আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরে বাড়তি যাত্রী পরিবহনে রেল বহরে যুক্ত করা হয় অতিরিক্ত যাত্রীবাহী কোচ। আর এসব কোচ সরবরাহ করা হয় দেশের বৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা হতে।
প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো ও কর্মস্থলে ফেরত যেতে যাত্রীদের পরিবহন করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাড়তি ১১০ থেকে ১২০টি যাত্রীবাহী কোচ সরবরাহ করেন রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে। ট্রাফিক বিভাগ আবার ওইসব কোচ বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে দেন। এতে করে ঈদ উৎসব পালনকারী যাত্রীরা বেশ নির্ভার হয়ে নিজ গ্রামে ফিরে। আবার ঈদ শেষে চলে যায় নিজ কর্মস্থলে। পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপত্তার দিক থেকে যাতায়াতের প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে ট্রেন ভ্রমণ। এজন্য ধর্মপ্রাণ মুসলিম এই দেশে নাড়ির টানে ঘরে ফেরা মানুষরা ট্রেনের যাত্রী হতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এজন্য বাড়তি যাত্রীর জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি কোচের। সেজন্য কোচের ঘাটতি পূরণে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ঈদের তিন মাস পূর্ব থেকেই বাড়তি কোচ মেরামতে কোমড় বেধে নামে। সংগ্রহ করা হয় কাঁচামালের। যদিও বা ১১০ থেকে ১২০টি কোচ ঈদের সময় ট্রেন বহরে যুক্ত হলেও তাও চাহিদার তুলনায় বেশ কম হয়। তাই এই চিন্তাকে মাথায় রেখে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে সদ্য বিদায়ী বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান এবারের ঈদে অন্যান্য বছরের তুলনায় আরো অতিরিক্ত যাত্রীবাহী ৪০টি কোচ রেলবহরে যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন। গড়ে তোলেন শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে সমন্বয়। সুষ্ঠ তদারকির মাধ্যমে রেল শ্রমিকরা কাজে আন্তরিকতার সাথে মনোনিবেশ করেন। অন্যান্য বছরে ১২০টি কোচ সরবরাহ করা হলেও এবারে তা ১৬০টিতে পৌছানোর কথা। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক কুটচালের শিকার হয়ে ওই কর্মকর্তাকে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে ৬ মার্চ বদলী করা হয় রাজশাহীতে। কাজের গতি থমকে দাঁড়ায়।
গত ১৫ মার্চ তিনি বিদায় নেন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে। তার স্থলাভিষিক্ত হন রেলওয়ের পাকশী বিভাগ হতে আসা বিগত সরকারের রেলমন্ত্রীর পটেকম্যান হিসাবে খ্যাত শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ। এই কর্মকর্তা যোগদান করার পর থেকেই শ্রমিক কর্মচারীদের কাজে স্থবিরতা শুরু হয়। এমন অভিযোগ মিলেছে একাধিক শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান দায়িত্বরত বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) একজন অদক্ষ মানুষ। শ্রমিক, কর্মচারী ও অধীনস্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে নেই তার কোনো আত্মিক সমন্বয়। এর ফলে কাজের গতি পূর্বের তুলনায় এক চতুর্থাংশ কমে গেছে। উৎপাদনেও ঘটছে ব্যাঘাত। সদ্য বিদায়ী ডিএস এর সময়েই যেসব কোচ রেলবহরে যুক্ত করতে তৈরী করা হয়েছিলো সেগুলোই ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হচ্ছে। বিগত ডিএস এর আমলেই ১৫২টি কোচ ট্রেনবহরে যুক্ত করার উপযোগী করে তৈরী করা হয়। বর্তমান ডিএস যোগদানের আট দিনে মাত্র ২/৩টি কোচ যাত্রী পরিবহন উপযোগী করা হয়েছে। ঢিমেতালে চলছে কাজ। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ পূর্বের ডিএস এর আমলে গড়ে কর্মদিবসের ছয় দিনে কমপক্ষে ৯ থেকে ১০টি কোচ যাত্রী পরিবহন উপযোগী করা হতো। আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে সবগুলো কোচ রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করতে হবে। অথচ সব মিলে সর্বোচ্চ ১৫০টির মতো যাত্রীবাহী কোচ ঈদ উপলক্ষে ট্রেন বহরে যুক্ত হতে পারে।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শাহ সুফী নূর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১২০টি কোচ। আমরা তা অর্জন করেছি। বোনাস হিসাবে আরো ৩৫টি কোচ ট্রেন বহরে যুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে কেনো লক্ষ্যমাত্রার ১৬০টি কোচ ট্রেন বহরে সরবরাহ করা হচ্ছে না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি।
রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরে বাড়তি যাত্রী পরিবহনে রেল বহরে যুক্ত করা হয় অতিরিক্ত যাত্রীবাহী কোচ। আর এসব কোচ সরবরাহ করা হয় দেশের বৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা হতে।
প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো ও কর্মস্থলে ফেরত যেতে যাত্রীদের পরিবহন করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাড়তি ১১০ থেকে ১২০টি যাত্রীবাহী কোচ সরবরাহ করেন রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে। ট্রাফিক বিভাগ আবার ওইসব কোচ বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে দেন। এতে করে ঈদ উৎসব পালনকারী যাত্রীরা বেশ নির্ভার হয়ে নিজ গ্রামে ফিরে। আবার ঈদ শেষে চলে যায় নিজ কর্মস্থলে। পরিবেশবান্ধব এবং নিরাপত্তার দিক থেকে যাতায়াতের প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে ট্রেন ভ্রমণ। এজন্য ধর্মপ্রাণ মুসলিম এই দেশে নাড়ির টানে ঘরে ফেরা মানুষরা ট্রেনের যাত্রী হতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এজন্য বাড়তি যাত্রীর জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি কোচের। সেজন্য কোচের ঘাটতি পূরণে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ঈদের তিন মাস পূর্ব থেকেই বাড়তি কোচ মেরামতে কোমড় বেধে নামে। সংগ্রহ করা হয় কাঁচামালের। যদিও বা ১১০ থেকে ১২০টি কোচ ঈদের সময় ট্রেন বহরে যুক্ত হলেও তাও চাহিদার তুলনায় বেশ কম হয়। তাই এই চিন্তাকে মাথায় রেখে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে সদ্য বিদায়ী বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মোস্তফা জাকির হাসান এবারের ঈদে অন্যান্য বছরের তুলনায় আরো অতিরিক্ত যাত্রীবাহী ৪০টি কোচ রেলবহরে যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন। গড়ে তোলেন শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে সমন্বয়। সুষ্ঠ তদারকির মাধ্যমে রেল শ্রমিকরা কাজে আন্তরিকতার সাথে মনোনিবেশ করেন। অন্যান্য বছরে ১২০টি কোচ সরবরাহ করা হলেও এবারে তা ১৬০টিতে পৌছানোর কথা। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক কুটচালের শিকার হয়ে ওই কর্মকর্তাকে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে ৬ মার্চ বদলী করা হয় রাজশাহীতে। কাজের গতি থমকে দাঁড়ায়।
গত ১৫ মার্চ তিনি বিদায় নেন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে। তার স্থলাভিষিক্ত হন রেলওয়ের পাকশী বিভাগ হতে আসা বিগত সরকারের রেলমন্ত্রীর পটেকম্যান হিসাবে খ্যাত শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ। এই কর্মকর্তা যোগদান করার পর থেকেই শ্রমিক কর্মচারীদের কাজে স্থবিরতা শুরু হয়। এমন অভিযোগ মিলেছে একাধিক শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে। তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান দায়িত্বরত বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) একজন অদক্ষ মানুষ। শ্রমিক, কর্মচারী ও অধীনস্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে নেই তার কোনো আত্মিক সমন্বয়। এর ফলে কাজের গতি পূর্বের তুলনায় এক চতুর্থাংশ কমে গেছে। উৎপাদনেও ঘটছে ব্যাঘাত। সদ্য বিদায়ী ডিএস এর সময়েই যেসব কোচ রেলবহরে যুক্ত করতে তৈরী করা হয়েছিলো সেগুলোই ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হচ্ছে। বিগত ডিএস এর আমলেই ১৫২টি কোচ ট্রেনবহরে যুক্ত করার উপযোগী করে তৈরী করা হয়। বর্তমান ডিএস যোগদানের আট দিনে মাত্র ২/৩টি কোচ যাত্রী পরিবহন উপযোগী করা হয়েছে। ঢিমেতালে চলছে কাজ। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অথচ পূর্বের ডিএস এর আমলে গড়ে কর্মদিবসের ছয় দিনে কমপক্ষে ৯ থেকে ১০টি কোচ যাত্রী পরিবহন উপযোগী করা হতো। আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে সবগুলো কোচ রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করতে হবে। অথচ সব মিলে সর্বোচ্চ ১৫০টির মতো যাত্রীবাহী কোচ ঈদ উপলক্ষে ট্রেন বহরে যুক্ত হতে পারে।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) শাহ সুফী নূর মোহাম্মদের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১২০টি কোচ। আমরা তা অর্জন করেছি। বোনাস হিসাবে আরো ৩৫টি কোচ ট্রেন বহরে যুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে কেনো লক্ষ্যমাত্রার ১৬০টি কোচ ট্রেন বহরে সরবরাহ করা হচ্ছে না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি।