ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবির) পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ব্যক্তিগত নজরদারি মাধ্যমে ব্যক্তির মৌলিক অধিকার হরণ হয়। এ থেকে রাষ্ট্রকে সরে আসতে হবে। ব্যক্তির পরিবর্তন হলেও প্রতিষ্ঠানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যে সংস্থাগুলো নজরদারিতে রয়েছে, সেগুলোর সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ প্রণয়নের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতিবেদন জেনেভা থেকে প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল। ৫ মার্চ জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক ও অন্যরা। প্রতিবেদনে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) কেবল সীমান্তরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরকে কেবল সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার সুপারিশ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুটি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করার কথা বলা হয়েছে একটি র্যাব, আরেকটি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এমটিএমসি)। এমটিএমসিএর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি নজরদারি সমাজে পরিণত করা হয়েছিল। এটিকে বিলুপ্ত করতে হবে। নজরদারির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মানতে হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার লুণ্ঠিত হয় এমন নজরদারি থেকে ফিরে আসতে হবে। ডিজিএফআইয়ের ওপর মানুষের অধিকার সংক্রান্ত গোয়েন্দাগিরির দায়িত্ব বর্তায় না। শুধু সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আনসার ভিডিপির সামরিক কর্তৃত্ব বন্ধ করতে হবে।
পুলিশ ও নিরাপত্তার খাত সম্পর্কে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরে টিআইবির পরিচালক বলেন, একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন তৈরি করতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুলিশ সংস্কার কমিশন এটার বিষয়ে জোরালোভাবে অবস্থান নেয়নি, কেন নেয়নি তা বোধগম্য নয়। টিআইবি মনে করে, অবশ্যই স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।
জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনে ৫টি খাতে ৪৩টি সুপারিশের প্রসঙ্গ টেনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মী, গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজ দীর্ঘদিন ধরে যেসব দাবি জানিয়ে আসছে, সেগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি বিবেচনায় নিত, তাহলে এ প্রতিবেদনের দরকার হতো না, অন্যদিকে বাংলাদেশে যেভাবে কর্তৃত্ববাদ বিকাশ হয়েছিল, সেটিও হতো না।
সংস্কার কমিশনের ছয়টি প্রতিবেদন হয়েছে, আরও পাঁচটি হবে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমার জানামতে পাঁচটিসহ ছয়টি প্রতিবেদনের সুপারিশের সঙ্গে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের মিল আছে। যে কথাগুলো জাতিসংঘ বলেছে, সেগুলো খুব একটা রকেট সায়েন্স তা না, তবে আমাদের দীর্ঘদিনের যে উদ্বেগ ছিল, সেটিকে একটি আন্তর্জাতিক দলিলের মধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে। সে কারণেই এটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি প্রতিরোধের কথা চিন্তা করি, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করি, তাহলে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার বিচার অবশ্যই করতে হবে। এর পাশাপাশি প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে হবে।’
ব্লাস্টের পরিচালক মো. বরকত আলী বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল আমরা বিচার বিভাগ কিছুটা হলেও স্বাধীন দেখতে পাব। সে আশা পূরণ হয়নি। দীর্ঘদিনের জঞ্জাল হয়তো দুদিনে শেষ হবে না। কিন্তু কিছুটা উদ্যোগ থাকা দরকার ছিল। যেগুলো এখনো আসেনি।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের সুপারিশমালার লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সমন্বয়ক তামান্না হক রীতি।
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবির) পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ব্যক্তিগত নজরদারি মাধ্যমে ব্যক্তির মৌলিক অধিকার হরণ হয়। এ থেকে রাষ্ট্রকে সরে আসতে হবে। ব্যক্তির পরিবর্তন হলেও প্রতিষ্ঠানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। যে সংস্থাগুলো নজরদারিতে রয়েছে, সেগুলোর সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ প্রণয়নের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশে অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রতিবেদন জেনেভা থেকে প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) তথ্যানুসন্ধান দল। ৫ মার্চ জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক ও অন্যরা। প্রতিবেদনে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশের পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) কেবল সীমান্তরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরকে কেবল সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার সুপারিশ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুটি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করার কথা বলা হয়েছে একটি র্যাব, আরেকটি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এমটিএমসি)। এমটিএমসিএর মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি নজরদারি সমাজে পরিণত করা হয়েছিল। এটিকে বিলুপ্ত করতে হবে। নজরদারির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মানতে হবে। মানুষের মৌলিক অধিকার লুণ্ঠিত হয় এমন নজরদারি থেকে ফিরে আসতে হবে। ডিজিএফআইয়ের ওপর মানুষের অধিকার সংক্রান্ত গোয়েন্দাগিরির দায়িত্ব বর্তায় না। শুধু সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আনসার ভিডিপির সামরিক কর্তৃত্ব বন্ধ করতে হবে।
পুলিশ ও নিরাপত্তার খাত সম্পর্কে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরে টিআইবির পরিচালক বলেন, একটি স্বাধীন পুলিশ কমিশন তৈরি করতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পুলিশ সংস্কার কমিশন এটার বিষয়ে জোরালোভাবে অবস্থান নেয়নি, কেন নেয়নি তা বোধগম্য নয়। টিআইবি মনে করে, অবশ্যই স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে।
জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনে ৫টি খাতে ৪৩টি সুপারিশের প্রসঙ্গ টেনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মী, গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজ দীর্ঘদিন ধরে যেসব দাবি জানিয়ে আসছে, সেগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি বিবেচনায় নিত, তাহলে এ প্রতিবেদনের দরকার হতো না, অন্যদিকে বাংলাদেশে যেভাবে কর্তৃত্ববাদ বিকাশ হয়েছিল, সেটিও হতো না।
সংস্কার কমিশনের ছয়টি প্রতিবেদন হয়েছে, আরও পাঁচটি হবে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমার জানামতে পাঁচটিসহ ছয়টি প্রতিবেদনের সুপারিশের সঙ্গে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের মিল আছে। যে কথাগুলো জাতিসংঘ বলেছে, সেগুলো খুব একটা রকেট সায়েন্স তা না, তবে আমাদের দীর্ঘদিনের যে উদ্বেগ ছিল, সেটিকে একটি আন্তর্জাতিক দলিলের মধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে। সে কারণেই এটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি প্রতিরোধের কথা চিন্তা করি, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করি, তাহলে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার বিচার অবশ্যই করতে হবে। এর পাশাপাশি প্রতিকার ও প্রতিরোধ করতে হবে।’
ব্লাস্টের পরিচালক মো. বরকত আলী বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল আমরা বিচার বিভাগ কিছুটা হলেও স্বাধীন দেখতে পাব। সে আশা পূরণ হয়নি। দীর্ঘদিনের জঞ্জাল হয়তো দুদিনে শেষ হবে না। কিন্তু কিছুটা উদ্যোগ থাকা দরকার ছিল। যেগুলো এখনো আসেনি।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের সুপারিশমালার লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সমন্বয়ক তামান্না হক রীতি।