কার্যের সূচনা করা তারা। আর দোল পূর্ণিমার পর চৈত্র মাস পর্যন্ত প্রতিটি গ্রামে বাহা উৎসব পালিত হয়।
লাল পলাশ ফুল ফোটার সাথে সাথেই বাহা উৎসবের আগমনী বার্তা ঘোষিত হয়। পুরনো পাতা ঝরে যাওয়ার পর নতুন পাতা ও ফুল দিয়ে যখন প্রকৃতি ভরে ওঠে তখনই গ্রামে গ্রামে বাহা উৎসবের সাড়ম্বর ঘোষণা শুরু হয়। মহুল ফুলের কুঁড়ি উদ্গমের সাথে সাথেই যুবক-যুবতীদের মধ্যে উৎসব পালনের প্রস্তুতি শুরু করে। প্রকৃতি যখন নতুন সাজে সেজে ওঠে লাল পলাশের রঙে ও গন্ধে তখন প্রকৃতির পূজারী এ জনগোষ্ঠীর মধ্যেও আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়।
কৃষি কাজ শুরু হওয়ার পূর্বে আদিম সাম্যবাদী সমাজে মানুষ যখন প্রকৃতি নির্ভর ছিল তখন শীতের শেষে গাছের পাতা ঝরে যাওয়ায় নতুন পাতা ও ফুলে গাছগুলো যখন ভরে ওঠে তখনই নতুন প্রকৃতিকে বরণের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি অধিক ফলমূল দিয়ে মানব জীবনকে নিরাপত্তা দেবে এই কামনাতেই বাহা উৎসবের’ সূচনা।
মেয়েরা খোঁপায় নতুন ফুল গুঁজবে না যতক্ষণ না বাহা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বাহা পূজার পূর্বে কোন মানুষ নতুন ফল খাবে না। সে জন্য অত্যন্ত পবিত্রতার সাথে সাহা পূজা বা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
বাহা উৎসবের প্রথম দিন উম অর্থাৎ স্নান বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিন। উৎসবে পূর্ব থেকেই ঘরবাড়ি পরিস্কার করার কাজ শুরু করে। গিরু মাটি, গোবর এবং খড় পুড়িয়ে নিজ রঙ তৈরি করে ঘর দুয়ার সাজিয়ে তোলা হয়। যে কোনো গ্রামে এই রঙ এবং দেওয়ালে বিভিন্ন পশুপাখি, ফুল-পাতা-পাতার চিত্র দেখে পাড়া বা গৃহকে পৃথকভাবে চিনে নিতে একটুও অসুবিধা হয় না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন গৃহ বা বাসনকোসন তাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছিন্ন অঙ্গ।
এই উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে তারা এখানে উৎসবে এসে মিলিত হয়েছে । খুপায় ফুল ও বাহারী শাড়ি পড়ে এই জনগোষ্ঠী আনন্দে মেতে উঠে ঐতিহ্যবাহী উৎসব পালন করে।